নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ক্রিটিক্যাল থিঙ্কিং এবাউট ওয়ার্ল্ড পলিটিক্স্,স্পেশালি মিনা রিজিয়ন। মেইনস্ট্রিম মিডিয়ার কিছুই বিশ্বাস করি না।

মোহাম্মদ মোস্তফা রিপন

দুনিয়ার খবর রেখে শান্তি পাই।

মোহাম্মদ মোস্তফা রিপন › বিস্তারিত পোস্টঃ

সুয়েজ খালের বিকল্প তৈরির উদ্ধেশ্যই হলো চলমান ফিলিস্তিনি গণহত্যার কেন্দ্রবিন্দু- বেন গুরিন ক্যানাল।

২৫ শে অক্টোবর, ২০২৪ দুপুর ১২:৪২

বেন গুরিন খাল প্রকল্পটি প্রাথমিকভাবে একটি ক্লাসিফাইড মার্কিন প্রকল্প ছিল যা ১৯৬৩ সালে লরেন্স লিভারমোর ন্যাশনাল ল্যাবরেটরি (LLNG) দ্বারা প্রণয়ন করা হয়েছিল, এটা একটা স্ট্র্যাটেজিক থিংক ট্যাংক যেটার নিয়ন্ত্রণ করে ইউএস ডিপার্ট্মমেন্ট অব এনার্জি। । LLNG প্রকল্পটি প্রনয়ন করা হয়েছিলো জুলাই ১৯৫৬ সালে, মিশরের রাষ্ট্রপতি গামাল আবদেল নাসের (১৯৫৬-১৯৭০) দ্বারা সুয়েজ খাল জাতীয়করণের প্রতিক্রিয়া হিসাবে। এর উদ্দেশ্য হলো সুয়েজ খালকে বাইপাস করা। ২০২৩ সালে বিজনেস Business Insider এই ডকুমেন্টটি প্রকাশিত হয়।
https://www.businessinsider.com/us-planned-suez-canal-alternative-israel-blast-with-nuclear-bombs-1960s-2021-3।
বেন গুরিন ক্যানালের উদ্ধেশ্য হলো ইজরায়েলের হাইফা বন্দরের সাথে,সৌদি আরবের পাশ দিয়ে প্রবাহিত হওয়া গাল্প অব আকাবা এবং লোহিত সাগরের সংযোগ ঘটানো।উল্লেখ্য মিশরের নিয়ন্ত্রাধীন সুয়েজ ক্যানালের মাধ্যমে দুনিয়ার মোট জ্বালানী চাহিদার ৩০% পরিবহন হয়।এবং এটা চীনের ওয়ান বেল্ট, ওয়ান রোড প্রজেক্টের অন্যতম কেন্দ্রবিন্দু।এতদিন এটা নিয়ে ওয়াশিংটন চুপ থাকলেও পরিবর্তিত বিশ্ব পরিস্থিতি এবং চীনের উত্থানের কারনে লিবারেল হেজমনিক অস্তিত্বের কারনে ওয়াশিংটনের এই প্রজেক্ট বাস্তবায়ন জরুরী হয়ে পড়েছে।এই প্রজেক্ট বাস্তবায়নে একমাত্র বাধা হলো এখন ফিলিস্তিনের গাজা স্ট্রিপ।
সুয়েজ ক্যানাল হলো দুনিয়ার অর্থনীতির প্রান।দুনিয়ার মোট জ্বালানী চাহিদার ৩০%, মোট পন্য চাহিদার ১০% সহ প্রায় ১৮ হাজার জাহাজ প্রতি বছর সুয়েজ ক্যানাল পার হয়। যা থেকে মিশরের আয় হয় ১০ বিলিয়ন ডলারের উপর।মিশর এখন খালটির মালিক, নিয়ন্ত্রণ এবং পরিচালনা করে, তবে এটি একসময় ফরাসি বিনিয়োগকারীদের মালিকানাধীন ছিল যাদের হাতে খাল কোম্পানির অর্ধেক স্টক ছিলো বাকি অর্ধেক ছিলো মিশরের শাসক সাঈদ পাশার হাতে।১৮৭৫ সালে সাঈদের উত্তরসূরি ইসমাইল পাশা মিশরের হাতে অর্ধেক শেয়ার ব্রিটেনের কাছে বিক্রি করে দেয়।। মিশরের রাষ্ট্রপতি গামাল আবদেল নাসের ১৯৫৬ সালে খালটি পুরু জতীয়করন করেন। সেটা পরে সুয়েজ সংকট, বা দ্বিতীয় আরব-ইসরায়েল যুদ্ধে রুপ নেয়।
যেদিন খালটি জাতীয়করণ করা হয় সেদিনই নাসের তিরান প্রণালী দিয়ে ইসরায়েলি জাহাজ চলাচল বন্ধ করে দেন। সঙ্কটের কারণে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স এবং ইসরাইল মিশর আক্রমণ করে। পূর্ব পরিকল্পনা অনুসারে, ইসরায়েল ১৯৫৬ সালের ২৯ অক্টোবর মিশরের সিনাই উপদ্বীপে আক্রমণ করে। অ্যাংলো-ফরাসি জোট মিশরের অবস্থানকে মধ্যপ্রাচ্যের স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি হিসাবে ঘোষণা করে যুদ্ধে প্রবেশ করার অজুহাত হিসেবে যাতে নাসেরকে ক্ষমতা থেকে সরিয়ে সুয়েজ খালের নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধার করতে পারে।
মিশরের বর্তমান স্বৈরশাসকেরা এগুলো বুঝলেও শুধু ক্ষমতা আঁকড়ে থাকার স্বার্থে মিশর এবং উম্মতের স্বার্থকে বিসর্জন দিচ্ছে।এই জন্যই পুরু মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে এরকম স্বৈরশাসকদের জোড় করে ক্ষমতায় থাকা নিশ্চিত করছে জায়নিস্ট-লিবারেল দুনিয়া।
প্রশ্ন হলো গাজায় গনহত্যার সাথে এর সম্পর্ক কি?
নেতানিয়াহুর অব্যাহত যুদ্ধাপরাধ এবং আমেরিকার বিনা শর্তে সমর্থনে এটা স্পষ্ট যে তারা বেন গুরিওন খাল নিয়ে আর দেরি করতে চাইনা।২০২১ সালে সুয়েজ ক্যানালে এভার গিভেন নামক জাহাজের আটকে যাওয়ার পর বিশ্ব বানিজ্য কিরকম বাধাগ্রস্থ হয়েছিলো সেটা সবার জানা।কোন কারনে মিশর যদি সুয়েজ ক্যানাল বন্ধ করে দেয় তাহলে লিবারেল দুনিয়ার আর নড়াচড়ার কোন পথ খোলা থাকবে না।অন্যদিকে চীনকে শায়েস্থা করতে ওয়াশিংটনের জন্য সুয়েজ ক্যানালের বিকল্প দরকার।
তিরান প্রণালী এবং সুয়েজ খাল ১৯৪৮ সালে ইসরায়েল সৃষ্টির পর থেকে এবং ১৯৫৬ সালে সুয়েজ সংকট পর্যন্ত নাকবা ইসরায়েলি জাহাজের জন্য আনুষ্ঠানিকভাবে বন্ধ ছিল। যখন সমস্ত স্থল পথে বাণিজ্য রুট আরব রাষ্ট্রগুলি দ্বারা অবরুদ্ধ ছিল, তখন ইসরায়েলের পূর্ব আফ্রিকা এবং এশিয়ার সাথে বাণিজ্য করার ক্ষমতা হ্রাস পায়। প্রধানত পারস্য উপসাগর থেকে তেল আমদানি গুরুতরভাবে বাধাগ্রস্ত হয়েছিল।
বেন গুরিওন ক্যানাল, সুয়েজ ক্যানাল থেকে এক তৃতীয়াংশ দীর্ঘ হবে।সুয়েজের দৈর্ঘ হলো ১৯৩ কিলোমিটার, পক্ষান্তরে বেন গুরিওনের দৈর্ঘ হলো ২৯২ কিলোমিটার।এই খালের জন্য খরচ হবে ১৬-৫৫ বিলিয়ন ডলার।যে এই ক্যানাল নিয়ন্ত্রণ করবে নিশ্চিতভাবে বিশ্বব্যাপি বানিজ্যের উপর তার নিয়ন্ত্রণ থাকবে।গাজাকে ধংশ করে এর নিয়ন্ত্রণ নিতে পারলে বেন গুরিওনের দৈর্ঘ এবং খরচ দুটোই কমে যাবে।এই কারনেই মুলত এবারের গাজার গনহত্যা এবং ওয়াশিংটন বিনা বাক্যে এটার সমর্থন দিচ্ছে।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.