নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ইচ্ছামানুষ রনি

ইচ্ছামানুষ রনি

আমি চাই মানুষ বলতে মানুষ বুঝবে মানুষ শুধু।

ইচ্ছামানুষ রনি › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাবুলনামাঃ ১

২০ শে মে, ২০১৩ সকাল ৭:৫২

১৯ এপ্রিল, ২০১৩:



# : বাবুল, মীরজাফরের দুই ছেলের নাম বলতো?



: স্যার, দুই ছেলের নাম জানি না। তবে মীরজাফরের বংশের দুই বাত্তি এখনও বাংলাদেশে জ্বলে। তাদের নাম জানি বৈকি।



: তাই নাকি রে? কী নাম? জলদি বল।



: স্যার, আন্দালিব রহমান পার্থ এবং মাহি বি চৌধুরী।



২৩ এপ্রিল, ২০১৩:



# : বাবুল, প্রধানমন্ত্রী, বিরোধী দলীয় নেত্রীর পর এখন স্পিকারও নারী! সেই নারীর ক্ষমতায়ন, নারী নেতৃত্ব। এত সভা-সমাবেশ-মহাসমাবেশ করে হলোটা কী?



: স্যার, ১৩-১২ মিলে ২৫ দফা তো আছেই। আগামীকালের হোমওয়ার্ক হিসেবে আরও ২৫ দফা লিখে নিয়ে আসি?



# : বাবুল, ছেলে আমার ৫ এই ঘর পর্যন্ত নামতা বলতে পারে। কিন্তু কিছুতেই ৬ এর ঘরের নামতা শেখাতে পারছি না।



: স্যার, গেইলের খেলা দেখান। এমনিতেই শিখে যাবে।



২৪ এপ্রিল, ২০১৩:



# : বাবুল, বার্সা-বায়ার্নের খেলা দেখতেছো?



: জ্বি স্যার।



: বার্সা সম্পর্কে তোমার মূল্যায়ন কী?



: স্যার, 'ব্যাক পাস'-কে ওরা শিল্পের পর্যায়ে নিয়ে গেছে। নি:সন্দেহে এই ক্ষেত্রে ওরা সর্বকালের সেরা।



# : বাবুল, তোর মুখ গোমড়া কেন? বার্সা বড় ব্যবধানে হারাতে বিষ্মিত?



: বিষ্মিত তো বটেই। তবে অন্য কারণে স্যার।



: আর কী কারণ?



: স্যার, স্পেস না দিয়ে প্রেসিং গেম আর সেটপিস-কর্নার-উইং থেকে ডি বক্সে একটার পর একটা ক্রস; এই আন্ডার সাইজ দলটাকে হারানোর এমন 'কমন' ফর্মুলা থাকার পরেও এরা টানা ছয় বছর ধরে চ্যাম্পিয়নস লীগের সেমি ফাইনাল খেলছে। স্যার, পরাজয়টা কী এর চেয়েও বেশি বিষ্ময়ের?



২৫ এপ্রিল, ২০১৩:



# : বাবুল, এত মীরাক্কেল দেখিস, হা-Show দেখিস, ঘুমাতে যাওয়ার আগে একটা কৌতুক শোনা তো।



: স্যার, ম খা আলমগীর।



: মু হা হা হা হা। হা হা প গে!



# : বাবুল, একটা বাঘের কাছে রেপ হওয়া লজ্জার না একটা বিড়ালের কাছে?



: কেন স্যার?



: মাদ্রিদ-ডর্টমুন্ড ম্যাচ দেখতেছো না?



# : বাবুল, তোর চোখে জল কেন?



: স্যার, সরকার বছরান্তে যুদ্ধবিমান কেনে, গোলাবারুদ কেনে, গ্যাসোলিন কেনে আর সাভারের দূর্গতদের জন্য সামান্য অক্সিজেন কিনতে বরাদ্দ দেয় না। সাধারণ মানুষ bKash করে টাকা উঠিয়ে অক্সিজেন-ঔষধ-স্যালাইন কিনছে। ভোটের ব্যবসা থেকে আর নির্মম কিছু আছে, স্যার? জানেন, উদ্ধারকর্মীরা না বলেছে, ধ্বংসস্তুপের মাঝে কয়েকটা বাচ্চার জন্ম হয়েছে। সূর্যের আলো না দেখেই ওরা অন্ধকারেই মারা যাবে, তাই না স্যার?



: আর বলিস না। টিভি খুলছি না। দেখার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছি। খুব খারাপ লাগছে রে বাবুল।



: স্যার, পড়া না পারায় আপনি কত মেরেছেন আমাকে। আমি কেঁদেছি কোনোদিন?



: বাবুল, চোখে একটা ময়লা পড়েছে। যাই রে।



২৬ এপ্রিল, ২০১৩:



# : বাবুল, হাতে ট্যাটু করালি কবে? ট্যাটুতে কী লেখা ওটা?



: স্যার, আজকেই করালাম। বাপ-মা'র নাম লিখে ট্যাটু করালাম আর কী।



: কেন? এত কিছু থাকতে বাপ-মায়ের নামে ট্যাটু কেন?



: স্যার, আমি কোনো কারণে মারা গেলে আমার বাপ-মা যাতে সরকার প্রধানের মত ছাত্রলীগের তালিকা দেখিয়ে 'রানা ছাত্রলীগের কেউ না' টাইপ খেলা খেলতে না পারে তাই আগে থেকেই চামড়া কেটে সিল লাগিয়ে রেখে দিলাম আর কী।



২৭ এপ্রিল, ২০১৩:



# : বাবুল, খ্যাতির বিড়ম্বনার উদাহরণ দে তো।



: স্যার, প্রথম-আলো। সব পত্রিকাই মোটামুটি সব নিউজ কভার করছে কিন্তু প্রথম-আলো করলে রক্ষা নেই। দেশের এহেন কন্ডিশনে ডিজে পার্টি-নাইট ক্লাব; কিছুই বন্ধ হয়নি কিন্তু প্রথম-আলো কেন নাচ-গান করে মেরিল-প্রথম আলো পুরষ্কার দিলো; সব দৃষ্টি সেদিকে। প্রায় সব স্যাটেলাইট চ্যানেলেই নর্তন-কুর্দনের অনুষ্ঠান চলছে, লাইভ মিউজিক-শো চলছে কিন্তু বিটিভি করলেই খবর হয়ে যাবে।



: আরেকটা উদাহরণ দে।



: রানা প্লাজায় একাধিক গার্মেন্টস, একাধিক মালিক। সবার ফাঁসি হওয়া উচিত। কিন্তু সেই প্রথম দিন থেকে সবার এক কথা, 'রানার ফাঁসি চাই'।



২৮ এপ্রিল, ২০১৩:



# : বাবুল, ক্যালকুলেটর দিয়ে কী করিস?



: স্যার, এতদিন সাহারা খাতুনের ৪৮ ঘন্টার অংক কষতাম আর এখন প্রধানমন্ত্রীর ২৪ ঘন্টার অংক করি।



: ও তাইতো! সোহেল রানাকে ধরার সর্বশেষ কী রে?



: স্যার, গুগল ঘেটে দেখলাম ছাত্র লীগে না থাকুক আমেরিকান লীগে সোহেল রানা নামে ফ্লোরিডার একটা প্লেয়ার আছে। ওকে ধরা যেতে পারে।



# : বাবুল, রানা ধরা খাইছে। এই মুহূর্তে তোর অনুভূতি কী?



: স্যার, এই মুহূর্তে বাঁশেরকেল্লা, ইসলামি ছাত্রী সংস্থা, পুদিনা পাতা এইটটিন প্লাস পেজগুলোর জন্যে খুব খারাপ লাগছে। ওরা আওয়ামী লীগের গাড়িতে করে রানাকে ইন্ডিয়া-আমেরিকা-মধ্যপ্যাচ্যে পাঠিয়ে দিয়েছিলো। বেচারা রানা শান্তিতে দু'দিন বিদেশ ভ্রমনও করতে পারলো না!



২৯ এপ্রিল, ২০১৩:



# : বাবুল, তুই যে দেশপ্রেমিক তার প্রমান দে।



: স্যার, আগামীকাল হরতাল ডাকলাম।



# : বাবুল, 'দ্যা টেলিগ্রাফ' নাকি লিখেছে, যুক্তরাজ্য এবং জাতিসংঘ সাভারে উদ্ধার তৎপরতায় সাহায্য করতে চেয়েছিলো। সরকার নাকি নেয় নি? জীবন থেকে প্রেস্টিজ বড় হয়ে গেলো না-কি রে?



: স্যার, হিন্দুরা যেমন আদি কাল থেকে মূর্তি পূজা করে, সরকার প্রধানেরাও তেমনি ক্ষমতায় আসার দিন থেকে ভাবমূর্তি পূজা করে। এ আর নতুন কী?



# : বাবুল, কই যাস?



: স্যার, বাঁশেরকেল্লার অ্যাডমিনের সাথে দেখা করতে যাই।



: ক্যান?



: মারা যাওয়ার তারিখটা জেনে আসি।



৩০ এপ্রিল, ২০১৩:



# : বাবুল, হেলিকপ্টার কে আবিষ্কার করছে রে?



: স্যার, ইগর ইভানোভিচ সিকোরস্কি। কেন স্যার?



: নাহ্ִ, দেশে হেলিকপ্টারের ট্রেডিশান চলতেছে তো। জলিল, রানা, শফি সাব…. ভাবলাম একবার ট্রাই দিবো। যাবি নাকি কক্সবাজার?



: হোলি শিট! কী বলেন স্যার! ইগর সিকোরস্কি তো অ্যাগনোস্টিক ছিলো। অনেকে আবার বলে নাকি পিওর অ্যাথিস্টই ছিলো। তার বানানো পরিবহনে, আই ক্যান্ট বিলিভ স্যার!



: কস কী মমিন! থুক্কু, কস কী বাবুল, শালার হুইস্কি না সিকোরস্কি কী যেন নাম বললি?



: সিকোরস্কি স্যার।



ইগর সিকোরস্কি।



: হ, সি-কো-র-স-কি। ওই ব্যাটার ফাঁসি চাইয়া একটা ব্যানার লিখতে পাঠা জলদি। লিখবি, 'শাহবাগী নাস্তিক সিকোরস্কির ফাঁসি চাই'।



: স্যার, সে তো ১৯৭২ সালে মরে গেছে। আর সে তো স্যার শাহবাগী না, রাশিয়ান।



: তাতে কী? পকর পকর করিস না। তোরে লিখতে দিতে বলছি, দে। আর্জেন্ট অর্ডার দিবি। আগামীকালের মধ্যে যেন ব্যানার হাতে পাই। দরকার হলে ওই ব্যাটার, কী যেন নাম বললি, সিক-ও-রস-কি, ওর কফিন থেকে কঙ্কাল বের করে সেই কঙ্কাল ফাঁসিতে ঝুলাবো।



১ মে, ২০১৩:



# : বাবুল, তাহলে আমাদের, আই মিন ছেলেদের পোশাক-পরিচ্ছদ কেমন হওয়া উচিত?



: স্যার, রাষ্ট্রপতি যে পোশাক পরবেন, যেভাবে চলবেন, আমাদেরও সেভাবে চলতে হবে।



# : বাবুল, হঠাৎ এই গরমে এত ঝড়-বৃষ্টি শুরু হয়ে গেলো যে।



: স্যার, নিশ্চয়ই বিরোধী দলের কেউ মেঘের পিলার ধরে টানাটানি করতেছে।



২ মে, ২০১৩:



# যখন আসিফ মহিউদ্দীনকে পাকিপ্রেমী, খাসী বলার প্রচলন শুরু করেছিলো, তখন বাবুল দেখে গেছে। যখন আসিফ এন্তাজ রবিকে পু-পুয়েভারা ডাকার রঙ্গ শুরু করেছিলো, তখনও বাবুল দেখে গেছে। যখন আখতারুজ্জামান আজাদকে কপি আজাদ বলে সরব হয়েছিলো, তখনও বাবুল দেখে গেছে। যখন আরিফ আর হোসেনকে জামাতি ট্যাগ দেওয়া হয়েছিলো, তখনও বাবুল দেখে গেছে। পিনাকী ভট্টাচার্য্যকে নিয়ে যখন ম্যাৎকার জুড়ে দিয়েছিলো, তখনও বাবুল দেখে গেছে। উৎপল শুভ্রকে পাকি সাংবাদিক যখন বলেছিলো, তখনও বাবুল দেখে গেছে। সুস্থ স্বাভাবিক অনলাইন চর্চাকে নষ্ট করার আরও কত শত নোংরামি! ডা: ইমরান এইচ সরকার, নাসিরউদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু সহ গণজাগরণ মঞ্চকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলার চেষ্টাটাও সর্বশেষ দেখলো বাবুল। অতপর, ঠিক হোক বা ভুল হোক, অনলাইনেই একটা পাশবিক নিক এর পতনটাও আজ দেখে নিলো বাবুল।







বাবুলকে ওর স্যার বললো, দেখেছিস বাবুল, অপরাধের বিচার পৃথিবীতেই হয়। তারপর জিজ্ঞাসা করেছিলো, এত কিছু নিয়ে এত কথা বলিস, আইজূর অনলাইন নোংরামি নিয়ে কখনো কিছু বলিস নাই কেন? জানিস না, অন্যায় যে করে আর অন্যায় যে সহে...। স্যার কথা শেষ করার আগেই বাবুল বলে উঠলো, 'স্যার, প্রসংগটা বাদ দেন তো, গু নিয়ে তাও ঘাটাঘাটি করা যায় কিন্তু আইজূ নিয়ে ঘাটতে আমার ঘিন্না লাগে!'

মন্তব্য ০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.