![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মানুষ কে ঘৃনা করার অপরাধে অতীতে কাউকে কখনো মৃত্যুদন্ড দেয়া হয়নি। কিন্তু মানুষ কে ভালবাসার অপরাধে অতীতে অনেককেই হত্যা করা হয়েছে, ভবিষ্যতেও হয়তো হবে !!
আট-নয় মাস আগের কথা। আমার এক বন্ধু এবং তার প্রেমিকার সঙ্গে দেখা। নিউমার্কেটে। দু’জন বেশ উড়ে বেড়াচ্ছে, ঘুরে বেড়াচ্ছে। যেন রঙিন প্রজাপ্রতি। নিউমার্কেটের এ-দোকানে, ও-দোকানে। অনেকটা জোর করে আমাকে ফুচকাও খাওয়ায় বন্ধু ও তার প্রেমিকা।
বন্ধুর প্রেমিকা ইডেনে পড়েন। বিস্তারিত জানি পরিচয়ে। হপ্তা খানেক পর বন্ধুর প্রেমিকা একদিন আমার মুঠোফোন নাম্বারে ফোন দেন। বলেন, আপনি তো একা থাকেন। আপনার ফ্ল্যাটে কি আমরা কিছুক্ষণ সময় কাটাতে পারি? কোনো ঝামেলা হবে না, নিজেদের মতো সময় কাটিয়ে চাবি দিয়ে যাব।
আমি রাজি হই না। কেমন যেন অস্বস্তি কাজ করে আমার ভেতর। রাজি না হওয়াতে বন্ধুর প্রেমিকা আমার ওপর মহা বিরক্ত। বলেন, আপনি এখনো সেকেলে। অনাধুনিক। ব্যাকডেটেড। আনস্মার্ট। এখনকার ছেলেরা এখনো এমন মান্ধাতার আমলের, বোঝা যায় না আপনাকে না দেখলে। রীতিমতো আমাকে ভর্ৎসনা করে ফোন কেটে দেন।
মাস তিন পর আবারও সেই মেয়েটির ফোন। ভাইয়া, আমি সীমা। কোন সীমা? আপনার ছোট বোন। মেয়েটি ডুকরে কাঁদছে। ও আমার সর্বনাশ করেছে।
আমি বলি, সীমা শান্ত হোন। কী হয়েছে বলুন। সীমার কান্না থামে না। সীমার সীমাহীন, নিরন্তর ক্রন্দন আমার ভেতরে তীব্র বেদনার এক অনুভূতির জন্ম দেয়। খুব বেশি দিনের পরিচয় তাদের নয়। ছেলেটি সিম পাল্টে ফেলেছে। বিবাহিত, দুই সন্তানের জনক। তাও জানতেন না সীমা।
সম্ভবত প্রেমের চেয়ে আর কোন ভালো, নিরাপদ, বিশ্বস্ত অস্ত্র নেই মেয়েদের প্রতারিত করার, ফাঁদে ফেলার। প্রেমে পড়ে যে মাত্রার বোধহীন, যুক্তিহীন, মেধাহীন, কাণ্ডজ্ঞানহীন, অন্তঃসারশূন্য আচরণ মেয়েরা করে, তা করে না জীবনের আর কোনো সময়। পুরুষের প্রেমজাল মেয়েদের এমনই ‘আক্রান্ত’ করে যে, লক্ষ্য করলে দেখা যাবে, সোজা হয়ে হাঁটতেও পারে না সে। নেতিয়ে পড়ে পুরুষের গায়ে, বাহু জড়িয়ে হাঁটে। মনে হয় শক্তিহীন, স্বাবলম্বনহীন, দুর্বল। আসলেই সে তখন ভয়ানকভাবে দুর্বল, পুরুষ প্রেমে। পুরুষের প্রেম কখনো কখনো নেহাত প্রতারণাও বটে। কোনো কোনো মেয়ে প্রতারিত হওয়ার পরও, প্রতারণার বৃত্তে ঘুরপাক খেতে খেতেও বুঝতে পারে না, সে প্রতারিত হচ্ছে। কেননা, সে তখন নিজের কথা ভাবে না, ভাবে অন্যের কথা। নিজের খোঁজ সে নেয় না, নেয় অন্যের খোঁজ। এ নিতান্তই এক ‘ঘোর’। ফলে ঘোরের মধ্যে যে আচরণ সে করে কিংবা তার সঙ্গে করা হয়, তার সবটুকুই সে তখন অনুমোদন করে- বুঝে, না বুঝে।
ভারতীয় মিডিয়া এবং সংস্কৃতি আমাদের বহুলাংশে প্রভাবিত করছে। ফলে ভারতীয় নর্দন-কুর্দনসর্বস্ব চলচ্চিত্র দর্শনে, বাধ্যতামূলকভাবে ‘বয়ফ্রেন্ড’ কিংবা ‘গার্লফ্রেন্ড’ জরুরি মনে করছে এখানকার, এখনকার অনেক তরুণ-তরুণী। ‘বয়ফ্রেন্ড’ না থাকাটা যেন অসম্মানের, অনেক মেয়ের কাছে। ফলে জরুরি ভিত্তিতে ‘সো কলড বয়ফ্রেন্ড’ পেতে গিয়ে যে কোনো বদ পুরুষের খপ্পরেও পড়ছে মেয়েরা। পুরুষেরাও সুযোগ বুঝে, সুযোগ নিচ্ছে বিশাল গার্লফ্রেন্ডের এই খোলাবাজারে।
দাম্পত্য প্রেমের অবস্থাও কম নাজুক নয়। এখানেও প্রতারণা ঘরে ঘরে। ‘তুমিই আমার সব’, ‘তোমাকেই সবচেয়ে ভালোবাসি’, ‘তুমি ছাড়া কেউ নেই’- এমন কথা মুখে থাকলেও অন্তরে নেই। বসবাস, সহবাস একের সঙ্গে, প্রেম অন্যের সঙ্গে- এমন চিত্র এখন অনেকটাই নিয়মিত। প্রেমিকাকে পাঠাতে গিয়ে ভুলে স্ত্রীর ইনবক্সে টেক্সট চলে যাওয়া, পকেটে নিরোধ, কোনো কারণে প্রেমিকার সঙ্গে হয়নি, এসে স্ত্রীকে জড়িয়ে ধরে চুমু খেয়ে, ‘আজ শুধু তোমার আমি, আজ শুধু তুমি আমি’-এমন অতি আবেগ, অতি রোম্যান্টিকতা- এ শহরে নৈমিত্তিক। বহুগামিতা এখানে নিয়মিত চিত্র। যৌন প্রতারণা এখানে স্বাভাবিক দৃশ্য। শুধু কাছের মানুষ, নিকট বন্ধুদের প্রেম-প্রতারণা, পরকীয়া, বহুগামিতার কথাই যদি বলি, তাহলে এই লেখা একশ’ পৃষ্ঠা ছাড়িয়ে যাবে, তবু শেষ হবে না। সবার প্রতি শ্রদ্ধাশীল আমি, তাই এ লেখায় তাদের ব্যক্তিগত চরিত্র উন্মোচন না হয় না-ইবা করলাম, সামগ্রিক চিত্রটি কেবল বর্ণনা ও বিশ্লেষণ করছি।
প্রেমের জন্য কি কোনো দিন লাগে? ভালোবাসাই যদি লক্ষ্য হয়-তবে তার উপলক্ষ কী আবার? সব দিনই তো ভালোবাসার, বরং প্রতারণা নানা উপলক্ষ খোঁজে। ওত পেতে থাকে প্রতারণা চরিতার্থের।
ভালোবাসার দিন উপলক্ষ করে নতুন নতুন জাল তৈরি হয়েছে। বিশাল বিশাল ফাঁদে আটকেছে মেয়েরা। অভিনব সব কায়দা। কত মেয়ে যৌন হয়রানির শিকার হয়েছে, যৌন নির্যাতনে ভুগেছে, অনাকাঙ্খিত গর্ভধারণ, ভ্রুণ হত্যা হয়েছে, তার হিসাব কে রেখেছে, কে রাখে! পুরুষের নানা ধরনের বিকৃত যৌন অভিলাষকে মেয়েরা আদর বলে, সোহাগ বলে, প্রেম বলে, ভালোবাসা বলে ভাবে। এই ধারণা বিকৃত-কাম পুরুষতাত্ত্বিক সমাজের ইনজেকশনের ফল।
জানি আমি, আমার এই কথায়, এই লেখায়, অনেকেই যারপরনাই বিরক্ত হবেন আমার ওপর। কিন্তু প্রেমের ফাঁদে, প্রতারণায় কত মেয়ে ভুগেছে. ভুগছে- সে খবর রেখেছেন কেউ? কত মেয়ে প্রেমের নামে নীরব ধর্ষণের শিকার হয়েছে, হচ্ছে, কত মেয়ে আত্মহত্যা করেছে, জীবন দিয়েছে পুরুষের প্রতারণার কারণে, সে খবর ক’জনে রেখেছেন? আমি বলছি না প্রতারণা শুধু পুরুষরাই করে, প্রতারণা নারীও করে, তবে সেই মাত্রা অনেক কম, পুরুষের মাত্রা অনেক অনেক অনেক বেশি। চাই- কেউই কাউকে প্রতারিত করবে না। যৌন হেনস্থা না, যৌন নির্যাতন না। মুখোশ না, ছদ্মবেশ না। অভিনয় না, সঙ্গীর সঙ্গে নাটক না।
সুখ চাই, সত্যিকার ভালোবাসার সুখ, প্রেমের সুখ। প্রতারণার অদৃশ্য সুতোও সেখানে থাকবে না। এ সুখে আমারও কোনো আপত্তি নেই। আমিও চাই সুখের সাত আসমান ঘুরে আসতে। অনন্ত ঋতু ভাসতে চাই আমিও, ভাসুক অন্যেও। কিন্তু তাতে যেন প্রেম থাকে, এক ফোঁটাও প্রতারণা না থাকে। লক্ষ্য-উদ্দেশ্য যদি মানবিক, মহৎ, মহান, প্রেমের হয়, তখন ছুঁলাম কি শুলাম, তা কোনো বিষয় নয়। মনে রাখতে হবে, বহুগামিতা কোনো সুখ দেয় না, কেননা বহুগামিতার কোনো শেষ নেই। লাগাম নেই।
আমাকে অপ্রেমিক ভাবলে ভুল হবে। আমি আপাদমস্তকই প্রেমিক। প্রেম নেই, সম্পর্ক আছে এমন একটি সম্পর্কেও আমি বিশ্বাস করি না। প্রেমহীন কোনো সম্পর্কও আমার কারও সঙ্গে নেই। নারী কিংবা পুরুষ প্রত্যেক মানুষের সঙ্গে আমার সম্পর্ক, প্রেমের। মানুষের প্রতিটি সম্পর্কই হোক প্রেমের, অপ্রেমের নয়। ভালোবাসাহীনতার নয়। প্রেম আছে, আমি আছি। প্রেম নেই, আমি নেই।
Click This Link
২| ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ দুপুর ১:৫২
মহিদুল বেস্ট বলেছেন: বেশ! জানবার ছিল! +++
৩| ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ দুপুর ২:০২
বাউন্ডুলে রুবেল বলেছেন: প্রতারণা নারীও করে, তবে সেই মাত্রা অনেক কম, পুরুষের মাত্রা অনেক অনেক অনেক বেশি।
এই লাইনটুকু পুরো লেখাটাকে হালকা করে দিলো। খুঁজলে দুপক্ষেই প্রায় সমান সমান এরকম পাওয়া যাবে।
৪| ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ দুপুর ২:১০
রাজ হাসান বলেছেন: বাউন্ডুলে রুবেল বলেছেন: প্রতারণা নারীও করে, তবে সেই মাত্রা অনেক কম, পুরুষের মাত্রা অনেক অনেক অনেক বেশি।
এই লাইনটুকু পুরো লেখাটাকে হালকা করে দিলো। খুঁজলে দুপক্ষেই প্রায় সমান সমান এরকম পাওয়া যাবে।
বিষয়টি এরকম ...এক হাতে যেমন তালি বাজে না ঠিক সে আর কি।
৫| ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ দুপুর ২:৫৩
ইফতেখার ভূইয়া বলেছেন: সামুতে আছি সাত বছরের উপরে। কালে ভদ্রে হয়তো দু'একটা লিখা লিখি। মন্তব্য করি খুবই কম। কিন্তু পড়ি তার চেয়ে ঢেড় বেশী। অনেক অনেক বড় মাপের লেখক বা ব্লগারের লিখা পড়েছি এখানে, কিন্তু লিখা যত ভালোই হোক না কেন, আমি প্রশংসা করতে পারিনা। ব্যাপারটা এমন নয় যে, মন থেকে তাদের প্রতি কোন প্রশংসা বাক্য বের হয়না, বরং ব্যাপারটা ঠিক তার উল্টো। ভালো লিখা পড়ে এত বেশী উৎসাহী হয়ে যাই যে, প্রশংসা করে ঠিক মতো দু'চারটা লাইন সাজিয়ে গুছিয়ে লিখতে পারিনা। এ ব্যর্থতা আমি স্বীকার করি অসীম সাবলীলতায়।
কিন্তু আপনার সোজা-সাপটা লিখার প্রশংসা না করে পারছিনা। বলার কথাগুলো কতটা অবলীলায় লিখেছেন! অসম্ভব ভালো লাগলো। সবচেয়ে ভালো লেগেছে, সমাজের কোষ্টকাঠিণ্যকে সবার সামনে তুলে ধরার বিষয়টা। ব্যাপারটা এমন যে, আমরা সবাই সব বুঝি, জানি কিন্তু প্রকাশ করার ক্ষেত্রে কৃপণতা করি। হয়তো কোথাওনা কোথাও আমরা সবাই হিপোক্রেট।
যাইহোক, প্রবাসে আছি বেশ কিছুদিন হলো। গত ৭/৮ বছরে দেশে যাওয়া হয়নি। দেশের অনেকের সাথেই যোগাযোগ আছে। মাঝে মধ্যেই এইসব বিষয়গুলো ওদের মারফতেই শুনতে পাই। আমাদের তথাকথিত রক্ষণশীল সমাজ কোন দিকে এগুচ্ছে সেটাও বুঝতে পারি। ভীষণভাবে মর্মাহত হই।
ইদানীং আবার মা-বাবা তাদের ছেলেও বিয়ে নিয়ে উঠে পড়ে লেগেছে। চিন্তার মাত্রাটা তাই আরো একটু বেশী। বলছিনা দেশের সব মেয়েই "সীমা"র মতো কিন্তু এটা সমাজের একটা বড় চিত্র। আর ভাবনাটার শুরুটা সেখান থেকেই।
প্রার্থনা করি, সত্যিকার ভালোবাসার জয় হোক। অনেক অনেক ভালো থাকবেন।
৬| ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৫:৫৯
পদ্মা_েমঘনা বলেছেন: চমৎকার লিখেছেন ভাই! ধন্যবাদ।
৭| ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ সন্ধ্যা ৬:৪৩
নতুন বলেছেন: কেন যে মেয়েরা ফাদে পা দেয়...
৮| ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ রাত ৯:৪১
ভাবসাধক বলেছেন: গুড +++
৯| ১৮ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ দুপুর ২:২৯
বেলা শেষে বলেছেন: ...you are right brother, write more...
...up to next time....
১০| ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ বিকাল ৩:০৮
রাসেলহাসান বলেছেন: আপনার পোস্ট পড়ে তো আপনার ফ্যান হয়ে গেলাম!! নেক্সট পোস্টের অপাক্ষায় রইলাম। শুভ কামনা।
©somewhere in net ltd.
১|
১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৪ দুপুর ১:৫০
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: সুখ চাই, সত্যিকার ভালোবাসার সুখ, প্রেমের সুখ। প্রতারণার অদৃশ্য সুতোও সেখানে থাকবে না। এ সুখে আমারও কোনো আপত্তি নেই। আমিও চাই সুখের সাত আসমান ঘুরে আসতে। অনন্ত ঋতু ভাসতে চাই আমিও, ভাসুক অন্যেও। কিন্তু তাতে যেন প্রেম থাকে, এক ফোঁটাও প্রতারণা না থাকে। লক্ষ্য-উদ্দেশ্য যদি মানবিক, মহৎ, মহান, প্রেমের হয়, তখন ছুঁলাম কি শুলাম, তা কোনো বিষয় নয়। মনে রাখতে হবে, বহুগামিতা কোনো সুখ দেয় না, কেননা বহুগামিতার কোনো শেষ নেই। লাগাম নেই।
++++++++++++++++