নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যা মনে আসে তাই লিখি।

স্বর্ণবন্ধন

একজন শখের লেখক। তাই সাহিত্যগত কোন ভুল ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।

স্বর্ণবন্ধন › বিস্তারিত পোস্টঃ

হাওয়ার শহর

১৩ ই মে, ২০২০ রাত ১১:১০


আমার পাগলি হাওয়া, কাঁপে মড়কের মালগাড়ি,
সাইরেনে একরোখা যুদ্ধের ডাক, তুমি ফিরে যাও বাড়ি!
চায়ের কাপ ভেঙ্গে পড়ে আছে ড্রেনে,
অলিগলি থেকে টুপটাপ কাঁচা বড়ইয়ের মতো পড়ে,
বহু লোক সোনালী পর্দা ভেবে ডুবে যাচ্ছে মারণ কাদায়,
ইচ্ছামৃত্যু মেনে ম্যানহোলের কূপে পাগলের মতো,
কেই বা পা পিছলাতে চায়! তবুও দোষের দোষী,
আমাদের সমস্ত পাপ! চলো চিবাই শুকনো রুটি অদৃষ্ট মেনে!
পাগলি হাওয়া! শুকনো প্রেমের দিনে কান্না করোনা,
উজ্জ্বল মাছেরা পাখনা হারালো কিনা, লেখা থাকেনা-
কোন পরিসংখ্যানে!
ব্লেন্ডারে রক্তাজবা পিষেছিল কেউ কন্সট্রাকশন সাইটে,
জমা করা লাল গুড়ো ইট গুটি গুটি পায়ে হেঁটে,
এলো খেতে জল, দামী পর্দার জানালায়,
ফড়িঙের মতো অপেক্ষমান মুখ!
এই শহরটার ভীষণ অসুখ, পাগলি হাওয়া শান্ত জলে,
ছুঁয়ে দিও পিপাসার্ত চোখ, বুনো প্রপাতে ক্লান্ত রাজপথ!

কতোগুলি চোখ তুমি আর কুড়াবে দেবতা?
শব্দ মেঘের নয় অনধিকারের মাঠে বরাহের হুংকার,
ভাসুক না হয় সিন্দুকের বহুমূল্য দুষ্প্রাপ্য অলংকার!
এখানে আকাশে, চায়ের কাঁপে ডুমুরেরা বলে কথা,
কি হবে রমণী রাণীর মতো সেজে অলংকৃত প্রসাধনে,
অজ পাড়াগাঁর অভিনয়ে সবাই তো সাজবে জোকার!
তুমি তো অনেক দূরে ডুবে আছ দ্রবীভুত সরোবরে,
ক্লান্তির ধ্যান, কোমলে কুসুম ভেবে স্টোভে পুড়ালাম নদী,
সব উড়ে গেলো! তুমিও বাতাস! এখানে সুজাতা নেই!
এসো না পাগলি হাওয়া! হাতে এসে বসো,
খেলার মতো অসমাপ্ত বহুতল গুলো মটমট করে ভাঙ্গছে,
তবু কেন ধ্যান কাটছেনা, কি চাও ময়ূরাক্ষী?
হৃদয় ঠুকরে খাও, অথবা উগড়ে ফেল, যদি চাও!
কাঁপছে বারান্দার রেলিঙে কতোগুলো টবে বাঁধা গাছ,
অবরুদ্ধ উদবাস্তুর মতো, বনেদী ক্যামেলিয়া,
ফাঁকে তার উঁকি দেয় বুভুক্ষ চোখ!
তোমাদের আত্মারা ঝুলে আছে আকাশের পাতালের খাঁজে,
বেঁধেছিল যারা, বন্দীশিকলে কেন কাতরায় তারা?
তার কুন্তলে হাঁসফাঁস করে বুনোহাঁস,
খুলে দিও আস প্যাঁচ,আমার পাগলি বাতাস!

এখনো শহুরে রাত পার হয় রমণক্লান্ত অবসন্নতায়,
শুধু নিস্তেজ পড়ে থাকে কারেন্টের জালে তীরে টেনে আনা,
মৎসকুমারীর মতো রমণীর উন্মুক্ত শরীর, প্রানহীন সুন্দর!
ব্যর্থ সম্ভোগ জেনেও চোখ টেনে ঘুমায় পুরুষ,
অপূর্ণ কামনারা কিলবিলে সাপ, প্যাঁচানো কুণ্ডলি ধরে,
প্রতিরাতে নেমে আসে অলিগলির ভিতরে!
মানুষের জমা আছে অনেক গরল, সমস্ত ক্ষতকে,
এখনো পারে নিমিষেই বিষাতে!
বহুতল গুলো সব চিত্রে বিচিত্র সাপের আড়ত!

পালায় পালায় তারা একেলা পালায়,
মানুষেরা শুনছেনা আজ কোন ডাক, আমার পাগলি হাওয়া,
তোমার বুকের ভিতর বালির দানার মতো ঝিরিঝিরি জল,
এখনো ভেজেনা যারা পাবেনা ফিরে প্রসন্ন সুন্দর!
সময়টা অদ্ভুত আটকে পড়েছে টাইম লুপের গলির ভিতরে,
কাজে দিবেনা আর রিস্টওয়াচের গলা চেপে ধরা-
নিখুঁত হিসাব! চলে যাতে পারি, চলে যেতে পার!
বহুতল খোপের জানালায় উঁকি দেয় কতো রমণীর মুখ,
কর্পোরেট কুমীর গিলে খায় বিশুদ্ধ জলের মতো অন্তর,
পুরুষেরা পুরোটাই আফিসের ডেস্কে থাকে বন্ধক,
ওরা কারা উঁকি দেয় জানালায়? অর্ধেক মানুষ!
তবু চলে এলে রাত রমণক্লান্ত শরীরেরা পড়ে থাকে,
অস্তিত্বের চেয়েও দামী বিছানার চাদর,
কখনো রাখেনি অধিকারে আত্মার আদর! ভুলে যেতে হয়,
অসম্ভব ক্লান্তি সন্ধ্যার মতো নেমে আসে, নেমে আসে!
কতো ক্লান্ত চোখ, অবসন্ন হাত, ব্যালকুনি জুড়ে করে-
দুঃখের চাষাবাদ! পাগলি হাওয়া তাদের খবর নিও!
আকাশের কোণাকুণি চরম অসুখে যারা হাসি দেয় সুখে,
তারাও তো গোপনে দুঃখ বপন করে অকারণে!
আমার পাগলি হাওয়া, রেখেছ বুকে বালুর সাথে,
তাজা রক্তের খোয়া!
ক্রুশবিদ্ধ মানুষের মতো ভয়ে জরজর আত্মারা,
সারিতে সারিতে!
চাঁদ খোঁজে, ছায়া খোঁজে, খোঁজে পদশব্দে নূপুরের বাণ,
ছুঁয়ে দিও! ছুঁয়ে দিও! আমরা পাগলি হাওয়া!

ছবি কৃতজ্ঞতাঃ ইন্টারনেট

মন্তব্য ৬ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৬) মন্তব্য লিখুন

১| ১৩ ই মে, ২০২০ রাত ১১:২৫

ভ্রমরের ডানা বলেছেন: অসাধারণ একটা কবিতা পড়লাম! কবিতায় নির্মম সত্যতা স্বচ্ছ অবয়বে দৃশ্যমান!

১৪ ই মে, ২০২০ রাত ১২:১২

স্বর্ণবন্ধন বলেছেন: সুপ্রিয় ব্লগার, করোনার সময়ে সত্য, মৃত্যু সব মিলে একাকার! ধন্যবাদ কবিতা পড়ার জন্য।

২| ১৪ ই মে, ২০২০ রাত ১২:৩৪

নেওয়াজ আলি বলেছেন: তালাবন্দী ঈদ উপহার করোনার ,অসাধারণ

১৪ ই মে, ২০২০ বিকাল ৩:০৫

স্বর্ণবন্ধন বলেছেন: ধন্যবাদ

৩| ১৪ ই মে, ২০২০ রাত ৩:০৬

রাজীব নুর বলেছেন: কবিতা মনকে আরাম দেয়।

১৪ ই মে, ২০২০ বিকাল ৩:০৫

স্বর্ণবন্ধন বলেছেন: ধন্যবাদ

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.