| নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |

যখন অস্ট্রিচের মতো সারি সারি গাড়ি,
নদীর বুকে ঢেউ ভাঙা ফেরি
ছুটে যায়—গন্তব্য শহরের চিরচেনা বাড়ি।
ক্লান্তি নামে ল্যাম্পপোস্টের চোখে একই দৃশ্য দেখে
তখন আমার ঘুম ভাঙে,
ক্লান্তিগুলো নেড়েচেড়ে রেখে দিই পাশের টেবিলে।
রক্তসঞ্চালনের চাপ মেপে টের পাই স্ফিগমোম্যানোমিটারে—
এই উত্তাপ, তীক্ষ্ণ হুইসেল কিছুই আমার নয়।
পিচঢালা পথে যে ছাপ গিয়ে রেখেছে আমার পায়ের চাপ,
তাও মিশে গেছে কিছু হায়েনার ভিড়ে;
পরিচিত বলে কিছু নেই চরাচরে।
আমি তখন হয়তো তোমার কাছে ফিরে যেতে চাই।
শীতের সন্ধ্যায় মিশে যায় মগে এসপ্রেসো, লাতে, কাপুচিনো,
হালকা ধোঁয়ায় নিজের আঙুলগুলো বড় অচেনা মনে হয়,
যেমন অচেনা লাগে কুঠিবাড়ির দেয়ালে রবিঠাকুরের লেখা গান।
সেভাবেই শহরটা ক্রমশ ভেসে যেতে থাকে
একটি পরিচিত বারান্দার দিকে।
সেখানে তোমার স্নিগ্ধ হাতে শুয়ে টাইগার ফার্ণ
জুড়ায় উত্তপ্ত প্রাণ।
রাস্তার কুকুরগুলো হয়তো চেঁচায় আত্মপরিচয় ভুলে যাওয়ার শোকে,
আমিও সেই শোকেই আক্রান্ত।
তাকিয়ে থাকতে থাকতে
আলগা বালির মতো ঝরে পড়ে
আমার অঙ্গপ্রত্যঙ্গ, স্নায়ু, মস্তিষ্ক।
তারপরেও ভোজবাজির মতো বেঁচে থাকি,
অজাইম্যান্ডাইসের মতো নিজের ধ্বংস দাঁড়িয়ে প্রত্যক্ষ করি,
তখনো হয়ত তোমার কাছে ফিরে যেতে চাই।
হেঁটে যাচ্ছিলাম জিরাফ, জেব্রা, বুনো ঘোড়াদের সঙ্গে।
পেরিয়ে গেল পেছনের বনভূমি, জলাভূমি—
এখন চারদিকে মরুভূমি।
কোথায় দাঁড়াইনি আমি?
সমতলে জল ছিল, বনভূমি জুড়ে ছিল
হাঙরের দাঁতের মতো শ্বাসমূল।
বসতি স্থাপনের মতো শক্ত ভিত্তি ছিলনা কোথাও।
যে সমস্ত জমি আমি পেয়েছি উত্তরাধিকার সূত্রে,
তার পুরোটাই বন্ধ্যাভূমি।
শিরা কেটে রক্ত ঢেলেছি—তাতেও ফসল ফলেনি।
সহযাত্রী পশুদের মরদেহ একে একে পুঁতে রেখেছি,
তবুও কোনো চারা মেলেনি চোখ।
এখন দ্বীপের মতো ভেসে যাই মহাসাগরের বুকে,
রুক্ষ রোদে লবণের নোনা স্বাদ।
কোথায় যাচ্ছি আমি, কে জানে—
হয়ত এখনো আনমনে তোমার দিকেই হেঁটে যাই।
©somewhere in net ltd.