নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমার েদখা পৃিথবী

নীল অহনা

সাধারণ এক মানুষ

নীল অহনা › বিস্তারিত পোস্টঃ

Emotion vs বাস্‌তবতা (ফুলীর জীবন)

২৯ শে জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৩:৩১

তিন প্রজন্ম। কিন্তু তিন প্রজন্মের সব ভুলের প্রায়শ্চিত্ত যেন আমি একাই করে বেড়াচ্ছি। আজ আমি বড় একা। অনিয়মের নিয়ম ভেঙ্গে প্রচলিত সমাজ ভেঙে আজ আমি ভালই আছি। তবু যেন নেই অনেক কিছু। পড়ে আসছি আমার সে কথায়।



প্রজন্ম -১ আমার দাদীর জীবনঃ



নাম তাঁর ফুল বানু । অসম্ভব সুন্দরী মেয়ে। ছয় ভাইবোনের মধ্যে সবার বড় এবং এক মাত্র মেয়ে ফুল। ভাই রা তাকে বু বলে ডাকত। আর বাবা-মা সবাই ফুলী। সাধারণ হিসাব মতে এক মাত্র মেয়ে, রূপসী, সবার আদরের হবার কথা। কিন্তু তা হয় নি ফুলীর জীবনে। বাংলার গ্রামের আর দশটা সেকেলে মায়ের মতই ছিল ফুলীর মা। যেমন দরজাল তেমনি কুটনী। ভিষণ রকমের একরোখা। ‘মেয়ে তো ঘরের লক্ষ্মী না পরের বউ। মেয়েরে এত আদর করে কি লাভ। যে কয়দিন আমার সংসারে খাইব আমার লস।‘ – এই ছিল তাঁর মনভাব।



তখনকার দিনে গ্রামের কেউ কুরআন পড়তে জানে এমন লোকের খুব সমাদর ও সম্মান ছিল গ্রামে। তখনকার গ্রামের লোকেরা তাই ছেলেমেয়েদের স্কুলে না পাঠালেও মাদ্রাসায় ঠিকই পাঠাত। ছেলে কুরআন পড়তে জানে এটা যেমন গর্বের বিষয় ছিল ঠিক তেমনি বিয়ের পর বউ কুরআন পড়তে জানে এটাও মেয়ের পরিবারের জন্য একটা সম্মানের বিষয় ছিল।



ফুলীর পরিবারের চিত্র ছিল একটু ভিন্ন। কেমন ভিন্ন তা একটু পরেই বলছি। তাঁর আগে বলি ফুলী কেমন ছিল তাঁর একটু বর্ণনা।

আগেই বলেছি ফুলী সুন্দরী মেয়ে ছিল। ছিপছিপে গড়ন,উচ্চতা কম(৪’ ৮”-৪’৯”) হবে। দুরন্ত ছুটে বেরানো মেয়ে ফুলী । ঘন কালো লম্বা চুল আর চুলের মোটা বেণী। গ্রামের অন্য সাধারণ মেয়ের মতই তাঁর জীবন। অন্যের গাছ থেকে ফল চুরি , ঝাপাঝাপি , মাদ্রাসা পালানো, অন্যের বিয়ের উৎসবে নাচা,গীত গাওয়া এসব ই ফুলীর নিত্য দিনের কাজ। দুরন্ত শৈশব । ফুলীর শৈশব এ ভাঁটা পড়ে যখন তাঁর প্রথম ভাই এর জন্ম হয়। তাঁর মায়ের আচার আচরণ তখন বদলে যায় ছেলের মা হয়ে। কেন এমন হয়??



একটু আগেই বলেছি ফুলীর পরিবারের চিত্র ছিল একটু ভিন্ন। ফুলীর পর তাঁর আরও পাঁচ ভাই এর জন্ম হয় । প্রত্যেককেই তাঁর মা পরম যত্নে পালন করেন। তাঁদের প্রত্যেককেই স্কুলে ভর্তি করেন । পরাশুনা করান। কিন্তু ফুলী.........



তাঁর প্রথম ভাই এর জন্মের পর থেকেই শুরু হয় তাঁর নারী জীবন। নারী জীবন বললে ভুল হবে। বলব বাঙ্গালী নারী জীবন। ফুলীর বয়স তখন ৮-৯ বছর হবে। তাঁর ওপর আরোপিত হল এক রকম সান্ধ্য আইন।



“তুই বড় হইছস। আর মাদ্রাসায় যাওন লাগব না। কায়দা খতম দিছস এই বেশী। আমার ভাত ধবংস কইরা দুই দিন পর যহন নিজের বাড়ী যাবি তহন এগুলা করিস। এহন থেইকা তর কাম খালি আমার পোলা পালবি, ঘরের কাম-কাইজ করবি। তর ভালার লাইগাই কইতাছি নিজের বাড়ী গেলে তহন তর শশুর শাশুড়ি তরে ভালা পাইব। তর নিজের পোলাপাইন পালতে কষ্ট অইব না । ”-ফুলীর মা।



কেন এমন নিয়ম। আট বছরের বাচ্চা কি বুজবে এসবের? কেন বুজবে। কত বড়ই সে হয়েছে?? কেন?? হয়তো অনেকেই বলবে তখন কার দিনে এমন হয়তো হতো ।



কিন্তু এখনও কি হয় না?? কেন?? মেয়ে হওয়া কি তাহলে পাপ নাকি শুধুই স্বামীর বাড়ী যাবার অনুশীলন??



চলবে.........

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২৯ শে জুলাই, ২০১৩ বিকাল ৩:৪৯

এহসান সাবির বলেছেন: চলুক..
ব্লগে স্বাগতম।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.