নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

Our sweetest songs are those that tell of saddest thought (Shelly).

রূপক বিধৌত সাধু

মন রে, কৃষিকাজ জানো না; এমন মানবজমিন রইলো পতিত আবাদ করলে ফলত সোনা! রামপ্রসাদ সেন ([email protected])

রূপক বিধৌত সাধু › বিস্তারিত পোস্টঃ

সেদিন দুজনে

০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৫ দুপুর ২:১৮

ময়মনসিংহ যাদুঘরে গাইডের চাকরি করে শারমিন । তার বাড়ি হালুয়াঘাট । দু তিন মাস হলো, এখানে এসেছে সে । পরিবেশ, লোকজন সবকিছুই তার কাছে নতুন । চেষ্টা করছে সবকিছু মানিয়ে নিতে ।
নিলয় তার সহকর্মী । তার বাড়ি জয়পুরহাট । এক বছর ধরে এখানে আছে সে । নিলয় ছেলেটা চাপা স্বভাবের, তবে বেশ মিশুক । শারমিনের সাথে তার বেশ সখ্য ।
সেদিন শুক্রবার । যাদুঘর বন্দ । যাদুঘরের সামনে ফুলের বাগানে কাজ করছিলো নিলয় । শারমিন দাঁড়িয়ে দেখছিলো । তার মুখটা বিষণ্ণ । নিলয় তাকিয়ে দেখলো । ‘কোন সমস্যা, শারমিন !’ নিলয় জানতে চাইলো ।
শারমিন কিছু বললোনা । অন্যদিকে তাকিয়ে রইলো । নিলয় নিড়ানি রেখে তার সামনে এসে দাঁড়ালো । ‘তোমার কি মন খারাপ? তার দিকে ঝুঁকে জিজ্ঞেস করলো নিলয় । শারমিন একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললো, তারপর বললো, ‘আমার কিছু ভাল লাগছেনা !’
নিলয় বললো, ‘নতুন পরিবেশে এসেছো, তাই হয়ত বাড়ির জন্য মন খারাপ লাগছে ।’
শারমিন বললো, ‘হবে হয়তো ।’
নিলয় বললো, ‘কয়েকদিন থাকো, সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে ।’ নিজের কাজে যেতে উদ্যত হলো সে ।
শারমিন বললো, ‘চলুন, আজ একটু ঘুরে আসি ।’
নিলয় বললো, ‘কোথায়?’
শারমিন বললো, ‘কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের দিকে ।’
নিলয় বললো, ‘এখন তো অনেক কাজ । যাবো কীভাবে?’
শারমিন বললো, ‘এখন না, বিকেলে ।’
নিলয় বললো, ‘আচ্ছা ।’
ব্রীজ হতে একটু দক্ষিণে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় । অটো কিংবা রিক্সা দিয়ে যেতে হয় । রিক্সায় উঠলো দুজনে । শারমিনের চুল হাওয়ায় উড়ছিল । অনেকদিন পর মুক্ত বিহঙ্গের মত উড়ছে যেন সে । এমন একটা সময় ছিল পলকের সাথে খুব ঘুরতো সে । পলক তার স্কুল-কলেজ জীবনের বন্ধু । বন্ধুত্ব একসময় ভালোবাসায় রূপ নেয় । পলকের জন্য সব কিছু করতে পারতো সে । একবার বাড়ির কাউকে না বলে পলকের সঙ্গে ময়মনসিংহে চলে এসেছিলো । সে অনেক দিন আগের কথা । সবে নবম শ্রেণিতে উঠেছে সে ।
একদিন পলক বললো, ‘চলো, ঘুরে আসি!’
শারমিন জিজ্ঞেস করেছিলো, ‘কোথায়?’
পলক বলেছিলো, ‘ময়মনসিংহে ।’
শারমিন আর কোন কথা না বলেই রাজি হয়ে গিয়েছিলো । ভালোবাসা তাকে অন্ধ করে দিয়েছিলো । লোকলজ্জা নিয়ে ভাবার অবসর দেয়নি ।
পলকও তাকে অনেক ভালবাসতো । পলক তাকে বলেছিলো, ‘আমরা একসাথে পড়াশোনা শেষ করে চাকরিতে ঢুকবো । তারপর বিয়ে করে একসাথে থাকব ।’ পলক কথা রাখেনি ।
টিকিট কেটে তারা বোটানিক্যাল গার্ডেনে ঢুকলো । নানান প্রকার বৃক্ষের সমাহার । নিলয় আগে একাদিকবার এখানে এসেছে । শারমিন এই প্রথম । শারমিনকে বেশ প্রফুল্ল মনে হলো । অনেকদিন প্রকৃতির সান্নিধ্য পায়নি সে । বদ্ধ পরিবেশে প্রায় হাঁপিয়ে উঠেছিলো ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কূল ঘেঁষে বয়ে গেছে ব্রহ্মপুত্র নদ । কয়েকটা নৌকো যাচ্ছে । যুগলেরা পাশাপাশি বসে আছে । নিলয় আর শারমিন এখানে এসে বসলো । পূবাল হাওয়া আসছে ।
শারমিন বললো, ‘আপনার কেউ নেই?’
নিলয় অন্যদিকে তাকিয়েছিলো । এবার শারমিনের দিকে তাকালো । ‘কিছু বলছেন না যে!’ শারমিন ফের জিজ্ঞেস করলো । মৃদু হাসলো নিলয়, বললো, ‘আছে ।’
শারমিন জিজ্ঞেস করলো, ‘কোথায়? জয়পুরহাটে না ময়মনসিংহে?’
নিলয় কিছু বললোনা । চুপচাপ বসে রইলো । সাড়া না পেয়ে শারমিন ও চুপ হয়ে গেলো ।
রুবেলও যাদুঘরে চাকরি করে । সে শারমিনের পাণিপ্রার্থী । শারমিনের পিছে লেগে থাকে সবসময়; কিন্তু শারমিন তাকে পাত্তা দেয়না । সবসময় এড়িয়ে চলে । তবু হাল ছাড়েনা সে । তার বিশ্বাস, একদিন শারমিন তাকে ভালোবাসবে ।
একদিন দ্বিপ্রহরে বেঞ্চিতে বসেছিলো শারমিন । আজ অতিথি কম । এখন কেউ নেই । রুবেল কী কাজে বাইরে গিয়েছিলো । সবে কাজ সেরে ফিরলো ।
‘কী ভাবছো, শারমিন?’ শারমিনকে জিজ্ঞেস করলো রুবেল ।
শারমিন বললো, ‘না, কিছুনা ।’
রুবেল বললো, ‘চলো, আজ সিনেমা দেখে আসি ।’
শারমিন বললো, ‘এখন কথা বলতে ইচ্ছে করছেনা । আপনি আপনার কাজে যান তো ।’
কথার ভঙ্গিতে বেশ বিরক্তি । রুবেল কথা বাড়ালোনা । সে বুঝলো, শারমিনের মন ভালো নেই । কথা বাড়ালে কটু কথা শুনতে হবে । এর আগেও একাদিকবার এমনটা ঘটেছে । রাগ হলে যা খুশি তাই বলে মেয়েটা ।
পলকের ফোন । শারমিন একটু উদাস হয়ে ফোনের দিকে তাকালো । বোঝতে পারছেনা- ফোন ধরবে, কী ধরবেনা! প্রথম ভালো লাগা – তাই সহজে এড়িয়ে যেতে পারেনা । কী তীব্র অনুরাগ! মনের ক্ষোভ পর্যন্ত ম্লান হয়ে যায় । আচ্ছা করে বকবে-ভেবে নিলো শারমিন ।
‘কেন ফোন দিয়েছো?’ কণ্ঠ হতে রাগ ঝরে পড়ছে শারমিনের ।
‘ভালো আছো তুমি, শারমিন?’ স্থির কণ্ঠে জিজ্ঞেস করলো পলক ।
শারমিন বিচলিত হয়ে পড়লো । পুরনো প্রেম উছলে পড়ছে । তবু নিজেকে সামলে নিলো ।
‘আমি আবার তোমাকে পেতে চাই, শারমিন!’ কান্না-জড়িত কণ্ঠে বললো পলক ।
‘কেন ? বৃষ্টি কোথায়!’ পরিহাসের স্বরে জিজ্ঞেস করলো শারমিন ।
এবার একটু চুপ হয়ে গেলো পলক । আর কথা বললো না । ফোন কেটে দিলো ।
যাদুঘর জিম্মাদার রশিদ চাচার ছেলের বিয়ে । সহকর্মী সকলের দাওয়াত । শারমিন নিলয়কে নিয়ে কেনাকাটা করলো । নির্দিষ্ট দিনে সকলেই সেজেগোজে বিয়ে বাড়িতে একত্র হলো । শারমিন নিলয় সব সময় পাশাপাশি । রুবেলের হিংসে হলো । কী আর করা যাবে । বেচারা নীরব দর্শক ।
শারমিনের পরনে শাড়ি আর নিলয়ের পরনে পায়জামা-পাঞ্জাবী । বেশ লাগছে দুজনকে । নিলয় একটু পরপর শারমিনের দিকে তাকায়! তার বলতে ইচ্ছে হলো, ‘শাড়িতে তোমাকে চমৎকার লাগছে , শারমিন!’ কিন্তু বলতে পারছেনা ! সে কী জানে, তাকে কতো ভালো লাগছে!
বাড়িতে সাজসাজ রব । তোড়ন বানানো হয়েছে । নানা রঙের মানুষের আগমন । সবাই হইচই করছে । গান গাইছে । সবাই বেশ উৎফুল্ল । গাছে গাছে চুনকাম করা হয়েছে । ফুলে ফুলে পরিপূর্ণ বারান্দা ।
শারমিন নিলয়ের হাত ধরে আছে । নিলয় প্রথমে শিহরিত হয়েছিল, এখন বিস্মিত হচ্ছে । গায়ে গা জড়ানো ।
নিলয়ের লজ্জা লজ্জা লাগছে । অনেকেই তাকিয়ে আছে । কেউ কেউ তাদের প্রেমিক প্রেমিকা ভাবছে!
একসাথে সকলেই আহার সম্পন্ন করলো । এবার বিয়ে পড়ানোর পালা । কাজী সাহেব ইতিমধ্যে চলে এসেছেন । সবাই বর কনের পাশে এসে বসলো । দোয়া-দোরদ শুরু হয়ে গেলো । শারমিন এখনও নিলয়ের হাত ধরে আছে! নিলয় এক দৃষ্টিতে শারমিনের পাণে তাকিয়ে রইলো! ‘আহা! কী রূপ! আগে তো এত ভালো লাগেনি । এ কী ভেল্কি, না বাস্তব!’ শারমিনের চুল ছুঁতে ইচ্ছে হলো তার ।
শারমিন জিজ্ঞেস করলো,

মন্তব্য ২৩ টি রেটিং +২/-০

মন্তব্য (২৩) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৩:৪৬

আজিজার বলেছেন: ভাল লিখেছেন।

০৬ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:৩০

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: শুভেচ্ছা রইলো ।

২| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:৩৮

প্রামানিক বলেছেন: পুরোটাই একটানে পড়া হলো। খুব ভাল লাগল। ধন্যবাদ

০৬ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:৩০

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: শুভেচ্ছা ।

৩| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৫ রাত ৮:৪৯

ঢাকাবাসী বলেছেন: ভাল লাগল্ ।

০৬ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:৩০

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: শুভেচ্ছা ।

৪| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:০৯

কিরমানী লিটন বলেছেন: মুগ্ধ ভালোলাগায় পড়লাম।অনবদ্য -সুখপাঠ্য !!!
তবে শারমিনের দ্বিচারিতা মনকে ক্ষুব্ধ করলো,অনেক শুভকামনা জানবেন প্রিয় সাধু'দা ...

০৬ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:২৯

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: নারীর অন্তর বিধাতার অগোচর । মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ ।

৫| ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:৪৬

আহমেদ জী এস বলেছেন: রূপক বিধৌত সাধু ,



এই লেখাটা খানিকটা কাঁচা মনে হয়েছে আপনার আগের লেখাগুলোর তুলনায় । লিখতে লিখতে ্রো ভালো হবে আশা করি ।
আর "ভুটানিকেল গার্ডেন" নয় " বোটানিক্যাল গার্ডেন " করে দিন ওখানটাতে ।

ভালো থাকুন ।

০৬ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:২৭

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: আমারও তাই মনে হয় । অবশ্য গল্পটা অনেক আগের লেখা, কিছুই পরিবর্তন করা হয়নি । মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ ।

৬| ০৭ ই নভেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:০৪

গেম চেঞ্জার বলেছেন: গল্পের প্লটটি পরিচিত। কাহিনীতে বৈচিত্রও পাইনি। খারাপ না ভালোই। অনেক আগের লিখা বলেই বোধহয় পরিপক্ষতা সুস্পষ্ট নয়। তবে গল্পের আবেদনটি আমাদের ভাবায়। কত পলক হারিয়ে যায় শারমিনদের জীবন থেকে। কত রুবেল আশাহত হয় সেটা নিয়ে কি আমরা মাথা ঘামাই? সে সময় কি আর আছে আমাদের?

১০ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:০৬

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: ভালো কথা বলেছেন । জীবনে কত ঘটনাই তো ঘটে, সব কি আমরা মনে রাখি? সে সময় বোধহয় আমাদের নেই ।

৭| ০৭ ই নভেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:৪৯

শায়মা বলেছেন: আহা ভাইয়া~~~~

মজার গল্প!!!! :)

১০ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:০৩

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: মহারাণী শায়মাপুর ভালো লাগা ও মন্তব্যে দীনহীন পুলকিত হলো ।

৮| ০৮ ই নভেম্বর, ২০১৫ বিকাল ৫:০০

উর্বি বলেছেন: ভালো লাগল

১০ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ৯:০১

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: শুভেচ্ছা রইলো ।

৯| ১২ ই নভেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:০২

অপর্ণা মম্ময় বলেছেন: আমার কাছে লেখাটা খাপছাড়া লাগলো। হঠাৎ করে পলকের ফোন, রুবেলের আগমন, শারমিন এর আচরণ নিলয়ের সাথে। খুব তাড়াহুড়ার ছাপ লেখায়।
শুভকামনা রইলো

১২ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:৪২

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: ধইন্যবাদ ।

১০| ১২ ই নভেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:০৪

শায়মা বলেছেন: মহারাণী!!!!!!!!!!!


আরে এটা তো আমার কি করিভাইয়ার ডাক!!!!!!


তুমি ডাকছো কেনো!!!!!!!!!!!!!

১২ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:৪০

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: চ্যরি! প্রিয় আপুমণির লাইগা তো চুন্দর একটা বিশেষণ দরকার । দেখা যাক আবিষ্কার করতে পারি কিনা!

১১| ১২ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:৪৩

শায়মা বলেছেন: তাড়াতাড়ি আবিষ্কার করো। মরে যাবার আগেই।:)

১৪ ই নভেম্বর, ২০১৫ রাত ১০:১৮

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: বিদুষী অথবা তাপসী । কোনটা ভালো হয়?

১২| ১৬ ই নভেম্বর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:০২

শায়মা বলেছেন: তাপসী!!!!!!

এইটা শুনলে অনেকে অজ্ঞান হয়ে যেতে পারে ভাইয়ু!!!!!! :(


তার থেকে বিদুষী ভালো!!!!!!! :`>

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.