![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমার তেমন জানাশোনা নেই। তবুও
ওনাকে আমি চিনি। ক্রিকেট খেলার মাঠে
হয়ত ওনার সাথে খেলেছিও দু-একদিন।
আমার কিছু বন্ধুদের বেশ জানাশোনা ।
আমাদের এক ব্যাচ সিনিওর।
শুনেছি বেশ ভদ্র, কম কথা বলে,আল্লাহ
ভক্ত লোক। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আদায়
করে। রমজান মাসে মসজিদের ইফতারির
শরবত তৈরিতে তার জুরি মেলা ভার।
মসজিদের খেদমতেও ঈমামের মুখে ওনার
নাম।
ছেলে বেলায় বাবা কি, তা বোঝার আগেই
বাবাকে হারিয়েছে। তার মা সেই
থেকে তাকে আর তার এক বোনকে নিয়ে,
বেঁচে থাকার সপ্ন বুনছে।
বুনতে বুনতে নিজের জীবন বিসর্জন
দিয়েছে।
বহু বছর একাকী পার করেছে কেবল,
ছেলেকে বেঁচে থাকার সঠিক
রাস্তা চেনাবে বলে।
কিন্তু আজ একি হল? তবে কি তার এই
পরিনাম। আজ কি নিয়ে বাঁচবে সেই মা??
বাঁচার মত তার শেষ সম্বলটুকোও আজ
ফুরিয়ে গেল। প্রদ্বীপের
আলো নিভে যাওয়ার মত, তার জীবনের
আলোটুকো আজ নিভে গেল, কোন এক
বৈশাখী ঝরের প্র্রবল বাতাসে।
বেশ কিছুদিন যাবত শুনছি সেই ছেলেটির
এক কঠিন রোগ হয়েছে ব্লাড ক্যান্সার।
আমি তেমন মাথা ঘামাইনি। তেমন
জানাশোনা ছিলনা হয়ত তাই।গত তিনদিন
আগে ক্লাবের পক্ষ থেকে চাঁদা তুলে তার
জন্য দোয়া মহফিল এর অনূষ্ঠান
করেছি আমরা।যাতে তার রোগ ভাল
হয়ে যায়।
বিস্বাস করুন আমি কেবল সে দিনই
উপলব্ধি করেছিলাম তার
অবস্থা কতটা খারাপ হতে পারে।
আর ঠিক তার দু-দিন পর ব্লাড
ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে, সেই
অল্পজানা ছেলেটি চলে গেল সম্পূন্ন
অজানা জগৎতে।
যে অজানা জগৎতকে আজ-অব্দি কেউ
জয়করে আসতে পারেনী।
যার জীবন এখন সঠিক ভাকে শুরুই হয়নি,
তার জীবনের শেষ হওয়ার গল্প
লিখছি আমি।কি অদ্ভুত পৃথিবী !
যে জীবনের শুরুর আগেই শেষ!
হয়ত তার জীবনের সামনে,হাত নাড়ছিল
কোন এক অপার সম্ভাবনা।যে সম্ভাবনার
দুয়ার খোলা রেখেই সে চলে গেল।
ঠিক যেন অকালে ঝরেপরা কোন
একটি গোলাপের পাঁপড়ি।
এভাবেই হয়ত প্রতিনিয়ত
ঝরে পরে অনেক ফুলের
পাঁপড়ি কিংবা ফুলও।
যার কোন সঠিক হিসাব নেই বললেই চলে।
তাতে হয়ত আপনার আমার কিছুই যায়
আসেনা। কিন্তু কিছু মৃত্যু মনে কেন যেন
দাগ কেটে যায়।
যাইহোক এবার ভাবুন তার মায়ের কি হবে-
"এ মৃত্যু, মৃত্যু নয়" দুখি মায়ের
বেঁচে থাকার
সপ্নের আরেক অপমৃত্যু।এ মৃত্যু শোকের
ভার সে সইতে পারবে কিনা আল্লাহ্
জানে।
এ মৃত্যু শোকের ভারের পরিমাপ কেবল
সেই জানে।
তাকে কি বলে সান্তনা দেওয়া যায়,তা আমার
জানা নেই।
শুস্ক নদে যেমন;এক সময়েরপ্রবাহমান
স্রোতের দাগ থেকে যায়"তেমনি তার
চোঁখে
সেই দাগ আবার জেগে উঠেছে"কিন্তু
কোন জল নেই"
আমি জানি আপনারাও জানেন-
"ফিরবেনা সে কোন দিন, ফিরবে না-
এ ধরণীর বুকে"।
অনেক বন্ধুরা তার ছবি ফেবুকে আপলোড
করেছে, সহানুভূতি প্রকাশ করেছে।
কারো মোবাইলে হয়ত দু-চারটি স্মিতিময়
ছবি রয়ে গেছে তার। বন্ধুরা হয়ত
মনে রাখবে তাকে বেশ কিছুদিন,হয়ত
বা অনেক দিন তার পর? আপলোড
করা ছবিটাও ঢাকা পরে যাবে অনেক
আপলোডের মাঝে।
হয়ত এর পর আরকোন দিন লাইক কমেন্ট
শেয়র পরবে না তার ছবিটাতে।
তার একাউন্টটাও একদিন
ঢাকা পরে যাবে অনেক এক্টিভ
একাউন্টের মাঝে।
এই শেষ কিছু মূহুওের জীবন।
তার মার মনে সে হয়ত
বেঁচে থাকবে চিরকাল।
কিন্তু তার পর??
কেউ হয়ত কোন দিন যানবেই না,"স্বাধীন
আল-আমিন"বলে কেউ ছিল এই
পৃথিবীতে।এমন কোন মানুষ হতে পরে তাও
কেউ ভাববেনা।
প্রতিনিয়ত ফুরিয়ে যাচ্ছে এমন হাজার
জীবন।যার সঠিক তত্ব কেউ জানে না বা
জানতে চায় না।।
©somewhere in net ltd.