![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বাংলাদেশী একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের এডমিন অফিসার
কথা ছিল পরিবারের সবাইকে নিয়ে গ্রামের বাড়িতে এসে কয়েক দিন থেকে যাবেন। কিন্তু শেষ মুহূর্তে ছুটি না পাওয়ায় স্ত্রী-সন্তানদের একাই গ্রামের বাড়িতে পাঠিয়ে দেন তিনি। তবে স্ত্রী-সন্তানদের কথা দিয়েছিলেন, শুক্রবার ছুটি নিয়ে নিজে গিয়ে তাঁদের নিয়ে আসবেন। কথা রেখেছেন তিনি! শুক্রবারই বাড়িতে এসেছেন। তবে জীবিত নয়, জামায়াত-শিবিরের হামলায় লাশ হয়ে।
গত বৃহস্পতিবার দেশজুড়ে তাণ্ডবের সময় গাইবান্ধার বামনডাঙ্গা ফাঁড়িতে দায়িত্ব পালনকালে জামায়াত-শিবিরের হামলায় নিহত কনস্টেবল বাবলু মিয়ার স্ত্রী জোসনা বেগম গতকাল আহাজারি করতে করতে এসব কথা বলেন।
বাবলু মিয়ার বাড়ি বগুড়ার সোনাতলা উপজেলার জোড়গাছা ইউনিয়নের ঠাকুরপাড়া গ্রামে। প্রায় ১০ বছর আগে তিনি সারিয়াকান্দি উপজেলার যমুনাপাড়ের বলাইল গ্রাম থেকে ঠাকুরপাড়ায় এসে স্থায়ী বসত শুরু করেন। বাবার নাম মৃত তফিজ উদ্দিন। শুক্রবার বিকেলে তাঁর লাশ পুলিশি পাহারায় গ্রামের বাড়িতে পৌঁছালে সেখানে এক হূদয়বিদারক দৃশ্যের অবতারণা হয়। পরে রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় ঠাকুরপাড়ার বসতভিটায় তাঁকে দাফন করা হয়।
জোসনা বেগম নিহত স্বামীর উদ্দেশে বিলাপ করতে করতে বলেন, ‘ছুটি না পেয়ে সেদিন সন্তানদের সঙ্গে আসতে পারলে না তুমি, আজ এলে! সারা জীবনের ছুটি নিয়ে। তিনটি সন্তানকে এতিম করে তুমি চলে গেলে না ফেরার দেশে।’ গতকাল শুক্রবার ঠাকুরপাড়া গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, সেখানে এখন মাতম চলছে। স্বামীর শোকে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন জোসনা বেগম। স্কুল-কলেজ পড়ুয়া দুই ছেলে আর এক মেয়ে বাবাকে হারিয়ে এখন পাগলপ্রায়।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, বাবা-মায়ের একমাত্র ছেলে হওয়ায় অল্প বয়সেই সংসারের দায়িত্ব ঘাড়ে চাপে বাবলু মিয়ার। ১৯৮৮ সালে পুলিশ কনস্টেবল পদে যোগ দেন। চাকরিজীবন শুরু হয় ফরিদপুর পুলিশ লাইন থেকে। ১৯৯৩ সালে বিয়ে করেন সারিয়াকান্দি উপজেলার গাছবাড়ি গ্রামে। দু-তিন বছর আগে বদলি হয়ে আসেন গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জে।
জোসনা বেগম বলেন, পুলিশের বেতনের টাকায় কষ্ট করে সংসার চলত। তাঁর স্বপ্ন ছিল সন্তানদের পড়ালেখা শিখিয়ে বড় করবেন। এ জন্য বড় ছেলে জাহিদ হাসানকে ভর্তি করে দিয়েছিলেন সুন্দরগঞ্জ উপজেলা সদরের একটি কলেজে। এ বছর সে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দেবে। মেয়ে বাবলী আখতার নিপা বামনডাঙ্গা উচ্চবিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী। ছোট ছেলে নাহিদ হাসান পড়ে বামনডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। এখন তিন সন্তানেরই পড়ালেখার ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত।
জোসনা বেগম বলেন, ‘আমার স্বামী আওয়ামী লীগ-বিএনপি-জামায়াত বুঝত না, তার কাছে দেশটাই বড়। গর্ব করে বলত, দেশের জন্য চাকরি করছি। সেই দেশপাগল মানুষটাকেই বিনা দোষে ওরা (জামায়াত-শিবির) খুন করল
©somewhere in net ltd.