![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মাটি ও মানুষের কথা ৪
তিন দশকের প্রযোজকগণ
১৯৮৩ সালে যখন আমি মাটি ও মানুষের সাথে যুক্ত হই তখন এর প্রযোজক ছিলেন মরহুম আলিমউজজামান। তাঁর হাতেই এই অনুষ্ঠান সবচেয়ে বেশি বিকশিত হয়। বিশেষত মাঠ রিপোর্টিং, কৃষকদের অংশগ্রহণে প্রতিযোগিতা, কৃষি কাজে মহিলা এবং সাম্প্রতিক বিষয়গুলো এই সময়ে বেশি করে আসতে থাকে। প্রথম দিকে অনুষ্ঠান ছিল স্পট এডিটেড। কিন্তু তার হাতেই টেলিভিশন এডিটিং সুবিধা দেওয়া শুরু করে, মাঝে মাঝে স্টুডিও রেকর্ডিং এর কাজও হতে থাকে। ঢাকার বাইরে মাটি ও মানুষের টিম নিয়ে ভ্রমণ তার আমলেই শুরু হয় । আমরা সদলবলে ময়মনসিংহ, রংপুর, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, সিলেট সহ অনেক এলাকায় যাওয়া শুরু করি। মাটি ও মানুষে আসে নতুন বৈচিত্র।
তখন ক্যামেরাম্যান হিসেবে আমাদের সঙ্গে যেতেন- আনোয়ার হোসেন বুলু, জালাল খান, আহসান নেওয়াজ বাবু, জুলফিকার রহমান সহ আরো অনেকে। এই ভ্রমণগুলো ছিল একেকটা ইতিহাস এবং আনন্দময় স্মৃতি।
আলিমউজ্জামান একবার জাপান গেলেন কোনো এক প্রশিক্ষণে। তখন সামান্য কয়েকদিনের জন্য প্রযোজকের দায়িত্ব পালন করেন রেজাউল করিম।
তবে দুলু ভাইয়ের পর সবচেয়ে বেশি যিনি দায়িত্ব পালন করেছেন তার নাম রফি আহমেদ সুলতান। সুলতান ভাইয়ের কথা না বললে এই অনুষ্ঠানের সঠিক ইতিহাস বলা যাবে না।
সুলতানভাই এমন একজন মানুষ যাকে আমরা শিশুর মতো সরল বলে জানতাম। অকে সময় ঠাট্টা করে বলতাম শিশু সুলতান। এই অনুষ্ঠানের সাথে লেপ্টে ছিলেন জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত। অবশ্য এর মাঝে তিনি পদোন্নতি পেয়ে অনুষ্ঠান অন্যদের কাছে দিয়েছেন- অবসরে গেছেন অথচ এই অনুষ্ঠানটি ধারণ করেছেন নিজের হৃদয়ে। মারা যাওয়ার কয়দিন আগেও আমার সাথে ফোনে কথা হয়েছে,অনেক অভিমান ছিল আমরা কেউ দেখা করিনা বলে কিন্তু তিনি আমাদের টীমকে ভালবেসে গেছেন আমৃত্যু।
আমি ব্যক্তিগতভাবে সুলতান ভাইয়ের কাছে কৃতজ্ঞ তার অকুণ্ঠ সমর্থনের জন্য। কখনো কোনো কাজে তিনি বাধা দেন নি। বরং যা করতে চেয়েছি সেটি করার ক্ষেত্রে সহায়তা দিয়েছেন। ১৯৯২ সাল থেকে ২০০১-২ পর্যন্ত অনেকটা নিরবচ্ছিন্নভাবে মাটি ও মানুষ করে গেছেন তিনি।
মাটি মানুষের স্মৃতি কথনে তার কথা বার বারই আসবে।
এই অনুষ্ঠানের আরেক প্রযোজক- আব্দুল হালীম। সড়ক দূর্ঘটনায় তার অকাল মৃত্যু হয়েছে। তিনি এক সময় রফি আহমেদ সুলতানের অনুষ্ঠান সহযোগী ছিলেন। পরে প্রযোজক হন। বিশেষ করে আওয়ামী লীগের শেষ আমলে ২০০১ এর দিকে তার হাতে দায়িত্ব এসে পড়ে। তারপর দীর্ঘদিন এই অনুষ্ঠান প্রযোজনা করেছেন।
এটিমএম শামসুল হুদা, ফারুক ভুইয়া, মোশারফ হোসেন, স্বল্প সময়ের জন্য ফরিদুল হক, রিয়াজউদিদন বাদশা এই অনুষ্ঠানের সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন।
এছাড়াও শরীফ আহমেদ, দীলীপ দাস এর প্রযোজনা করেছেন অনেক দিন।
মাটি মানুষের সাথে যুক্ত থেকেছেন অনেক ক্যামেরাম্যান। সমীর কুশারী, আহসান নেওয়াজ, আনোয়ার হোসেন বুলু, জুলফিকার হোসেন, জালাল খান, হাসানুদ্দৌলা চৌধুরি, মুনির হোসেন সহ অনেক ক্যারোম্যান এর ঋণে আবদ্ধ এই অনুষ্ঠান। আবার অনেকেই এই অনুষ্ঠানের কাজ করেই নিজেদের হাত পাকিয়েছেন।
এই পাস্পারিক দেওয়া নেওয়ার মধ্য দিয়েই সবার সাথেই গড়ে উঠেছে এক অসাধারণ সম্পর্ক। আমরা একে অপরের বন্ধু, ভাই ও আত্মীয়ের মতো নিজেদের সময় কাটিয়েছি। ঝগড়া করেছি, আনন্দ করেছি, পরস্পরের সুখে দুখে পাশে দাড়িয়েছি এবং এভাবেই কেটে গেছে আমাদের সময়।
বিশেষ করে একেকটা সফর শেষ করে আবার কোথায় যাচ্ছি, কি করবো, এনিয়ে পরিকল্পনার অন্ত থাকতো না। যে কারণে প্রতিদিনের পরিশ্রমটা কখনো পরিশ্রম মনে হতো না- চলার পথে, কাজের ফাকে, আনন্দ উচ্ছ্বলতায় ভরে থাকতো সময়। আমার বিশ্বাস-- মাটি ও মানুষে কাজ করেছেন তার জীবনের অন্যতম শ্রেষ্ঠ স্মৃতি এখানেই লুকিয়ে আছে। যারা জীবীত আছেন তারা একবাক্যে এ কথা স্বীকার করবেন।
আমি আমার কথাগুলো লিখবো এমনিভাবে হয়তো তার পরও অনেক কথা হারিয়ে যাবে স্মৃতির গর্র্ভে। সবতো আর মনে থাকবে না-- তবে কিছু তো থাকবে!
আগের পোষ্টগুলো এখানে দেখুন
মাটি ও মানুষের কথা ১
Click This Link
মাটি ও মানুয়ের কথা ২
Click This Link
মাটি ও মানুষের কথা ৪
Click This Link
১৯ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ৯:১৫
রেজা সিদ্দিক বলেছেন: ধন্যবাদ।
২| ২১ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ২:০০
বিতর্কিত বিতার্কিক বলেছেন: পর্দার পিছনের গল্প ভালই লাগছে।
২১ শে মার্চ, ২০১৩ সকাল ৭:০৬
রেজা সিদ্দিক বলেছেন: ধন্যবাদ
৩| ২৭ শে এপ্রিল, ২০১৩ ভোর ৬:২৯
বাউন্ডুলের গল্প বলেছেন: এটাও পড়লাম। ভাই আমার অনুরোধটার কি করলেন!????
২৭ শে এপ্রিল, ২০১৩ সকাল ১০:৫৩
রেজা সিদ্দিক বলেছেন: আমার তো মাথাই নষ্ট
©somewhere in net ltd.
১|
১৯ শে মার্চ, ২০১৩ রাত ৯:১০
কালোপরী বলেছেন: +++++++++++