| নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |

ছোটবেলায় মা বলতেন- 'রাত্তিরে গাছকে জাগালে ওরা কষ্ট পায়, কাঁদে!'
তাই গাছের পাতাকে স্পর্শ করিনা রাতে, দেখতে যাইনা শিউলি ফুল ফোঁটার মুহূর্ত। এড়িয়ে যাই ফুলদানির নিশিগন্ধার ফিসফিসানি।
অনিদ্রার তীব্র মুহুর্তেও বারান্দার বাতাসে দোল খাওয়া লতাপাতার সাথে গল্প করিনা। যদি জেগে যায়, কষ্ট পাবে ওরা।
কিন্তু তারপরেও তো পৃথিবী কাঁদে!
সে বিলাপ প্রতিটি বৃক্ষের শিকড় বেয়ে উঠে আসে শাখায় পাতায়। তখন আর আলাদা করা যায়না কে কাঁদছে পৃথিবী নাকি নি:স্তব্ধ গাছ! মানুষ না ছুঁলেও তাই বৃক্ষেরা কাঁদে।
পৃথিবীকে কাঁদায় কে?
মানুষের অতৃপ্ত প্রেম, অশান্ত শোক, অব্যক্ত বাসনা? নাকি বিলুপ্ত সব প্রাণীদের শোকে তার বুক গুমড়ে উঠে। মহাকাল কেড়ে নিয়ে গিয়েছে তার নাড়ীছেড়া কতো হাজার কোটি সন্তানকে।
কে জানে!
আজকাল "মহীনের ঘোড়াগুলি" রাতের তৃতীয় প্রহরে পৃথিবীর অদ্ভুত ডায়নামোর উপর ঘাস খেতে এসে বেশিক্ষণ চিবোতে পারেনা। পৃথিবীর জমাট কান্নায় সমস্ত ঘাস নোনা হয়ে থাকে।
অথচ আমি কখনোই বৃক্ষদের রাতে জাগাই না।
প্রগাঢ় পিতামহী তার ছনের মতো সাদা চুল ও কুঞ্চিত চোখে বলতেন- 'রাতের বেলায় কামিনী ফুলের কাছে যেওনা দাদু, বিষধর সাপ আসে ওইখানে!'
আমি সূর্য্য ডুবে গেলে কখনো কামিনী গাছের নীচে যাইনা। অদ্ভুত মাদকতার গন্ধ থেকে সরিয়ে রাখি বহুদূর।
তবুও তো ছদ্মবেশে এগিয়ে আসে চন্দ্রবোড়া, শংখিনী!
মানুষের নিউরনের স্পন্দন থেকে জিহবায় উঁকি দেয় ফণা।
এক অদ্ভুত বিষ ছড়িয়ে পড়ছে মানুষের সমবেত মনে।
আজকাল মানুষ রাতে কামিনী ফুলের গন্ধ শুঁকতে যায়না।
স্পষ্ট বললে লোকালয় থেকে বিলোপের পথে কামিনীবাগান!
তবুও এখনো লক্ষীন্দর মরে যায় হরহামেশাই। বেহুলার গল্প সেভাবে লিখা হয়না। ক্ষণস্থায়ী সংবাদের মতো ভুলে যায় সবাই।
এক তীব্র বিষে ভুলে যেতে হয়।
আমাদের আকাশের গ্রহণের চাঁদ আটকে পড়ে পদ্মগোখরার মাথার চক্রবূহ্যে। তার আলো কাগজের ঠোংগায় ভরে কেউ প্রেমিকাকে উপহার দেয়না এখন।
কালপুরুষের কোমড় জড়িয়ে আটকে রেখেছে চন্দ্রবোড়া।
সে আর ভরসা দেয়না। তাকে নিয়ে কেউ গল্পও বানায়না।
অথচ আমরা আজকাল রাতেরবেলা কামিনী গাছের কাছে যাইনা।
২|
১৯ শে নভেম্বর, ২০২৫ রাত ২:১১
এইচ এন নার্গিস বলেছেন: চমৎকার প্রকাশ ।
©somewhere in net ltd.
১|
১৮ ই নভেম্বর, ২০২৫ রাত ১১:০৪
মোঃ খালিদ সাইফুল্লাহ্ বলেছেন: অনেক সুন্দর লিখেছেন! যদিও এটা গদ্য না পদ্য একটু ভাবায়, কিন্তু তাতে কিছু যায় আসে না। পদ্য মনে করেই পড়ে নিলাম।