![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
১০ জানুয়ারি, ২০১৩:
# নাতিশীতোষ্ণ বাংলাদেশে বর্তমানে গ্রীষ্মে তাপমাত্রা প্রায় চল্লিশ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি পৌছে যাচ্ছে। মনে হয় সাহারা মরুভূমিতে আছি। আবার শীতকালে তাপমাত্রা গিয়ে ঠেকতেছে দু'-তিন ডিগ্রিতে। দেশটার ভৌগলিক অবস্থান মেরুর দিকে সরে যাচ্ছে বলে ঠাওর হয়! অমানুষিক গরম আর শীত শুধু না, বর্ষাকালেও গ্যাঞ্জাম। বছর দশেক আগেও যেখানে বছরে ৪০০০-৫০০০ মিলিমিটার বৃষ্টি হতো, ইদানিং তা নেমে এসেছে ২০০০ মিলিমিটারেরও নিচে। আষাঢ়-শ্রাবন মাসের প্রথাগত বৃষ্টি এখন হয় ভাদ্র-আশ্বিন-কার্তিকে গিয়ে। 'বাংলাদেশ একটা নাতিশীতোষ্ণ দেশ' বলতে এখন তাই দু'বার ভাবা দরকার।
# ছোটবেলায় চিড়িয়াখানার গেটম্যান, আইসক্রিমের দোকানদার, উড়োজাহাজের পাইলট সহ আরও কত কী যে হতে ইচ্ছে করতো তার ইয়ত্তা নেই! কিন্তু জ্ঞান হওয়ার পর ওসব আর একবারের জন্যও মাথায় ঢোকেনি। সেই বহুদিন আগে থেকে মাথায় ঢুকে আছে ক্রিড়া সাংবাদিকতা। একটা সময় পিটার রোবাক, হার্সা ভোগলে, ইয়ান চ্যাপেলদের কলাম পড়তাম। পিটার রোবাককে ছাঁচাছোলা লেখার জন্যে ভালো লাগলেও ক্রিড়া সাংবাদিকতার বীজ আমার মাথায় ঢুকেছে মূলত উৎপল শুভ্রর লেখা পড়ে। সেই ছোটকাল থেকে এই নামটা দেখলেই যা লেখা তা গোগ্রাসে গিলে ফেলি। ক্রিড়া নিয়েও যে উচ্চমানের সাহিত্য সম্ভব সেটা তার লেখা থেকেই বুঝেছি। আরও অনেকের লেখাও বেশ প্রিয় দেশে। তাদের অনেকেই ফেসবুক বন্ধুতালিকায় থাকায় নাম উল্লেখ করার প্রয়োজনীয়তা দেখছি না। এমনকি ডাক্তারি পড়তে পড়তে বলি, এখনও ভালো সুযোগ পেলে ডাক্তারির থোড়াই কেয়ার করে চলে যাবো ক্রিড়া সাংবাদিকতায়, মন যেখানে আটকে আছে। আজ উৎপল শুভ্রের (@[638240201: Utpal Shuvro]) জন্মদিন। শুভ জন্মদিন দাদা। লেখা দিয়ে আমার মত আরও শত সহস্র তরুণের মাথা নষ্ট করে দেন, ক্যারিয়ারের গতিপথ পাল্টে দেন, এই কামনা করি।
# ঘটনা- ১:
কিছুদিন আগে বন্ধুর মায়ের অপারেশনের জন্য রক্ত চেয়ে একটা পোষ্ট দিয়েছিলাম। পোষ্টটাতে উনি শেখ মুজিব মেডিকেলে নিউরো সার্জারি ওয়ার্ডে ভর্তি লিখতে গিয়ে ভুলবশত 'শেক' লিখেছিলাম। পোষ্টটা কিছু শেয়ার হওয়ার পর একজায়গায় একজন কেন 'শেখ' কে 'শেক' লিখলাম তা নিয়ে স্রেফ ঝগড়া শুরু করে দিলো। লিখলাম, 'ভাই, ফোন থেকে ওয়েবসাইট দিয়ে বাংলা লিখি তো, তাই মাঝে মাঝে অনিচ্ছাকৃত ভুল থেকে যায়।' তাতেও তার হয়না। লিখলো, আমি নাকি জামাতের লোক। মন থেকে শেখ মুজিবকে মানি না তাই ইচ্ছে করে ভুল লিখেছি। পরে আর কিছু লিখতে যাই নি। আমার জরুরি রক্ত দরকার আর তার দরকার কেন 'শেক' লিখলাম সে কারণে আমাকে জবাই করা!
ঘটনা- ২:
সাঈদীর সুবাদে 'মেশিন' শব্দটা বেশ জোরেসোরেই ফেসবুক ব্লগে চলতেছে। সেদিন একজন তীব্র শীত নিয়ে একটা স্ট্যাটাস দিয়েছে। লিখেছে, হাতে কোনো অনুভূতি নেই, জমে বরফ হয়ে আছে; এ জাতীয় কিছু। সেখানে একজন কমেন্ট করে এসেছে, 'ভাই, হাতটা আপনার মেশিনে ঘষেণ। গরম হইয়া যাইবো'।
ফেসবুক থেকে বুঝেছি পাবলিকের রসবোধের কাছে আমি এখনও নিতান্ত শিশু।
১১ জানুয়ারি, ২০১৩:
# আমি এখন চাইলেই রুমের জানালা খুলে দিতে পারতাম। তাতে রুমটা কুয়াশাতে ভরে যেতো। শরীর-বিছানা-কম্বল সব কাকভেজা হয়ে যেত। আমার রুমমেটরা শান্তির ঘুমটা ভেঙে দেখতো হুমায়ূন আহমেদের মত ঘর ভর্তি জ্যোসনা না আনতে পারলেও ঘর ভর্তি কুয়াশা এনে দিয়েছি। কিন্তু করলাম না। সুতরাং প্রমান করলাম ফেসবুক-ব্লগে না হলেও বাস্তব জীবনে আমি 'মানবতাবাদী'। কুয়াশা থেকে ঠান্ডা-জ্বর বাধালে আমার রুমমেটদের প্রেমিকারা চোখের জল ফেলাতো। এটা ভেবেও জানালাটা খুলিনি। এটা থেকে কী প্রমান হলো? প্রমান হলো, আমি বিশিষ্ট 'নারীবাদী'!
১২ জানুয়ারি, ২০১৩:
# প্রেম বহির্ভূত অ্যারেঞ্জ ম্যারেজকে একটা জঘন্য প্রথা মনে করি। চেনা নেই, জানা নেই, ভালোবাসা নেই, আবেগ নেই; পরিবারের ইচ্ছাতে হঠাৎ দুজন মানুষ একই ছাদের নিচে বাস করতে শুরু করলো, একই বিছানা শেয়ার করা শুরু করলো, এমনকি একজনের পর আরেকজনের অধিকারও জন্মে গেলো! তারপর একসময় তৈরি হলো আকর্ষণ। একটা চুম্বক আর একটা লোহাকে দীর্ঘদিন একসাথে রেখে দিলে যেমন হয়, তেমন। কী জঘন্য। গা ঘিন ঘিন করার মত ব্যাপার। অথচ এটাই চলে আসছে বছরের পর বছর ধরে! অন্তত যে তরুণ বা তরুণী ছাত্রজীবনে একবারও প্রেম করেনি, বাধভাঙা না হোক, আবেগে একবার সঙ্গীর তর্জনী ধরতে হাত কাঁপায়নি; তার জীবন অসম্পূর্ণ মনে করি। সুকুমার রায়ের ছড়ার লাইন ধরে তাদের বলতে ইচ্ছে করে, 'তোমার দেখি জীবনখানা ষোলো আনাই মিছে'!
সকল মানুষ প্রেম-ভালোবাসায় আবদ্ধ হোক, বিবাহে না।
# তিনপ্রকার ক্ষুধা অনুভূত হয়:
১। পেটের ক্ষুধা
২। শরীরের ক্ষুধা এবং
৩। মস্তিষ্কের ক্ষুধা।
১৩ জানুয়ারি, ২০১৩:
# ঘটনা- ১:
দীর্ঘ অভিজ্ঞতা বলে ফেসবুক স্ট্যাটাসে কাজের থেকে অকাজের কমেন্ট থাকে ঢের বেশি। তাতে অবশ্য কোনো সমস্যা দেখি না। ফেসবুকে আসিই বিনোদনের জন্যে। একবার একটা স্ট্যাটাসে আপডেট করলাম বুদ্ধদেব বসুর 'দায়িত্বের ভার' কবিতাটা। নামটা মেনশন করতে ভুলে গেছিলাম। কিছু অসাম, হেব্বি, সেইরাম টাইপ কমেন্টের পরে একজন লিখে গেলো, 'ভাই, শুরুটা তাও একটু ভালো ছিলো। এরপর সব ছন্দ হারায় গেছে। কোনো অর্থই নেই। সব মিলে কবিটাই হয়নি। এর থেকে গল্প লেখেন। এসব আপনাকে দিয়ে হবে না।'
ভাগ্যিস, বুদ্ধদেব বসুরা ফেসবুক ব্যবহার করেনি!
ঘটনা- ২:
কদিন আগে একটা পরীক্ষা ছিলো। রাত দশটার দিকে বাপি ফোন দিয়ে জিজ্ঞাসা করলো কি অবস্থা প্রিপারেশনের। খুব সিরিয়াস ভাবে জানালাম, অনেক পড়া বাকি। ঘুমাতে পারি কি-না সন্দেহ। তার আধা ঘন্টা পর ফেসবুকে ঢু মারতে এসেছি কি আসিনি। সাথে সাথেই বাপি চ্যাটে নক দিয়ে লিখলো, What are you doing here, my son?
ঘটনা- ৩:
একজন কিছুদিন আগে স্ট্যাটাস দিয়েছে, 'এটাই ফেসবুকে আমার শেষ স্ট্যাটাস। ফেসবুকে কিছুই পাইনি, সব হারালাম। আর দেখা হবে না বন্ধুরা। ভালো থেকো তোমরা।' একদিন পরে চোখে পড়ায় কমেন্ট লিখে এসেছিলাম, 'জানি, প্রতিদিন একবার করে লগ ইন করে খোঁজ নিচ্ছো যে কে কে সমবেদনা জানিয়ে কী লিখলো। নাও। ৭ দিন পরে ফিরে এসে মাঞ্জা মেরে স্ট্যাটাস দিবা, জানি। কী স্ট্যাটাস দিবা তাও জানি। তা তোমার ইনবক্সে পাঠালাম। দেখে নিও।' ওইদিন রাতেই ম্যাসেজ আসলো, 'ভাই, ইনবক্সে কিছু আসেনি তো'!
©somewhere in net ltd.