নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

রিশাদ আহমেদ

রিশাদ আহমেদ › বিস্তারিত পোস্টঃ

পাকিস্তানি যুদ্ধাপরাধীরা

২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০২১ রাত ১০:২৩





১. জেনারেল ইয়াহিয়া খান

শেখ মুজিবের আওয়ামী লীগ ৭ ই ডিসেম্বরের নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে নির্বাচনে জয়ী হন। প্রাদেশিক পরিষদের ৩০০ আসনের মধ্যে ২৮৮ টি লাভ করে আর জাতীয় পরিষদের পূর্ব পাকিস্থানের ১৬৯ টির মধ্যে ১৬৭ টি আসন লাভ করেন।সাধারন নির্বাচনে ভুট্টোর বিপক্ষে ১৬৯ টির মধ্যে ১৬৭ টি আসনে জয় লাভ করেন . যা ছিলো বিপক্ষ শক্তির দ্বিগুনের ও বেশি. বরং এ টা সিলো পাকিস্তানী সামরিক শক্তির সরকারের নিকট একটি জুতার বাড়ি স্বরূপ. এজন্য পাকিস্তানী জান্তা বাংলাদেশ এর এই অপ্রতিরুদ্ধ যাত্রায় অবদমিত করার করার জন্য একটি ষড়যন্ত্র করে যা লারাকানা ষড়যন্ত্র নামে অভিহিত ১৯৭১সালে পাকিস্তানের সামরিক রাষ্ট্রপতি।১৯৭০ সালের ১০ ডিসেম্বরের সাধারণ নির্বাচনের পরে আওয়ামীলীগের নিরঙ্কুশ বিজয়ের পর ক্ষমতা হস্তান্তরে অস্বীকৃতি জানান। শেখ মুজিবুর রহমান তাঁর আওয়ামী লীগ ১৬৮ আসনের মধ্যে ১৬২ টি আসন লাভ করেছিলেন, যা তার পশ্চিমে দ্বিগুণেরও বেশি ছিল। পাকিস্তানি প্রতিপক্ষ ভুট্টো। সাধারণ নির্বাচনে শেখ মুজিবের অভূতপূর্ব জয় পাঞ্জাবি সামরিক-সামুদ্রিক অক্ষের জন্য এক চূর্ণকারী আঘাত। তাই তারা সহিংস গণহত্যার মাধ্যমে বাঙালিকে বন্ধ করার জন্য লারকানা ষড়যন্ত্র নামে পরিচিত একটি চুক্তিতে জড়িত। এই বৈঠকে সামরিক বাহিনী এবং পাক সামন্ত প্রভু বাঙালিদের উপর শাহিবজাদা ইয়াকুবের কুখ্যাত অপারেশন ব্লিটজ বাস্তবায়নের পরিকল্পনা করেছিলেন। তারা পরিকল্পনাটি সংশোধন করে এটিকে আরও ধ্বংসাত্মক হিসাবে উপ¯’াপন করে (বাঙালির অভ্যুত্থানকে চিরতরে চূর্ণ করতে) এবং এর নামকরণ করে অপারেশন সার্চলাইট। ৯৭১ সালের ২৫ মার্চ মধ্যরাতে বাংলাদেশে গণহত্যার পরিকল্পনা হয়েছিল পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশে জুলফিকার আলি ভুট্টোর বাড়ি লারকানা হাউজে। আর তা হয়েছিল গণহত্যা শুরুর একমাস আগে। পাখি শিকারের কথা বলে লারকানায়ই ইতিহাসের জঘন্যতম গণহত্যার প্রাথমিক পরিকল্পনা করা হয়েছিল পাকিস্তানি জেনারেলদের নিয়ে। সেসময়ে পশ্চিম পাকিস্তানের পিপলস পার্টির সভাপতি জুলফিকার আলী ভুট্টো জেনারেল ইয়াহিয়া খানকে লারকানায় ‘পাখি শিকার’ করতে আমন্ত্রণ জানান। আর সেই আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে ১৯৭১ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি লারকানায় ভুট্টোর বাড়িতে ইয়াহিয়া, সেনাপ্রধান জেনারেল হামিদ, প্রধান স্টাফ অফিসার লে. জে. পীরজাদা ওমসহ আরো পাকিস্তানি সামরিক কর্মকর্তারা মিলিত হন। সেখানেই বাংলাদেশে গণহত্যার পরিকল্পনা হয়। যা পরে ‘অপারেশন সার্চলাইট’ নামে বাস্তবায়ন করা হয় ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ মধ্যরাতে। বাঙালি হত্যার এ পরিকল্পনায় পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর ভাইস অ্যাডমিরাল আহসান এবং ইস্টার্ন কমান্ডের প্রধান জেনারেল সাহেবজাদা ইয়াকুব খান সম্মত হননি। তাই তাদের পদ থেকে অপসারণ করা হয়। এর আগে বেসামরিক মন্ত্রিসভা বাতিল করা হয়। ২৫ মার্চ মধ্যরাতে পাকিস্তান সেনাবাহিনী ‘অপারেশন সার্চ লাইট’-এর নামে একযোগে ভারী অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা চালায় ঢাকায় একযোগে ভারী অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা চালায় ঢাকায় ‘অপারেশন সার্চ লাইট’ নামের গণহত্যা ষড়যন্ত্রে যারা অংশ নিয়েছিলেন সেই জুলফিকার আলী ভুট্টো, জেনারেল ইয়াহিয়া এবং জেনারেল হামিদ মনে করেছিলেন, ২০ হাজার মানুষ হত্যা করলেই ভয় পাবে বাঙালিরা, স্বাধীনতা এবং স্বাধিকারের কথা আর বলবে না। কিন্তু ২৫ মার্চ মধ্যরাতেই রাজারবাগ থেকে শুরু হয় প্রতিরোধ যুদ্ধ, শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ। ৯ মাসের মুক্তি সংগ্রামে ৩০ লাখ শহীদ আর ২ লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হয় ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর পাকিস্তানি সামরিক কর্মকর্তা মেজর জেনারেল খাদিম রাজা ও গুল হাসান খান তাদের আত্মজীবনীমূলক বইয়ে ‘অপারেশন সার্চ লাইট’-এর কথা বলেছেন৷ কারা এই গণহত্যার ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জড়িত ছিলেন তাদের নামও লেখা হয়েছে খাদিম রাজার ‘স্ট্রেঞ্জার ইন ওন কান্ট্রি’ বইতে৷ ১৯৭২ সালে পাকিস্তান সরকার একটি কমিশনও গঠন করেছিল৷ হামিদুর রহমান কমিশনের ওই রিপোর্ট সরকারিভাবে কখনো আলোর মুখ দেখেনি৷ কিন্তু রিপোর্টের অনেক তথ্যই এখন জানা যায়৷ তাতেও ‘অপারেশন সার্চ লাইট’ নামের গণহত্যার ষড়যন্ত্রের জন্য প্রধানত জুলফিকার আলী ভুট্টো, জেনারেল ইয়াহিয়া, জেনারেল হামিদ ও টিক্কা খানকে দায়ী করা হয়। আর তদন্ত রিপোর্টে নয় মাসের গণহত্যার কথা উল্লেখ করে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর মধ্যে যারা যুদ্ধাপরাধে জড়িত, তাদের বিচারের আওতায় আনার সুপারিশ করা হয়েছিল। অপারেশন সার্চলাইট বাস্তবায়নের জন্য তারা (ভুট্টো এবং ইয়াহিয়া) নিয়োগ পেয়েছিলেন (যেমন জেনারেল ইয়াকুব এবং অ্যাডমিরাল আহসান উভয়ই সাধারণ নির্বাচনে বাঙালির বিজয় মোকাবিলার জন্য সামরিক পদক্ষেপের পরিবর্তে রাজনৈতিক পরামর্শ দিয়েছিলেন) তাদের দু'জন অত্যন্ত কুখ্যাত জেনারেল: জেনারেল টিক্কা এবং জেনারেল নিয়াজি।
পরিকল্পনা অনুসারে জেনারেল ইয়াহিয়া ১৯৭১ এর ফেব্রুয়ারির শুরু থেকেই ভারী অস্র সোহো পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সৈন্য পাঠাতে থাকে চূড়ান্ত আক্রমণের জন্য । মার্চ এ যখন সৈন্য পাঠানো শেষ হয় ও প্রস্তুতি সম্পন্ন হয় তখন গেনের ইয়াহিয়া সংবিধান অনুযায়ী এর আগে বেসামরিক মন্ত্রিসভা বাতিল করা হয়। মার্চ এর ২৫ তারিখে চূড়ান্ত প্রস্তুতি দেখার পর আক্রমনের আদেশ দিয়া রাতে ১১ তাই চোরের মতো একটি বিশেষ বিমানে করে ঢাকা ছেড়ে যান. গ্রুপ ক্যাপ্টেন এ আর খন্দকার ইয়াহিয়াকে রাতের আঁধারে পালিয়ে যেতে দেখেন। ইয়াহিয়া চলে যাওয়ার পরপরই পাকিস্তানি সেনাবাহিনী একযোগে ভারী অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা চালায় ঢাকায় উযধশধাকা শহরকে বিধ্বস্ত করে। তাদের মূল লক্ষ্য ছিল বাঙালি রাজনৈতিক শক্তির কেন্দ্র ধ্বংস করা: একযোগে ভারী অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে হামলা চালায় ঢাকায় । তারা রাস্তায় হাজার হাজার নিরীহ বেসামরিক ও দরিদ্র মানুষকে (রিকশা চালক, গৃহহীন মানুষ, দিনমজুরী, পথশিশু ইত্যাদি) হত্যা করে পুরো পরঃুাকা শহরকে বিধ্বস্ত করে। হতাহতের ঘটনা ৫০,০০০ এরও বেশি। তারা বঙ্গবান্ধুকে গ্রেপ্তার করেছিল
শেখ মুজিবুর রহমান তার বাসিন্দা থেকে তাকে নিয়ে যান পাকিস্তানে। ইয়াহিয়া অফিসাররা আওয়ামী লীগের অন্যান্য শীর্ষ নেতাদের বিশেষত তাজউদ্দীন আহমদের সন্ধান করেছিলেন। কিš‘ পাকিস্তানী সামরিক জান্তার পরবর্তী পদক্ষেপ নিয়ে তারা আশ্রয় নিয়ে তাদের আবাস থেকে নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার কারণে তারা তাদের খুঁজে পেল না। শীর্ষ¯’ানীয় আওয়ামী লীগারদের ধরতে ব্যর্থতা তাদের বির“দ্ধে বাঙালির বির“দ্ধে ঘৃণা জাগিয়ে তোলে এবং তারা তাদের বহুবিধ হত্যা করে তাদের প্রতিরোধের প্রবণতা প্রশমিত করেছিল।
২৫ শে মার্চ, হরমযঃাকা ক্রাইট নাইটের পরে, বাংলাদেশের সর্বনাশ ইয়াহিয়ার ব্যক্তিগত এজেন্ডায় শীর্ষে ছিল। তিনি বাঙালিদের বিধ্বস্ত করার জন্য তাঁর সমস্ত উপায় ব্যবহার করেছিলেন। বাংলাদেশের বির“দ্ধে তাঁর ব্যক্তিগত বিদ্বেষের তীব্রতা পাকিস্তান আমলাতন্ত্র এবং শিক্ষাবিদদের খনন, রিসোর্স কম কিš‘ রাজনৈতিকভাবে কম বাধ্যবাধকতা, বাংলাদেশ ও বাঙালিদের গ্রহণ করা "দায়বদ্ধতা তত্ত্ব" এর বাইরে চলে যায়। এমনকি ১৯ ষরনব১ সালের সেপ্টেম্বরে, বাংলাদেশের মুক্তি বাহিনীর বিজয় স্পষ্ট হয়ে উঠলে, ইয়াহিয়া বাংলাদেশকে ধ্বংস করতে তার সমস্ত আন্তর্জাতিক সংযোগ চালিত করেছিলেন:
১. মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র সরবরাহের জন্য কিসিঞ্জার / নিক্সন জুটির সাথে তার সংযোগ বন্ধ করে দিয়ে এবং অবশেষে, জয়ের প্রাক্কালে, বাংলাদেশ-ভারত জোটকে মোকাবেলায় মার্কিন পারমাণবিক হুমকি প্রদর্শনের জন্য ইয়াহিয়া মার্কিন সপ্তম নৌবহরকে গুঁড়িয়ে দিতে সক্ষম হন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা
২. তিনি বাংলাদেশ-ভারত জোটের বির“দ্ধে তার চীনা সংযোগ ব্যবহার করেছিলেন।
৩. ইয়াহিয়া অবশেষে যুদ্ধে তাঁর নিখুঁত পরাজয় বুঝতে পেরে, তিনি বাঙালি বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করার জন্য তাঁর অনুগত সামরিক আধিকারিকদের ব্যবহার করেছিলেন শতবর্ষ ধরে বাংলাদেশকে আধ্যাত্মিকভাবে পঙ্গু করতে। বুদ্ধিজীবীদের নির্মূল করার ইয়াহিয়া'র এই পরিকল্পনা আরও জোরদার করে যে পাকিস্তানী সামরিক জান্তা কেবল বাংলাদেশকে খনন করতে চায়নি, তারা বাংলাদেশের সম্পূর্ণ ধ্বংস এবং বাঙালি জাতিকে নিখুঁতভাবে বিলুপ্ত করার উদ্দেশ্যে টিক্কার যুদ্ধের চিৎকারে প্রতিফলিত হয়েছিল: "আমি কেবল জমি চাই, মানুষ নয়। "


২. জেনারেল আবদুল হামিদ খান,

সেনাবাহিনী প্রধান (সিএএস) ছিলেন বাংলাদেশের গণহত্যার অন্যতম ¯’পতি। জেনারেল হামিদ (বা হামেদ) নামে পরিচিত এই জেনারেল ১৯৭১ সালের ২ গধৎপয শে মার্চের আগে পধাকায় ছিলেন, বাঙালিদের সন্ত্রাস করার সামরিক পরিকল্পনায় কাজ করেছিলেন। হত্যার যন্ত্রটির অগ্রগতি প্রত্যক্ষ করতে তিনি বেশ কয়েকবার দখলকৃত বাংলাদেশও সফর করেছিলেন।১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় তিনি- পাকিস্তানি সেনাবাহিনী চিপ অব স্টাফ ছিলেন।
২০শে মার্চে জেনারেল আব্দুল হামিদ খানএবং লে জেনারেল টিক্কা খান ঢাকাস্থ স্টাফ অফিসে অপারেশন সার্চ লাইট-এর পরিচালনার বিষয়ে গভীরভাবে পর্যালোচনা করেন। প্রাথমিকভাবে আব্দুল হামিদ খান। অপারেশন সার্চ লাইট-এর পরে তিনি ৩০শে এপ্রিল ঢাকা থেকে উত্তরাঞ্চলে সৈন্য বাহিনীর সাথে কর্মব্যস্ত দিন যাপন করেন। এই সময় পূর্বাঞ্চলের কমান্ডার ও জিওসি তাঁর সাথে ছিলেন। এই সময় তিনি হেলিকপ্টারের সাহায্যে বিভিন্ন স্থানে ঘুরে দেখেন। এই ফর কালে তিনি নাটোর, রাজশাহী, ঠাকুরগাঁ ও রংপুরে অবতরণ করেন। ২রা মে তিনি বিমানে সিলেট যান এবং একই ভাবে সামরিক বাহিনীর সদস্যের সাথে কথা বলেন।


৩. লেঃ জেনারেল গুল হাসান খান,

চিফ অফ জেনারেল স্টাফ (সিজিএস), পাকিস্তানি সেনাবাহিনী।১৯৭১ সালে, তিনি ছিলেন চিফ অফ জেনারেল স্টাফ এ সেনা জিএইচকিউ এবং হয় মৃত্যুদন্ড কার্যকর বা অনুমোদিত সামরিক অপারেশন ভিতরে পূর্ব পাকিস্তান.[১১] যেমন সিজিএস পাকিস্তান সেনাবাহিনীর, তিনি এই সময়ে সামরিক অভিযান এবং গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান ছিলেন।[১১] তিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনীর তদন্তের "বুদ্ধিজীবী পরিকল্পনাকারী" বলেও অভিযোগ করা হয় পূর্ব এবং তিনি একাত্তরের পাকিস্তানের দিগন্তকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক সঙ্কটের সামরিক সমাধানকে অগ্রাধিকার দিয়েছেন।[১২] পাকিস্তানের সেনাবাহিনীতে তাঁর কিছু সহযোগী "কৌশলগত দৃষ্টিভঙ্গির পক্ষে সংক্ষিপ্ত হলেও ফিল্ড কমান্ডার হিসাবে ভাল" হিসাবে দেখেছিলেন বলে তাঁর দূরদর্শিতার অভাব ছিল।[১৩]এনসাইক্লোপিডিয়া ংরঃব:নহ.রিশরয়ঁনব.হবঃ তিনি যা বলেছিলেন তার বিপরীতে তিনি ছিলেন বাংলাদেশ গণহত্যার অন্যতম প্রধান ¯’পতি। বাঙালি প্রতিরোধের প্রথম দিনগুলিতে চট্টগ্রামের অ¯ি’র জমিতে তাঁর উপ¯ি’তি সন্দেহ যে কোনও সন্দেহের ছায়া ছাড়াই প্রমাণ করে যে তিনি বাংলাদেশ গণহত্যার সক্রিয় পরিকল্পনাবিদ ছিলেন।

৪. লেঃ জেনারেল টিক্কা খান,

১৯৭১ সালের মার্চ মাসের মধ্যে পূর্ব পাকিস্তানের সামরিক প্রধান। বাংলাদেশ গণহত্যার পরিকল্পনাকারী ও চিফ এক্সিকিউটার। পরে তিনি পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর হন। ১৯৭১ সালের ১১ এপ্রিল ইয়াহিয়া তাঁর অনুগত জেনারেল টিক্কা খানকে গভর্নর জেনারেল এবং বাংলাদেশের প্রধান সামরিক আইন প্রশাসক হিসাবে নিযুক্ত করেছিলেন এবং তিনিই বেসামরিক ও সামরিক প্রশাসনের উভয় ক্ষেত্রেই সর্বো”চ কর্তৃত্ব ছিলেন। পাকিস্তানী সামরিক জান্তা বাঙালি জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের সহিংস দমন-পীড়নে টিক্কার ক্ষমতাকে নিয়ে আত্মবিশ্বাসী ছিল। টিক্কা খান একাত্তরের ২৫ মার্চ হাজার হাজার বাঙালিকে হত্যা করে গণহত্যা চালানোর জন্য এক প্রসন্ন যন্ত্র হিসাবে তার দক্ষতার প্রমাণ দিয়েছিলেন। টিক্কা সন্ত্রাসের এমন এক ভয়াবহ রাজত্ব প্রকাশ করেছিলেন যে এমনকি ব্লকহেড জেনারেল নিয়াজি, যিনি নিজেও একজন সৈনিক ছিলেন, তার টিক্কার নির্মম গণহত্যার সমালোচনা করেছিলেন। বাংলাদেশের নিরস্ত্র নাগরিকরা:
"জেনারেল টিক্কা তার নিজের সমস্ত বিষয় আলগা করে দিয়েছিলেন যেন কোনও শত্রুকে আক্রমণ করা এবং তার নিজের বিভ্রান্ত ও বিভ্রান্ত লোকদের সাথে আচরণ না করা। সামরিক পদক্ষেপ ছিল নির্মম নিষ্ঠুরতার প্রদর্শন, বাখুরা ও বাগদাদে গণহত্যার চেয়ে চেঞ্জজ খান ও হালাকুর চেয়ে নিষ্ঠুরতা খান এবং ব্রিটিশ জেনারেল ডায়ার দ্বারা জালিয়ানওয়ালা বাগে "
".... রাতে (২৫ মার্চ, ১৯৭১) টিক্কা খান ব্যব¯’া নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন, ৫০,০০০ মানুষকে হত্যা করা হয়েছিল"।টিক্কা খানকে পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর নিযুক্ত করেছিলেন। ১৯ ১৯৭১১ সালের মার্চ মাসে লেফটেন্যান্ট-জেনারেল টিক্কা খান ধপাকায় পৌঁছে পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর পদ গ্রহণ করেন এবং সেনাপতির নেতৃত্ব দেন পূর্ব কমান্ড সেনাবাহিনীর[১৮] তিনি হাজার হাজার বেসামরিক হত্যার অভিযোগের মুখোমুখি হয়েছেন।[১৭][ব্যবহারকারী উত্পন্ন উত্স][১৮][১৯] সে সফল ল্যাফ্টেনেন্ট জেনারেল সাহাবজাদা ইয়াকুব খান, এবং এর কমান্ড ধরে নিয়েছি পূর্ব কমান্ড ১৯ গধৎপয১ সালের গধৎপয ই মার্চ।

রাষ্ট্রপতি ইয়াহিয়া খানের প্রশাসনের দেওয়া নির্দেশনা মেনে টিক্কা খান ১৯ ১৯৭১১ সালের ২৫ শে মার্চ সন্ধ্যায় আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে "প্রত্যক্ষ-জ্ঞানী সামরিক অভিযানের" প্রস্তুতি শুরু করেন।[২০] তিনি শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়ে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন এবং এই আদেশ দিয়েছেন আক্রমণ উপরে .াকা বিশ্ববিদ্যালয় মাঝরাতে.[২১] লেফটেন্যান্ট জেনারেল টিক্কা খান ছিলেন স্থপতি এবং শীর্ষ পরিকল্পনাকারী অপারেশন সার্চলাইট.[৫] একাডেমিয়া এবং নাগরিক সমাজের সদস্যসহ এই অভিযানে হাজার হাজার মানুষ নিহত হয়েছিল দেশটি একটি রক্তক্ষয়ী গৃহযুদ্ধের কবলে পড়েছিল।[২১] টিক্কা খান ধ্রুপদী অনুসরণ করেছিলেন "অনুসন্ধান এবং ধ্বংস এবং অনুপ্রবেশ"পদ্ধতিটি এবং পূর্ব পাকিস্তানের সমস্ত রেডিও স্টেশন দখল করে বাঙালিদের নিয়মানুবর্তিকভাবে হত্যার মূল্যে।[২১] একমাত্র পাকিস্তানেই তিনি "সেনাবাহিনীর আগ্রহে ব্যবহারের জন্য পরিচিত সৈনিক" হিসাবে পরিচিতি পেয়েছিলেন;[২১] তিনি কুখ্যাতিও অর্জন করেছিলেন[২২]

নিয়াজী: পূর্ব পাকিস্তানের বিশ্বাসঘাতকতা

২৫ শে মার্চ গণহত্যার বিষয়ে ব্রিগেডিয়ার শাহ আবদুল কাসিম: "২৫ শে মার্চ উযধশধাকায় কোনও তাত্পর্যপূর্ণ যুদ্ধ হয় নি। সেই রাতে অতিরিক্ত বাহিনী ব্যবহৃত হয়েছিল। সামরিক অভিযানের সময় সেনা কর্মীরা প্রতিশোধ ও ক্রোধের কবলে পড়েছিল ... "দুটি রেসিডেন্স হলগুলিকে বিস্ফোরণে মর্টার ব্যবহার করা হয়েছিল, ফলে অতিরিক্ত হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।"
কুমিল্লা সেনানিবাসে গণহত্যা: সিও ৫৩ ফিল্ড রেজিমেন্টের আদেশে লেঃ জেনারেল ইয়াকুব মালিক, ১ ১৭ জন বাঙালি কর্মকর্তা এবং ৯১৫ জনকে হত্যা করা হয়েছিল। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর জেনারেলসহ সৈন্য ও কর্মকর্তাদের মধ্যে বাঙালিদের বির“দ্ধে সাধারণভাবে ঘৃণার অনুভূতি ছিল। হিন্দুদের নির্মূল করার জন্য মৌখিক নির্দেশনা ছিল। সালদা নাদি এলাকায় প্রায় ৫০০ জন নিহত হয়েছেন।
১৯৭১ সালে উবঢ়ঁঃুাকার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আশরাফের লেখা বইয়ের কিছু অংশ: "সামরিক পদক্ষেপের পরে বাঙালিদের তাদের নিজ দেশে বিদেশী করা হয়েছিল। তাদের মধ্যে সর্বাধিক উ”চমানের জীবন, সম্পত্তি এবং সম্মানও ছিল না। নিরাপদ। লোকজনকে সন্দেহের ভিত্তিতে তাদের বাসা থেকে তুলে নিয়ে বাংলাদেশে পাঠানো হয়েছিল, যা সংক্ষিপ্ত মৃত্যুদণ্ডের বর্ণনা হিসাবে ব্যবহৃত হত .... .... নিহতদের মধ্যে সেনা ও পুলিশ অফিসার, ব্যবসায়ী, বেসামরিক কর্মকর্তা ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত ছিল ...... সেখানে ছিল। পূর্ব পাকিস্তানে আইনের কোনও বিধিবিধান নেই। সেনাবাহিনীর কাঙ্ক্ষিত তালিকায় থাকলে একজন ব্যক্তির প্রতিকার ছিল না .... গোয়েন্দা কর্মরত সেনা অফিসাররা ছিলেন কাঁচা হাত, ¯’ানীয় ভাষা সম্পর্কে অজ্ঞ এবং বাঙালির সংবেদনশীলতার কট্টর। "




৫. লেঃ জেনারেল এ.এ. নিয়াজি,

বাংলাদেশ গণহত্যার পরিকল্পনাকারী ও নির্বাহক ড। পরে তিনি দখল বাহিনীতে যোগ দেন। তাঁর সৈন্যরা গ্রামাঞ্চলে গ্রামগুলিকে পুড়িয়ে দেয় এবং কয়েক হাজার বাঙালিকে হত্যা করেছিল জেনারেল এএকে নিয়াজি (পিএ -৭ ১৯৭১৭) ১৯ ঊধংঃবৎহ১ সালে পূর্ব কমান্ডের প্রধান ছিলেন। ইয়াহিয়া-ভুট্টো দল এই বিশেষ মিশনে নিয়াজিকে বেছে নিয়েছিল কারণ তিনি কুখ্যাত ও দুর্নীতিগ্র¯’ ছিলেন এবং ছিলেন যুদ্ধে তাদের বলির ছাগল হিসাবে যথেষ্ট বোকা। পাকিস্তানে নিয়াজী পতিতালয় ও প্রভাবশালী ব্যবসায়ী মহিলাদের পৃষ্ঠপোষকদের সাথে ব্যবসায় জড়িত ছিলেন। তিনি পূর্ব পাকিস্তান থেকে প্যান পাচারে জড়িত ছিলেন। তিনি পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডের চিফ হিসাবে তার লাভজনক হিসাবে খুঁজে পেয়েছিলেন এবং নিশ্চিতভাবেই তিনি হতবাক হয়ে পড়েছিলেন, কারণ এই পদোন্নতির কারণে, তিনি তাঁর ১২ উ”চ পদ¯’ কর্মকর্তা থেকে পদত্যাগ করেছিলেন।
নিয়াজী একজন সৈনিক ছিলেন এবং তিনি যেমন বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধা এবং ভারতীয় জোট বাহিনীর বির“দ্ধে একটি প্রচলিত যুদ্ধ করেছিলেন। তিনি বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করার জন্য অজ্ঞান পরিকল্পনা কল্পনা করতে খুব নিস্তেজ হয়ে পড়েছিলেন। তবে তিনি দুর্নীতিগ্র¯’ কর্মকর্তা হওয়ায় তিনি লুটপাট ও ধর্ষণের দিকে বেশি মনোনিবেশ করেছিলেন। তিনি নিজের জন্য ভাগ্যবান হয়েছিলেন এবং পাকিস্তানের সর্বশেষ কমিশনার মিঃ আলমদার রাজার নির্দেশ অনুসারে দখলদার সেনার অধীনে থাকা তার আন্ডার কমান্ডকে লুটপাট ও ধর্ষণ করার জন্য উত্সাহিত করেছিলেন: "...... বলা হয় যে পশ্চিম পাকিস্তানের মানুষ অজ্ঞ ছিল না। ভয়াবহ সর্বনাশ এর উপর পাকিস্তানী দখলদার সেনা কর্তৃক বাঙালিরা। এটি ছিল নিছক সরকার প্রচার। সেদিন আমাদের রেডিও ছিল না? যুদ্ধের আগে, পাঞ্জাবি সৈন্যরা তাদের পরিবারগুলিতে প্রতি মাসে ২০০-৩০০ টাকা পাঠাতেন। তবে ১৯৭১ সালে তারা প্রতিমাসে প্রায় ৫০০-৬০০ টাকা পাঠাতেন। তারা অতিরিক্ত অর্থ পেল কোথায়? ..... ",
ধর্ষণ সম্পর্কে মিঃ রাজা পাকিস্তানি সৈন্যদের বর্বরতার উদাহরণ দিয়েছিলেন: "....... পাকিস্তানী দখলদার সেনাবাহিনীর একটি দল একটি বাড়িতে আক্রমণ করে এবং পরিবারের সবাইকে হত্যা করেছিল। একমাত্র যুবতী মেয়ে পরিবারটিকে ধর্ষণ করার জন্য জীবিত রাখা হয়েছিল। মেয়েটি কর“ণার জন্য ভিক্ষা করেছিল; ভয়ে কাঁদতে কাঁদতে কাঁদতে বলেছিল যে একজন মুসলিম মহিলা এবং সৈন্যরাও মুসলিম, মুসলিম পুর“ষ কীভাবে মুসলমান মহিলাকে ধর্ষণ করতে পারে? ..... শেষ অবধি সর্বশেষ অবলম্বন হিসাবে তিনি পবিত্র কোরআনকে বিছানায় রেখেছিলেন, তার পাশেই এবং বলেছিলেন, তাকে ধর্ষণ করার জন্য তাদের কোরআনে পা রাখতে হবে। জারজদের বিছানা থেকে কোরানকে লাথি মেরে দলবদ্ধভাবে তাকে ধর্ষণ করা হয়েছিল .... "
লুটপাট ও ধর্ষণ এতটাই ছড়িয়ে পড়েছিল যে নিয়াজী তার এক গোপনীয় মেমোতে উল্লেখ করেছিলেন যে প্রবাসী পশ্চিম পাকিস্তানি পরিবারগুলি তাদের সাথে লুট করা সম্পত্তি পাকিস্তানে নিয়ে যা”িছল। ধর্ষণ ও জোরপূর্বক গর্ভাব¯’া হিন্দুদের ধবংস করার জন্য একটি প্রতিযোগিতা এতটাই ছড়িয়ে গিয়েছিল যে নিয়াজীকে আনুষ্ঠানিকভাবে তার কর্মকর্তাদের সতর্ক করতে হয়েছিল: .... "আমি একত্রিত হয়েছি যে এমনকি আধিকারিকদেরও এই লজ্জাজনক কার্যকলাপে লিপ্ত হওয়ার সন্দেহ হয়েছিল এবং এর চেয়ে খারাপ কী, যেটি বারবার নির্দেশনা সত্ত্বেও কমডোস এখন পর্যন্ত এই শৃঙ্খলাবদ্ধ পরি¯ি’তি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়েছে। আমার সন্দেহ হয় যে কোস এবং ওএসসি ইউনিট / সাব-ইউনিট এই জাতীয় অপরাধীদের রক্ষা এবং রক্ষা করছে ... "।
আট বালুচ রেজিমেন্টের সিও লেঃ কর্নেল আজিজ আহমেদ খান (১৯৭১ সালে সিও ৮ গঁলধযরফ মুজাহিদ ব্যাটালিয়ন) স্বীকার করেছেন যে নিয়াজী ব্যক্তিগতভাবে জাতিগত নির্মূলকরণকে উত্সাহিত করেছিলেন: "ব্রিগেডিয়ার আরববাব আমাকে জয়দেবপুরের সমস্ত বাড়িঘর ধ্বংস করতে বলেছিলেন। অনেকাংশে আমি এই আদেশ কার্যকর করেছি। জেনারেল নিয়াজী আমার ইউনিটটি ঠাকরগাঁও এবং বগুড়া ঘুরে দেখেন। তিনি আমাদের জিজ্ঞাসা করেছিলেন আমরা কত হিন্দুকে হত্যা করেছি। মে মাসে হিন্দুদের হত্যার লিখিত আদেশ ছিল। এই আদেশ ছিল ২৩ ব্রিগেডের ব্রিগেডিয়ার আবদুল্লাহ মালিকের। "
১৯৭১ সালের কুখ্যাত খুনি, লোফার, লুটেরা এবং ধর্ষক, বিচারকে এড়ানোর জন্য এখন নিয়াজী একজন ধার্মিক মুসলমানের মুখোশ রাখে। কে বিশ্বাস করবে যে নীচের ছবিতে শোভিত ইসলামিক পোশাকে পুরানো বাফুনই একাত্তরে বাঙালির লুটপাট, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগ ও গণহত্যার পিছনে মূল অপরাধী ছিল? ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে তিনি লেফটেন্যান্ট জেনারেল পদ লাভ করেন। পৈশাচিক হত্যাযজ্ঞ দিয়ে বাঙালি নিধন যজ্ঞ শুরু হয়। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর ভাষায় তার নাম ছিল অপারেশন সার্চ লাইট। এই অপারেশন পরিচালনা করেছিলেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল টিক্কা খান ও মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলী আন্তর্জাতিকভাবে এই সামরিক অভিযান নিন্দিত হয়। এই কারণে টিক্কা খানকে অপসারিত করা হয় এবং তার জায়গায় নিয়াজিকে নিয়োগ দেওয়া হয়। টিক্কা খান এপ্রিল মাসের ১০ তারিখে, নিয়াজির কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে পশ্চিম পাকিস্তানে চলে যান। এই সময় থেকে তিনি এই হত্যাযজ্ঞ ১৫ই ডিসেম্বর পর্যন্ত পরিচালনা করেন। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর এই হত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞের বিরুদ্ধে, পূর্ব-বাংলার মানুষ যুদ্ধ ঘোষণা করে।

তাঁর অনুমোদনে, ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ১৪ জুলাই, কুষ্টিয়ায় রাজাকার বাহিনীর প্রথম ব্যাচের প্রশিক্ষণ সমাপ্ত হয়। সেপ্টেম্বর মাসে এই রাজাকার দায়িত্ব গ্রহণ করেন মেজর জেনারেল মোহাম্মদ জামসেদ। পূর্বাঞ্চলীয় সামরিক অধিনায়ক হিসেবে ২৭শে নভেম্বর, তিনি সাভারে রাজাকার বাহিনীর কোম্পানি কমান্ডারদের প্রথম ব্যাচের ট্রেনিং শেষে বিদায়ী কুচকাওয়াজে অভিবাদন গ্রহণ করেন। এছাড়া তাঁর নির্দেশে সৃষ্টি হয়েছিল- আল্‌ বদর ও আল্ শামস বাহিনী।


মুক্তিবাহিনীর ক্রমাগত আক্রমণের ফলে পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ধীরে ধীরে দুর্বল হয়ে পড়ে। অক্টোবর-নভেম্বর মাসের দিকে অধিকাংশ গ্রামাঞ্চলগুলো মুক্তি যোদ্ধাদের দখলে চলে যায়। এই অবস্থায় ১৯৭১ সালের ৩ ডিসেম্বর থেকে ভারতীয় বিমান আক্রমণের মুখে নিয়াজীর প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা কয়েক দিনের মধ্যেই ভেঙে পড়ে। ১০ ডিসেম্বর থেকে সীমান্ত অঞ্চলে মোতায়েন সেনা-ইউনিটগুলি নিরাপত্তার জন্য পশ্চাদপসরণ শুরু করে এবং ১৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত এ অবস্থা অব্যাহত থাকে। যুদ্ধ চালিয়ে যাওয়ার প্রয়োজনীয় সকল শক্তি নিয়াজী হারিয়ে ফেলেন।

এরপর ১৬ই ডিসেম্বর মিত্রবাহিনীর (বাংলাদেশ ও ভারতীয় বাহিনী) পক্ষে ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডের প্রধান জেনারেল জগজিত সিং অরোরার কাছে আত্মসমর্পণ করেন। বাংলাদেশের ইতিহাসে এই দিনটি বিজয় দিবস হিসেবে পালন করা হয়।

এ সময় নিয়াজির সাথে ৯৩,০০০ সেনা আত্মসমর্পণ করে। পরে তাদের যুদ্ধবন্দী হিসেবে ভারতে নিয়ে যাওয়া হয়। ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সিমলা চুক্তির পর যুদ্ধবন্দীরা পাকিস্তানে ফিরে আসে। নিয়াজীও এসময় পাকিস্তান ফেরেন। জুলফিকার আলী ভুট্টো নিয়াজীকে তার সামরিক পদ থেকে অব্যাহতি দেন এবং তার খেতাবগুলো কেড়ে নেয়া হয়। এছাড়াও যুদ্ধে আত্মসমর্পণের জন্য তাকে দোষারোপ করা হয়। বিচারপতি হামুদুর রহমানের নেতৃত্বে গঠিত কমিশন পূর্ব পাকিস্তানে সামরিক আইন প্রশাসক হিসেবে দায়িত্বপালনের সময় নিয়াজীর বিরুদ্ধে বেশ কিছু অন্যায়ের অভিযোগ আনে। নিজেকে নির্দোষ দাবি করে নিয়াজি সামরিক আদালতের মুখোমুখি হওয়ার প্রস্তাব দেন।

১৯৯৮ খ্রিষ্টাব্দে তিনি আত্মসমর্থনমূলক গ্রন্থ 'দ্য বিট্রেয়াল অব ইস্ট পাকিস্তান' প্রকাশিত হয়। এতে তিনি ইয়াহিয়া খান, রাও ফরমান আলি, টিক্কা খান ও জুলফিকার আলী ভুট্টোকে পাকিস্তানের বিভক্তির জন্য দায়ী করেন।

২০০৪ খ্রিষ্টাব্দে তিনি লাহোরে মৃত্যুবরণ করেন।

৬. মেজর জেনারেল রাও ফরমান,

পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর মেজর জেনারেল, ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের সময় অনুষ্ঠিত গণহত্যা ও বুদ্ধিজীবী হত্যার পরিকল্পনাকারী।
১৯৭১ সালের ডিসেম্বর, মার্চ থেকে মার্চ মাসে পূর্ব পাকিস্তানের সামরিক গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান। বাংলাদেশ গণহত্যার পরিকল্পনাকারী ও নির্বাহক। মেজর জেনারেল রাও ফোরমান আলী (পিএ -১৩৬৪) মুক্তিযুদ্ধের সময় পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নরের প্রধান উপদেষ্টা ছিলেন। ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে পূর্ব-পাকিস্তানকে হত্যা ও ধ্বংসের মধ্য দিয়ে দমন করার জন্য, অপারেশন সার্চ লাইট -নামক সামরিক অভিযানের পরিকল্পনা করা হয়, তা কার্যকর করার ক্ষেত্রে ফরমান আলী বিশেষ ভূমিক রাখেন। ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ১৮ই মার্চ সকালে, ঢাকা সেনানিবাসের জিওসি কার্যালয়ে বসে জেনারেল রাজা এবং মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলি এই অভিযানের পরিকল্পনা লিপিবদ্ধ করেন। পরিকল্পনাটি জেনারেল ফরমান নিজ হাতে হালকা নীল রঙের একটি অফিস প্যাডের ৫ পাতা জুড়ে (১৬টি প্যারাগ্রাফে) লিড পেন্সিল দিয়ে লিখে নেন।
অপারেশন সার্চ লাইট শেষ হওয়ার পর, তিনি নির্বিচারে বাঙালি নিধনের সকল পরিকল্পনার অন্যতম ব্যক্তি হিসেবে কাজ করেছেন। বিশেষ করে ১৪ই ডিসেম্বর বুদ্ধিজীবী হত্যার অন্যতম পরিকল্পনাকারী ছিলেন ফরমান আলী।

১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে যখন মিত্র বাহিনীর কাছে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর আত্ম সমর্পণের বিষয় চূড়ান্ত হয়ে যায়, তখন ভীত সন্ত্রস্ত্র অবস্থায় তিনি ঢাকার নিরাপত্তা জোন তৎকালীন 'ইন্টার কন্টিনেন্টার হোটেলে আশ্রয় নেন। তখন অসহায়ের মতো জনতার সামনে বলেন, 'আমরা আর যুদ্ধ চাই না, শান্তি চাই'। রাও ফরমান আলি তার নিজের বিরুদ্ধে আরোপিত অভিযোগসমূহ প্রত্যাখ্যান করলেও, হামুদুর রহমান কমিশন পাকিস্তান সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাদের অনৈতিক কর্মকাণ্ড ও হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত থাকার প্রমাণ পায়। যুদ্ধের পর তাকে সামরিক বাহিনী থেকে বহিষ্কার করা হয় এবং তার সকল ব্যাজ ফিরিয়ে নেয়া হয়।

১৯৭৯ খ্রিষ্টাব্দে জুলফিকার আলী ভুট্টোর মৃত্যুর পর, জেনারেল মুহাম্মদ জিয়াউল হক তাকে তার উপদেষ্টা নিয়োগ দেন। এসময় সংঘটিত গণতন্ত্র পুনপ্রতিষ্ঠা আন্দোলন দমনে নির্যাতন ও হত্যায় তাকে দায়ী হিসেবে ধরা হয়। জিয়াউল হকের মৃত্যুর পর তিনি আত্মগোপনে চলে যান।

২০০৪ খ্রিষ্টাব্দে রাওয়ালপিন্ডিতে মৃত্যুবরণ করেন। ইয়াহিয়া ভিন্ন, যার সমস্ত লেনদেনের একমাত্র জ্ঞাত পদ্ধতি ছিল নৃশংস সামরিক শক্তির প্রয়োগ, রাও যুদ্ধের দিকে পরিচালিত বাস্তবতা এবং বাংলাদেশ এবং বাঙালির উপর যুদ্ধের সম্ভাব্য প্রভাব সম্পর্কে অবগত ছিলেন। তিনি এক দশকেরও বেশি সময় ধরে উযধশধাকা সেনানিবাসে দায়িত্ব পালন করেছেন এবং গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহ, কৌশলগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও নীতিমালা প্রণয়নের সাথে জড়িত ছিলেন। তিনি জাতীয়তাবাদী আন্দোলনকে নষ্ট করার জন্য বাঙালি রাজনীতিবিদদের কেনার সাথেও জড়িত ছিলেন। তিনি ১৯৭১ সালের গণহত্যার পিছনে মূল পরিকল্পনাকারী ছিলেন কারণ তিনি সিভিল প্রশাসনের দায়িত্বে থাকাকালীন তাঁর সমকক্ষদের চেয়ে বাংলাদেশের সম্পর্কে বেশি জানেন। ফরম্যানই ধর্মনিরপেক্ষ মনের বাঙালি বুদ্ধিজীবীদের নির্মূলকরণের বিষয়টি ব্লুপ্রিন্ট করেছিলেন। অহঙ্কারী ইয়াহিয়া বা রক্তপিপাসু টিক্কার চেয়ে তিনি শীতল রক্তাক্ত খুনি ছিলেন। তার প্রশিক্ষিত খুনীরা পেশাদার সৈন্যদের চেয়ে বেশি নির্মম ছিল। ফরম্যান আল-বদর ও আল-শামসের বাহিনীকে বিভিন্ন ক্যান্টনমেন্টে প্রশিক্ষণ কর্মসূচী চালিয়েছিল যাতে তারা বন্দী বাঙালিদেরকে ইসলামী পদ্ধতিতে নির্যাতন, বিকৃত এবং হত্যা করার প্রশিক্ষণ দেয়।
পূর্ব পাকিস্তানের বিশ্বাসঘাতক গ্রšে’ জেনারেল নিয়াজি ফরম্যানকে একটি সুযোগবাদী, ষড়যন্ত্রকারী এবং দোষী বলে বর্ণনা করেছেন। নিয়াজী আরও বলেছিলেন, বুদ্ধিজীবীদের হত্যার সাথে ফর্মনের জড়িত থাকার বিষয়টি বোঝাতে, ফরম্যান তাকে (এন) তাকে (এফ) ফিরিয়ে পাকিস্তানে প্রেরণের জন্য অনুরোধ করেছিলেন, কারণ, "মুক্তিবাহিনী তাকে বাঙালি ও বুদ্ধিজীবীদের হত্যাযজ্ঞের অভিযোগে হত্যা করবে। ১৫-১ উবপবসনবৎ ডিসেম্বরের রাত। তাকে ফ্যাকাশে হওয়া এবং প্রায় ভেঙে যাওয়ার পথে দেখতে পীড়াদায়ক দৃশ্য ছিল।
বর্তমানে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ সম্পর্কে তাঁর অজ্ঞতা সম্পর্কে বিশ্বকে বোঝাতে এবং যুদ্ধের সময় গণহত্যা, লুটপাট, ধর্ষণ ও অগ্নিসংযোগ থেকে তাঁর নাম সাফ করার জন্য ফরম্যান বই লিখছেন। তাঁর সূক্ষ্ম ভাষা এবং স্পষ্টতই নির্দোষ প্রতিনিধিত্বের মাধ্যমে ফরম্যান বইয়ে যুদ্ধের সময় তার নির্দোষতা এবং যুদ্ধ পরি¯ি’তি সম্পর্কে তার অজ্ঞতার আবেদন জানায় (যদিও তিনি সিভিল প্রশাসনের দায়িত্বে ছিলেন এবং পাকিস্তানের প্রধান সামরিক আইন প্রশাসকের প্রধান উপদেষ্টা ছিলেন! )।
বাঙালি গণহত্যা এবং বুদ্ধিজীবীদের হত্যায় ফরমানের জড়িত থাকার বির“দ্ধে প্রমাণসমূহ:
১. যখন যুদ্ধের সময় আরেকজন প্রবীণ সামরিক কর্মকর্তা বুদ্ধিজীবী ব্রিগেডার সিদ্দিকী হত্যার সাথে তার জড়িত থাকার বিষয়টি স্বীকার করতে ফোরম্যানের অস্বীকৃতি সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল, তখন তিনি বলেছিলেন: ...... "তিনি (ফরম্যান) সিভিল প্রশাসনের প্রধান জেনারেল ছিলেন এরকম কিছুই ঘটেনি যা সেজানতাম না ফোরম্যান হলেন সেই ব্যক্তি যাকে বুদ্ধিজীবীদের হত্যার কথা বলা উচিত। আমি কখনই তাকে বিশ্বাস করি না। তিনি সবসময় একটি মুখোশ পরতেন ... "।
২. পূর্ব পাকিস্তানের বি”িছন্নতায় মিঃ হাসান জহির নামে একজন পাকিস্তানী বেসামরিক কর্মচারী লিখেছিলেন: "মেজর জেনারেল ফোরমান আলী ঙঢ়বৎধঃরড়হাকার" অপারেশন সার্চলাইট "অংশের জল্লাদ ছিলেন। লক্ষ্যবস্তুতে নির্বিচারে এবং নির্বিচারে গুলি চালিয়ে তিনি 'শক অ্যাকশন' সফল করেছিলেন। অঞ্চল ....... "
৩. সিদ্দিক সালিক তাঁর উইটনেট টু সারেন্ডার (ঢ়.৭১) গ্রšে’ লিখেছেন: .... "সার্চলাইট -১ এর অপারেশন করার পরিকল্পনাটি দুটি সদর দফতর ¯’াপনের কল্পনা করেছিল। ব্রিগেডিয়ার আরবাবের নেতৃত্বে ৫ ইৎ ব্রিগেড সহ মেজর জেনারেল ফোরম্যান ছিলেন পধাকা শহর ও এর শহরতলিতে অভিযানের দায়িত্বে ছিলেন মেজর জেনারেল খাদিম প্রদেশের বাকি অংশের দেখাশোনা করার জন্য।এছাড়া লেফটেন্যান্ট জেনারেল টিক্কা খান এবং তার কর্মীরা দ্বিতীয় রাজধানীর সামরিক আইন সদর দফতরে রাত কাটাতে ছিলেন অগ্রগতিটি দেখার জন্য। ধপাকায় ও বাইরে কর্মের ...... "
৪. একজন শীর্ষ¯’ানীয় পাকিস্তানী সাংবাদিক মিঃ আলতাফ গওহরের মতে, বুদ্ধিজীবীদের হত্যার পিছনে মূল বিষয় ছিল ফোরম্যান। এই প্রসঙ্গে মিঃ গওহর তাঁর স্মৃতি থেকে একটি ঘটনা বর্ণনা করেছিলেন। গওহরের এক বন্ধু তাকে বলেছিল যে নির্দিষ্ট কিছু বাঙালি নির্মূলের জন্য একটি হিট লিস্ট তৈরি করা হয়েছিল। তার একটি বন্ধুও এই তালিকায় ছিল এবং তিনি গওহরকে অনুরোধ করেছিলেন যদি তিনি তার বন্ধুকে বাঁচাতে কিছু করতে পারেন তবে। এর পরে গাওহর বিষয়টি তাঁর এক বন্ধুর কাছে নিয়ে গিয়েছিলেন, যিনি ফর্মেরও সাধারণ বন্ধু ছিলেন। গওহরের বন্ধু তখন ফর্ম্যানকে দেখে তার হিট তালিকা থেকে নামটি নামিয়ে দেওয়ার অনুরোধ করেছিলেন। "গওহরের বন্ধু, তার ড্রয়ার থেকে একটি ডায়েরি নিয়ে এসেছিল এবং নামটি অতিক্রম করে বলেছিল, ফর্ম্যান নামটি মিঃ সানাউল হকের ছিল এবং তাকে বাঁচানো হয়েছিল।" স্বাধীনতার পরে গভর্নরের বাড়ির ধ্বংসাবশেষ থেকে ফরম্যানের ডায়েরি উদ্ধার করা হয়েছিল। ডায়েরি থেকে একটি পৃষ্ঠার অনুলিপি উযধশধাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বুদ্ধিজীবীদের তালিকা প্রদর্শন করে। তাদের মধ্যে ১৪ জন মারা গেছেন ১৪ ই ডিসেম্বর, ১৯৭১:
৫. আত্মরক্ষার জন্য ফরম্যানের বইটি, কীভাবে পাকিস্তান গোট ডিভাইডেডে নিবিড়ভাবে পড়েছিল তা দেখায় যে ফরম্যান বাঙালিদের বির“দ্ধে গভীরভাবে কুসংস্কার ¯’াপন করেছিলেন। হিটলারের মতো ফরমানও অজ্ঞ বোকা শুদ্ধতা জটিলতায় ভুগছেন। তিনি বিশ্বাস করেন যে হিন্দু প্রভাবের কারণে বাঙালি খাঁটি মুসলমান নয়। কিš‘ কুসংস্কারটি ভুলে গিয়েছিল যে এটি পাকিস্তানের পক্ষে বাঙালি সংখ্যাগরিষ্ঠদের কারণে হয়েছিল। এটি ছিল লোকে, রক্তাক্ত সামরিক নয়, যারা পাকিস্তান করেছিল। ফরম্যান দৃ ভরৎস়ভাবে বিশ্বাস করেছিলেন যে বাঙালিদের হিন্দু প্রভাব থেকে দূরে থাকলে তাদের অপরিষ্কারতাগুলি সংশোধন করা যেতে পারে। এই সেই দৃরপঃরড়হ়তা যা ফরম্যানকে বাঙালি বুদ্ধিজীবীদের নির্মমভাবে নির্মূল করার জন্য উদ্বুদ্ধ করেছিল। বাঙালি জাতীয়তাবাদের সমস্ত উপাদানগুলির পিছনে ফরম্যান হিন্দু ফ্যান্টাস্ম আবিষ্কার করেছিলেন। তিনি শেখ মুজিবের চেয়ে কম সমালোচিত হলেও তাজউদ্দীন আহমদের এক খাঁটি শত্রু ছিলেন তাজউদ্দিনের ভাষ্য হিসাবে ফরম্যানকে গ্রেপ্তার করা হলে তাজউদ্দীনকে এড়ানো যেত না: ..... "তাজউদ্দীন, মারা যাওয়া কঠোর ভারতীয় আওয়ামী লীগার, এসে বসলেন। তিনি পশ্চিম পাকিস্তান এবং সম্ভবত পাকিস্তানকেই ঘৃণা করেছিলেন। তিনি ছিলেন ৮ বছর বয়স পর্যন্ত হিন্দু হিসাবে খ্যাত। আমি এই গল্পটি সঠিক বলে মনে করি না তবে এটি তার মানসিক অবয়ব প্রকাশ করেছে "।
ইবষড়.ি নীচে গোলাম আযম এবং পুতুল রাজ্যপাল মালেকের সাথে গ্রুপ ফটোতে দেখা যা”েছ যে ফরম্যান বাঙালি বুদ্ধিজীবীদের নির্মূলের পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করছেন। গোলাম আযম ও ফোরম্যান হিন্দু প্রভাব বাঙ্গালীদের নির্মূল করার জন্য যৌথভাবে বাঙালি বুদ্ধিজীবীদের নাম তালিকা প্রস্তুত করেছিলেন বলে অভিযোগ করা হয়।
ইধহমষধফবংয. বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘর (এলডাব্লুএম) পরিচালিত জল্লাদখান গণকবর খনন সংক্রান্ত প্রতিবেদনের সংক্ষিপ্তসার। সংক্ষিপ্ত বিবরণটি ফোরম্যানের বিশেষ বাহিনী বাঙালিদের উপর নির্যাতন ও হত্যার ক্ষেত্রে যে চরম বর্বরতা দেখিয়েছিল তা তুলে ধরেছে:
.. "মিরপুরেও অব¯ি’ত জল্লাদখান (বধ্যভূমি) (ধারা ১০ ব্লক ডি) ........ তাত্ক্ষণিক খনন ও একাত্তরের শহীদদের অবশেষ রচনার জন্য নির্বাচিত ... ......... .১ বীপ৯৯ সালের ১৫ নভেম্বর খননকাজ শুর“ হয়েছিল এবং ২৩ নভেম্বর ৭০০ টি খুলি এবং ৫৩৯২ টি বিভিন্ন মানব হাড়ের পুনর“দ্ধারের মাধ্যমে এই বিস্ময়টি শেষ হয়েছিল গড়ংঃ বেশিরভাগ মাথার খুলি একটি ধারালো অস্ত্র দিয়ে কাঁধ থেকে বি”িছন্ন হওয়ার চিহ্ন প্রকাশ করেছিল এবং কিছুটা আঘাতের চিহ্ন ছিল। ভারী অস্ত্র দ্বারা এবং একজনের কাছাকাছি থেকে গুলিবিদ্ধ গুলি লেগেছে। অন্য হাড়গুলিতেও ভারী অস্ত্রের আঘাতের চিহ্ন দেখা গেছে ..... "








৭. মেজর জেনারেল এ ও মিঠা।মিঠা আবুবক্কর ওসমান, মেজর জেনারেল
(১৯২৩-১৯৯৯ খ্রিষ্টাব্দ)
পাকিস্তানি সেনাকর্মকর্তা। এঁর পুরো নাম আবুবক্কর ওসমান মিঠা। সাধারণ নামে মিঠ্‌ঠা খান বা মিঠা খান নামে পরিচিত ছিলেন। ১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দে পূরব-পাকিস্তানে আসেন- অপারেশন সার্চলাইট-এর প্রারম্ভে। ডিসেম্বর মাসে তিনি কোয়াটার মাস্টার হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন।

১৯৯৯ খ্রিষ্টাব্দে তিনি ইসলামাবাদে মৃত্যুবরণ করেন।

৮. মেজর জেনারেল খাদিম হোসেন রাজা

খাদিম হোসেন রাজার পরিচয়, ১৯৭১ সালে পূর্ব পাকিস্তানের জিওসি ছিলেন তিনি। মুক্তিযুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য যেসব পাকিস্তানী সেনা কর্মকর্তা অভিযুক্ত হয়েছিলেন, তাদের মধ্যে শীর্ষেই আছেন জেনারেল খাদিম। নির্দিষ্ট করে বললে ১৬ নম্বরে । তো একাত্তরে কি এমন করেছিলেন খাদিম সাহেব যার জন্য তাকে শীর্ষ যুদ্ধাপরাধীদের তালিকাভুক্ত করেছিলাম আমরা? ২৫ মার্চ রাতে যে গণহত্যাটির মাধ্যমে আমাদের মুক্তিযুদ্ধ শুরু, নীল নকশাটির মূল প্রণেতা জেনারেল সাহেব। তার খসড়াটির নাম ছিলো অপারেশন ব্লিৎজ। ২২ ফেব্রুয়ারি জেনারেলদের মিটিংয়ে তা আরেকটি ঘষামাজা করা হয় রাও ফরমান আলীর তরফে এবং নাম দেওয়া হয় অপারেশন সার্চলাইট। রাও ফরমান আলীর উপর দায়িত্ব ছিলো ঢাকা শহরে বিদ্রোহ দমনের নামে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃত্ব এবং হিন্দুদের খতম করা। আর খাদিম হোসেন রাজার উপর বাকি প্রদেশে- অর্থাৎ গোটা বাংলাদেশে। ঢাকার বাইরে প্রতিটি সেনানিবাস, পুলিশ ব্যারাক, ইপিআর ক্যাম্প এবং সাধারণ মানুষের উপর গণহত্যার দায়ে দায়ী খাদিম হোসেন রাজা।


৯. মেজর জেনারেল রহিম খান,

১৪ বিভাগের কমান্ডার, উাকায় ছিলেন। তার অফিসার এবং সৈন্যরা সেনাবাহিনী নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ গণহত্যা-র সাথে অনেক বেশি জড়িত ছিল। ১৯৭১ সালের জুনে তাকে ১৪ বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হতে ভৎড়সাকার মার্শাল ল সদর দফতরে ¯’ানান্তর করা হয়।



১০. লেঃ জেনারেল সাহেবজাদা ইয়াকুব খান।সাহেবজাদা ইয়াকুব খান
(১৯২০-২০১৬ খ্রিষ্টাব্দ)
পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর, কূটনীতিক। তিনি ১৯২০ সালের ২৩ ডিসেম্বর ভারতের যুক্ত প্রদেশের (বর্তমান উত্তর প্রদেশ) রামপুরে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি দেরাদুনে বিখ্যাত প্রিন্স অব ওয়েলস রয়্যাল ইন্ডিয়ান মিলিটারী কলেজে লেখাপড়া করেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় তিনি ব্রিটিশ সামরিক বাহিনীতে যোগ দেন। ভারত বিভাগের পর তিনি পাকিস্তানে চলে আসেন এবং সৈন্যবাহিনীতে দ্রুত পদোন্নতি লাভ করেন। লে. জেনারেল পদে পদোন্নতি পাওয়ার পর তাঁকে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের জেনারেল অফিসার কমান্ডিং (জিওসি) নিয়োগ করা হয়।

অতঃপর ১৯৬৯ সালের ২৩ আগস্ট তাঁকে পূর্ব পাকিস্তানের (জোন বি) সামরিক আইন প্রশাসক এবং একই সাথে ১৯৭১ সালের ১ মার্চ পূর্ব পাকিস্তানের গভর্নর নিয়োগ করা হয়। তিনি ১৯৭১ সালের ১০ মার্চ ঢাকা ত্যাগ করেন।

সৈন্যবাহিনী থেকে অবসর গ্রহণের পর জেনারেল ইয়াকুব খানকে ফ্রান্স, যুক্তরাষ্ট্র ও সোভিয়েট ইউনিয়নে পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূত (১৯৭২-১৯৮২) নিয়োগ করা হয়। ১৯৮২ থেকে ১৯৯১ সাল পর্যন্ত সময়কালে তিনি প্রথমে প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা এবং পরবর্তী সাতটি সরকারের আমলে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ইয়াকুব খান ১৯৯২ থেকে ১৯৯৭ সাল পর্যন্ত জাতিসংঘ সেক্রেটারি জেনারেলের পশ্চিম সাহারা বিষয়ক বিশেষ প্রতিনিধি ছিলেন। তিনি আগা খান ইউনিভার্সিটির বোর্ড অব ট্রাস্টির চেয়ারম্যান ছিলেন।
২০০১ খ্রিষ্টাব্দে তিনি সকল কর্ম থেকে অবসর গ্রহণ করেন।
২০১৬ খ্রিষ্টাব্দের ২৬শে জানুয়ারি ইসলামাবাদে মৃত্যুবরণ করেন।

জুলফিকার আলী ভুট্টো
জুলফিকার আলী ভুট্টো (জানুয়ারি ৫, ১৯২৮ – এপ্রিল ৪, ১৯৭৯) পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী। ১৯৫৮ সালে তিনি মন্ত্রী সভায় যোগ দেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রীর দায়িত্ব পান ১৯৬৩ সালে। আইয়ুব খানের মন্ত্রিসভা ত্যাগ করে ১৯৬৭ সালে নিজে আলাদা দল গঠন করেন যার নাম দেয়া হয় পাকিস্তান পিপলস্‌ পার্টি। ১৯৭০ সালে পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনে তার দল পশ্চিম পাকিস্তানে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। কিন্তু পূর্ব পাকিস্তানের আওয়ামী লীগ সার্বিক সংখ্যা গরিষ্ঠতা অর্জন করা সত্ত্বেও তাদের উপর ক্ষমতা অর্পণে ভুট্টো আপত্তি তুলেন। ১৯৭১ সালের বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে পাকিস্তানের পরাজয়ের পর ভুট্টো ইয়াহিয়া খানের স্থলে পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট হন। ১৯৭৩ সালে দেশের সংবিধান পরিবর্তনের মাধ্যমে তিনি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর পদ গ্রহণ করেন। ১৯৭৭ সালে পুনরায় প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। কিন্তু অল্পদিনের মধ্যেই জেনারেল জিয়াউল হক দ্বারা সংঘটিত এক সামরিক অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যূত হন। এক ব্যক্তিকে হত্যার ষড়যন্ত্রে জড়িত থাকার অভিযোগে ১৯৭৯ সালে সামরিক আদালত তাকে মৃত্যুদন্ডে দন্ডিত করে। তিনি পাকিস্তান পিপলস্‌ পার্টির প্রধান ছিলেন। তার মেয়ে বেনজির ভুট্টো পরে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হন।
জুলফিকার আলী ভুট্টো ১৯৭১ সালে পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) প্রধান ছিলেন। ১৯৭০ সালের সাধারণ নির্বাচনে ভুট্টো পশ্চিম পাকিস্তানে ১৬৯-এর মধ্যে মুজিবের ১২২ টি আসনের বিপরীতে ৮৮ টি আসন অর্জন করেছিলেন। আইন অনুসারে মুজিবের ধারণা করা হয়েছিল পাকিস্তান সরকার গঠন কর“ন। কিছু পাকিস্তানি উ”চপদ¯’ সূত্রের মতে, প্রথমে রাষ্ট্রপতি ইয়াহিয়া মুজিবের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তরিত হওয়ার বিষয়ে বেশি ঝোঁক ছিলেন।
কিš‘ ভুট্টো ইয়াহিয়া সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছিলেন। ভুট্টো প্রভাবশালী পাঞ্জাবী নাগরিক এবং সামরিক আমলা এবং সামন্ত প্রভুর প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন। পাকিস্তানি সামরিক-সামন্ততান্ত্রিক অক্ষগুলি ক্ষমতার ¯’ানান্তরের তীব্র বিরোধিতা করেছিল। তারা আশঙ্কা করেছিল যে মুজিবের গণতান্ত্রিক নীতিগুলি পশ্চিম পাকিস্তানের বিদ্যমান সামন্ততান্ত্রিক ব্যব¯’াকে বিরূপ প্রভাবিত করতে পারে এবং শীর্ষ বেসামরিক ও সামরিক আমলাদের ক্ষমতা হ্রাস করতে পারে। সুতরাং তাদের প্রতিনিধি ভুট্টো কুখ্যাত লারকানার বৈঠকে ইয়াহিয়াকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন এবং দু'জন বুদ্ধিমান জ্যাকাল মিলে বাঙালিদের সামরিক উপায়ে দমন করার এবং পশ্চিম পাকিস্তানীদের হাতে রাজনৈতিক ক্ষমতা ধরে রাখার ষড়যন্ত্র করেছিলেন। এই তত্ত্বটি প্রশংসনীয় কারণ এ জাতীয় উজ্জ্বল ধারণাটি খিলান ম্যাকিয়াভেলিয়ান থেকে প্রকাশিত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি: জুলফিকার আলী ভুট্টো। ইয়াহিয়াকে তার সামরিক দক্ষতা প্রদর্শন করার জন্য তার সহকর্মী দেশবাসীদের হত্যা করার জন্য আরও বেশি দেওয়া হয়, বরং সমস্ত সমস্যার একত্রিত করার জন্য একটি উজ্জ্বল ধারণা তৈরি করা: বাংলাদেশকে ধ্বংস করা; ক্ষমতা ভুট্টো এবং তাঁর হাতে রাখুন; পাকিস্তানি জনগণের দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য নিয়াজী ও সেনাবাহিনীকে যুদ্ধের قرباني বকরে পরিণত কর“ন। তাজউদ্দীন আহমদ ঠিক বলেছেন ভেবেছিলেন যে ভুট্টো রাজনৈতিক ধ্বংসযজ্ঞের পিছনে বাংলাদেশের ধ্বংসাত্মক নেতৃত্বের পিছনে ডিলাক্স মেশিনা ছিলেন: "..... দেশব্যাপী অভূতপূর্ব বর্বরতার জন্য ভুট্টো দায়বদ্ধ। তাঁর সাথে আসন অসম্ভব। দু'টি ফেডারেশন হলেই পাকিস্তানকে বাঁচানো সম্ভব?" উভয় ফেডারেশনই তাদের পৃথক সংবিধান রচনা করতে হবে।তবে যদি পরি¯ি’তি অনুমতি দেয় তবে তারা পাকিস্তানের সংবিধান রচনা করতে পারে। অন্য কথায়, কনফেডারেশন ....... রাও ফোরম্যান আলির বর্ণিত ভুট্টোর প্রতি তাজউদ্দীনের দৃষ্টিভঙ্গি। সামরিক দানবদের (ইয়াহিয়া, টিক্কা) কৌশল চালিয়েছিলেন তার ক্ষমতা সুরক্ষিত করার জন্য এবং রাজনীতির প্রতি তার স্বার্থান্বিত আগ্রহ বজায় রাখার জন্য যরং সমস্ত রাজনৈতিক কর্মজীবনে তিনি ষড়যন্ত্র ও ষড়যন্ত্রগুলিতে সমৃদ্ধ হন। প্রায়শই এই জাতীয় বিশ্বাসঘাতক রাজনীতিবিদদের ভাগ্য শেষ হয়ে যায় অপরাধে অংশীদার হিসাবে, ভুট্টোকে তার নিজের ফ্র্যাঙ্কেনস্টাইন দ্বারা ফাঁসি দেওয়া ন্যায়সঙ্গত করা হয়েছিল: জেনারেল জিয়াউল হক
১৯৬৬ খ্রিষ্টাব্দের ফেব্রুয়ারি মাসে লাহোরে পাকিস্তানের সবগুলো রাজনৈতিক দলের একটা কনফারেন্স হয়। আর সেই সভাতে শেখ মুজিবর রহমান তাঁর ঐতিহাসিক ৬ দফা দাবি ঘোষণা করলেন। এই কারণে এই দাবি উত্থাপক দল হিসেবে আওয়ামী লীগের উপর নিপীড়ন চালানো শুরু হয়। এই সময় শেখ মুজিবসহ আরও অনেককে গ্রেফতার করা হয় । পরে শেখ মুজিবর রহমান মুক্তিপেয়ে বাংলাদেশে এসে ১৮ই মার্চ জনগণের উদ্দেশ্যে ৬ দফা দাবি পেশ করেন। এ সময় শেখ মুজিবর রহমানের নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে পূর্ব পাকিস্তানে স্বায়ত্বশাসনের তীব্র দাবি উত্থাপিত হয়। ১৯৬৭ খ্রিষ্টাব্দে তিনি একটি আলাদা রাজনৈতিক দল গঠন করেন। এই দলের নামকরণ করা হয় −পাকিস্তান পিপ্‌লস পার্টি।

আয়ুব বিরোধী আন্দোলন ১৯৬৯ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। ১৯৬৯ খ্রিষ্টাব্দের ১০ মার্চ বিরোধী দলগুলোর সাথে রাজনৈতিক আলোচনার জন্য রাওয়ালপিণ্ডিতে আইয়ুব খান গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করেন। জুলফিকার আলী ভুট্টো এই বৈঠক বয়কট করেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধু গোলটেবিল বৈঠকে আওয়ামী লীগের ৬ দফা ও ছাত্র সমাজের ১১ দফা দাবি উপস্থাপন করেন। আয়ুব খান বঙ্গবন্ধুর দাবি অগ্রাহ্য করলে ১৩ মার্চ তিনি গোলটেবিল বৈঠক ত্যাগ করেন এবং ১৪ মার্চ ঢাকায় ফিরে আসেন।

১৯৭০ খ্রিষ্টাব্দে পাকিস্তানের সাধারণ পরিষদের নির্বাচনে তার দল পশ্চিম পাকিস্তানে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। কিন্তু পূর্ব পাকিস্তানের আওয়ামী লীগ সার্বিক সংখ্যা গরিষ্ঠতা অর্জন করা সত্ত্বেও তাদের উপর ক্ষমতা অর্পণে ভুট্টো আপত্তি তুলেন।
১৯৭১ খ্রিষ্টাব্দের ২৫শে মার্চ রাত্রি ১২টার পরে, পাকিস্তানি বাহিনী অপারেশন সার্চ লাইট -এর মাধ্যমে বাঙালি নিধন অভিযান শুরুর সময়, তিনি ঢাকার ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে ছিলেন। পরে তাঁকে পাকিস্তানে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয়। ২৭ ডিসেম্বর বাংলাদেশের স্বাধীনতা স্বাধীনতা লাভের পর, তৎকালীন পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খানের স্থলে তিনি পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট হন।
১৯৭৩ খ্রিষ্টাব্দে দেশের সংবিধান পরিবর্তনের মাধ্যমে তিনি পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর পদ গ্রহণ করেন।
১৯৭৭ খ্রিষ্টাব্দে তিনি পুনরায় প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। কিন্তু অল্পদিনের মধ্যেই জেনারেল জিয়াউল হক দ্বারা সংঘটিত এক সামরিক অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যূত হন।
১৯৭৮ খ্রিষ্টাব্দের ১৮ই মার্চ এক ব্যক্তির হত্যার ষড়যন্ত্রে জড়িত থাকার অভিযোগে, তিনি আদালত থেকে খুনের মামলায় মৃত্যু পরোয়ানা পান। এ পরোয়ানার পর তিনি আদালতে আপিল কতে রাজি না হলেও তাঁর পক্ষ থেকে পরিবারের সদস্যরা আপিল করেন। ২৪শে মার্চ সুপ্রিম কোর্ট এ আবেদন নাকচ করে দেয়। ১৯৭৯ খ্রিষ্টাব্দের ৪ঠা এপ্রিল সামরিক আদালত তাকে মৃত্যুদণ্ড দেয় এবং রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারাগারে তাঁকে ফাঁসী দেওয়া হয়।

তাঁর কন্যা বেনজির ভুট্টো পাকিস্তানের প্রধান মন্ত্রী হয়েছিলেন।
















মন্তব্য ৫ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৫) মন্তব্য লিখুন

১| ২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০২১ রাত ১১:৪৯

রাজীব নুর বলেছেন: স্বাধীনতার ৫০ বছর পার হয়ে গেলো, তবু পাকিস্তান আমাদের কাছে ক্ষমা চাইলো না।

২| ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০২১ রাত ১২:৫২

স্বামী বিশুদ্ধানন্দ বলেছেন: জার্মানরা এখনো দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের গণহত্যার কথা ভেবে লজ্জা ও অপ্রস্তুত বোধ করে।
কিন্তু পাকিদের মতো অসভ্য ও বর্বর জাতি ক্ষমা চাওয়া শিখেনি।

৩| ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০২১ রাত ২:১৮

হাসান কালবৈশাখী বলেছেন:
জামাত শিবির পরিচালিত 'আল-বদর মিলিশিয়া' তো পাকি বাহিনীর সহযোগি বাহিনী হিসেবে বুদ্ধিজীবি গণহত্যা পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেছিল, সেই প্রসংগ বাদ দিলেন কেন?

৪| ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০২১ ভোর ৪:৩৭

কামাল১৮ বলেছেন: জামাত,শিবির,আল- বদর ও রাজাকার এরা বাঙ্গালী পাকিস্তানী, আগেও ছিলো এখনো আছে।

৫| ২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০২১ সকাল ৯:৩৭

বিটপি বলেছেন: একজন ঘৃণিত যুদ্ধাপরাধীকে এত খাতির করা হচ্ছে কেন, জাতি জানতে চায়।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.