| নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মানুষ সম্ভবত মনের ভিতরে একটা তেপান্তরের মাঠ নিয়ে ঘোরাফেরা করে। কাজ করে, হাসে, খায়, ঘুমায়।
কিন্তু নি:সীম সেই প্রান্তরে হুহু করে বইতে থাকে অদ্ভুত বাতাস।
পূবালী বাতাস নয়, চৈতালী হাওয়া নয়, দখিণা বায়ু নয় বরং এক অজানা হাহাকার। সারাজীবন এই পাগলা হাওয়ায় সত্তা উলোটপালট হয়ে যাওয়ার অভিজ্ঞতা তার আছে, কিন্তু নামকরণ করতে পারেনি কখনো।
তার মনে হয় সবকিছুর নামকরণ করা যায়না। কিছু কিছু বোধ ভাষার অতীত। জীবনানন্দ ঠিক ধরেছিলেন- "মনের গভীরে এক বোধ জন্ম লয়!"
কিন্তু কি বোধ সেটা! স্বপ্ন নয়, প্রেম নয় এক অদ্ভুত অনুভূতি।
যদিও Wittgenstein বলেছেন- "The limits of my language mean the limits of my world." কিন্তু মানুষের সব অনুভূতি, বোধ কি ভাষায় প্রকাশ করা যায়!
তার মনের এই তেপান্তর আর সেই অদ্ভুত হাওয়া কোন ভাষায় তো তাকে ঠিকঠাক সে বোঝাতে পারেনা।
চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়!
তাহলে কি এই জনারণ্যে, আড্ডায়, অফিসে, রাস্তার ভীড়ে ও মানুষ একা? এটা একটা স্ববিরোধী বক্তব্য হয়ে যায়।
আসলে অসংখ্য মানুষ প্রতিদিন আসে তার মনের তেপান্তরের মাঠের এক প্রান্তে হয়ত বনভোজনের জন্য।
রাজা আসে, রাণী আসে,প্রেমিক আসে, প্রেমিকা আসে, আসে গল্পের কৌতুকপ্রিয় জোকার, চেনা বন্ধুত্বের মুখোশে কতো অচেনা মানুষ।
কিন্তু তারা কেউই সেখানে বসতি গড়েনা। ক্যাম্পফায়ার শেষে তাবু গুটিয়ে ফিরে যায়।
একা একা বসে থাকে একজন মানুষ তার পাশে অসীম নি:স্তব্ধতা নিয়ে এক তেপান্তরের মাঠ।
কোন শব্দ থাকেনা, ভাষা সেখানে মৃত।
আলো নেই, অন্ধকার ও নেই।
শুধু মাইলের পর মাইল ধু ধু শুন্য মাঠ।
ঘুমের আগে, কাজের ফাঁকে, কখনো প্রচন্ড ট্রমায় পড়ে মানুষ স্বত:স্ফুর্তভাবে সেই নির্জন মাঠে পৌছে যায় আর হতবিহ্বল হয়ে ভাবে- কে আমি? আমার ই বা কে?
হাজার বছর আগে এক কন্ঠ কি একই রকম উপলব্ধি থেকে বলেছিলেন- "কা তব কান্তা, কস্তে পুত্র: ( কেই বা তোমার পত্নী, কেই বা তোমার সন্তান)!"
তুমি তো তেপান্তরের মাঠে একা। বাকি সব মায়ার ছলনা, ইলিউশন।
তার হাজার বছর পর ইউরোপের রাস্তায় বিশ্বযুদ্ধের ধ্বংসলীলার ক্ষত বুকে নিয়ে হাঁটতে হাঁটতে আলবেয়ার ক্যামু হয়ত বলে উঠেছিলেন- Absurd! Absurd!
মনের ভিতরের এই বিশাল তেপান্তর, যার কোন কিছুতে স্বস্তি নেই, অদ্ভুত জীবের মতো মানুষের বোধে এক মোচড় লাগিয়ে রাখে, কি তার অর্থ? কেনই বা সে আছে!
হয়ত তার কোন অর্থ নেই। ভাষা নেই।
তবু সে অস্তিত্বশীল থাকে সবার মনের গভীরে।
১৮ ই নভেম্বর, ২০২৫ রাত ১০:২০
স্বর্ণবন্ধন বলেছেন: হ্যা ভাই খুবই অদ্ভুত।
২|
১৬ ই নভেম্বর, ২০২৫ রাত ৮:৫১
শায়মা বলেছেন: তাই তো কবি নজরুল লিখেছেন-
তেপান্তরের মাঠে বধু হে একা বসে থাকি .....
১৮ ই নভেম্বর, ২০২৫ রাত ১০:২০
স্বর্ণবন্ধন বলেছেন: হ্যা বহু লেখক দার্শনিকের কন্ঠে বারংবার অনুরণন ঘটেছে এই শূন্যতার।
©somewhere in net ltd.
১|
১৬ ই নভেম্বর, ২০২৫ সকাল ৯:২২
রাজীব নুর বলেছেন: পড়লাম।
মানুষ বড় অদ্ভুত প্রানী। অদ্ভুত তাদের জীবন।