![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মাটি ও মানুষের কথা ৬
মাটি ও মানুষ অনুষ্ঠানটির অন্তরালে রয়েছে অনেক ঘটনা। বাংলাদেশ টেলিভিশনের আর্কাইভে পুরানো অনুষ্ঠান হিসেবে এর সংরক্ষিত কপি আছে বলে আমার জানা নেই। অথচ গত তিন যুগে এই অনুষ্ঠানে প্রচারিত হয়েছে কত প্রতিবেদন, কত নতুন প্রযুক্তি।
আলিমউজ্জামানের পর এই অনুষ্ঠানের অন্যতম প্রযোজক ছিলেন রফি আহমেদ সুলতান। খুবই সরল প্রকৃতির একজন মানুষ। ৯০ এর দশকের পুরোটা সময় তিনি এই অনুষ্ঠানে সম্পৃক্ত ছিলেন। তখন অনুষ্ঠান ধারণ করা হতো ইউমেটিক সিস্টেমে। আমরা পুরানো অনুষ্ঠানগুলোর একটি সংগ্রহ গড়ে তুলেছিলাম। প্রায় ৫০টিরও বেশি ক্যাসেট- প্রতিটি ৯০ মিনিট, ঠাসা ছিল পুবানো এবং সফল অনুষ্ঠান নিয়ে। যখন কোনো প্রতিবেদন করতে যেতাম সেখান থেকে ভিস্যুয়াল সাপোর্ট নিতে পারতাম।
মাছ পালন, মুরগি পালন, গরু মোটাতাজাকরণ এসব বিষয়ে অসংখ্য প্রযুক্তি আমরা সংরক্ষণ করেছিলাম। কিন্তু এখন এগুলোর কোনো হদিস আমাদের কাছে নাই।
কিভাবে কোথায় গেল- সেটা অনেক বড় প্রশ্ন।
৯৬ সালের দিকে জনাব শাইখ সিরাজকে মাটি ও মানুষ অনুষ্ঠান থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। এর কারণটা কি রাজনৈতিক না ব্যক্তিগত তা আমার জানা নেই। তখন টেলিভিশনের মহাপরিচালক ছিলেন শাহরিয়ার জেড ইকবাল। তার নির্দেশেই শাইখ সিরাজকে সরিয়ে দেওয়া হয়।
আমার যতটা মনে পড়ে- আমি এডিটিং এর কাজে ব্যস্ত ছিলাম। এমন সময় সুলতান ভাই (প্রযোজক) আমাকে বললেন- নওয়াজিস আলী খান আপনাকে দেখা করতে বলেছেন। নওয়াজীস আলী খান তখন জেনারেল ম্যানেজার। আমি গেলাম। তিনি আমাকে এবং সুলতান ভাইকে বললেন-- শাইখ ছাড়া কি অনুষ্ঠান হবে না? সুলতান ভাই বললেন- শাইখ সিরাজের আগে থেকেই রেজা ভাই অনুষ্ঠান করছেন- অতএব তিনিই পারবেন। আমি বললাম-- হঠাৎ এই প্রশ্ন কেনো?
নওয়াজীস আলী খান আমাকে বললেন-- আপনাকেই করতে হবে। আমি বললাম-- আমি তো কাজ করি কলেজে একা এতটা দায়িত্ব নেওয়া কঠিন। তখন সুলতান ভাই বললেন-- আমরা দেওয়ান সিরাজকে সাথে নিতে পারি। এতে সুবিধা হবে।
পরের সপ্তাহ থেকেই শাইখ সিরাজ বাদ পড়ে যান।
এই প্রসঙ্গটি এখানে আনার একটি কারণ আছে। কথাটি হচ্ছিল সংরিক্ষত অনুষ্ঠান নিয়ে।
এরই মধ্যে হঠাৎ করে উপস্থাপন বিভাগ নোটিশ জারি করেন-- সব অনুষ্ঠান লাইব্রেরীতে রংরক্ষণ করা হবে অতএব সবাই যেন ক্যাসেট জমা দেয়। উল্লেখ্য উপস্থাপন বিভাগের দায়িত্বে ছিলেন বিখ্যাত শিশু সাহিত্যিক। নামটা না হয় নাই বললাম। তার নির্দেশে অনেকগুলো ক্যাসেট চলে যায় লাইব্রেরিতে। কিন্তু কিছু ক্যাসেট আমরা রেখে দেই যেগুলো নিয়মিত কাজে লাগতো। আমরা তারপরও আরো ২০টির মতো ক্যাসেটে পুরানো অুনষ্ঠান সংরক্ষণ করতে থাকি।
একদিন সেই শিশু সাহিত্যিক- সুলতান সাহেবের আলমিরা ভেঙ্গে সব ক্যাসেট নিজের হেফাজতে নিয়ে নেন। বড় কর্তাদের কাজ-- কে বাধা দেবে?
এর মধ্যে অনেকটা বছর পার হয়ে গেছে-- লাইব্রেরীতে মাটি ও মানুষ নাই। একটু দুইটা ক্যাসেট ছাড়া একেবারেই নেই। এর মধ্যে বিশেষ একটি চ্যানেল অনুমোদিত চ্যানেল হিসেবে কাজ শুরু করেছে। সেখানে দেখা গেল-- মাটি ও মানুষের ফুটেজ।
আমাদের বুঝতে বাকি রইলো না দেশের নামকরা নন্দিত প্রাজ্ঞ জনেরা কতটা অনৈতিক আচরণ করতে পারেন। তার কারণও ছিল-- ঐ চ্যানেলের সাথে ব্যবসা শুরু করেছিলেন তিনি।
আসলে এ ভাবেই সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রী হয়ে যায়।
২০০৭ সালে ফ্রান্স জামার্নির একটি টিভি চ্যানেলের পক্ষে মাটি ও মানুষের উপর ডকুমেন্টারি করতে এসিছিল একটি দল। সেদিন বাংলাদেশ টেলিভিশন পুরানো কোনো ফুটেজ দিতে পারে নাই। আমার নিজের সংগ্রহে থাকা ভিএইচএস ফুটেজই তাদের দিয়েছিলাম।
মাটি ও মানুষ একটি টীম ওয়ার্ক। নেপথ্যের কর্মী, মাঠের কুশীলব, আর আমাদের মতো উপস্থাপকরা এটির সাথে জড়িত। তবে মানুষ আমাদেরকেই বেশি চেনে। এটা আসলে আমাদের যতটা কৃতিত্ব তার চেয়ে বেশি সাধারণের বদান্যতা। অন্যের বদান্যতাকে অগ্রাহ্য করে নিজেকে বড় করার চেষ্টা করতে গিয়ে আসছে বিচ্ছিন্নতা তৈরি হয়।
আমার সৌভাগ্য, আমি এখনো মাটি ও মানুষের সাথেই আছি- সেটা পর্দায় নয়- অন্তরে।
পর্দায় এক সময় হয়তো থাকা আর হবে না- কিন্তু হৃদয়ের স্থান পাওয়াটাই অনেক বড়।
০৬ ই এপ্রিল, ২০১৩ বিকাল ৫:৩৪
রেজা সিদ্দিক বলেছেন: আপনাকে ধন্যবাদ
২| ০৭ ই এপ্রিল, ২০১৩ রাত ১১:১২
শব্দহীন জোছনা বলেছেন: কিন্তু হৃদয়ের স্থান পাওযাটাই অনেক বড়
সবাই যদি এটা বুঝত , তাহলে হয়তোবা মানুষ গুলো আরও অনেক বেশী সুন্দর হত।
০৮ ই এপ্রিল, ২০১৩ বিকাল ৫:৫৪
রেজা সিদ্দিক বলেছেন: আপনাকে অনেক ধন্যবাদ
৩| ০৮ ই এপ্রিল, ২০১৩ সন্ধ্যা ৬:৪০
বিতর্কিত বিতার্কিক বলেছেন: " লাইব্রেরীতে মাটি ও মানুষ নাই। একটু দুইটা ক্যাসেট ছাড়া একেবারেই নেই। এর মধ্যে চ্য্ানেল আই অনুমোদিত চ্যানেল হিসেবে কাজ শুরু করেছে। সেখানে দেখা গেল-- মাটি ও মানুষের ফুটেজ।
আমাদের বঝতে বাকি রইলো না আলী ইমাম সাহেবের মতো প্রাজ্ঞ জনেরা কতটা অনৈতিক আচরণ করতে পারেন। তার কারণও ছিল-- চ্যানেল আইয়ের সাথে ব্যবসা শুরু করেছিলেন তিনি।
আসলে এ ভাবেই সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কাছে বিক্রী হয়ে যায়"
আমি স্তব্ধ। এই বিষয়টি শাস্তি যোগ্য অপরাধ। অন্তত চুরির মামলা দিয়ে অপরাধ প্রমান করা সম্ভব।
উনারা এখন বিশাল ব্যক্তিত্ব। চোখে তাঁদের "নুবেল" এর খায়েশ। সবই পিছনের দরজা দিয়ে। সামনের দরজার বাইরে দাড়িয়ে আমরা হাততালি দেই।
০৯ ই এপ্রিল, ২০১৩ ভোর ৫:২৮
রেজা সিদ্দিক বলেছেন: কোনো মানুষের ব্যক্তিগত চরিত্র হরণের জন্য এটা লিখিনি কিন্তু সত্যটা আড়াল করাও যায় না। আসলে নৈতিকতার মানতো একেক জনের কাছে একেকরকম। উনি হয়তো ওটাকে অনৈতিক বলে মনেই করেন না।
ধ্ন্যবাদ আপনার মন্তব্যের জন্য।
৪| ২৭ শে এপ্রিল, ২০১৩ ভোর ৬:০৬
বাউন্ডুলের গল্প বলেছেন: ভাই!!!! আপনি সেই ব্যক্তি! বুঝতে পারিনি। সহস্র সালাম আপনাকে। ছোটবেলায় বাবার সাথে বসে আপনার অনুষ্ঠান দেখেছি। বাবা আপনার অনুষ্ঠান দেখে দেখে বাগান করতেন, গাভী পালতেন। সরকারী চাকুরী করতেন আমার বাবা। কিন্তু সাত সন্তানের লেখা পড়ার খরচ যোগাতে আপনার অনুষ্ঠান দেখে দেখে অনেক কিছু করতেন। আপনার কাছ থেকে অনেক অনুপ্রেরনা পেয়েছি ভাই। তাইতো মাটি ও মানুষের কথা আজীবন হৃদয়ে ধরে রাখবো। আপনার অনুপ্রেরণায় ক্ষূদ্র উদ্যোগ
৫| ২৭ শে এপ্রিল, ২০১৩ ভোর ৬:১১
বাউন্ডুলের গল্প বলেছেন: ভাই আপনার সঙ্গে আমি দেখা করতে চাই। আপনার কাছ থেকে এক কাপ চা খাবো। না করবেন না। ভাই আপনার সঙ্গে দেখা না হলে আমি মানের শক্তি হারিয়ে ফেলব। আপনার উৎসাহ আমার হৃদয়ে রয়েছে। আপনার ঠিকানা যদি দেন আমি হাজির হয়ে যাব। আমার ঠিকানা
মোঃ আব্দুল আহাদ লিও
ম্যানেজিং পার্টনার
স্টীলবন্ড
৬৭৯, পশ্চিম কাজীপাড়া
মিরপুর, ঢাকা - ১২১৬
01972026535
[email protected]
৬| ২৭ শে এপ্রিল, ২০১৩ ভোর ৬:৪০
বাউন্ডুলের গল্প বলেছেন: ভাই কোথায় চা খাওয়াবেন বলেন? এক কাপ চায়ের জন্য এতোবার অনুরোধ করছি। মাটি ও মানুষকে ভালোবাসি বলেই।
২৭ শে এপ্রিল, ২০১৩ সকাল ১০:৫৬
রেজা সিদ্দিক বলেছেন: আমাকে মেই ল করেন
আমি সময় দেবো। নিশ্চিত
[email protected]
প
©somewhere in net ltd.
১|
০৬ ই এপ্রিল, ২০১৩ বিকাল ৩:০৪
কালোপরী বলেছেন: অনেক কিছু জানলাম
ধন্যবাদ