নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার দেশ আমার অহংকার

রসিক বাঙগালি

আমি বাঙ্গালি

রসিক বাঙগালি › বিস্তারিত পোস্টঃ

চাঁদ

২০ শে জুন, ২০১৫ রাত ৮:৫৮

সায়ন্ত(২৮) ও ঋণীলা(২৫) আগ্নেয় পাহাড়ের ঢালে বসে সবুজাভ নীল আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে। আকাশের বিভিন্ন জায়গায় ইউরেনাসের ৫ টি উপগ্রহ যেন তাদের দিকে করুনার চোখে তাকিয়ে আছে। এটা ৫৮৪৭ সাল। প্রায় ১০০০ বছর পার হতে চলল পৃথিবীকে বসবাসের অযোগ্য ঘোষনা করা হয়েছে। তার কিছুদিন আগে থেকেই প্রকৃয়াটি শুরু হয়। পৃথিবীর সবচে কম দূষিত এলাকা থেকে কিছু সুস্থ-সবল, নিঃরোগ মানুষ্ কে জন্মের পর থেকে পর্যবেক্ষনে রাখা হয়েছিল। তাদেরই জিনগত কিছু পরিবর্তন ঘটিয়ে ক্লোন তৈরি করে মহাকাশযানে করে মহাকাশের বিভিন্ন গ্রহে পাঠানো হয়েছিল প্রাইমেট গোত্রের হোমো সেপিয়েন্স নামক প্রজাতিকে টিকিয়ে রাখার উদ্দেশ্যে। কালে কালে অভিযোজন ক্ষমতা বাড়িয়ে টিকে থাকার চেষ্টা করা হচ্ছে। কোথাও কোথাও এখনো সফলতা আসেনি। আজকের এই দুজনের মতো স্বামী-স্ত্রী হিসেবে সায়ন্ত আর ঋণীলা নামে সত্যি পৃথিবীতে দুটি অস্তিত্ব ছিল। জিনগত কিছু পরিবর্তন হলেও আজকের এ দুটি ক্লোন যেন তাদের ই প্রতিচ্ছবি। তাদের ভালোবাসা যেন একটুও ম্লান হয়নি। মস্তিস্কের নিউরনে সাইন্যাপ্সের জটিল কিছু সংযোগের মাধ্যমে সুপার কম্পিউটার আই ভি 9980 পৃথিবীর কিছু স্মৃতি তৈরি করে দিয়েছে। ওরা জানে, ওদের ই মতো কিছু মানুষ সৌরজগতের সবচে সুন্দর গ্রহটাকে দিনে দিনে বসবাসের অযোগ্য করে ফেলেছে। পৃথিবী ছিল রং-এ রং-এ বর্ণীল, সুন্দর একটি গ্রহ। প্রাকৃতিকভাবে বেঁচে থাক্ত মানুষ। আর এখন…নিওপলিমারের আবরনের ভেতরে কৃত্তিম্ ভাবে তৈরি O2 গ্রহন করে, রাসায়নিক খাবার খেয়ে এই নিরানন্দ, ঠান্ডা পাথুরে গ্রহে বেঁচে থাকার সংগ্রাম করতে হচ্ছে। এখানে মোট ৬৫ জন মানুষ আছে। নিয়ন তাদের দলনেতা। কঠোরভাবে কিছু নিয়ম পালন করতে হয় তাদেরকে। এখানে তাদের বংশবিস্তার করা তৃতীয় মাত্রার অপরাধ। সায়ন্ত তাই চিন্তিত। তাদের ইচ্ছে তাদের ভালবাসাকে টিকিয়ে রাখতে অন্তত একজন মানুষ্ কে তারা ‘দুনিয়া’র, ভুল হল, ইউরেনাসের মুখ দেখাবে। ঋণীলা নয় মাসের সন্তান সম্ভবা। অনেক কষ্টে এতোদিন তারা ব্যপারটা চেপে রাখতে পেরেছে। কিন্তু ১ মাস পর কি হবে? এই গ্রহে ১০০০ বছরে কেউ নিয়ম ভাঙ্গেনি। তারাই প্রথম। শাস্তি কি হবে? তাদের এতো আদরের সন্তান কি এই হীম শীতল গ্রহে তাদের মতো -৮০০ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রায় টিকে থাকতে পারবে? আর ঋণীলা চিন্তা করছে তাদের সন্তান কি সয়ংসম্পুর্ণ মানুষ হবে নাকি তাদের মতো পরিবর্তিত, বিবর্তিত রূপে আসবে? তাদের মতো পৃথিবীর সুখ স্মৃতি নিয়ে জন্মাবে নাকি এই দুর্গ্রহের চেহারা দেখে তার স্মৃতি তৈরি হবে?...সে কি কখনো তার সন্তান কে ঘুম পাড়ানি গান শোনাতে পারবে? স্নিগ্ধ, সুন্দর চাঁদের দিকে তাকিয়ে “আয় আয় চাঁদ মামা…” কবিতা বলতে পারবে? যদি পারে, তবে সেটা কোন চাঁদ…???

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.