নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

শোন ওগো চাঁদের নাও

রোজারিও

রোজারিও

রোজারিও › বিস্তারিত পোস্টঃ

একগুচ্ছ কবিতা

২৭ শে আগস্ট, ২০১৫ সকাল ১০:৪৫

১।
আমি নেই
ভুল করে যতবার পা রাখি
গাছের সবুজ, ডালের পাখি সকলই উড়ে যায়
আমার বুকে তুমি নেই
একাকী পদচিহ্ন জুড়ে
পথ হারানো এক কিশোরের নাম ছিল -
যতবার তাকে ডাকি
দূরে দূরে চলে যায়
একটা ফড়িঙের পিছু পিছু ছুটে
ভাতখুকুর ঘুম পায়
কিন্তু তারা কেউ আর নেই
অবেলায় সকলেই চলে গেছে
আমি নেই
আমার ভিতর তুমি নেই
একটা ফুল
একটা ঘুম
কোথাও কেউ নেই...
ফুলের ভিতর বাস নেই
গাছের চত্বরে একটা বাদামি ফড়িং

২।
আমি দিতে পারি
তোমার বন্ধ অঙ্গে গোলাপি সুর
মায়ালতা, মৃত্তিকা
ভালোবাসার ভরতনাট্যমে লেখা
কোকিলা মেয়ের মৃৎপাত্র নীল
আমরা সোনারস বিদ্যা কলমে
লিখেছি গন্ধমূষিকের ভাষা
ভার্যা শেকড়ে বিনষ্ট তামাম মূষিকবিদ্যা
ভালোবাসা কাছে আসে না
দূরে ঠেলে না নির্ভাবনা
উত্তপ্ত শরীরে মায়া লেখা
ছোঁব না
তুমি যাও
তোমার বারান্দা ঘরের চাবিটি
ফেরত দিয়ে এসো

৩।
আমার ওষ্ঠ বেদনা করেছে পান
বাবা, ওঠ
তুমি কি নাম ধরে ডেকেছিল
বুকের ভিতর তোমার বেজেছিল কি নামগান
অবিমৃষ্যকারীর প্রিয় নাম?

৪।
তারপর কুসুম কুসুম পাথর হয়ে যাই
ঘুম আসে
সব চাওয়া পাওয়া পাড়ি দেয়
নিরুদ্দেশ
তবু যেন সে আরব্যপোন্যাসের ধীবর যেন
কেউ দেখিয়ে দিলে
সাতরঙা মৎস্য শিকারে যাবে
তার আগে রোজ রোজ
কুসুম কুসুম পাথর হওয়া চাই।

৫।
পাতায় পাতায় পা দিয়ে
ভালোবাসা পা টিপে টিপে চলে
আনিকা, তুমি কি একবার চেয়েছিলে প্রেম
ঝাঁপ দিয়ে পড়ে কোলে
কতবার ডুবেছিলে নদীজলে
ডুবুরিরা বাড়িয়েছিল হাত
ঊনিশ নং চুড়ির গহন থেকে
ছ্যকা খাওয়া রাত ভোর করে
সেই যে গেলে আসমানিদের ঘর
আর ফিরে আসো নি কো
ডুবে ডুবে ভালোবাসা পা ডুবিয়ে চলে
এখনও অন্যতর
পিয়াসে পাখা মেলে অতনু
চোখ লাল, গায়ে খুব জ্বর
তোমাদের কপালে লেখা তাঁতীদের
কোমল ছাউনি
দুর্বা এখন সকলের পর।

৬।
নদীপাড় না কি বিরান কোনো
চর, খোদাতালা জানে
ধূ ধূ দৃশ্য দেখি
দেখি আসমানি রোশনাই
আমার ঘরে কেউ আসে না
চক্ষু রগড়ে দেখি
বৃথাই বৃথাই বৃথাই
ধূপকাষ্ঠে স্বরস্বতির মূর্তি
কণ্ঠ রুদ্ধ হয়ে থাকে
কাউকে ডাকি না
রঙিন আতসবাজি তার দিনপাখা মেলে
গান গায়
বহুদিন ছবক পাই না কনকলতার
তালপাতার পুঁথি, তা-ও মৃতের পরাকাষ্ঠা
কেবলই রুক্ষ, শুষ্ক, ঢেউহীন
ঈষান প্রান্তর
আমার মন চায়, আমার মন চায়
তুমি তো আসো না।

৭।
তোমাকে একপাশে সরিয়ে রাখলে
আরেক ধরণের শব্দ পাওয়া যায়
হরিণীর গ্রীবায় তানপুরার ঘ্রাণ
কপাল-মন্দ মফিজের হঠাত করে
ঢাকায় চলে আসা, তারপর তরমুজের
ক্ষেতে ক্ষেতে লাঠিয়াল চন্দন; তুমি
না থাকলে বংশী নদী স্থির চুম্বনের
চিতা হয়ে যায় বড়জোর, কবিয়াল
পায় যেন তেন অবলম্বন। রূপকথার
গল্পের ফ্যাকাসে স্বাদ তোমার মুখে
তুলে খাওয়ায় সময়ের ফেসবুক।
তুমি না রইলে তো সব আবার
তুমিময় হয়ে গেল সেই নগদই -
বিনিময়ে একগাদা লবণগন্ধ সাদা খাতা।

৮।
বাসনার ডালে জামা পড়াতে পড়াতে
বিন্দু বিন্দু বেদনারা দেহ পায়। গাঢ়
শব্দরা ইন্দোরে তোতলায়, মিঁউ বলে।
যেন বা কী ফোসা পড়ে চামড়ায়-ত্বকে।
পক্ক কেশ - ফর্সা কাপড়েরা আর কী কী
ঢেকে রাখে! ওড়নায় চাপা অহংকার।
মৃত্যুর আনন্দ আছে; লহমায় মনে
পড়ে বাসনার লুকিয়েছে লু অন্দরে -
কার ভারে? - সময়ের পাথর আনন্দ!
মরা স্রোতে ডুব মেরে দেখা গেল, নাহ্
সে ঈশ্বরী হাপিস; তবুও দেহে দাহে
অদৃশ্য বৃষ্টির ফোঁটা, 'টপ', আচানক
ফট করে বলে - বাসনা বাঁচুক। কষ্ট
তোমার দুঃখ হয়ে ঘুমিয়েছে গ্রিল
বারান্দার রাহু খোপে। সেখানে সবুজ
যাহা কিছু দিলো চম্পট, দৃশ্যের দূর
থেকে দেখা অন্তরীক্ষে ক্যাবল-বিপ্লব।

৯।

বল্গাহীন বৃষ্টি
দৌড়চ্ছে শিশুদের মতো
দৌড়তে দৌড়তে হুমড়ি খেয়ে এই পড়ে তো
এই পড়ে, পড়তে পড়তে উঠে দাঁড়ায়
আবার দৌড়োয়, আর
একগুচ্ছ গোলাপ বালক
তাদের আট সারি দাঁত মেলে
ছিড়ে ফেলে সূর্যের ঝালর
দৌড়তে দৌড়তে পড়ে যায়
ব্যথা পায়
চোখের চাঁদিতে কান্না জমে
গেলে তার বৃষ্টি, বৃষ্টি হয়।

১০।
তের সংখ্যার মধ্যে ভালোবাসা আছে
তেরটা কবুতর ওড়ালে আকাশে
তুমিও ভালোবাসা পেতে পারতে
তুমি ভাবলে সংখ্যাটা আরো বেশি হোক
একুশ অথবা অনন্ত
এরই মধ্যে চৌদ্দতে জুড়ে গেল দুই
ষোলতে সিন্ধান্ত হলো বেশ
কবুতেরর দরকার শেষ
ভালোবাসা এখন ধানক্ষেতের ঘুঘু।

১১।
ছুটি আমি অধরার পিছু পিছু, যারা
সকলেই আমার জীবন হতে হৃত
অথবা কাছেই আসেনি সে বা তাহারা
হে ঈশ্বর, সংশয় যে অগ্নিতে ঘৃত।
নিজেকে ব্যতিক্রম দাবি করো না
ভেব না আমার অধিক তুমি কিছু।

১২।
কিছুটা ছিলাম বলে এই অবসর -
তারপর পিছু হটে হটে নিরালায়
নির্মম সত্যের দূত হয়ে আসি, তবে
আজ কিছু ঘটে যায়, অনাঘ্রাত রবি
কদমের গন্ধ বিলিয়ে মলিনতার
আঘ্রাণ বিলোয় রাত্রির ফসলে, নিভু
নিভু তারা ভরা অন্ধকারে - কভু একা;
আর বিভূতিভূষণ পদ্য লিখেন তো
শ্রাবণের নিঃশ্বাসে আদম কাঁদেন
নবজাতকের মৃত্যুকালে। সায়াহ্নে যে
সোনালু ফুলের লতান দোলনায় দুলে
তারই আগুসার গল্পের ভিভানে যত
ভাণ-ভণিতরা যায় এক্কা-দোক্কা খেলে
নিভু নিভু পিদিমের সংসারে কারা
কড়ির থালায় উৎসবে পান্তা মাখে।
বৈশাখ নয় গো, বাদল দিনের ঘোরে
কোথাও আর কিছু নেই; - চিত্ততাপ বাড়ে।

মন্তব্য ২ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ২৭ শে আগস্ট, ২০১৫ সকাল ১১:৩৩

আল ইমরান বলেছেন: ভাই, কিছু মনে করবেন না। অল্প অল্প করে পোষ্ট দিলে ভালো হত। প্রায় প্রতিটি কবিতাই ভালো। কিছু কবিতায় বিমূর্ততা আছে। তবে ভালো জিনিষও বেশি খাওয়া যায় না। স্বাদের জিনিষ অল্প অল্প খেতে হয়। তাতে আবেদনের ঘাটতি থাকে না। এটি নিতান্তই আমার ব্যাক্তিগত ভাবনা। ভালো থাকবেন।

২৭ শে আগস্ট, ২০১৫ বিকাল ৪:৩১

রোজারিও বলেছেন: পাঠ এবং মন্তব্যের জন্য ধন‌্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.