নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

ইচ্ছামানুষ রনি

ইচ্ছামানুষ রনি

আমি চাই মানুষ বলতে মানুষ বুঝবে মানুষ শুধু।

ইচ্ছামানুষ রনি › বিস্তারিত পোস্টঃ

ফুটবল বিশ্বের বর্তমান ধনকুবেররা এবং ট্রান্সফার মার্কেট।

২৫ শে মে, ২০১৩ রাত ১১:০৫

মধ্যপ্রাচ্যের কিছু ধনকুবের আর তেলের ব্যবসায়ীর পেট্রো ডলারের কাছে ইউরোপিয়ান ফুটবল জিম্মি হয়ে গেছে কয়েক বছর ধরেই। একটু তালাশ করলাম:







তেলের টাকার ঝনঝনানির শুরুটা চেলসির রোমান আব্রাহিমোভিচের হাত ধরে। ২০০৩ এ চেলসির মালিক হওয়ার পর থেকেই। ফোর্বসের মতে রোমান বর্তমান বিশ্বের ৫০ তম ধনী ব্যক্তি। ৫০ তম, এই সংখ্যার মানটা রাখতেই কি-না, অ্যা প্লেয়ার অফ তোরেস ক্যালিবার কস্ট রোমান অ্যা ফিফটি মিলিয়ন পাউন্ডস!



২০০৮ এ ম্যানচেস্টার সিটির মালিকানা কিনে দৃশ্যপটে আগমন ধনকুবের আরব শেখ মনসুর বিন জায়েদ আল নাহিয়ানের। এই আরবীয় পলিটিশিয়ান আগমনটা উদ্ִযাপন করলেন তৎকালীন বৃটিশ রেকর্ড গড়ে রবিনহোকে কেনার মাধ্যনে। লেসকট-মিলনার-ব্যারির মত প্লেয়ার কিনলেন আকাশ ছোঁয়া দামে। বছর দুয়েকের মধ্যে ট্রান্সফার মার্কেট টালমাটাল করে দিলেন। যে প্লেয়ার পছন্দ হয়, সে যে দামই হোক কিনে আনেন। মাঝারি খরচের দলগুলো পড়ে গেলো মহা বিপাকে। একটা ভালো প্লেয়ার টার্গেট করলেই দাম সাধ্যের বাইরে চলে যায় ট্রান্সফার মার্কেটের অস্থিরতার কারণে।







২০১১ তে ফরাসি ক্লাব প্যারিস সেন্ট জার্মেইনের (পিএসজি) ৭০% শেয়ার কিনে নিলেন কাতারের ব্যাবসায়ী ধনকুবের নাসের ঘানিম আল খেলাইফি। ব্যাস। ম্যানচেস্টার সিটির প্রতিদ্বন্দ্বী জুটে গেলো। প্লেয়ারের কোয়ালিটি থেকেও এক্সট্রা টাকা দিয়ে প্লেয়ার কেনা শুরু হলো। ইউরোপে আনপ্রুভেন ব্রাজিলিয়ান উইঙ্গার লুকাস মওরাকে কিনে নিলো ৪৫ মিলিয়ন ইউরোতে। এর আগে জাভিয়ের পাস্তেরোকে ৪৩ মিলিয়ন, এজেকুয়েল লাভেজ্জিকে ৩০ মিলিয়ন এবং শেষমেশ থিয়াগো সিলভার পিছনে ঢেলে দিলো ৪২ মিলিয়ন! টাকার পিছনে ফুটবলারদের দৌড় ঝাপ চললো। জ্লাতান ইব্রাহিমোভিচের মত বিশ্বসেরা ফরোয়ার্ড টাকার টান উপেক্ষা করতে না পেরে এসি মিলানের মত ঐতিহ্যের ক্লাব ছেড়ে চলে গেলো পিএসজিতে।



২০১১ তেই রোমান আব্রাহিমোভিচের মত আরেক রাশিয়ান ধনকুবের সুলেমান কেরিমভ কিনে নিলেন একটা রাশিয়ান ক্লাব, আনঝি মাখচাকালা। উইরোপের সেরা লীগগুলোর বাইরে রাশিয়ার একটা ছোট খাট দল হওয়ায় ২০১১ এর আগে একদম স্বল্প পরিচিত ছিলো আনঝি। সুলেমান কেরিমভ প্রথম দানটাই মারলেন বিশ্বসেরা স্ট্রাইকার স্যামুয়েল ইতোকে ২৩ মিলিয়ন খরচে কিনে। ট্রান্সফারটা কম মূল্যের দেখালেও যে জিনিসটা ইতোর ক্যালিবারের একটা খেলোয়াড়কে রাশিয়ান লীগে যেতে বাধ্য করলো তা হলো সাপ্তাহিক বেতন। সেটা প্রতি সপ্তাহে সাড়ে তিন লাখ ডলার। বিশ্বের যেকোনো ফুটবলার থেকে বেতনটা বেশরকম বেশি।







২০১০ এ স্প্যানিশ ক্লাব মালাগা কিনে নিলে আরেক কাতারি ধনকুবের শেখ আবদুল্লাহ বিন নাসের আল থানি। চেলসি-ম্যান সিটি-পিএসজির মালিকদের মত ধনী না হলেও সে বছরই প্রায় ৮০ মিলিয়ন খরচ করে প্লেয়ার কিনলেন। দলে যোগ হলো সান্তি ক্যাজোরলা, জোরিস মাথিজসেন, রুড ভ্যান নিস্টলরয়ের মত তারকারা। কিন্তু হঠাৎই বিনিয়োগ বন্ধ করে দিলেন আল থানি। প্লেয়ারদের বেতন বকেয়া পড়লো। ক্যাজোরলা-নিস্টলরয়-সলোমন রন্ডনরা বকেয়া বেতন নিয়ে স্প্যানিশ ফুটবল অথোরিটির কাছে কমপ্লেন দাখিল করলেন। আর্সেনালে বেচে দেওয়া হলো ক্যাজোরলাকে, রুবিন কাজানে দলের সর্বোচ্চ স্কোরার সলোমন রন্ডনকে, ফেয়েনুর্ডে মাথিজসেনকে।



২০১২ তে এসে হঠাৎই উত্থান হলো চাইনিজ ক্লাব সাংহাই শেনহুয়ার। ঝু জুন ক্লাবের ৭৫% শেয়ার কিনেই কারিশমা দেখালেন। ফ্রি এজেন্ট হয়ে যাওয়া ফরাসি স্ট্রাইকার নিকোলাস আনেলকা আর আইভোরিয়ান লিজেন্ড দিদিয়ের দ্রগবাকে এত ইউরোপিয়ান ক্লাব রেখে চীনের একটা ক্লাবে বিশাল বেতনের চুক্তিতে শই করিয়ে নিলেন বিশাল বেতনের মাধ্যমে। বছর না ঘুরতেই অবশ্য বেতন বাকি পড়ার জন্য আনেলকা এবং দ্রগবা দুজনেই ক্লাব ছেড়ে দিলেন। দ্রগবা যোগ দিলেন গ্যালাতাসারে তে, আনেলকা লোনে জুভেন্টাসে।



সম্প্রতি আরেক রাশিয়ান ধনকুবের দিমিত্রি এভগেনভিচ রীবলভ্লেব কিনে নিয়েছেন ফরাসি ক্লাব মোনাকো। কিনেই সদ্যই দ্বিতীয় ডিভিশন থেকে লীগ ওয়ানে উঠে আসা মোনাকোকে প্রথম সারিতে আনতে নাকি প্রথম মৌসুমেই ২৫০ মিলিয়নের ট্রান্সফার বাজেট বেধে দিয়েছেন। অফিশিয়াল না হলেও শোনা যাচ্ছে পোর্তোর স্বল্প পরিচিত কলম্বিয়ান উইঙ্গার জেমস রড্রিগেজকে কিনেছে ৪৫ মিলিয়নে! পর্তুগিজ মিডফিল্ডার জোয়াও মোতিনহোকে ২৫ মিলিয়নে। সবে শুরু। এবারও ট্রান্সফার মার্কেট মিলিয়ন মিলিয়ন পাউন্ডের চমক দেখতে যাচ্ছে ২০১২ সালের ফোর্বসের সারা বিশ্বের বিলিয়নিয়ারদের মধ্যে ১১৯ তম দিমিত্রি রীবলভ্লেবের হাত ধরে।



আমি বলছি না শুধু সদ্যই ধনকুবেরদের হাতে পড়া ক্লাবগুলোই দেধারসে টাকা খরচ করে যাচ্ছে। অন্যরাও করছে। রিয়াল মাদ্রিদ অনেক আগে থেকেই টাকার ব্যাংক নিয়ে ট্রান্সফার মার্কেটে হাজির হয় সেরা প্লেয়ারদের কিনে নিতে। বায়ার্ন মিউনিখেরও টাকার বস্তা। গেলো মৌসুমেই তো জাভি মার্টিনেজকে কিনেছে ৪০ মিলিয়নে বায়-আউট ক্লজ ভেঙে। এই মৌসুম শুরু হওয়ার আগেই ৩০ মিলিয়ন দিয়ে গোটসেকে কিনে ফেলেছে। জুভেন্টাস-ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড-বার্সেলোনাও কম যায় না। অথচ আজ চ্যাম্পিয়নস লীগের ফাইনালে যে বরুশিয়া ডর্টমুন্ড দলটা খেলবে,তাদের জন্য ডর্টমুন্ডকে নাকি খরচ করতে হয়েছে সাকুল্যে মাত্র ২৯ মিলিয়ন! পুরো দলটার পিছনে খরচ বায়ার্ন মিউনিখের গতবছর কেনা এক জাভি মার্টিনেজ থেকেও ১১ মিলিয়ন কম!



ফিফা 'ফেয়ার-প্লে' নামে একটা কলা নাকের ডগায় ঝুলিয়ে রেখেছে গত কয়েক বছর ধরে। আমি ব্যাপারটা আজও ঠিক বুঝতেই পারলাম না। ইউরোপিয়ান ট্রান্সফার মৌসুম সামনেই। এই সময়টা বেশ উপভোগ্য। প্রতিদিন স্পোর্টস ওয়েব সাইট চেক করা, চমকের অপেক্ষা করা, আরও কত কী। এবার তো চমকের সম্ভাবনা আরও অনেক বেশি। অপেক্ষা করছি। আপনি একজন ফুটবল প্রেমিক হলে নিশ্চিত একমত হবেন, খেলা থেকে এই ট্রান্সফার মার্কেটটাও কম উপভোগ্য না।

মন্তব্য ৫ টি রেটিং +৫/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ২৫ শে মে, ২০১৩ রাত ১১:০৯

ইমরাজ কবির মুন বলেছেন:
ভাল লিখসেন ||

২| ২৫ শে মে, ২০১৩ রাত ১১:২০

বাংলার হাসান বলেছেন: চমৎকার তথ্য বহুল।

৩| ২৬ শে মে, ২০১৩ রাত ১:১১

chai বলেছেন: বেশ ভাল লিখছেন ।+++

৪| ২৬ শে মে, ২০১৩ সকাল ১০:৩৬

লিঙ্কনহুসাইন বলেছেন: ++++++

৫| ২৬ শে মে, ২০১৩ দুপুর ১:৩৭

শাওণ_পাগলা বলেছেন: +

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.