![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
প্রতিবন্ধী বাবাকে ঘরে রেখে ছোটবেলায় ভিক্ষা করতেন। পাতাও কুড়িয়েছেন অভাবের অন্ধকার দিনগুলোতে। একসময় বিয়ে। কিন্তু ভাগ্যের সাড়া মেলা ভার।বিয়ের পরেও আসে না সুদিন। স্বামীর সাথে ঝগড়া করে আলাদা হয়ে যেতে হয় তাকে।ইতোমধ্যে জন্ম হয়েছে কন্যাসন্তানের।
মেয়েকে নিয়েই এবার নতুন উদ্যমে চাকরি নেন প্লাস্টিকের কারখানায়। সেখানেও মেয়ের খেয়াল রাখতে গিয়ে নিয়মিত কাজ করতে পারেন না তিনি। এমনি করে সে কাজটিও ছাড়তে হয় তাকে। মেয়েটির নাম সুমি।
এ শহরেই তার জন্ম, দুর্দশার সাথে বেড়ে ওঠা। জীবনের এমন কঠিন পর্যায়ে এসে যখন আর কিছুই মিলছিল না তখন সুমি তার মামার ভ্যান চালনা শিখেন।
সুমির মতন আরেক অভাগিনীর নাম ফাতেমা খালা। টিভি বিজ্ঞাপনে অনেকেই হয়তো "ফাতেমা খালা" খ্যাত এই মহিলাকে দেখেছেন। যিনি জীবিকার তাগিদে সব সংকোচ, ভয় পেছনে ফেলে রিক্সার প্যাডেলে পা চালিয়ে যাচ্ছেন প্রতিনিয়ত।
ফাতেমা খালার গল্প আর সুমির গল্প প্রায় এক। স্বামীর সংসার তার কপালে ছিল না।স্বামী আরেকটি বিয়ে করে সংসার ছেড়ে চলে যাওয়ায় সন্তানদের ভরণ-পোষণের দায়িত্ব নিজের ঘাড়ে তুলে নেন তিনি। রিকশা চালিয়ে জীবন সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন এই সাহসী নারী।
সুমি কিংবা ফাতেমার গল্প হাতেগোনা কয়েকটি নয়। আমাদের সমাজের বিচিত্র সব ঘটনার মধ্য থেকে আলাদা করার মত কোন ঘটনা নয়। বলতে গেলে ’ঘর ঘর কী কাহানী”। এ্টা নিছক কোন কাহিনীও নয়। বাঙালী পৌরুষের কপালে লেগে থাকা নির্লজ্জতা।আমাদের সমাজের আর দশটি লজ্জার একটা বড় লজ্জা। পরিচ্ছন্ন অাধুনিক যুগের গায়ে লেগে থাকা ময়লা ।
তথাকথিত সমাজপতিদের দৃষ্টির অগোচরে রয়ে যায় আমাদের সুমি আপা কিংবা ফাতেমা খালার অশ্রুভজা চোখ। আজ হয়ত তাদের কাছে রিক্সা চালানোর ব্যাপারটা স্বাভাবিক হয়ে গেছে। কন্তু,
একদিন এরকম ছিল না।
তাদেরও একটা স্বপ্ন ছিল। মনের গহিনে লুকিয়ে ছিল স্বামী-সংসারের উচ্ছ্বাসা। মায়ের মমতা সন্তানকে বিলিয়ে দেওয়ার আকাঙ্ক্ষা। সব ভুলে আজ তারা রিক্সার প্যাডেলে। এ আমার লজ্জা। ১৬ কোটি বাঙালির গায়ে লেগে থাকা অপমান।
এ এমন এক লজ্জা, যা নারীবাদীদের 'লজ্জা'য় লাথি মেরে বলে 'আমিও মা হতে চেয়েছিলাম!' 'আমি একজন স্ত্রী হতে চেয়েছিলাম !'
©somewhere in net ltd.