নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি হৃদয়ের কথা বলিতে ব্যাকুল....

যতক্ষণ আছ হেথা স্থিরদীপ্তি থাকো, তারার মতন।

জাহিদ রুমান

স্বপ্ন দেখি একটি সুন্দর বাংলাদেশের............

জাহিদ রুমান › বিস্তারিত পোস্টঃ

কেবল শৈত্যপ্রবাহ নয়, গোটা ঋতুচক্রেই জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব পড়ছে- অধ্যাপক ড. এএসএম মাকসুদ কামাল

২২ শে জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৫:০৭

সাক্ষাৎকার : জাহিদ রুমান

অধ্যাপক এএসএম মাকসুদ কামাল দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, পরিবেশ ও জলবায়ু বিশেষজ্ঞ। এসব ইস্যুতে জাতীয়-আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পরামর্শক ও গবেষক হিসেবে তাঁর রয়েছে দীর্ঘদিনের কর্ম-অভিজ্ঞতা। বাংলদেশ সরকারের সার্বিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রকল্পসহ (সিডিএমপি) বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ে দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস বিষয়ে কাজ করেছেন। বর্তমানে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে নবপ্রতিষ্ঠিত দুর্যোগবিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের চেয়ারম্যান এবং আর্থ এন্ড এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্সেস অনুষদের ডিন। তিনি ২০০৪ সালে টোকিও ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি থেকে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। সাম্প্রতিক শৈত্যপ্রবাহ, ভূমিকম্পসহ বাংলাদেশে দুর্যোগ ঝুঁকি ও প্রস্তুতি, জলবায়ু পরিবর্তনের বৈশ্বিক এবং দেশীয় প্রেক্ষাপট নিয়ে তিনি বিবার্তা টোয়েন্টিফোর ডটকমের সঙ্গে কথা বলেছেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন জাহিদ রুমান



গত ক’দিন ধরে বিদ্যমান হাড়কাঁপানো শীতের কথা দিয়েই শুরু করি। দেশে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা এবার ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছেছিল। স্মরণকালের মধ্যে তীব্র ও স্থায়ী এ শৈত্যপ্রবাহ কি জলবায়ু পরিবর্তনেরই ফলাফল?

একে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলাফল বলেই আমরা মনে করি। বিশ্বব্যাপী সমুদ্রপৃষ্ঠের উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণে সমুদ্রের উচ্চতাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। হিমালয়ের বরফ গলছে, ফলে সমুদ্রের উচ্চতা বেড়ে যাচ্ছে। আর আমাদের জলবায়ুর ওপর তীব্রভাবে এর প্রভাব পড়ছে। ফলে আমরা এখন কেবল হাড়কাঁপানো শীত নয়, সকালবেলায় সারা দেশ অতিরিক্ত কুয়াশার চাদরে ঢেকে যেতে দেখি। গবেষকরা বলছেন, শীতের প্রকোপ বৃদ্ধি এবং উষ্ণতা কমে যাওয়ার এ প্রবণতা গত ৬০ বছরের পরিসংখ্যানিক রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। সমুদ্রপৃষ্ঠের উষ্ণতা বাড়লে ভূপৃষ্ঠের উষ্ণতা কমে যায়। ফলে দেখা গেছে, সম্প্রতি যারা কক্সবাজার, টেকনাফ ইত্যাদি জায়গায় বেড়াতে গেছেন হাড়কাঁপানো শীতের প্রকোপ কিন্তু তারা অনুভব করেননি। একটির সঙ্গে অন্যটির সম্পর্ক রয়েছে।

অন্যদিকে কেবল শীতকালই নয়, অন্যান্য সময়েও আমরা এর প্রভাব টের পাচ্ছি। গত বছর বর্ষাকালে ঢাকায় ৪০০ মিলিমিটারের মতো বৃষ্টিপাত হয়েছে, যা নগরে ব্যাপক জলাবদ্ধতা সৃষ্টি করেছে। গ্রীষ্মে উষ্ণতাও স্বাভাবিকের চেয়ে বেড়ে যাচ্ছে। অতীতে চট্টগ্রামে ভূমিধ্বস ছিল না। ২০০৭ সাল থেকে চলতি বছর পর্যন্ত প্রবল বৃষ্টিপাতের ফলে পাহাড়ের ঢালুর মাটি ক্ষয়ে যাচ্ছে এবং নিয়মিত ভূমিধ্বসের ঘটনা ঘটছে। এভাবে আমাদের ঋতুচক্রে বছরব্যাপীই জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব পরিলক্ষিত হচ্ছে।



শৈত্যপ্রবাহ কৃষি ও জনস্বাস্থ্যের জন্য যেভাবে হুমকি হিসেবে হাজির হচ্ছে তাতে একে তো আমরা দুর্যোগ হিসেবে বিবেচনা করতে পারি। অর্থাৎ জলবায়ু পরিবর্তন দুর্যোগের দিকে ধাবিত হচ্ছে।

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে প্রাকৃতিক দুর্যোগের ঝুঁকি এবং পরিমাণ বেড়ে যাচ্ছে। জনস্বাস্থ্যের কথা যদি ধরি- অতিরিক্ত ঠাণ্ডার কারণে মানুষের রোগের প্রকোপ বেড়ে যাচ্ছে। সমুদ্রপৃষ্ঠের উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণে উপকূলীয় এলাকায় স্যাঁতসেতে পরিবেশ পরিবেশ করছে। ফলে উপকূলেও বিভিন্ন রোগ-ব্যাধি লক্ষ করা যাচ্ছে। এছাড়া পানি ও কৃষিজমির লবণাক্ততা বৃদ্ধি মানুষের খাদ্যশৃঙ্খলের ওপর প্রভাব ফেলছে। লবণাক্ততার কারণে কৃষি ও শস্য উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে।

সাইক্লোনের অতীত ইতিহাস বিবেচনায় নিলে দেখতে পাই- বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে বড় ধরনের দুর্যোগ আগে ঘটেনি। কিন্তু হঠাৎ করে ২০০৭ ও ২০০৯ সালে সিডর ও আইলার মতো প্রলয়ঙ্করী সাইক্লোন এ অঞ্চলে আঘাত করেছে। সিডরের সময় বাতাসের গতি ছিল ঘণ্টায় ২৪০ কিলোমিটার যেটা বায়ুপ্রবাহের অতীতের রেকর্ড ছাড়িয়ে গেছে। সব মিলিয়ে যেটা আমরা দেখছি, সময়ের সঙ্গে দুর্যোগের তীব্রতা ও পরিমাণ বাড়ছে। সার্বিকভাবে সাইক্লোন, তীব্র শীত ও ভূমিধ্বস- এগুলোকে আমরা জলবায়ুর পরিবর্তনের ফলে সৃষ্ট দুর্যোগ বলেই বিবেচনা করতে পারি।



এবার অন্যান্য দুর্যোগ প্রসঙ্গে আসি- রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে প্রায়ই ভূকম্পন অনুভূত হচ্ছে। এটাকে কি বড় ধরনের ভূমিকম্পের আভাস বলে ধরে নেওয়া যায়?

কোনো অঞ্চল ভূতাত্ত্বিকভাবে সক্রিয় হলে সেখানে এরূপ কম্পন অনুভূত হয়। জাপান ভূমিকম্পের দেশ বলে প্রতিদিনই সেখানে ভূকম্পন হয়। বাংলাদেশেও আমরা সেটা অনুভব করি। কোনো অঞ্চল ভূতাত্ত্বিকভাবে সক্রিয় হওয়ার অর্থই হল সেখানে বড় ধরনের ভূমিকম্প হতে পারে। ঐতিহাসিকভাবে দেখা যায়, ১৫৫৮, ১৭৬২, ১৮৮৫, ১৮৯৭ ও ১৯১৮ সালে আমাদের দেশে বড় ভূমিকম্প হয়েছে। ছয়মাত্রা বা এর চেয়ে অধিক মাত্রার ভূমিকম্প হলে সেটা ক্ষয়ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। ১৯৯৯ সালে চট্টগ্রামে ৬.১ মাত্রার ভূমিকম্পে ভবন ধ্বসে ২২ জন মারা যায়। গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতি ২০ বছর অন্তর বাংলাদেশে ছয় মাত্রার ভূকম্পন হচ্ছে। প্রায় দেড়শ বছর অন্তর সাত মাত্রার ভূমিকম্প অনুভূত হচ্ছে। আট মাত্রার ভূমিকম্প হওয়ার জন্য ৩০০-৩৫০ বছর পর্যন্ত সময় নেয়। সময়ের পরম্পরা এবং বাংলাদেশে ভূতাত্ত্বিকভাবে সক্রিয় ফাটলগুলোর চরিত্র বিশ্লেষণ করে বলা যায়- যে কোনো মুহূর্তে এখানে ছয় থেকে আট মাত্রার ভূকম্পন হতে পারে।



আকস্মিক ভূমিকম্পে বাংলাদেশে কী ধরনের ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে? দুর্যোগের ঝুঁকি মোকাবেলায় আমাদের সচেতনতা ও পূর্ব প্রস্তুতি কতটুকু?

ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি এর প্রস্তুতির সঙ্গে সম্পর্কিত। ভূমিকম্প ও দুর্যোগ মোকাবেলায় আমাদের সরকার, সরকারের বিভিন্ন এজেন্সি থেকে শুরু করে সাধারণ জনগণ- আমি বলব কেউই যথার্থভাবে প্রস্তুত নয়। ১৯১৮ সালে ব্রিটিশ শাসনামলে শ্রীমঙ্গলে ৭.৬ মাত্রার ভূমিকম্প ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। তখনকার দুর্যোগ জরিপ বিভাগের সদরদপ্তর ছিল কলকাতায়। এতে দেশবিভাগের পর দুর্যোগ সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য-উপাত্ত ভারতের হয়ে যায়। ফলে এদেশের দেশের মানুষ ভূমিকম্প-দুর্যোগের অতীত রেকর্ড সম্বন্ধে তেমন কিছু জানতে পারেনি।

এছাড়া, মানুষ দুর্যোগের ব্যাপারে খুব বেশি সচেতনও নয়। ছোট ছোট ভূমিকম্প অনুভব করলেও তেমন কোনো ক্ষয়ক্ষতি আমাদের হয়নি। শুধু একটু আতঙ্ক তৈরি হয়। বড় ধরনের ভূকম্পন সাম্প্রতিককালে না হওয়ার কারণে সরকারের প্রস্তুতি, জনগণের প্রস্তুতি, করণীয় সম্পর্কে জ্ঞান-ধ্যান সকল পর্যায়ে সীমিত। ফলে ভূমিকম্পের মতো একটি বড় দুর্যোগ মোকাবেলায় আমরা প্রস্তুত এ কথা বলা ঠিক হবে না।



দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় সরকার কী কী কার্যক্রম গ্রহণ করেছে?

সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন গবেষণা ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের আওতায় ভূমিকম্প মোকাবেলায় বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। যেমন- ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের জন্য যন্ত্রাংশ ক্রয়, উদ্ধার যন্ত্রাংশ ক্রয়, ৬০০০ স্বেচ্ছাসেবককে প্রশিক্ষণদান ও জনসচেতনতা সৃষ্টিতে সিটি কর্পোরেশনের মাধ্যমে পোস্টার-লিফলেট বিতরণ করা ইত্যাদি। এছাড়া গবেষণার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে সরকারি সংস্থা যেমন- ভূতাত্ত্বিক জরিপ অধিদপ্তর; এদেরকে সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। আরেকটি কথা- যত প্রস্তুতিই থাকুক না কেন ভবন যদি কম্পনসহনীয় করে তৈরি করা না-হয় তবে ক্ষতি কমানো সম্ভব না। তাই বিল্ডিং কোড বাস্তবায়ন জোর দেওয়া হচ্ছে। নির্মাণ শ্রমিকদেরও প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। নগর উন্নয়ন অধিদপ্তরের মাধ্যমে ভূমি ব্যবহার নীতি প্রণয়নের উদ্যোগ চলছে। যা বাস্তবায়ন করা গেলে ভূমিকম্পের ঝুঁকি বহুলাংশেই কমানো যাবে। সবমিলিয়ে যেসব কার্যক্রম চলছে তা অব্যাহত থাকলে ভূমিকম্পের মতো দুর্যোগের বিপদাপন্নতা ও ঝুঁকি কমানো সম্ভব হবে বলেই আমরা মনে করি।



জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবেলায় এ পর্যন্ত গৃহীত উদ্যোগ ও তার বাস্তবায়ন সম্পর্কে আপনার মূল্যায়ন-

অতিরিক্ত কার্বন নিঃসরণসহ জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য যে সব দেশ দায়ী- তাদের যে ধরনের উদ্যোগ প্রয়োজন ছিল এবং যে অঙ্গীকার ইতোমধ্যে দেশগুলো করেছে সেগুলো তারা পালন করেনি। আর বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল দেশের বাজেটে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকি মোকাবেলার জন্য বরাদ্দ রাখাও সরকারের জন্য চ্যালেঞ্জ।

তারপরও সরকার নিজস্ব তহবিল থেকে কিছু কার্যক্রম পরিচালনা করছে। যেমন- অ্যাডাপটেশন অর্থাৎ ঝুঁকি রেখেই কীভাবে আমরা বেঁচে থাকতে পারি, অভিযোজন ক্ষমতা বাড়াতে পারি তার জন্য সরকার বেশ কিছু কাজ করার চেষ্টা করছে। কিন্তু এখানেও সমস্যা যেটি বরাদ্দকৃত অর্থ যথাযথভাবে ব্যয় করার জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে এখনও প্রস্তুত করা যায়নি। যদি বিদেশ থেকেও তহবিল আসে সেটি ব্যয় করার জন্য আমরা প্রস্তুত কিনা সেটাই হল বড় প্রশ্ন। তাই জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি সঠিকভাবে চিহ্নিত করা, ঝুঁকি হ্রাসের জন্য প্রকৃত পরিকল্পনা প্রণয়ন করে, তারপর সেটা বাস্তবায়নের জন্য আমাদেরকে অগ্রসর হতে হবে।



সম্প্রতি দোহায় অনুষ্ঠিত জলবায়ু সম্মেলনে কিয়েটো প্রটোকলের মেয়াদ ৮ বছর বাড়ানো হল। এছাড়া অনুন্নত ও ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে ৩০ বিলিয়ন ডলার দেওয়ার অলিখিত ঘোষণাও এসেছে। আপনার বিবেচনায় এ সম্মেলনের প্রাপ্তি কতটুকু?

শুধু দোহা সম্মেলন নয়, পূর্ববর্তী প্রতিটি সম্মেলনেই জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী দেশগুলো স্বল্পোন্নত দেশসমূহকে প্রতিশ্রুতি দিয়ে আসছে। কিন্তু প্রতিশ্রুতি তারা পূরণ করেনি। আমার পর্যবেক্ষণে জলবায়ু সম্মেলন রাষ্ট্রের অর্থ খরচ করে আরাম-আয়েশ করার একটা জায়গা হয়ে দাড়িয়েছে। বেশ কয়েকটি সম্মেলন হলেও এ পর্যন্ত কার্যকর কোনো সাফল্য লক্ষ্য করা যায়নি। ৩০ বিলিয়ন বা এর সমপরিমাণ অর্থ দেওয়ার যে কথা বলা হয়েছে তার কোনো প্রকৃত নির্দেশনাও আমরা পাইনি। কোন্ খাতে এই অর্থ দেওয়া হবে এবং কোথায়-কীভাবে ব্যয় করা হবে তার কোনো ধারণাপত্রও পাওয়া যায়নি। আমার যেটা মনে হয়- ‘বছর শেষে একটি সম্মেলন হবে, সুন্দর একটি শহরে উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশের সবাই মিলে উৎসব করব’ ইতোমধ্যে জলবায়ু সম্মেলনের এমন একটি ভাবমূর্তি দাড়িয়ে গেছে।



পরিবেশ সুরক্ষা ও জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে মিডিয়া কেমন ভূমিকা রাখছে?

এ ইস্যুতে মিডিয়ার ভূমিকা প্রশংসনীয়। আমাদের দেশের তড়িৎ ও বৈদ্যুতিন মাধ্যম জলবায়ু ও পরিবেশ রক্ষার ইস্যুটিকে গুরুত্বের সঙ্গে প্রচার করছে। সংক্ষেপে যদি বলি- জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবেলা ও মানুষের অভিযোজন ক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষে সচেতনতা সৃষ্টিতে এ পর্যন্ত যে অর্জন তার অনেকটা মিডিয়ারই প্রাপ্য। মিডিয়াই এটিকে মূলধারায় নিয়ে এসে গণমানুষের ইস্যুতে পরিণত করেছে এবং রাজনীতিবিদদের মধ্যে একটি দায়বদ্ধতা তৈরি করেছে।



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে দুর্যোগ বিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের যাত্রা শুরু হল। এর আলোকে জানতে চাই- দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস এবং জলবায়ু ইস্যুতে বিশ্ববাসীর যে সম্মিলিত আন্দোলন একাডেমিক শিক্ষা ও গবেষণা কীভাবে সেটাকে আরো জোরদার করবে?

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় ‘গ্লোবাল লিডার’ হিসেবে বিশ্বে বাংলাদেশের পরিচিতি রয়েছে। তা সত্ত্বেও এটিকে প্রাতিষ্ঠানিক ব্যাপ্তি দেওয়া এবং এর ভিত্তিতে অ্যাকাডেমিক ডিগ্রি দিয়ে প্রকৃত পেশাদার তৈরি করার সুযোগ এতদিন দেশে ছিল না। আমরা উপলব্ধি করলাম- অতি সম্প্রতি শুধু আমাদের অঞ্চলে নয় সমগ্র বিশ্বব্যাপী দুর্যোগের যে প্রবণতা, তীব্রতা, অর্থনৈতিক ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানি বেড়ে চলছে। এবং গোটা পৃথিবীতে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার বিষয়টি এতদিন অ্যাডহক ভিত্তির ওপর প্রতিষ্ঠিত ছিল। এতদিন আমরা দুর্যোগ প্রস্তুতিকে গুরুত্ব না দিয়ে ত্রাণ ও পুনর্বাসনকে বেশি গুরুত্ব দিয়েছি। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনাকে প্রস্তুতির ক্ষেত্রে নিয়ে যদি আমরা ঝুঁকি হ্রাসের কাজগুলো আগে করি তবে ক্ষতি বহুলাংশে কমানো করা সম্ভব। আর এ প্রস্তুতি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিভিত্তিক প্রক্রিয়াগুলোকে অবলম্বন করেই করতে হবে। এ জন্য প্রয়োজন প্রাতিষ্ঠানিক জ্ঞান ও দক্ষ জনগোষ্ঠী। ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা জ্ঞানকে একত্র করে নিয়মতান্ত্রিকভাবে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, সর্বোপরি বৈশ্বিক চাহিদা ও বাস্তবতার নিরিখে দক্ষ মানবসম্পদ গড়ার লক্ষে আমরা এ-বিভাগ প্রতিষ্ঠা করেছি।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.