নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সৈয়দ রিদওয়ান আহমদ

আমি রিদওয়ান।বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশুনা ও গবেষণা করতে পছন্দ করি।মাঝে মধ্যে শখের বশত লেখালেখি চালিয়ে যাই।গল্পদ্য (দ্বিতীয় সংকলনে) ৩ টি গল্প প্রকাশের মাধ্যমে লেখার জগতে আমার যাত্রা।এই আর কি!

সৈয়দ রিদওয়ান আহমদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

গোপটু মিয়ার আম চুরি ;)

০১ লা জুন, ২০১৫ রাত ১:৩৭

১।

জৈষ্ঠ্যের ভরদুপুর। একটি কিশোরের দল পুকুর থেকে গোসল সেরে বাড়ি ফিরছিল।তার হাশেম মিয়ার আম বাগানের সামনে এসে থমকে দাড়াল।তাদের দলের ছোটু নামের একজন বলে উঠল,দেখেছিস,আমগুলো পেকে লাল হয়ে আছে!
তপু বলল,এখানে বেশিক্ষণ দাড়িয়ে থাকিস না।হাশেম মিয়া দেখলে হাড় ভেঙে গুড়ো করে দিবে।
তার কথা শেষ হতে না হতেই হাশেম মিয়া তাদের সামনে উপস্থিত।তিনি কোমরে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন।তিনি কর্কশ গলায় বললেন,এই বিচ্ছুর দল!এখানে তোরা কি করিস?
ছোটুর চোখে-মুখে ভয়ের ছাপ।সে ভয়ার্ত কন্ঠে বলল,না-মানে আমরা এদিক দিয়ে যাচ্ছিলাম।হঠাৎ ক্লান্ত হয়ে পড়ি।তাই গাছের ছায়াতলে বসেছিলাম।
-ছায়াতলে বসা হচ্ছিল,নাকি চুরি করার প্ল্যান বানানো হচ্ছিল!আর যেন আমার বাগানের ত্রি-সীমানায় না দেখি;নইলে পা ভেঙে দিব।
তারা সবাই মাথা নাড়িয়ে হাশেম মিয়ার কথায় সম্মতি প্রকাশ করল।
কিশোরের দল মনমড়া হয়ে রাস্তা দিয়ে হাটছিল।গোপটু মিয়াও এই একই রাস্তা দিয়ে হাটছিল।গোপটু মিয়া কিশোরের দলকে দেখে বলল,কি-রে?তোদের মন খারাপ কেন?
তপু বলল,আমরা হাশেম মিয়ার বাগানের সামনে গিয়েছিলাম।ব্যাটা হাশেম মিয়া আমাদের বলেছে,আমরা যেন তার বাগানের ত্রি সীমানায় না যাই।
গোপটু মিয়া হো হো করে হেসে উঠল এবং তাচ্ছিল্যের ভঙ্গিতে বলল,ও এই কথা।শোন,তোদের দ্বারা চুরি হবে না।তাই তোরা আম খাওয়ার বদলে বকা খাওয়ার স্বপ্ন দেখ।
তপু গোপটু মিয়ার কথার প্রতিবাদ করে বলল,হাশেম মিয়া সারাক্ষন লাঠি হাতে তার বাগানে বসে থাকে।এমতাবস্থায় কে চুরি করবে বল? গোপটু মিয়া তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তপুর দিকে তাকিয়ে বলল,আমার জীবনের ২৯ টা বছরের মধ্যে ১১ বছরই শুধু চুরি করেছি।তাও আবার বড় বড় চুরি।তোদের বয়সইত এগার হয়নি।বুঝেছিস?
ছোটু গোপটু মিয়াকে চেতানোর উদ্দেশ্যে বলল,এই জন্যই তো দেখেছি,গতবার চৌধুরী বাড়িতে চুরি করতে গিয়ে ধরা পড়েছ।তাদের বাড়ির দারোয়ানেরা তোমাকে কি পিটুনিই-না দিল।
ছোটুর কথা শুনে সবাই হি হি করে হেসে উঠল।এদিকে ছোটুর কথাটি গোপটু মিয়ার খুব মান সম্মানে লেগেছে।তাই সে বলল,যাহ!তোদেরকে আমি ঐ হাশেম মিয়ার আম চুরি করে এনে দিবই। নইলে আমি আমার নাম পালটে দিব।
গোপটু মিয়ার কথায় ছেলেগুলো উজ্জ্বল দৃষ্টিতে তাকাল এবং বলল,ঠিক তো???
-হু।
গোপটু মিয়া চলে গেল।
২।

রাত ১২ টা।গোপটু মিয়া হাশেম মিয়ার আম বাগানে ঢুকল।হাশেম মিয়া ও তার দুই ছেলে লাঠি হাতে বাগানে বসে চারিদিক পর্যবেক্ষন করছে।গোপটু মিয়া বাগানের পুকুর পাড়ের পাশের আম গাছটায় উঠল।যেহেতু সে একজন পাকা চোর,তাই তার গাছে উঠতে তেমন কোনো সমস্যা হয়নি।গোপটু মিয়া গাছের আম পাড়তে লাগল।সে সব আমগুলিকে তার লুঙির মধ্যে বাধল।সে গাছ থেকে নিচে তাকাল এবং দেখল,হাশেম মিয়া গাছের উল্টো দিকে মুখ করে বসে আছে।তাই সে গাছ থেকে নামা শুরু করল।কিন্তু হঠাৎ তার লুঙি থেকে একটি আম পড়ে গেল।আর এই গাছেই ছিল একটি মৌচাক।দুঃখজনক বিষয় হল আমটি সোজা গিয়ে পড়ল মৌচাকে।আর মৌচাকে আঘাত করলে মৌমাছিরা বের হয়ে আঘাতকৃত ব্যাক্তিকে হুল ফোটায়।গোপটু মিয়া নিজেকে রক্ষার জন্য সোজা পুকুরে ঝাপ দিল।ঝাপের শব্দ শুনে হাশেম মিয়া ও তার দুই ছেলে দৌড়ে এল।তিনি পুকুরে টর্চ দিয়ে পুকুরের মধ্যে গোপটু মিয়াকে দেখলেন।গোপটু মিয়াকে দেখে তার মাথায় রাগ উঠে গেছে।তিনি আরো দেখলেন যে পুকুরপাড়ে কয়েকটি আম পড়ে আছে।হাশেম মিয়ার দুই ছেলে গোপটু মিয়াকে ধরে দড়ি দিয়ে ঐ আম গাছটার সাথে বাধল।
পরদিন সকালে গ্রামে গোপটু মিয়ার চুরির সাজার জন্য বিচারসভা বসল।বিচারের একপাশে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে গোপটু মিয়ার সাজা দেখছিল আর মিটিমিটি হাসছিল ঐ কিশোরের দল।আর সে সাজা এতো বেশি হয় যে তার বর্ননা না দেওয়াই শ্রেয়।

মন্তব্য ৩ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৩) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা জুন, ২০১৫ রাত ১:৪৪

সৈয়দ রিদওয়ান আহমদ বলেছেন: :-)

২| ০১ লা জুন, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:০৭

শতদ্রু একটি নদী... বলেছেন: চোরের আবার মান ইজ্জত!! কি শাস্তি দিলো, গতানুগতিক নাকি যুগান্তকারী? ;)

গল্প ভালো হইছে। :)

৩| ১০ ই জুন, ২০১৫ রাত ১:০৮

সৈয়দ রিদওয়ান আহমদ বলেছেন: আপনার যা মনে হবে,তাই দিয়ে দিবেন।এটা আপনার উপর ছেড়ে দিলাম।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.