নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

মো: সোহরাব হোসেন

একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের এডমিন অফিসার

সোহরাব রুনু

বাংলাদেশী একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের এডমিন অফিসার

সোহরাব রুনু › বিস্তারিত পোস্টঃ

পরিস্থিতি থমথমে, সরকারে অস্বস্তি, জনমনে উৎকণ্ঠা

০২ রা মার্চ, ২০১৩ সকাল ১০:৩২

জামায়াত-শিবিরের এক দিনের সহিংসতায় পুলিশের চার সদস্যসহ ৪০ জনের মৃত্যুর ঘটনায় জনমনে আতঙ্ক ও ভীতি বিরাজ করছে। রাজধানীসহ সারা দেশে এখন থমথমে পরিস্থিতি। রাজনৈতিকভাবে এ পরিস্থিতি মোকাবিলার কথা বলা হলেও এ নিয়ে সরকারও প্রচণ্ড অস্বস্তিতে রয়েছে।

কাল রোববার ও সোমবার জামায়াতে ইসলামীর হরতালের সঙ্গে এক দিন যোগ করে মঙ্গলবারও হরতালের ডাক দিয়েছে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি। বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে দেশবাসীকে রাজপথে নেমে আসার আহ্বান জানিয়েছেন। তাঁর এই আহ্বান ও হরতালের ডাক জামায়াতের প্রতি একধরনের সংহতি প্রকাশ বলে মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকেরা।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে সরকারের একজন নীতিনির্ধারক প্রথম আলোকে বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে গেছে—এমন ভাবার কোনো সুযোগ নেই। ঢাকায় জামায়াতের নীরবতা শুভ লক্ষণ নয়। তারা বড় কোনো নাশকতার প্রস্তুতি নিচ্ছে। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীও বসে নেই। সরকার জনগণকে সঙ্গে নিয়ে রাজনৈতিকভাবে পরিস্থিতি মোকাবিলা করবে।

সরকারি দলের শীর্ষস্থানীয় একজন নেতা বলেন, বৃহস্পতিবার দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ফাঁসির রায় ঘোষণার পরপরই জামায়াত-শিবির দেশজুড়ে যেভাবে সহিংস প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে, যে তাণ্ডব চালিয়েছে, সংখ্যালঘু ব্যক্তিদের বাড়িঘরে হামলা ও লুটপাট চালিয়েছে, তা দেশের ইতিহাসে নজিরবিহীন। মাত্র কয়েক ঘণ্টায় এত প্রাণহানির ঘটনায় দেশে আতঙ্ক ও ভীতি ছড়িয়ে পড়েছে।

বর্তমান পরিস্থিতিতে করণীয় নিয়ে সরকারের উচ্চপর্যায়ে কয়েক দফা বৈঠক হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলীয় সাংসদদের এলাকায় যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। শান্তিশৃঙ্খলা বজায় রাখা ও জনমনে সৃষ্ট আতঙ্ক কাটাতে সাংসদদের এলাকায় গিয়ে সতর্ক অবস্থান নিতে বলেছেন তিনি। এরই মধ্যে বেশির ভাগ সাংসদ নিজ নিজ এলাকায় চলে গেছেন। পাশাপাশি আওয়ামী লীগের উচ্চপর্যায় থেকে জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকদের সজাগ থেকে পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে বলা হয়েছে।

জামায়াতকে মোকাবিলার পাশাপাশি সরকার ধর্মভিত্তিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সরকারের পক্ষ থেকে একজন মন্ত্রীকে এ ব্যাপারে দায়িত্ব দেওয়া হলেও তাতে খুব একটা সাড়া মিলছে না বলে নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে। কারণ, ধর্মভিত্তিক দলগুলোর সঙ্গে সরকারের কারও তেমন যোগাযোগ নেই। তবে সরকার নানাভাবে তাদের সঙ্গে আলোচনা অব্যাহত রাখার চেষ্টা করছে।

সরকারি সূত্রগুলো জানায়, সাঈদীর ফাঁসির রায়ে দলটির নেতা-কর্মীরা সহিংসতায় লিপ্ত হবেন—সরকারের উচ্চপর্যায়ে এমন আশঙ্কা থাকলেও এত প্রাণহানি ঘটবে, তা তাদের ধারণায় ছিল না। এমনকি চারজন পুলিশ সদস্যের হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সরকার যথেষ্ট উৎকণ্ঠিত। তবে ওই দিন রাজধানী ঢাকায় দলীয় নেতা-কর্মীরা সক্রিয় থাকলেও ঢাকার বাইরে এমনটা ছিল না।

প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় সূত্র জানায়, যেসব এলাকায় আওয়ামী লীগের সাংসদ নেই, সেসব এলাকায় সহিংসতা বেশি হয়েছে। আবার আওয়ামী লীগ বা মহাজোটের যেসব সাংসদের সঙ্গে জনগণের সম্পৃক্ততা কম, সেসব এলাকায়ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো ছিল না। গতকাল ঢাকার সাংসদ ও মহানগর আওয়ামী লীগের সক্রিয়তায় রাজধানীতে তেমন কোনো সহিংসতা ছিল না। জুমার নামাজের সময় মসজিদে মসজিদে অবস্থান নিয়ে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা নামাজ আদায় করেছেন। গতকাল বায়তুল মোকাররম মসজিদের পরিবেশও শান্তিপূর্ণ ছিল।

জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, আইনি ও রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় পরিস্থিতি মোকাবিলা করা হবে। সরকারের উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ও এলাকাভিত্তিক নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করতে দলীয় সাংসদ ছাড়াও সব স্তরের জনপ্রতিনিধিদের সম্পৃক্ত করা হবে। উপজেলা চেয়ারম্যান, পৌরসভার মেয়র, কাউন্সিলর, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যদের নিজ নিজ এলাকায় শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষায় দায়িত্ব দেওয়া হবে। তাঁরা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সহায়তা করবেন।

বর্তমান পরিস্থিতিতে দলীয় সব শাখাকে সাংগঠনিকভাবে সক্রিয় করারও সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ ক্ষেত্রে তৃণমূল পর্যায়ে সভা-সমাবেশসহ রাজনৈতিক কর্মসূচি দেওয়া হবে। কয়েক দিনের মধ্যে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের বৈঠক হতে পারে। এ ছাড়া ১৪ দলও সক্রিয় থাকবে। গতকাল শুক্রবার ১৪ দলের বৈঠক হয়েছে। ৯ মার্চ পর্যন্ত ১৪ দলের কর্মসূচি দেওয়া আছে। কাল থেকে টানা বিক্ষোভ সমাবেশ কর্মসূচি পালন করবে ১৪ দল।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.