নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

দুঃখ ভরা পথচলা মোর, হাটছি দিবারাএ

রাফসান বড়ুয়া

আমি মানুষ তাই সকলেই ঠকায়

রাফসান বড়ুয়া › বিস্তারিত পোস্টঃ

কিছু গান কিছু ভাললাগা আর কিছু লিরিক

২৬ শে অক্টোবর, ২০১৩ সকাল ৮:৫২





ছোটবেলা থেকেই আমি গানের পাগল । আমার গান শোনা শুরু হয় অনেক ছোট বেলায়। শুরুটা হয়েছিলো অনেক তাড়াতাড়ি-ই । ছোটবেলা দেখতাম মেজখালামনি রবীন্দ্র সংগীত, রুনা লাইলা আর বেবী নাজনীন শুনত, রুনা লাইলার ‘যখন থামবে কোলাহল ঘুমে নিঝুম চারিদিক’ এই গানটার কথা মনে পড়ে -শুনতে শুনতে পইচা গেলেও খালামনি বোধ হয় আরো বেশি বেশি পচাইতে ভালো পাইতো । ক্লাস এইটের দিকে, বাসায় তখনো কম্পিঊতার আসেনি । পড়াশুনার জন্য খুব কম গান শুনতে পাইতাম । হার্ড মিউজিক নট পারমিটেড । সফট রক সুনতাম কিছু । সেইসময় মানিক ভাইয়া (মামাত ভাই) ভাইকিংস, ওয়ারফেজ, মেটালিকা, মাকসুদ, ডিফারেন্ট টাস, ব্যাক স্ট্রিটবয়েজ, ওয়েস্ট লাইফ সুনত বেশি । সে সুবাদেই ধীরে ধীরে আমার পছন্দের জেনারের হাতেখড়ি । কম্পিউটার আসলো বাসায় । তখনি আমার প্রকৃত গানজীবন শুরু । ‘নভেম্বর রেইন’এর মিউজিক ভিডিও তে ধুলোর উপর বাজানো স্লেশের সলোটা ও সাথে তার পাঠ দেখলেই মন মেজাজ চাঙ্গা হইয়া যাইতো । ইন্টার আর ভার্সিটিতে আসার পর দেখলাম- দাঁত দিয়ে বাজানো, ঘাড়ের পিছনে নিয়ে বাজানো ! কোন ব্যাপার-ই না । ধীরে ধীরে ক্রেজী হয়ে গেলাম মেটালে । কলেজে থাকতে তো মোটামোটি ফ্রিক হয়ে গিয়েছিলাম। আমার ভার্সিটি লাইফের খুব ক্লোজ ফ্রেন্ডরাই ছিল ক্যাম্পাসের ভাল গায়ক আর বাদক । মেকানিকাল ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার পাসাপাশি আমি হয়ে গেলাম একজন হার্ডকোর, ডাইহার্ড মেটাল ফেন । মেলোডিক ডেথ, গথিক, কিছু টেকনিক্যাল ডেথ মেটাল, সিম্ফোনিক ব্লাক মেটাল –এই গুলোই আমার ফেভ জেনার ।

কিছুটা নষ্টালজিক হয়ে গিয়েছিলাম গান নিয়ে পোষ্ট লিখতে গিয়ে । তাই খিস্তি খেউড়, আজাইরা প্যাচাল পাড়া শুরু কর্ছিলাম । ফেভারিট জেনার নিয়ে নষ্টালজিয়া নয়, এই পোষ্ট আসলে আমার কিছু ফেভারিট গান (নট যাষ্ট মেটাল) নিয়ে । স্পেসিফিকলি পছন্দের কিছু গানের লিরিকের ইন্টারপ্রিটেশন নিয়ে । প্রিয় সব গানের পেছনে কোন না কোন কাহিনী থাকে, অথবা খুব অসাধারণ কোন একটা সময়ের সাথে কোনভাবে জড়িয়ে থাকা নিতান্ত সাধারণ একটা গানও অসাধারণ হয়ে যায় । আবার সময়ের পরিবর্তনের সাথে এক একটা গান এক এক সময় ভালো লাগে, তারপরও কিছু অসাধারণ গান আছে যেগুলো অল টাইম হিট। কিছু গান প্রিয় হয় শুধু কম্পোজিশান এর জন্য নয়, বরং কিছু গানে কোন না কোনভাবে টুকরো টুকরো স্মৃতি জড়িয়ে থাকে, যখন শুনলে আবারো নানা রঙের সুখ-দুঃখের দিনগুলোতে ফিরতে ইচ্ছা করে। পুরনো দিনের ফেলে আসা সুখকর স্মৃতি রোমন্হনে নস্টালজিক মন নিয়ে এগুলো জীবনের গান । এ ক্ষেত্রে লিরিক আমার কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপুর্ন । মিউজিক আর লিরিকের একটা রিসিপ্রোকাল রিলেশন আছে, একটা আরেকটার পাওয়ার আর ডেপথ ইনক্রিজ করে



01. Broken



গানটা প্রকৃতপক্ষে, সিদার ব্যান্ডের লিড ভোকাল শন মর্গানের কন্যা জেড কে নিয়ে । তবে আমার নিজের দৃষ্টিকোন থেকে মুল থিম উপস্থাপনের চেষ্টা করেছি এভাবেঃ



‘তুমি যদি জানতে,

ইচ্ছে বিলাস গুলো আমার,

তোমার আনন্দোচ্ছাস জুড়ে,

চুপিসারে ছিনিয়ে মনোবেদনা গুলো তোমার,

জ্বালাতাম আলোর প্রদীপ হৃদয়াবেগে ।

হারিয়ে নদীর বিশালতা,

শুকিয়ে গেছে গভিরতা,

তোমার প্রতিবিম্ব ধারন করে হৃদয়ের ক্যানভাসে,

বিষন্ন সন্ধ্যায় পুড়ছে হৃদয় অবসরে,

ডূবে আছি আজো বিষাদের অতলে ।

রাতের ঠোটে জ্বলছে চূরুট

জমছে স্মৃতির আস্তরন

বিনিদ্র রাতের স্মৃতিপটে

তুষারপাতের শিহরন

বিষাদ তরঙ্গ আছড়ে পড়ে

শূন্যতার বেলাভুমে

জলের হৃদয়ে অন্ধকূপে

বইছে শীতল সমীরণ !

আঁধারের রঙ ঘনীভূত হয়

বিষণ্নতার আঁচল ছুঁয়ে

নদীতীরে বেলাভুমে

ঘনকুয়াশার ধূসর ভোরে

ঊষার আকাশ যেন আজ

মেঘে ঢাকা এক অযাচিত ক্ষণ

বাঁধন হারা বারিধারায়

পরিব্যাপ্ত পাংশু মনোগগন

জোয়ার ভাটায় ক্ষরনের ছাপ

স্মৃতির দেয়ালে নির্জনতার বিলাপ।



02. November Rain



“নভেম্বর রেইন” আমার শোনা সবচেয়ে অধিক উপভোগ্য ও মনোমুগ্ধকারী রক ব্যালাড, প্রায় ১.৫ মিলিয়ন ডলার ব্যয়ে নির্মিত অসাধারন মিউজিক ভিডিওটা দৈর্ঘ্যে ৯ মিনিট ১২ সেকেন্ড । গীর্জার বাইরে ধুধুমাঠ প্রান্তরে গীটারে ঝড় তোলার দৃশ্যে স্লাসের বাজানো সলোটা যারা শুনেছে আজীবন সেটা তার মনে থাকার কথা । হঠাৎ করে পিয়ানোর উপর দাড়িয়ে গিটার প্লেয়িং...আহ! ব্যাপক পাঠের একটা দৃশ্য । কিন্তু সেই বয়সে “ইফ ইউ ওয়ান্না লাভ মি,দ্যান ডার্লিন ডোন্ট রিফ্রেইন,অর আ'ল জাস্ট ইন্ড আপ ওয়াকিন ইন দ্য কোল্ড নভেম্বর রেইন” এই কথাটাকেও অবহেলা করা সম্ভব হয়নি আমার । অ্যাক্সেল রোজের কন্ঠে বৃষ্টির রিমঝিম শব্দে ভয়ংকর বিষাদ ।

শুরুটা অনেকটা এভাবে-



তোমার চোখে তাকিয়ে দেখি ‘সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত’

খুঁজে পাইনা তোমায় শুধুই আমার অবয়বে,

ম্লান মুখে শুধুই অবশাদ নিষ্প্রভ চাপা অভিমানে,

এ যেন পাংশু মেঘের বিবর্ণতার অনুভুতি-দেয়াল।

কোন কিছুই চিরন্তন নয় এবং বুঝতেই পারছ

হৃদয়ে হতে পারে প্রবল বর্ষণ, নাড়ীর অধিকম্পও হ্রাস পায়,

অনুভুতিও পাংশুবর্ণ হয়ে যায় যেমন স্মৃতি রং বদলে হয় বিশ্মরন

এবং নভেম্বরের প্রবল বৃষ্টিতে স্নিগ্ধোজ্জ্বল মোমবাতিও নিভুনিভু ।

জিশুর চোখ থেকে গড়িয়ে পড়া রক্ত,

কফিনের উপর লাল গোলাপ

বৃষ্টির পানিতে ধুয়ে সাদা হয়ে যায় প্রানহীন মৃতদেহের মত



এসব মিউজিক ভিডিওটাকে একটা সুররিয়াল আমেজ প্রদান করে । ‘কোল্ড নভেম্বর রেইন’ কোন সম্পর্কের কঠিন সময়গুলোকেও ইন্ডিকেট করতে পারে । কম্পলিকেসি গুলো আসলে আমাদের কাঙ্খিত নয় । কিন্তু এই তিক্ত অভিজ্ঞতাগুলোর স্বাদ আমাদের পেতে হয় ।

03. Sweet Amber:





এটা মেটালিকার ‘সেন্ট আংগার’ আল্বামের একটা পাওয়ার ব্যালাড । এই গানটা জেমস এর প্রচন্ড অ্যালকোহল আসক্তি নিয়ে লেখা! যদিও আপাদ দৃষ্টিতে মনে হতে পারে গানটা তার গার্লফ্রেন্ডকে নিয়ে । জেমস হার্ড ড্রাগস আসক্ত কখনই ছিল না! আম্বার এখানে মেটাফর! বিয়ার আর হুইস্কি এর রং আম্বার এবং অ্যালকো্লের একটা স্ট্রিটনেম আম্বার!সুইট এখানে অ্যাডিকশন বা আসক্তিকে ইন্ডিকেট করে! গানে অ্যালকোহল কতটা ভয়ঙ্কর হতে পারে তার বর্ননা রয়েছে!

‘Chase the rabbit, fetch the stick

She rolls me over 'till i'm sick

She deals in habits, deals in pain

I run away, but i'm back again’

আসক্তি তাকে কন্ট্রোল করছে!

04. Wasted Time



স্কিড রো এর সেকেন্ড অ্যাল্বাম ‘স্লেভ টু দ্য গ্রাইন্ড এর সবশেষের ট্রাক ‘ওয়াস্টেড লাইফ’ । ‘ওয়াস্টেড লাইফ’ এক্সিলেন্ট একটি পাওয়ার ব্যালাড । আল্বামের তিনটা ব্যালাড এর মাঝে বেষ্ট, ফর শিউর । অ্যামাজিং ভোকাল আর লিরিক্স । প্রথমে শুনে এটাকে রোমান্টিক অথবা প্রেমিকদের রিলেশন কম্পলিকেসি বেসড গান মনে করতে পারেন । আমার মনে হয়েছিল গান টা ভোকাল সেবাস্টিয়ান বেকের স্কুল ফ্রেন্ড ও তার ড্রাগ আডিকশনকে নিয়ে । "You said you'd never let me down, but the horse stampedes and rages"-হেরোয়িনের একটি স্ট্রিট নেম ঘোড়া । গানের মিউজিক ভিডিওতে শেষের দিকে বাথরুমে হেরোইন গ্রহনের দৃশ্য রয়েছে ।

নেট ঘেটে পরে নিশ্চিত হলাম, ভোকাল সেবাস্টিয়ান বেকের বন্ধু এবং গান্স অ্যান্ড রোজেস এর ড্রামার স্টিভেন আডলারের ড্রাগ আডিকশন নিয়ে গানটির মুল থিম গড়ে উঠেছে । গানটিতে বন্ধুত্বের আবেগ, ভালবাসাকেও রিপ্রজেন্ট করা হয়েছে "Can you feel me inside your heart as it's bleeding? Why can't you believe you can be loved?"

05. Where do I Draw the Line



গানটি আমার অত্যন্ত ফেভারিট ফিনিশ রক ব্যান্ড দল ‘পোয়েটস অব দ্য ফল’ এর । তাদের ৩য় অ্যালবাম “Revolution Roulette” এর ১১ তম ট্রাক । স্থায়িত্বকাল ৫:০৯ । লিরিক্স আর কম্পোসিশন মিলিয়ে আমার প্রচন্ড রকম ভাললাগা একটা ব্যালার্ড । এই গানটা আমার বাতে একাকীত্বের গান । লিরিকটার প্রতিটা লাইনেই মেসেজ রয়েছে । গানটাকে নিজে মত উপস্থাপন চেষ্টাঃ

নিয়তির জ্যামিতি

দুচোখে মনবাঞ্চা পুরনের অদম্য বাসনা

শিকারী হায়নার দৃষ্টিতে হরিনের মাংস

সপ্তষীর ট্রাপিজিয়াম রুপান্তরিত কফিনে ।

মহাকালের শৃঙ্খল ভেঙে পড়ছে

ক্ষয়ে যাচ্ছে কালের প্রাগৈতিহাসিক প্রস্তর

ছিন্ন করে প্রতিক্ষার প্রহর , ময়ুরপুচ্ছ ধারন করেছে কালেরধারা ।

সবাই যেন ইতিহাসের ন্যাকড়ার পুতূল

শ্লোক যেন তোতাপাখির আওড়ানো বুলি

মহাকালের মঞ্চে মঞ্চস্থ প্রহসন ।

পূর্নিমার রাতের মেঘঢাকা আকাশ যেন

ধ্রুপদী আধাঁরে আচ্ছন্ন অস্তগামী প্রতিবিম্ব,

অবরুদ্ধ আগামীর অভিব্যাক্তিহীন প্রত্যাশা ।

পথের আলো-আধাঁরী জন্ম দেয় ,

অশ্রুত পদাবলীর অস্ফূট বিভ্রম,

বিষন্ন স্থবিরতায় অনাসৃষ্টির বৃত্তে আবৃত গতিহীন যাযাবর ।

মাটির খাঁচায় বন্দী সত্তা যেন

রহস্যের বেড়াজালে আটকে পড়া আঠাঁল পোকা,

ডানা ঝাপটানো বিহঙ্গের গূমট স্পন্দন যেন

পাথর চাপা ঘাসের সাদা কষ্ট ।

জটিল জ্যামিতির জটিল সমীকরন

বিপ্রতিপ সময়ের নৈষ্ঠিক প্রগমন

সর্পিল সঞ্চারপথের বিষম অপেরণ

চতুর্থমাত্রার অভিসারী অবক্ষেপন ।

নিরব ঘুমে কি জীবনের পট বদলায় ?

মেঘছায়া তলের শশী রাহুগ্রস্থ, সারেং দিকভ্রষ্ট

বিস্বাদ যামীনিতে শ্রান্ত দিশেহারা মূসাফির ।

করতলের অসীম বিস্ময়, নিরব ভাষার জ্যামিতি

নিয়তির কথা কয় ।

সময়ের দাবীর বিপরীতে আমার গতি

তবু আমি মূক্ত, আমি স্বাধীন

আমি নিজের পথের পথিক, এই আমার নিয়তি



আসুন সঙ্গীতসুধায় আকন্ঠ নিমজ্জিত হই ।

{হুবুহু সংগৃহীত}

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.