নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ক্রিটিক্যাল থিঙ্কিং এবাউট ওয়ার্ল্ড পলিটিক্স্,স্পেশালি মিনা রিজিয়ন। মেইনস্ট্রিম মিডিয়ার কিছুই বিশ্বাস করি না।

মোহাম্মদ মোস্তফা রিপন

দুনিয়ার খবর রেখে শান্তি পাই।

মোহাম্মদ মোস্তফা রিপন › বিস্তারিত পোস্টঃ

ভারতের কৃষি আইন-বহুজাতিক এবং স্থানীয় পুঁজিপতিদের এজেন্ডা এবং আমাদের ভয়।

১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ৮:০০

২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাসে জাতিসংঘে একটি ফুড সিস্টেমস সামিট অনুষ্ঠিত হবে। এর উদ্দেশ্য হল মালথুসিয়ান জাতিসংঘের এজেন্ডা ২০৩০ এর আলোকে "টেকসই কৃষি" লক্ষ্যমাত্রার প্রেক্ষাপটে বিশ্ব কৃষি ও খাদ্য উৎপাদন পুনর্গঠন করা। ভারতে নরেন্দ্র মোদীর সরকারের সাম্প্রতিক চরমপন্থী কৃষি আইন এই বৈশ্বিক এজেন্ডার অংশ।
গত সেপ্টেম্বরে রাজ্যসভায় তিনটি নতুন কৃষি আইন পাশ হওয়ার পর থেকে ভারতে কৃষকরা ব্যাপক বিক্ষোভে সরব হয়েছেন। মোদীর কৃষি সংস্কার বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরাম (ডব্লিউইএফ) এবং কৃষির জন্য তার নতুন ভিশন, জাতিসংঘের এজেন্ডা ২০৩০ এর আলোকে ক্লাউস শোয়াবের গ্রেট রিসেটের অংশ।
মোদীর শক থেরাপিঃ
কৃষক এবং কৃষক ইউনিয়নের সাথে কোন ধরনের আলোচনা করা ছাড়া ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে ডিউলি রেজিস্টার্ড ভোটের বদলে দ্রুত সংসদীয় কণ্ঠস্বর ভোটে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সরকার তিনটি নতুন আইন পাশ করেছে।যার ফলে কয়েক মাস ধরে জাতীয় কৃষক বিক্ষোভ এবং দেশব্যাপী ধর্মঘটের সূত্রপাত ঘটিয়েছে। সারা ভারত জুড়ে ছড়িয়ে পড়া বিক্ষোভ থেকেই তিনটি আইন বাতিলের দাবি জানিয়েছে।
প্রকৃতপক্ষে এই আইন বড় বড় কর্পোরেশনের জমি ক্রয় এবং কৃষি পণ্য মজুদ করে প্রাইস ম্যানিফুলেশনের উপর নিষেধাজ্ঞা অবসান ঘটাবে। তারা বৃহৎ বহুজাতিক ব্যবসাকে/কোম্পানি স্থানীয় বা আঞ্চলিক রাষ্ট্রীয় বাজার বাইপাস করার অনুমতি দেয় যেখানে কৃষকদের পণ্য সাধারণত নিশ্চিত মূল্যে বিক্রি করা হয়। এর ফলে ভারতের ভঙ্গুর খাদ্য শৃঙ্খলে কোটি কোটি প্রান্তিক বা ক্ষুদ্র কৃষক এবং ক্ষুদ্র মধ্যস্থতাকারীধ্বংস হবে।
এই আইন প্রনয়নের জন্য আইএমএফ এবং বিশ্বব্যাংক ১৯৯০ সাল থেকে দাবি জানিয়ে আসছে। ভারতীয় কৃষি এবং কৃষিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কর্পোরেট কৃষি ব্যবসার মডেলে আনার জন্য যা কয়েক দশক থেকে চেষ্টা করা হচ্ছে।যেটা আমেরিকাতে করেছে রকফেলার ফাউন্ডেশন। এখন পর্যন্ত কোন ভারত সরকার দেশের বৃহত্তম জনসংখ্যার গোষ্ঠী কৃষকদের আক্রমণ করতে রাজি হয়নি। মোদীর যুক্তি, বর্তমান ব্যবস্থা রদবদল হলে ভারতীয় কৃষকরা ২০২২ সালের মধ্যে আয় দ্বিগুণ করতে পারবেন, যা একটি অপ্রমাণিত, সন্দেহজনক দাবি। এটি কর্পোরেশনকে প্রথমবারের মতো জাতীয়ভাবে কৃষি জমি কেনার অনুমতি দেয় যাতে বড় বড় কোম্পানি, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ সংস্থা এবং রপ্তানিকারকরা কৃষি খাতে বিনিয়োগ করতে পারে। তাদের বিরুদ্ধে একজন ক্ষুদ্র কৃষকের তেমন কোন সুযোগ অবশিষ্ট থাকবে না। প্রশ্ন হল মোদির এই শক থেরাপির পিছনে কে আছে? এখানে আমরা ডব্লিউইএফ এবং গেটস ফাউন্ডেশনের আমূল বিশ্বায়িত কৃষি এজেন্ডা খুঁজে পাচ্ছি।
ডব্লিউইএফ এবং কর্পোরেট এক্টিভিস্টঃ
এই আইন বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের বেশ কয়েক বছরের প্রচেষ্টা এবং এর নিউ ভিশন ফর এগ্রিকালচার (এনভিএ) উদ্যোগের সরাসরি ফলাফল। ১২ বছরেরও বেশি সময় ধরে ডব্লিউইএফ এবং এর এনভিএ আফ্রিকা, ল্যাটিন আমেরিকা এবং এশিয়া।এদের বড় লক্ষ্য হচ্ছে ভারত, যেখানে ১৯৬০-এর দশকে রকফেলার ফাউন্ডেশনের সবুজ বিপ্লবের চেষ্টার পর থেকে কৃষি দখলের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ তীব্র হয়েছে। ডব্লিউইএফ গ্রেট রিসেটের জন্য, যা টেকসই কৃষির জন্য জাতিসংঘের এজেন্ডা ২০৩০ নামে পরিচিত। এর উদ্ধেশ্য হল ভারতের ঐতিহ্যবাহী কৃষি এবং খাদ্য ব্যবস্থা ভেঙ্গে দিতে হবে।খুদ্র কৃষকরা তাদের উৎপাদিত পন্য বৃহৎ কৃষি ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের বিক্রি করতে বাধ্য থাকবে। এবং আঞ্চলিক বা রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের সুরক্ষা ব্যাবস্থা রহিত করা হবে।এটা "টেকসই" হবে, ক্ষুদ্র কৃষকদের জন্য নয়, বরং বিশাল কৃষি ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর জন্য।

এই এজেন্ডাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য ডব্লিউইএফ(ওয়ার্ল্ড ইকনোমিক ফোরাম) এনভিএ ইন্ডিয়া বিজনেস কাউন্সিল নামে কর্পোরেট শক্তিশালী দল তৈরি করে। ডব্লিউইএফ-এর হোমপেজে এর ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, "এনভিএ ইন্ডিয়া বিজনেস কাউন্সিল ভারতে টেকসই কৃষি প্রবৃদ্ধি বাড়াতে বেসরকারি খাতের সহযোগিতা এবং বিনিয়োগ বৃদ্ধির জন্য একটি অনানুষ্ঠানিক, উচ্চ পর্যায়ের নেতৃত্ব দল হিসেবে কাজ করে।
২০১৭ সালে ডব্লিউইএফ-এর এনভিএ ইন্ডিয়া বিজনেস কাউন্সিলের অন্তর্ভুক্ত ছিল বেয়ার ক্রপসায়েন্স, বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ কৃষি কীটনাশক উৎপাদনকারী যেটা এখন মনসান্টো জিএমও বীজ, দৈত্যাকার মার্কিন শস্য কোম্পানির ইন্ডিয়া পার্ট কার্গিল ইন্ডিয়া প্রাইভেট, ডো এগ্রো সাইন্স, জিএমও বীজ এবং কীটনাশক উৎপাদক, এগ্রো কেমিক্যাল ফার্ম ডুপন্ট; গ্রেইন কার্টেল জায়ান্ট লুই ড্রেফাস কোম্পানি, ওয়াল-মার্ট ইন্ডিয়া, ইন্ডিয়া মাহিন্দ্রা অ্যান্ড মাহিন্দ্রা (বিশ্বের বৃহত্তম ট্রাক্টর নির্মাতা), নেসলে ইন্ডিয়া লিমিটেড, পেপসিকো ইন্ডিয়া, রাবোব্যাংক ইন্টারন্যাশনাল, স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া; সুইস রি সার্ভিসেস, বিশ্বের বৃহত্তম পুনঃবীমাকারী, ইন্ডিয়া প্রাইভেট লিমিটেড, এবং ভারতের দ্বিতীয় ধনী ব্যক্তি এবং মোদীর বিজেপি দলের প্রধান অর্থায়নকারী গৌতম আদানির আদানি গ্রুপ।এখানে ভারতীয় কৃষক সংগঠনের অনুপস্থিতি লক্ষ্য করার মত।যাদের জন্য আইন তারাই এখানে অনুপস্থিত।
ডব্লিউইএফ এনভিএ ইন্ডিয়া বিজনেস কাউন্সিলে শীর্ষ মোদী পৃষ্ঠপোষক গৌতম আদানি ছাড়াও মুকেশ আম্বানি ক্লাউস শোয়াবের বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য ছিলেন। ভারতের অন্যতম বৃহৎ সংস্থা রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর এবং এশিয়ার দ্বিতীয় ধনী ব্যক্তি আম্বানি। রিলায়েন্স বিপুল মুনাফা অর্জনের জন্য আম্বানি চরমপন্থী কৃষি সংস্কারের শক্তিশালী প্রবক্তা।
গত ডিসেম্বরে পাঞ্জাবের কৃষকরা রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান মুকেশ আম্বানি এবং আদানি গ্রুপের চেয়ারম্যান গৌতম আদানিসহ প্রধানমন্ত্রী মোদীর কুশপুত্তলিকা দাহ করে।
যাদের এই কর্পোরেট বেহেমথ সম্পর্কে সামান্য ধারণা আছে তাদের কাছে এটা পরিষ্কার যে ভারতের আনুমানিক ৬৫০ মিলিয়ন কৃষকের স্বার্থ এবং কল্যাণ এখানে অগ্রাধিকার পাইনি। লক্ষণীয় যে আইএমএফ-এর প্রধান অর্থনীতিবিদ গীতা গোপীনাথ, যিনি এখন যুক্তরাষ্ট্রের বাসিন্দা, তিনি এই আইনকে সমর্থন করেছেন এবং বলেছেন যে ভারতের সদ্য প্রণীত কৃষি আইনে কৃষকদের আয় বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে।

২৬ নভেম্বর দেশব্যাপী সাধারণ ধর্মঘট শুরু হলে কৃষকদের সমর্থনে প্রায় ২৫০ মিলিয়ন লোক এগিয়ে আসে। ১৪ মিলিয়নেরও বেশি ট্রাক চালকের প্রতিনিধিত্বকারী পরিবহন ইউনিয়নগুলো কৃষক ইউনিয়নের সমর্থনে এগিয়ে এসেছে। আজ পর্যন্ত বিজেপি সরকারের কাছে এটাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। বাস্তবতা হচ্ছে সরকার পিছু হটতে অস্বীকার করেছে যার কারনে এটি একটি তিক্ত যুদ্ধ রুপ নিবে।

এজেন্ডা ২০৩০, অথবা গ্রেট রিসেট হল,ক্লাউস সোয়াবের মতে বৈশ্বিক খাদ্য ও কৃষি শিল্পকে ট্রান্সফর্ম করা। এটাকে সফল করতে হলে বিশ্বের বৃহত্তম জনসংখ্যার সাথে ভারতকে কর্পোরেট কৃষি ব্যবসা নিয়ন্ত্রণের বিশ্বায়নে আনতে হবে। স্পষ্টতই মোদী নতুন কৃষি আইন প্রনয়নের সময় জাতিসংঘ ২০২১ ফুড সিস্টেমস সামিটের কথা মাথায় রেখেছে।
আগ্রা(এলায়েন্স ফর গ্রিন রেভুলেশন) এবং জাতিসংঘ খাদ্য সিস্টেম সম্মেলনঃ
তুমি যদি তেলের নিয়ন্ত্রন নিতে পারো তাহলে তুমি দেশ/জাতিকে নিয়ন্ত্রন করতে পারবে।তুমি যদি খাদ্যের নিয়ন্ত্রন নিতে পারো তুমি সাধারন মানুষের নিয়ন্ত্রন নিতে পারবে-হেনরি কিসিঞ্জার।
ভারতের কৃষকদের জন্য এজেন্ডার ইঙ্গিত হচ্ছে আসন্ন সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ খাদ্য ব্যবস্থা সম্মেলন। জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস ২০১৯ সালে ঘোষণা করেন যে জাতিসংঘ ২০২০ সালের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ খাদ্য ব্যবস্থার সুবিধা সর্বোচ্চ করার লক্ষ্যে ২০২১ সালে খাদ্য ব্যবস্থা শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজন করবে। তিনি রুয়ান্ডার অ্যাগনেস কালিবাতাকে ২০২১ সালের ফুড সিস্টেমস সম্মেলনের বিশেষ দূত হিসেবে ঘোষণা করেন। এই সম্মেলনের প্রতিষ্ঠাতার বিবৃতিতে নিখুঁত চাষ ব্যাবস্থার জন্য জিপিএস, বিগ ডাটা,রোবটিক্স এবং জিএমওকে সমাধান হিসেবে প্রমান করার চেষ্টা করা হয়েছে।
যুদ্ধবিধ্বস্ত রুয়ান্ডার প্রাক্তন কৃষি মন্ত্রী কালিবাতা আফ্রিকার সবুজ বিপ্লবের জোট আগ্রারার প্রেসিডেন্ট। আগ্রা বিল গেটসএবং রকফেলার ফাউন্ডেশন দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল আফ্রিকার কৃষিতে জিএমও পেটেন্টকৃত বীজ এবং সংশ্লিষ্ট রাসায়নিক কীটনাশক চালু করার জন্য।বিল গেটস আগ্রার দায়িত্বে ছিলেন।
বিল এবং মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন ডব্লিউইএফ-এর অংশীদারঃ
প্রায় ১৫ বছর এবং গেটস, রকফেলার এবং অন্যান্য বৃহৎ দাতাদের কাছ থেকে প্রায় ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার তহবিল যোগানের পরেও আগ্রা কৃষকদের উন্নতিতে ব্যার্থ হয়েছে।কৃষকরা তাদের সরকার কতৃক বাণিজ্যিক সরবরাহকারীদের কাছ থেকে বীজ কিনতে বাধ্য হয় সেটা সরবরাহ করে মনসান্টো এবং অন্যান্য জিএমও কোম্পানি।উল্লেখ্য মনসান্টি এক্সিকুটিভ জন মার্শ আগ্রার উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ছিলেন।
ফলাফল হল কৃষকদের ঘাড়ে ঋনের বোঝা এবং প্রায়ই দেউলিয়া। কৃষকদের বাণিজ্যিক বীজ পুনরায় ব্যবহার করতে নিষেধ বাধা দেয়া হয় এবং ঐতিহ্যগত বীজ পরিত্যাগ করতে বাধ্য করা হয় যা তারা পুনরায় ব্যবহার করতে পারে।কৃষকদের বাজার ভিত্তিক পন্য উৎপাদনে বাধ করা হয়।যেগুলু রপ্তানি/আমদানির উপর নিয়ন্ত্রন ছিল প্রধান শস্য কার্টেল দৈত্যদের। ১৯৯০-এর দশক থেকে ওয়াশিংটনের চাপে বিশ্বব্যাংক উন্নয়নশীল দেশগুলোর সরকারের কাছে কৃষি ভর্তুকি বন্ধ করার দাবি জানিয়ে আসছে।যখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইইউ কৃষিতে ব্যাপকভাবে ভর্তুকি দিয়ে যাচ্ছে। সস্তা ভর্তুকিযুক্ত ইইউ এবং ওইসিডি আমদানি স্থানীয় কৃষকদের দেউলিয়া করে দেয়। এটা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে করা হয়েছে/হচ্ছে।


আগ্রা, মিথ্যা প্রতিশ্রুতি নিয়ে ২০২০ সালের একটি প্রতিবেদনে উপসংহার টেনেছে যে, "আগ্রা প্রজেক্ট চালু হওয়ার আগের বছরগুলোতে প্রধান প্রধান ফসলের উৎপাদন কম ছিল’’।বাস্তবতা হল আগ্রা চালু হওয়ার পর থেকে ১৩টি ফোকাস দেশের পরিস্থিতি আরো খারাপ হয়েছে। আগ্রা ফোকাস দেশগুলুতে বছরে ক্ষুধার্ত মানুষের সংখ্যা ৩০ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। আগ্রা চালু হওয়ার ফলে ১৩টি আগ্রা ফোকাস দেশের ১৩ কোটি মানুষ প্রভাবিত হয়েছে।গেটসের আগ্রা আফ্রিকার খাদ্য উৎপাদনকে বিশ্বব্যাপী বহুজাতিকগুলোর ইচ্ছার উপর আগের চেয়ে বেশি নির্ভরশীল করে তুলেছে যার লক্ষ্য হল সস্তা ইনপুট। এটি কৃষকদের ঋনে বাধ্য করে এবং জিএমও ভুট্টা বা সয়া-এর মতো নির্দিষ্ট ফসল উৎপাদনে বাধ্য করে।কারন এগুলুর বীজ যারা উৎপাদন করে,কীটনাশকও তারা উৎপাদন করে।এই ফসলের ক্রেতাও তারা নিজেরাই।একটা ছোট্ট উদাহরন দেই।ট্রেডিনশাল টমেটো খুব বেশীদিন স্থায়ী হয় না।এই টমেটোকে স্থায়ীত্ব দেওয়ার জন্য বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করেছে ফ্রান্সের এগ্রি কোম্পানি লিমা গ্রেইন।লিমা গ্রেইন দারস্ত হয়েছিল ইজরায়েলের হিব্রু বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষকের উপর।এটা ৯০ দশকের কথা।হিব্রু বিশ্ববিদ্যালয় টমেটর ক্রস জাতের উদ্ভাবন করে যেটা ৩০ দিন খোলা আকাশের নিচে রেখে দিলেও পছন ধরবে না।১৫-২০ ফুট উপর থেকে ফেলে দিলেও ফেটে যাবে না।কিন্তু এটার স্বাদ ট্রেডিশনাল টমেটোর মত না।এবং পুষ্টিগুনও প্রায় অর্ধেক।এই টমেটোর এক কেজি বীজের মুল্য ৪ লক্ষ্য ইউরো। হাঁ ঠিকই পড়েছেন ৪ লক্ষ্য ইউরো।অর্থাৎ স্বর্ণের থেকেও বেশি দামী।আগ্রার আফ্রিকা প্রজেক্টের মুল লক্ষ্য হল সস্তা দামে এই বীজ উৎপাদন করা এবং এই বীজ এবং কীটনাশকের উপর তাদের নির্ভরশীল করে ফেলা।বিশ্বব্যাপী কৃষি পন্যের নিয়ন্ত্রক মনসান্টো হল হাইব্রিড কৃষিপণ্যে ব্যাবহারিৎ কীটনাশক গ্লাইফোসেটের উৎপাদক।এই কীটনাশক মানুষের শরীরে ক্যান্সারের জীবাণুর জন্য দায়ী।যার কারনে মার্কিন আদালত মনসান্টোকে ২ বিলিয়ন ডলার জরিমানা করেছিল।এই মনসান্টোর ব্যাবসায়িক অংশীদার হল বিল গেটস।বিল গেটসের ফাউন্ডেশন আফ্রিকার দেশগুলুতে আগ্রার অধীনে ৬৫০ মিলিয়ন ডলার তহবিল যোগান দিয়েছিল।এদের উদ্ধেশ্য হল বিশ্বব্যাপী ট্রেডিশনাল কৃষির পরিবর্তে হাইব্রিড কৃষির প্রসার ঘটানো।তাতে কৃষি সেক্টর পুরুপুরি বহুজাতিক কোম্পানির উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়বে।আগ্রার অধীন দেশগুলুতে বিশ্বব্যাংক প্রেশার দিয়ে প্যাটেন্ট আইন চালু করেছিল এই হাইব্রিডের ব্যাবসার কারনে।দুনিয়াব্যাপি চারটি কোম্পানি এখন ৬০% ফসলের বীজের নিয়ন্ত্রক( মনসান্টো, লিমা গ্রেইন, সিনজেন্টা,ডুপন্ট)।এই চারটি কোম্পানির উৎপাদিত প্রায় ৪ মিলিয়ন টন পেস্টিসাইড প্রতি বছর কৃষিতে ব্যাবহার হচ্ছে।
প্রায় ১.৫ বিলিয়ন মানুষের দেশ ভারত হল তাদের সর্বশেষ যুদ্ধক্ষেত্র।তারা অনেকদিন ধরেই চেষ্টা করে আসছিল ভারতকের কৃষিতে আধিপত্য বিস্তার করতে।ঠিক এই কারনেই বিল গেটস ভারতের বিষয়ে খুব বেশি আগ্রহী।ইতিমধ্যে ভারত বহুজাতিক কোম্পানিগুলুর জন্য হাইব্রিড বীজ সরবরাহ করতেছে।ভারতের কৃষি বীজের নিয়ন্ত্রন হল পাঁচটি কোম্পানির হাতে।বিএএসএফ,ডুপন্ট,মনসান্টো,সিনজেন্টা এবং লিমা গ্রেইন।এরাই এখন ভারতের কৃষি পন্যের নিয়ন্ত্রন হাতে নিতে চাই।যার কারনে মোদিকে দিয়ে তারা এই আইনগুলু পাশ করিয়েছে।এর পিছনে কাজ করছে বিল গেটস,রকফেলার ফাউন্ডেশন,আম্বানি,আদানি।আম্বানি বা আদানি কেন এর পিছনে যুক্ত হল তারও কিছু মৌলিক কারন আছে।গেটস বিশ্বব্যাংক এবং জাতিপুঞ্জের মাধ্যমে দুনিয়াব্যাপি একই ধারার কৃষি সিস্টেমের প্রচার চালাচ্ছেন এবং এর জন্য বিলিয়ন ডলার খরচ করছেন।খোদ আমেরিকাতে গেটস এখন শীর্ষ কৃষি জমির মালিক।যার মালিকানায় রয়েছে ২ লক্ষ্য ৭০ হাজার একর কৃষি জমি।তার উদ্ধেশ্য হল কৃষি সেক্টরে মনোপলি সৃষ্টি করা।ঠিক এই কারনেই আম্বানি/আদানিরা এই আইনের পিছনে কাজ করছে।কারন ভারতের কৃষির জন্য আইনি সুরক্ষা রয়েছে।সেটা তুলে দিয়ে বহুজাতিক এবং স্থানীয় পুঁজিপতিদের হাতে এর নিয়ন্ত্রন তুলে দেয়া।
তাই একথা নিশ্চিত করে বলা ভারতের কৃষি আইন হঠাৎ ঘটে যাওয়া কোন ঘটনার ফল নয়।এটা দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনার ফসল।যে পরিকল্পনার বলি আমরা হতে খুব বেশি দেরি নেই।ইতিমধ্যেই আমরা আমাদের কৃষিকে বহুজাতিক কোম্পানিগুলুর বীজ এবং পেস্টিসাইডের উপর নির্ভরশীল করে ফেলেছি।আমদের দুর্ভাগ্য হল ভারতের কৃষকেরা মোদী আইনটি স্থগিতে বাধ্য করতে পারলেও এই দেশে এরকম কিছু হলে বুক পেতে দাঁড়ানোর জন্য কাউকে পাওয়া যাবে না।

মন্তব্য ১২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১২) মন্তব্য লিখুন

১| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ৮:১৬

চাঁদগাজী বলেছেন:



আপনি নিজে বুঝে, নিজের থেকে লিখেছেন, নাকি কপিপেষ্ট?

১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ৮:২২

মোহাম্মদ মোস্তফা রিপন বলেছেন: হনেস্টলি আপনার মত মানুষের কাছ থেকে এর থেকে ভালো কোন মন্তব্য আশা করি না।এবং আপনার মন্তব্যের রিপ্লাই দেওয়াটাকে অরুচিকর মনে করছি।

২| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ৯:১৩

চাঁদগাজী বলেছেন:



আপনি সঠিক মন্তব্যের উত্তর কখনো দিতে পারবেন বলে মনে হয় না; তবুও বিশাল গরুর রচনা লিখেছেন বলে প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে, প্রশ্ন করছি।

১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১১:১৬

মোহাম্মদ মোস্তফা রিপন বলেছেন: মি: গাজী আপনার মন্তব্যের রিপ্লাই দেওয়াটা অরুচিকর মনে করছি।আপনি হলেন পরশ্রীকাতর মানুষ।ওপেন স্পেসে বললাম আমার পোস্টে মন্তব্য করার যোগ্যতা আপনার নেই।কারন আমি যা লিখি তা নিয়ে মন্তব্য করতে গেলে সেই যথেস্ট ধারনা নিয়ে মন্তব্য করতে হয়।আর কোন লেখা পোস্ট করার আগে সেই বিষয়ে যথেস্ট তথ্য উপাত্ত হাতে রেখে তারপর পোস্ট করি।যদি কোন মানুষের কোন একটা বিষয়ে ধারনা থাকে তখন সে ঐ বিষয়ে মন্তব্যের সময় ভদ্রতার পরিচয় দেয়।আপনার মন্তব্য প্রমান করে সেই যোগ্যতা আপনার নেই এবং তাই আপনার যে কোন মন্তব্যের উত্তর দেওয়া অরুচিকর মনে করছি।

৩| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ৯:১৪

চাঁদগাজী বলেছেন:



আপনার মতে, আইন ৩টি ভারতের কৃষকদের বিপক্ষে গেছে, নাকি এখনো উহা পক্ষে আছে?

৪| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ৯:১৫

চাঁদগাজী বলেছেন:



কৃষকেরা পুরো ভারতের আগামী ১৫ বছরের খাদ্য পরিকল্পনা ভালো বুঝে, নাকি পরিকল্পনাকারীরা ভালো বুঝে?

৫| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ৯:১৬

চাঁদগাজী বলেছেন:



ণতুন আইন ৩টির ফলে, কৃষকেরা ( মুলত: ছোট কৃষকেরা ) লাভবান হবে, নাকি ক্ষতিগ্রস্ত হবে?

৬| ১৯ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ৯:৩৮

চাঁদগাজী বলেছেন:




আপনি চুপ কেন, প্রশ্নগুলো বেশী কঠিন হয়ে গেছে?

৭| ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১২:১১

রাজীব নুর বলেছেন: চাঁদগাজীর প্রশ্নের উত্তর যদি জানা থাকে দেন। না জানা থাকলে বলেন।

২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১:৪২

মোহাম্মদ মোস্তফা রিপন বলেছেন: ওনার প্রশ্নের উত্তর লেখাতে স্পষ্ট করে দেয়া আছে।আর ওনার মন্তব্যের বিপরীতে আমার রুচিতে বাঁধে কারন সে ভদ্র পল্লির বাসিন্দা বলে আমার মনে হয় না।

৮| ২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ৯:২৫

চাঁদগাজী বলেছেন:


আমি হয়তো আপনার সমান জানি না; কিন্তু আপনার লেখার প্যাটার্ণ থেকে বুঝা যাচ্ছে যে, আপনি যা কপিপেষ্ট করেন, সেটা আপনি বুঝেন না।

মোদী সরকার ঘাস কাটে না, ওরা ৩টি আইন করার পেছনে কারণ আছে; ইহাতে কৃষকেরা লাভবান হওয়ার কথা, সেই দিক আপনি বুঝেন? খালি গরুর রচনা লিখলে তো হবে না, গরুর পা কয়টা জানতে হবে!

২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০২১ রাত ১০:২৭

মোহাম্মদ মোস্তফা রিপন বলেছেন: আপনি হয়ত কপি পেস্ট মাষ্টার তাই অন্যের লেখাকে কপি পেস্ট ট্যাগ লাগান।এগুলু হিপোক্রেসি এবং বদ চরিত্রের লোকেরা না জেনে অন্যের বিষয়ে মিথ্যা ট্যাগ লাগায়।আপনার মত মাথামোটা আর বায়াস লোকদের মতে তারা লাভবান হবে।বিষয়টা এমন যে কাপড় পরলে আমার কি হবে সেটা আমি জানি না,আমার প্রতিবেশি অন্ধটা জানে।ভবিষ্যতে কোন মন্তব্য করতে আসলে যে বিষয়ে নিয়ে লিখি সেই বিষয়ে যথেষ্ট ধারনা নিয়ে ভদ্র/মার্জিত ভাষায় মন্তব্য করার চেষ্টা করবেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.