নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
নেপালে যারা ভ্রমণে যান তারা মূলত কাঠমান্ডু থেকে ২৭ কিলোমিটার দূরে নাগারকোট ও ২০৪ কিলোমিটার দূরে পোখরাতেই মূলত ঘুরতে যান। বছরের প্রায় সবসময় পর্যটকদের পদচারণায় মুখর থাকে পোখরা শহরটি। বিশেষ করে এতে ইউরোপীয় দেশগুলোর পর্যটকদের ভিড় বেশি দেখা যায়। এছাড়া পাশ্ববর্তী ভারত, বাংলাদেশ ও চীন থেকে আসা পর্যটকও রয়েছে অনেক।
এই পোখরায় অবস্থিত স্বাদুপানির লেক হলো ‘ফেওয়া লেক’। সারাংকোট ও কাসিকোট গ্রামের সন্নিকটে এই লেকের অবস্থান। প্রাকৃতিক ঝর্না এই লেকের পানির উৎস হলেও বাঁধের মাধ্যমেও পানি ধরে রাখা হয়। তাই এটি পুরোপুরি প্রাকৃতিক লেক নয়।
উইকিপিডিয়ার তথ্য মতে, নেপালের দ্বিতীয় বৃহত্তম লেক হলো ফেওয়া লেক। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এটি ৭৪২ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত। লেকের আকার ৫.২৩ বর্গকিলোমিটার, এর গড় গভীরতা ২৮ ফুট এবং সর্বোচ্চ গভীরতা ৭৯ ফুট। লেকের সর্বোচ্চ জলধারণ ক্ষমতা ৪,৩০,০০,০০০ ঘনমিটার। অন্নপূর্ণা পর্বতশ্রেণী এই লেকের উত্তর প্রান্ত থেকে মাত্র ২৮ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। মাছাপুছারে পর্বতের অপূর্ব প্রতিফলনের জন্য এই লেক বিশেষ জনপ্রিয়।
ফেওয়া লেক এবং সংশ্লিষ্ট এলাকা পোখারা অঞ্চলের প্রধান পর্যটন আকর্ষণ। ফেওয়া লেকের উত্তর প্রান্ত পোখারার পর্যটন অঞ্চল হিসেবে গড়ে উঠেছে। এই এলাকাটি সাধারণত লেক-সাইড নামে পরিচিত। ফেওয়া লেককে কেন্দ্র করে এখানকার পর্যটন ব্যবসা জমজমাট। কেননা এখানে রয়েছে নানা রকম রেস্টুরেন্ট, ক্যাফে, ড্যান্সবার, আর্ট গ্যালারি, রেস্টুরেন্টে লাইভ মিউজিকসহ নানারকম ব্যবসা। পর্যটকদের নিরাপত্তা ব্যবস্থাও বেশ ভালো।
লেকের পাশে ননা রকম সিজনাল ফল পাওয়া যায়। এছাড়া স্ট্রিট ফুডও অনেক মজাদার। তবে যেটাই খান না কেন অবশ্যই দামাদামি করে নেবেন।
ফেওয়া লেকে ঘোরার জন্য রঙবেরঙের নৌকা ভাড়া পাওয়া যায়। প্যাডেল বোটও পাওয়া যায়। একা অথবা মাঝিসহ ঘন্টা কিংবা সারাদিনের চুক্তিতেও নৌকা ভাড়া নেয়া যায়। তবে নৌকাতে লাইফ জ্যাকেট পরিধান করা বাধ্যতামূলক। নৌকায় ওঠার জন্য মাঝির সঙ্গে ভাড়া নিয়ে দামাদামি করার দরকার নাই। কারণ ঘাটেই বিভিন্ন নৌকার জন্য ঘন্টা অনুযায়ী রেট চার্ট লাগানো আছে। তাও আইডিয়ার জন্য বলি, সর্বনিম্ন ৫৬০ থেকে সর্বোচ্চ ৩৮৬০ নেপালী রূপির মধ্যে নৌকা ভাড়া করতে পারবেন। আমরা মাঝিসহ সাধারণ বৈঠা দিয়ে চালানো নৌকা এক ঘন্টার জন্য ভাড়া করেছিলাম। তিনজনের জন্য মোট লেগেছিল ৫৯০ রূপি।
চারদিকে উঁচু পাহাড়, মাঝখানে লেকটির অবস্থান। সূর্যের আলোর তারতম্যের কারণে লেকের পানির রং বদলে যায়। এ দৃশ্য দেখতে বেশ ভালো লাগে। লেকের পানির উপর উড়ছে নাম না জানা অনেক পাখি। লেকটি পাখিদের অভয়ারণ্য।
লেকের মাঝে একটি মন্দির আছে, নাম ‘তাল বরাহী মন্দির’। এটি পোখারা অঞ্চলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় স্থাপনা। মন্দিরটি হিন্দু দেবতা বিষ্ণকে উৎসর্গ করে নির্মিত হয়েছে। নৌকা এই মন্দিরে যেয়ে কিছুক্ষণ সময় বিরতি নেয়। এই সময় ভ্রমণকারী মন্দিরের আশেপাশে ঘুরে দেখে, ছবি তোলে। হিন্দুধর্মালম্বীরা মন্দিরে গিয়ে পূজা করে। মন্দির প্রাঙ্গণে প্রচুর কবুতর রয়েছে। অনেক পর্যটকই কবুতরগুলোকে বিভিন্ন খাবার খেতে দেন, ছবি তোলেন। কবুতরগুলো নির্ভয়ে সকলের কাছে আসে।
এই ফেওয়া লেকের পানি থেকেই উৎপন্ন হয়েছে পোখরার আরেকটি দর্শনীয় স্থান ডেভিস ফল। এই ডেভিস ফল লেকের পানিই ঝর্ণাধারা হয়ে নেমে আসে। এছাড়া ফেওয়া লেকের পানিপ্রবাহ দিয়ে বিদ্যুৎ উৎপাদিত হয়। ফেওয়া লেকের দক্ষিণ প্রান্ত থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে বিদ্যুৎ কেন্দ্রটি অবস্থিত। এই লেকের একটি অংশ বাণিজ্যিকভাবে মৎস্য উৎপাদনেও ব্যবহৃত হয়।
কিভাবে যাবেন:
নেপালের রাজধানী কাঠমান্ডু থেকে পোখরার উদ্দেশ্যে নিয়মিত বাস ও শেয়ারিং মাইক্রোবাস যায়। ভাড়া নেবে জনপ্রতি ৫০০ নেপালী রূপি করে। সময় লাগবে ৫ থেকে ৬ ঘন্টা। তবে রাস্তায় গাড়ির চাপ ও জ্যাম থাকলে সময় বেশি লাগতে পারে। এছাড়া রিজার্ভ এসি ও নন-এসি গাড়িও ভাড়া নিয়ে যেতে পারেন। সেক্ষেত্রে ভাড়া পড়বে ১০ থেকে ১২ হাজার নেপালী রূপি। এছাড়া কাঠমান্ডু থেকে বিমানযোগেও পোখরা যেতে পারেন। বুদ্ধা এয়ার, ইয়েতি এয়ারলাইনস, সিমরিক এয়ারলাইনস প্রভৃতি ডোমেস্টিক বিমানে যাওয়ার সুযোগ আছে। ভাড়া পড়বে ১২০ ইউএস ডলারের মতো। বিমানে যেতে সময় লাগবে মাত্র ২৫ মিনিট।
২| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ৯:৪২
চাঙ্কু বলেছেন: লেকটা সুন্দর আছে!!
৩| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ৯:৪৪
মাকার মাহিতা বলেছেন: লেকের স্বচ্ছ জলে খেই হারিয়ে ফেললুম।
৪| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৮ সকাল ১০:০৩
মাহবুবুল আজাদ বলেছেন: নেপাল যাওয়া হয়নি কখনো এসব লেখা পড়লে খুব যেতে ইচ্ছে করে।
দেখা যাক কোন একদিন সময় হবে, সুযোগ হবে।
পোস্টে ভাল লাগা+++++
৫| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৮ দুপুর ১২:২৮
রাজীব নুর বলেছেন: ছবি এবং লেখা দু'টাই বেশ ভালো।
©somewhere in net ltd.
১| ২১ শে অক্টোবর, ২০১৮ ভোর ৪:৩৫
স্বপ্নের শঙ্খচিল বলেছেন: পোখরার বেড়ানোর সখ আছে,
তবে সময় হয়ে উঠছে না।
ধন্যবাদ বর্ননার জন্য