নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

Our sweetest songs are those that tell of saddest thought (Shelly).

রূপক বিধৌত সাধু

মন রে, কৃষিকাজ জানো না; এমন মানবজমিন রইলো পতিত আবাদ করলে ফলত সোনা! রামপ্রসাদ সেন ([email protected])

রূপক বিধৌত সাধু › বিস্তারিত পোস্টঃ

জিন্নাহ ও নেহেরুঃ মেয়ে জামাই নিয়ে দুজনেই অসুখী ছিলেন

২৬ শে এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ১০:০২


জিন্নাহর মেয়ে দিনার জন্ম হয়েছিল ব্রিটেনে, তিনি সেখানকার স্কুলে যেতেন। এই দুই বালিকা জানতেন না, আধুনিক ধ্যান-ধারণা সবই চমৎকার, সেগুলো নিয়ে খৈ ফোটানো যায়, কিন্তু বিছানায় নেয়া যায় না। উভয় বালিকাই ওই সীমারেখাটা অতিক্রম করে ভিন্নধর্মের পুরুষের প্রেমে মজেছিলেন।
ইন্দিরা কিন্তু ওই সময়ে ছিলেন খুবই পরিচিত তরুণী। অনেকেই তাকে বিয়ে করার ব্যাপারে আগ্রহী ছিল। নেহরুরা ছিলেন উচ্চ বর্ণের ব্রাহ্মণ। তবে কট্টর নয়। কিন্তু তাই বলে নিম্নবর্ণের কারো সাথে কিংবা অন্য কোনো ধর্মের তরুণের কাছে মেয়েকে বিয়ে দিতে খুব একটা আগ্রহী ছিলেন না। কিন্তু কথায় বলে প্রেম কোনো বিধিনিষেধই মানে না।
ইন্দিরার স্বামী ফিরোজ জাহাঙ্গীর গান্ধী (Ghandy, Gandhi নয়। পরে বানান বদল করে করেছিলেন। হয়ে গেলেন Gandhi। ইন্দিরা এবং তার বংশধররা এই পদবিই ব্যবহার করেন)। ছিলেন ভারতের পারসি সম্প্রদায়ের সদস্য। ১৯৩০ সালে হরতালের পিকেটিং করার সময় নেহরুর স্ত্রী কমলা এবং মেয়ে ইন্দিরার সাথে পরিচয় ঘটে ফিরোজের। এর পর থেকে নেহরু পরিবারের সাথে তাঁর ঘনিষ্ঠতা হয়। ওই সময়টাতে নেহরু প্রায়ই কারাগারে থাকতেন। ইন্দিরার বয়স যখন মাত্র ১৬, তখন ফিরোজ বিয়ের প্রথম প্রস্তাব দেন। কিন্তু ইন্দিরা ও কমলা উভয়ে তা প্রত্যাখ্যান করেন। অজুহাত হিসেবে দেখানো হয়, ইন্দিরার বয়স কম। তবে কমলা নেহরু যক্ষ্মায় আক্রান্ত হওয়ার পর ফিরোজ তাঁর সেবায় নিয়োজিত রাখেন। চিকিৎসার জন্য ইউরোপ নিয়ে যান। কমলার মৃত্যুর পর ইংল্যান্ডে বাস করার সময় ইন্দিরা ও ফিরোজ ঘনিষ্ঠ হন। ১৯৪২ সালে তারা হিন্দু ধর্মমতে বিয়ে করেন।
জওয়াহেরলাল এই বিয়েতে তীব্র আপত্তি জানিয়েছিলেন। তিনি বিয়েটি বাতিল করার জন্য মহাত্মা গান্ধীর শরণাপন্নও হয়েছিলেন। কিন্তু কাজ হয়নি। তাঁদের বিয়েটাও সুখের হয়নি। স্বাধীন ভারতে তাঁদের বিচ্ছেদ ঘটে। ইন্দিরা তাঁর বাবার সরকারি বাসভবন তিন মূর্তি হাউজে ওঠেন, সেখানে তিনি বাবার পারসোনাল সেক্রেটারি হিসেবে কাজ করেন। ফিরোজ সাংবাদিকতা করতেন, একাধিকবার এমপি হয়েছিলেন। ১৯৬০ সালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। ওই সময় তিনি ছিলেন স্রেফ একজন এমপি, ইন্দিরাও নিজ নামে খ্যাতিমান ছিলেন না।
তবে তাদের উভয়ের জীবন নানা কেচ্ছা-কাহিনীতে ভরপুর। ইন্দিরা গান্ধীর জীবনীকার ক্যারিনি ফ্রাঙ্ক বলেছেন, ইন্দিরার অনেকগুলো অ্যাফেয়ার্স ছিল। শান্তিনিকেতনে অধ্যয়নের সময় তিনি জার্মান নাগরিক ফ্রাঙ্ক ওবেরডর্ফ নামের এক ফরাসি শিক্ষকের প্রেমে পড়েছিলেন। পরে নেহরুর সচিব এম ও মাথাইয়ের সাথে তাঁর সম্পর্ক ছিল বলে অনেকে দাবি করেছে। এমনকি ফিরোজ গান্ধীর সাথে বিয়ের পরও এই সম্পর্ক টিকে ছিল। এমনকি ইন্দিরার সাথে ছাড়াছাড়ি হওয়ার পর তিনি অন্য এক নারীর সাথে সম্পর্ক রক্ষা করেছিলেন। তবে তাদের কাহিনী খুব বেশি প্রচার হয়নি, যেমনটা হয়েছে জিন্নাহর মেয়ের কাহিনী।
ভারত স্বাধীন হওয়ার পর ফিরোজ অবশ্য প্রধানমন্ত্রী নেহরুর জন্য অনেকবারই বিব্রতকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছিলেন। তিনি ন্যাশনাল হেরার্ল্ড নামের একটি পত্রিকা প্রকাশ করেন। এই পত্রিকাটি স্বাধীনতা-পরবর্তী ভারত সরকারের জন্য নানা সমস্যা সৃষ্টি করেছিল। স্বাধীনতার পর থেকে অনেক শিল্পপতি সরকারের সাথে সম্পর্ক সৃষ্টি করে বিভিন্ন ধরনের সুবিধা নিচ্ছিলেন। ফিরোজ এগুলো তাঁর পত্রিকায় প্রকাশ করে আলোড়ন সৃষ্টি করেন। এতে করে একবার অর্থমন্ত্রীকে পর্যন্ত পদত্যাগ করতে হয়েছিল। ফলে মেয়ে-জামাইয়ের প্রতি আরেক দফা অসন্তুষ্ট হন নেহরু। এ দিকে নানা কারণে ফিরোজের সাথে দাম্পত্য জীবন অব্যাহত রাখা সম্ভব ছিল না নেহরুর জন্য। একপর্যায়ে বাবার একাকীত্ব অবসানের কথা বলে ইন্দিরা তাঁর স্বামীর সংসার ত্যাগ করে বাবার কাছে চলে যান।
দিনা জন্মগ্রহণ করেছিলেন ১৯১৯ সালের ১৪ ও ১৫ আগস্টের মাঝামাঝি, রাতে। দুনিয়ায় তাঁর আগমন হয়েছিল নাটকীয়ভাবে। তাঁর মা-বাবা লন্ডনের একটি থিয়েটারে মুভি উপভোগ করার সময় তিনি আগমনবার্তা ঘোষণা করেছিলেন।
স্ট্যানলি ওলপার্টের ‘জিন্নাহ অব পাকিস্তান’-এ ঘটনাটি এভাবে বর্ণনা করা হয়েছে : ‘বিস্ময়কর ব্যাপার হলো, ওই দিনটির ঠিক ২৮ বছর পর জিন্নাহর আরেকটি সন্তান তথা পাকিস্তানের জন্ম হয়।’
দিনাকে ১৯৩৬ সালে যখন নেভিল ওয়াদিয়ার সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়া হয়েছিল, তখন তাঁর বয়স ছিল ১৭ বছর। নেভিল এক পারসি পরিবারে (তাঁর বাবা জরস্ত্রীয় হলেও মা ছিলেন খ্রিষ্টান) জন্মে ছিলেন। তাঁর বাবা স্যার নেস ওয়াদিয়া ছিলেন ভারতবর্ষের বিখ্যাত বস্ত্রশিল্পপতি। নেভিল জন্মগ্রহণ করেন ইংল্যান্ডের লিভারপুলে, ক্যামব্রিজের মালভার্ন ও ট্রিনিটি কলেজে পড়াশোনা করেন। ওই সময়ে জিন্নাহর সহকারী মোহাম্মদ আলী করিম চাগলা তার আত্মজীবনী ‘রোজেজ ইন ডিসেম্বর’-এ লিখেছেন : ‘দিনাকে জিন্নাহ জিজ্ঞাসা করলেন ‘ভারতবর্ষে লাখ লাখ মুসলমান আছে, আর তুমি কি না কেবল তার জন্য অপেক্ষা করছিলে?’ দিনার জবাব ছিল, ‘ভারতবর্ষে লাখ লাখ মুসলিম মেয়ে ছিল, তুমি কেন তাহলে আমার মাকে বিয়ে করেছিলে?’
প্রেম যে কী জিনিস তা জিন্নাহর অজ্ঞাত কিছু ছিল না। রট্টি ও জিন্নাহর প্রেমকাহিনী জানার সবচেয়ে ভালো উপায় হলো রাজি হায়দায়ের ‘রট্টি জিন্নাহ : দ্য স্টোরি টোল্ড অ্যান্ড আনটোল্ড’ বইটি পড়া। প্রথম স্ত্রী মারা যাওয়ার ২০ বছর পর জিন্নাহ ১৬ বছর বয়সী রট্টির (দিনার হবু মা) প্রেমে পড়েছিলেন। রট্টি ছিলেন জরস্ত্রীয় ধর্মাবলম্বী পরিবারের সন্তান। তারা কোর্ট ম্যারেজের আশ্রয় নিতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ওই সময়ের আইনে বলা ছিল, কোর্টে বিয়ে করতে হলে ধর্ম বিসর্জন দিতে হতো। হায়দার ব্যাখ্যা করেছেন, এটা করা হলে জিন্নাহকে ইম্পেরিয়াল লেজিসলেটিভ কাউন্সিলে মুসলিম আসন থেকে পদত্যাগ করতে হতো। রট্টি ইসলাম গ্রহণ করে জিন্নাহকে বিয়ে করে এই সমস্যার সমাধান করেছিলেন।
তবে জিন্নাহ-রট্টির বিয়েটা কিন্তু খুব সহজে হয়নি। বলিউড-টালিউড-ঢালিউড সব সিনেমাকেই হার মানাবে ওই কাহিনী। রট্টির বাবা স্যার দিনশা পেতিত ছিলেন টেক্সটাইল ম্যাগনেট, ব্যারিস্টার জিন্নাহর মক্কেল। তাঁর একমাত্র সন্তান ভিন্ন ধর্মের জিন্নাহকে বিয়ে করতে চাইছে, এটা মেনে নেয়া তাঁর পক্ষে কিছুতেই সম্ভব ছিল না। তিনি তাঁদের সাক্ষাৎ নিষিদ্ধ করে দিলেন। স্যার দিনশা আদালতে গিয়ে তাঁর নাবালক মেয়ের সাথে জিন্নাহর দেখা করার ওপর নিষেধাজ্ঞা নিয়ে এলেন। তাঁরা দুই বছর অপেক্ষা করলেন। রট্টি আইনগতভাবে প্রাপ্তবয়স্কা হলে তিনি জিন্নাহকে বিয়ে করে বাবার বাড়ি ছেড়ে গেলেন।
এটা ছিল প্রেমের প্রথম দিককার বিষয়। হায়দারের মতে, জিন্নাহ (তিনি তাঁকে ‘জে’ নামে অভিহিত করেছেন) যখন শ্বাসরোধী অফিসে শ্বাসরোধী মানুষদের সাথে শ্বাসরোধী বিষয় নিয়ে আলোচনায় ব্যস্ত থাকতেন, তখন বোম্বের ফুল রট্টি ধৈর্য ধরে আইন-আদালতের দ্বন্দ্বমুখর কক্ষগুলোতে বিচরণ করতেন। তিনি জিন্নাহর সাথে বিভিন্ন সভাতেও যেতেন। এমনকি নাগপুরে কংগ্রেস অধিবেশনেও যোগ দিয়েছিলেন, ঔপনিবেশিক শত্রু ব্রিটেনের মোকাবেলায় হিন্দু-মুসলিম ঐক্যের প্রতি জোরালোভাবে বক্তব্য রেখেছেন। রট্টিতে অভিভূত ছিলেন জিন্নাহ। হায়দার গভর্নর হাউজে তাঁদের এক ডিনারের চমৎকার ঘটনা তুলে ধরেছেন।
কাহিনীটি এমন : মিসেস জিন্নাহ লো-কাট ড্রেস পরেছেন। তাঁরা যখন ডাইনিং টেবিলে বসেছিলেন, তখন লেডি উইলিংডন, মেরি ফ্রিম্যান-টমাস তার এডিসিকে বললেন একটা তোয়ালে এনে মিসেস জিন্নাহকে ঢেকে দিতে, যাতে তাঁর ঠাণ্ডা না লাগে। জিন্নাহ টেবিল থেকে ওঠে দাঁড়িয়ে বললেন, ‘মিসেস জিন্নাহর যদি ঠাণ্ডা লাগে, তিনি সেটা জানাবেন এবং নিজে থেকেই তোয়ালে আনতে বলবেন।’ তিনি সাথে সাথে তাঁর স্ত্রীকে নিয়ে ডাইনিং রুম থেকে বেরিয়ে এলেন, আর কখনো তিনি গভর্নর হাউজে যাননি। তবে তাঁদের জীবনটা এভাবে চলেনি। বিয়ের প্রথম প্রথম জিন্নাহর জীবনের সাথে মানিয়ে নিতে রট্টির খুব অসুবিধা হয়নি। কিন্তু মহাত্মা গান্ধী দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ভারতবর্ষে ফিরে এলে পরিস্থিতি পাল্টে যায়। তাঁর রাজনৈতিক কৌশল ছিল জিন্নাহর সাংবিধানিক নিয়মনীতি মেনে চলা থেকে ভিন্ন।
বিয়ের দ্বিতীয় ও তৃতীয় বছরে জিন্নাহ তিনটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেন। এতে করে ভারতবর্ষের স্বাধীনতা আন্দোলনে জিন্নাহর ভূমিকা সাময়িকভাবে কমে যায়। তিনি ইম্পেরিয়াল লেজিসলেটিভ কাউন্সিল থেকে পদত্যাগ করেন, হোম রুল লিগ থেকে সরে যান, ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল কংগ্রেসও ছেড়ে দেন। মনে হচ্ছিল, জিন্নাহর ক্যারিয়ার দ্রুত শেষ হয়ে যাচ্ছে। ১৯২০ সালের কংগ্রেস অধিবেশনে রট্টি ছিলেন জিন্নাহর পাশেই। জিন্নাহ দেখলেন, গান্ধী আন্দোলনটি হাইজ্যাক করছেন। ওই ঘটনাটির উল্লেখ করেছেন যশোবন্ত সিং তাঁর জিন্নাহ : ইন্ডিয়া, পাকিস্তান ইন্ডিপেন্ডেন্স বইতে। গান্ধী নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনকে পূর্ণ স্বরাজ ধরনের গোলমেলে দাবিসহ রাজপথে নিয়ে গেলেন।
গান্ধীকে জিন্নাহ বলেছিলেন, ‘আপনার পথ ভুল পথ : আমার পথটাই (নিয়মতান্ত্রিক পথ) সঠিক পথ।’
কংগ্রেসের সাথে সম্পর্কচ্ছেদ করলেন জিন্নাহ। মুসলিম লিগের সদস্যপদ ছাড়া আর কোনো জনগণ-সংশ্লিষ্ট কোনো কিছুর সাথে তাঁর সম্পর্ক ছিল না। জাতীয় পর্যায় থেকে সরে গিয়ে জিন্নাহ এখন দাঁড়ানোর জন্য অনেক ছোট প্লাটফর্মে চলে গেলেন।
ভারতবর্ষে অসহযোগিতা ও আইন অমান্য আন্দোলন চলার সময় দিনার বয়স ছিল মাত্র এক বছর। গান্ধীর কৌশলের সাথে দ্বিমত পোষণ করে তাঁর বাবা জিন্নাহ পেছনে সরে গেলেন। পরিবারটি ইউরোপ সফরে বের হলো, তাঁরা অভিজাতদের সাথে মিশত।
গান্ধী ১৯২২ সালে কারাগারে গেলেন। এ প্রেক্ষাপটে রট্টি আর দিনা দেখলেন, তাদের অবহেলা করে জিন্নাহ ১৯২৩ সালের নভেম্বরে সেন্ট্রাল লেজিসলেটিভ অ্যাসেম্বলির নির্বাচনে অংশ নিলেন। এমনকি জিন্নাহ জেল থেকে মুক্তি পাওয়ার পরও জিন্নাহ আইন পরিষদে মুসলমানদের জন্য পর্যাপ্ত আসন সংরক্ষণ করার জন্য লড়াই করতে লাগলেন।
হায়দার জানিয়েছেন, রট্টি এবং ৯ বছরের দিনা এখন জিন্নাহর জীবনে তেমন গুরুত্ব পাচ্ছিল না। রট্টির পক্ষে এমনটা মেনে নেয়া কঠিন ছিল। তিনি ১৯২৮ সালে বাড়ি থেকে তাজমহল হোটেলে সরে গেলেন। জিন্নাহ ব্যর্থ বিয়েতে তাঁর ভূমিকা মেনে নিলেন। তিনি বলেছেন, ‘এটা আমারই ভুল : আমাদের মধ্যে কিছুটা উপলব্ধি সৃষ্টি হওয়া উচিত।’
জিন্নাহ ১৯২৮ সালে যখন বোম্বে ছাড়লেন, তখন মিসেস জিন্নাহ তাঁর মা-বাবার সাথে ইউরোপ পাড়ি দিয়েছেন। তখন জিন্নাহর রাজনৈতিক ক্যারিয়ার ছিল অনেকটাই অন্ধকারে। ব্যক্তিজীবনেও জিন্নাহ তখন ভয়াবহ রকমের নিঃসঙ্গ।
তিনি তখন ইংল্যান্ড যাত্রা করলেন। তাঁর জাহাজ যখন ইংল্যান্ডে ভিড়ল, তখন রট্টি আর দিনা অবস্থান করছিলেন প্যারিসে। সেখানেই রট্টি ভয়াবহ রকমের অসুস্থ হয়ে পড়েন। খবর পেয়ে তাকে দেখতে প্যারিসে ছুটে যান জিন্নাহ। ওই সময় তাঁদের মধ্যে সমঝোতা হওয়ার আভাস পাওয়া যাচ্ছিল। কিন্তু হয়নি। তাঁরা আবার বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন।
এ দিকে জিন্নাহর রাজনৈতিক জীবন আরো কঠিন হয়ে পড়েছে। গান্ধীর দ্রুত উত্থানে জিন্নাহ কোণঠাসা হয়ে পড়তে থাকেন। ১৯২৮ সালে মতিলাল নেহরু (জওয়াহেরলাল নেহরুর বাবা) কলকাতায় নেহরু রিপোর্ট পেশ করেন। জিন্নাহ সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তাহীনতাকে অগ্রাহ্য করার বিপদ সম্পর্কে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন। কিন্তু তাঁর কথা শোনার গরজ কেউ অনুভব করেনি। তিনি নিজেই সরে দাঁড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন। বিদায়বেলা জামশেদ নওসেরওয়ানজিকে বলেছিলেন, ‘জামশেদ, এটা হলো আলাদা হওয়ার পথ।’
জিন্নাহ, পাকিস্তান অ্যান্ড ইসলামিক আইডেন্টিটি গ্রন্থে আকবর আহমদ বলেছেন, দিনা যদিও বারবার বলেছেন, তার মা রট্টি মারা গেছেন মলাশয় প্রদাহ বা এ ধরনের জটিল কোনো রোগে, তবে এটা নিশ্চিত মৃত্যুটি ঘটেছিল হজম-সংক্রান্ত রোগে। রোগটির কারণে রট্টিকে অসহ্য ব্যথা সহ্য করতে হচ্ছিল। একপর্যায়ে ওভারডোজে তাঁর মৃত্যু হতে চলেছিল। অনেকে এমনও বলে থাকেন, তিনি আত্মহত্যা করতে চেয়েছিলেন।
জিন্নাহ যখন তাঁর রাজনীতি, আইনপেশার মারাত্মক জটিল অবস্থা মোকাবেলা করছিলেন, রট্টি তখন ভাঙা হৃদয়ে তাজমহল হোটেলে শুয়ে ছিলেন। মায়ের শেষ দিনগুলোতে দিনা তার পাশেই ছিলেন। দুই মাস পর মাত্র ২৯ বছর বয়সে রট্টি মারা যান।
দাফন অনুষ্ঠানে জিন্নাহ উপস্থিত ছিলেন। তবে তাঁকে কবরে শুইয়ে দেয়ার সময়ও জিন্নাহ তাঁর রাজনৈতিক দুশ্চিন্তা নিয়ে কথা বলছিলেন। তবে কবরে একমুঠো মাটি দেয়ার সময় তিনি স্ত্রীর বেদনায় সত্যিই ভেঙে পড়েন। সবশেষ হয়ে যাওয়াটাই তাকে আঘাত করে। তাঁর হতাশ মনে যখন নতুন একটি দেশের ধারণার জন্ম দিচ্ছিল, তখন তাঁর ভালোবাসা অন্য জগতে বাস করার জন্য তাঁকে ছেড়ে চলে যাচ্ছিল। তাঁর রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী আর তাঁর প্রেমিকা উভয়ই তাঁকে পরাস্ত করে ফেলেছিল। ১০ বছরের দিনা দেখলেন, তাঁর বাবা কান্নায় ভেঙে পড়েছেন।
আকবর আহমদ লিখেছেন, ‘রট্টির মৃত্যু জিন্নাহকে গুঁড়িয়ে দিয়েছিল। এটা ছিল তাঁর জন্য একটা যবনিকাপাত।’
জিন্নাহ তখন রাজনীতি ছেড়ে লন্ডনে পাড়ি দিলেন। সাথে ছিলেন মাহীন দিনা এবং জিন্নাহর বোন ফাতিমা।
আট বছর পর তাঁর ১৯৩১ সালের যাত্রা সম্পর্কে আলিগড়ের ছাত্রদের জিন্নাহ বলেছিলেন, ‘আমি তখন চরম অসহায় অবস্থা অনুভব করেছিলাম।’
তাঁরা হ্যাম্পস্টিডের একটি সুরম্য অভিজাত বাড়িতে ওঠেন। ‘দিনা সকালে বিছানার প্রান্তে বসা বাবার জন্য মর্নিং টি নিয়ে যেতেন। সকালের নাশতা হতো ৯টায়। শোফার জিন্নাহকে কিংস বেঞ্চ ওয়াকে তাঁর চেম্বারে নিয়ে যেত। শনি ও রোববার তাঁরা হাঁটাহাঁটি করতেন। দিনা তাঁর বাবাকে ভালোবাসতেন।
ভারতবর্ষে আবার রাজনীতি করার জন্য ১৯৩৩ সালে জিন্নাহ ফিরে আসেন। ইংল্যান্ডের বাড়িটি বিক্রি করে দেয়া হয়। দিনা চলে যান তাঁর মায়ের স্বজনদের সাথে বাস করার জন্য। জিন্নাহ ব্যস্ত হয়ে পড়েন রাজনীতিতে। সৃষ্টি হলো নতুন ইতিহাস।
মায়ের স্বজনদের সাথে বাস করার সময়ই নেভিলের সাথে দিনার পরিচয় হয়। নেভিল ছিলেন তাঁর চেয়ে আট বছরের বড়। জিন্নাহর অমতেই বিয়েটা হয়ে যায়। জিন্নাহ বিয়েটা গ্রহণ করতে পারেননি।
তাঁদের এক মেয়ে ও এক ছেলে হয়। দিনা তাঁর মায়ের মতোই সুখ থেকে বঞ্চিত হয়েছিলেন। বিয়ের পাঁচ বছরের মধ্যেই তাঁরা আলাদা হয়ে যান, যদিও আনুষ্ঠানিক বিবাহবিচ্ছেদ ঘটেনি।
১৯৪৭ সালে জিন্নাহ পাকিস্তান নামের নতুন একটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে সক্ষম হন। জিন্নাহর এই কৃতিত্বে দিনা খুশি হয়ে তাকে অভিনন্দিত করেছিলেন। কিন্তু জিন্নাহর জীবিতকালে নতুন রাষ্ট্রে যাননি। অবশ্য বাবার মৃত্যুর খবর পেয়ে পাকিস্তান গিয়েছিলেন।
তবে ১৯৪৭ সালের ৭ আগস্ট নতুন পাকিস্তান রাষ্ট্রে যাওয়ার আগের রাতে জিন্নাহ তাঁর মেয়ে ও নাতি-নাতনীদের সাথে সাক্ষাৎ করেন। তিনি তাঁর স্ত্রী রট্টির কবরও জেয়ারত করেছিলেন।
দিনার ছেলে নুসলি ওয়াদিয়া খ্রিষ্টান হয়েছিলেন। পরে জরস্ত্রীয় ধর্মে ফিরে যান। তিন বোম্বের ধনী পারসি সম্প্রদায়ের সদস্য হিসেবেই জীবনযাপন করেন।

সংযোজনঃ

ইসলাম গ্রহণের আগে ইরানের পারসিকরা আগুনকে দেবতা-জ্ঞানে উপাসনা করত। ইসলাম-পূর্ব কালের অগ্নি-উপাসক ইরানীদের অধুনা-প্রায় বিলুপ্ত ধর্মের নাম ছিল জরাথুস্ট্রীয় ধর্ম। তাদের ধর্ম গ্রন্থের নাম ছিল জেন্দা-বেস্তা। সমগ্র ইরান বা পারস্য এবং পারসিক জাতি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করলে অগ্নি-উপাসক সম্প্রদায়টি পালিয়ে ভারতে চলে আসে। বোম্বাই নগরীতে তাদের ক্ষুদ্র একটি অংশ এখনও রয়েছে। নেহেরু-কন্যা, ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর স্বামী ফিরোজ ছিলেন এমনই একজন অগ্নি-উপাসক পারসিক।

মন্তব্য ৫৮ টি রেটিং +১২/-০

মন্তব্য (৫৮) মন্তব্য লিখুন

১| ২৬ শে এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ১০:১৫

বিজন রয় বলেছেন: আপনি সুখী কিনা?

২৬ শে এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ১১:৫৯

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: অসুখী!

২| ২৬ শে এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ১০:২৬

সোহানী বলেছেন: অনেক অজানা ইতিহাস জানলাম...++++++++++

২৬ শে এপ্রিল, ২০১৬ দুপুর ১২:০১

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: স্বাগতম । মন্তব্যে প্রীত হলাম!

৩| ২৬ শে এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ১০:৩৫

আরজু পনি বলেছেন:

এই পোস্টটা পড়তে পড়তে ৬বার ব্রাউজারের হোমপেজে অটো নিয়ে গেছে। এখন মন্তব্য লিখতে গিয়ে দুশ্চিন্তা হচ্ছে আবার না হোমপেজে নিয়ে যায়!

শেয়ার করার জন্যে অনেক ধন্যবাদ, সাধু।

অসুখী দাম্পত্য জীবন কারো না হোক।

২৬ শে এপ্রিল, ২০১৬ দুপুর ১২:০২

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: তাও ভালো পড়তে পেরেছেন । শুভেচ্ছা রইলো ।

৪| ২৬ শে এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ১০:৪০

ডাঃ প্রকাশ চন্দ্র রায় বলেছেন: অত্যন্ত তথ্যবহুল পোষ্ট। অনেককিছু অজানা তথ্য জ্ঞাত হলাম। অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।।

২৬ শে এপ্রিল, ২০১৬ দুপুর ১২:২২

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: ধন্যবাদ অাপনাকেও ।

৫| ২৬ শে এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ১১:০৪

প্রামানিক বলেছেন: তথ্যবহুল দারুণ পোষ্ট। পুরোটা পড়া হয় নাই, প্রিয়তে নিলাম পড়ে আবার পড়বো।

২৬ শে এপ্রিল, ২০১৬ দুপুর ১২:২৩

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: সময় করে পড়ে নিয়েন ।

৬| ২৬ শে এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ১১:০৯

মানবী বলেছেন: "দিনা জন্মগ্রহণ করেছিলেন ১৯১৯ সালের ১৪ ও ১৫ আগস্টের মাঝামাঝি, রাতে।......"
"দিনা শেষ বয়সে নিউইয়র্কে বাস করেন। সেখানেই ৯৯ বছর বয়সে মারা যান।"

- গনিতে আমার তেমন মেধা নেই তারপরও মনে হয় ১৯১৯ সালে জন্মে কারো ৯৯ বছর বয়সে মৃত্যু হতে হলে অন্তঃত ২০১৮ সালের পর্যন্ত তাঁরা বেঁচে থাকাটা জরুরী.. আজ ২০১৬ সালের ২৬শে এপ্রিল :-)

অত্যন্ত শ্রমসাধ্য লেখা। পোস্টে উল্লেখিত সকল রেফারেন্স ঘেঁটে পোস্টটি মৌলিক ভাবে আপনার লেখা হয়ে থাকলে আন্তরিক সাধুবাদ।

" এই দুই বালিকা জানতেন না, আধুনিক ধ্যান-ধারণা সবই চমৎকার, সেগুলো নিয়ে খৈ ফোটানো যায়, কিন্তু বিছানায় নেয়া যায় না। উভয় বালিকাই ওই সীমারেখাটা অতিক্রম করে ভিন্নধর্মের পুরুষের প্রেমে মজেছিলেন।"
- এধরনের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সমৃদ্ধ পোস্টের শুরুতের এমন বাক্য কুরুচীপূর্ণ ও বেমানান মনে হয়েছে।


তথ্যবহুল পোস্টের জন্য ধন্যবাদ রূপক বিধৌত সাধু।

২৬ শে এপ্রিল, ২০১৬ দুপুর ১২:৪৫

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: অনভিপ্রেত ভুলের জন্য দুঃখিত!

৭| ২৬ শে এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ১১:৪৬

গোধুলী রঙ বলেছেন: এইটাই যদি দিনা ওয়াদিয়া হয়ে থাকে তবে এখনো বাইচা আছে অথবা উইকিপিডিয়ায় ভুল তথ্য আছে, অথবা আপনার ৯৯ বছরের হিসাবই ঠিক, ২০১৮ সালে আপনিই হয়তো জানেন উনি মারা যাবেন :)

২৬ শে এপ্রিল, ২০১৬ দুপুর ১২:৪৭

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: মন্তব্যে মজা পেলাম!

৮| ২৬ শে এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ১১:৫০

গোধুলী রঙ বলেছেন: https://en.wikipedia.org/wiki/Dina_Wadia

২৬ শে এপ্রিল, ২০১৬ দুপুর ১২:৪৯

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: মহিলা তো বাঁইচা অাছে মনে হয়!

৯| ২৬ শে এপ্রিল, ২০১৬ দুপুর ১২:২৯

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: কিছু তথ্য জানা থাকলেও এতোটা জানা ছিল না। আপনার সৌজন্যে অনেক কিছু জানা হলো।
ধন্যবাদ রূপক বিধৌত সাধু।

২৬ শে এপ্রিল, ২০১৬ দুপুর ১২:৫০

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: ধন্যবাদ অাপনাকেও ।

১০| ২৬ শে এপ্রিল, ২০১৬ বিকাল ৩:৩৫

রাজিহাপি বলেছেন: এবং নেস ওয়াদিয়া (ভারতের সিনে নায়িকা প্রিতি জিনটার সাবেক প্রেমিক এবং ব্যবসায়িক পার্টনার ছিলেন) ভারতের বোম্বে ডাইং এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসাবে কর্মরত আছেন।

২৬ শে এপ্রিল, ২০১৬ বিকাল ৩:৫৪

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: তথ্যটা জানা ছিলো না! অাপনাকে অশেষ ধন্যবাদ ।

১১| ২৬ শে এপ্রিল, ২০১৬ বিকাল ৪:১৭

গেম চেঞ্জার বলেছেন: মানুষের জীবন বড়ই বিচিত্র!!! :|

২৬ শে এপ্রিল, ২০১৬ বিকাল ৫:০৩

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: হু । বিচিত্রই বটে!

১২| ২৬ শে এপ্রিল, ২০১৬ বিকাল ৪:১৯

গোধুলী রঙ বলেছেন: নেস ওয়াদিয়া -<নেভিল ওয়াদিয়া-<নুসলি ওয়াদিয়া -<নেস ওয়াদিয়া
বংশ পরম্পরা

২৬ শে এপ্রিল, ২০১৬ বিকাল ৫:০২

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: আপডেটেড হলাম । বহুত শুকরিয়া ।

১৩| ২৬ শে এপ্রিল, ২০১৬ বিকাল ৪:৫১

অগ্নিপাখি বলেছেন: তথ্যসমৃদ্ধ লেখাটি অনেক ভালো লাগলো। মুহাম্মদ আলি জিন্নাহ ও রট্টি জিন্নাহ এর যে ঘটনাগুলোর বর্ণনা দিয়েছেন তা ১৯৯৮ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত "জিন্নাহ" চলচ্চিত্রতেও খুব সুন্দর ভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। পোস্টে ভালো লাগা এবং ++++++++++++ । "জিন্নাহ" চলচ্চিত্রটি দেখতে পারেন- তৎকালীন ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনের অনেক কিছুই চমৎকার ভাবে দেখানো হয়েছে। এরকম পোস্ট আরও আশা করছি।
ভালো থাকবেন।

২৬ শে এপ্রিল, ২০১৬ বিকাল ৫:০১

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: ছবিটা দেখবো । ধন্যবাদ অাপনাকে ।

১৪| ২৬ শে এপ্রিল, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:০৬

সোজোন বাদিয়া বলেছেন: জিন্নাহর সম্পর্কে আমার তেমন কোনো পড়াশুনো নেই। মাঝে মাঝে ছুটোছাটা পড়েছি। তাতে একটা ধারণা জন্মেছে যে মানুষটা একরোখা, মেজাজি এবং মাঝে মাঝে দাম্ভিক হলেও, সৎ এবং (হেঁয়ালিপূর্ণ মনে হতে পারে, তবুও বলছি) সত্যিকারভাবেই অসাম্প্রদায়িক ছিলেন। এ বিষয়ে আপনার কাছ থেকে কিছু জানতে পারলে খুশি হব।

২৬ শে এপ্রিল, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:২৮

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: দ্বিজাতিতত্ত্বের প্রবক্তা হলেও তাঁর জীবনাচার পর্যবেক্ষণ করলে তাঁকে অসাম্প্রদায়িকই মনে হয় । তাঁকে যে কারণে সমালোচনা করা হয়, সেসবের দায় নেহেরু, বল্লবভাই প্যাটেল কিংবা মহাত্মা গান্ধীর ওপরও চরমভাবে বর্তায় । অাসলে জিন্নাহ সম্পর্কে অামার মূল্যায়ণ মিশ্র!

১৫| ২৬ শে এপ্রিল, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:২২

কল্লোল পথিক বলেছেন: অজানা ইতিহাস জানলাম
পোস্টে++++++++++

২৬ শে এপ্রিল, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:২৯

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: প্রীতি ও শুভেচ্ছা ।

১৬| ২৬ শে এপ্রিল, ২০১৬ রাত ৮:২৩

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: কত অজানারে.......

রাজনীতিতে ধর্ম নিয়ে কি খেলাটাই খেললো জিন্নাহ! সকলেই জিন্নাহ টুপিতে ধর্ম খুঁজে পেল- অথচ ব্যক্তিজীবন কত ভিন্নরকম!

অনেক কিছু জানা হল। ধন্যবাদ।

২৬ শে এপ্রিল, ২০১৬ রাত ৮:৩৯

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: তাঁর রাজনৈতিক জীবন ও ব্যক্তিজীবন সম্পূর্ণ বিপরীতমুখী! সত্যিই কী অদ্ভূত!

১৭| ২৬ শে এপ্রিল, ২০১৬ রাত ৯:৩২

চিক্কুর বলেছেন: চমৎকার পোস্ট।

২৭ শে এপ্রিল, ২০১৬ ভোর ৫:১৫

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: অশেষ ধন্যবাদ ।

১৮| ২৭ শে এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১২:৪৪

প্রামানিক বলেছেন: চমৎকার পোষ্ট। এত কিছু জানা ছিল না পোষ্ট পড়ে অনেক কিছু জানা হলো। ধন্যবাদ

২৭ শে এপ্রিল, ২০১৬ ভোর ৫:১৬

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: অনেক অনেক শুভেচ্ছা ।

১৯| ২৭ শে এপ্রিল, ২০১৬ রাত ২:২৭

হুকুম আলী বলেছেন: এসব কাহিনী জানা ছিল না। জেনে খুশি হলাম।

২৭ শে এপ্রিল, ২০১৬ ভোর ৫:১৮

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: আপনার উপস্থিতিতে অামিও খুশি হলাম!

২০| ২৭ শে এপ্রিল, ২০১৬ রাত ৩:৩১

ফারগুসন বলেছেন: সাধু----অনেক ভাল লিখেছ হে-----ধন্যবাদ

২৭ শে এপ্রিল, ২০১৬ ভোর ৫:১৪

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: ধন্যবাদ অাপনাকেও ।

২১| ২৭ শে এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ৭:৫৬

কালনী নদী বলেছেন: সাধক সাবের লেখা ভাল লাগছে।

২৭ শে এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ১০:২০

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: আপনার মন্তব্যও ভাল্লাগসে!

২২| ২৭ শে এপ্রিল, ২০১৬ দুপুর ১২:০২

জেন রসি বলেছেন: কিছু অজানা কাহিনী জানতে পারলাম।

ধন্যবাদ শেয়ার করার জন্য।

জিন্না এমন একজন নেতা ছিলেন যিনি নিজে যা ঠিক মনে করতেন তা খুব কমই চর্চা করতেন। যেমন ধর্মে তার আস্থা ছিলনা। কিন্তু দেশভাগ করলেন ধর্মের ভিত্তিতে।

২৭ শে এপ্রিল, ২০১৬ দুপুর ১:৩৩

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: ধর্মপরায়ণ না হয়েও রাজনীতিতে ধর্ম ব্যবহারের প্রচলন করেছিলেন । বিচিত্র এক চরিত্র! প্রচন্ড রকমের স্ববিরোধী!

২৩| ২৮ শে এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১২:৫০

সচেতনহ্যাপী বলেছেন: স্বভাবতই বিখ্যাত মানুষদের ব্যাক্তগত ব্যাপার নিয়ে সধারনের আগ্রহ থাকে।। আমারও ছিল।। সেটা কিছুটা মিটলো।।

২৮ শে এপ্রিল, ২০১৬ দুপুর ১২:৪০

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: সুচারু মন্তব্যে ভালো লাগা!

২৪| ২৮ শে এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১:১৯

আরণ্যক রাখাল বলেছেন: দারুণ শেয়ার

২৮ শে এপ্রিল, ২০১৬ দুপুর ১২:৪৫

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: ধন্যবাদ, রাখাল!

২৫| ২৮ শে এপ্রিল, ২০১৬ সকাল ১০:৫২

নীলপরি বলেছেন: ইতিহাসটাকে এতো আকর্ষণীয় করে লিখেছেন যে একটানা পড়তে বাধ্য হলাম । ইন্দিরা গাঁধীরটা অনেকটা জানা ছিল কিন্তু জিন্নাহ কন্যার গল্প কিছুই জানা ছিল না । অসাধারণ পোষ্ট । ++++++

২৮ শে এপ্রিল, ২০১৬ দুপুর ১২:৪৬

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: অনেক অনেক শুভেচ্ছা রইলো, নীলপরি!

২৬| ২৯ শে এপ্রিল, ২০১৬ রাত ১১:৪২

মহা সমন্বয় বলেছেন: অনেক কিছু জানা হল। :)

০১ লা মে, ২০১৬ সকাল ৯:০০

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: শুভেচ্ছা ।

২৭| ০৯ ই মে, ২০১৬ রাত ১১:১৪

পুলহ বলেছেন: লেখাটা বেশ কিছুদিন আগেই পড়েছিলাম, তখন কি কারণে যেন মন্তব্য করা হয় নাই...
আমার মতে ইতিহাস কয়েক রকমের আছে, তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আমরা মূলধারার ইতিহাসটুকুই শুধু পড়ে পড়ে অভ্যস্ত। আপনার এই পোস্টখানা সে মূলধারার ইতিহাস নয়, বরং সময়ের পৃথক আর একটি ধারা। বলা বাহুল্য- মূল ধারা হোক কিংবা পৃথক ধারা- ইতিহাস মানেই চমকপ্রদ কিছু; সেটাকে আরো চমকপ্রদ করে সাবলীল, গোছানো উপস্থাপনা- যেমনটা এখানে করা হয়েছে।

ভাল্লাগলো সাধু ভাই। শুভকামনা!

১০ ই মে, ২০১৬ সকাল ১১:২২

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: শুভ কামনা আপনার জন্যও ।

২৮| ০৪ ঠা জুন, ২০১৬ দুপুর ১২:৪১

মোঃ মঈনুদ্দিন বলেছেন: আপনার তথ্যবহুল লেখার জন্য আপনাকে অন্তরের অন্তস্থল থেকে ধন্যবাদ জানাই। আপনার লেখা পড়ে আমি একটা ভুল থেকে উদ্ধার পেলাম। আমার যা জানা ছিলো তা হলো- ইন্দিরা গান্ধি মহাত্মা গান্ধির কণ্যা। আসলে বিষয়টা খুবই গুরুতর অপরাধের মধ্যে পড়ে যে আমি কি চরম একটা ভুলের মধ্যে ছিলাম। ধন্যবাদ উইকিপিডিয়া থেকে জেনে নিলাম আপনার তথ্যের সত্যতা। ভালো লাগলো আপনার লেখা। ভালো থাকুন সতত।

০৪ ঠা জুন, ২০১৬ দুপুর ১:৩৫

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: এই ভুল অনেকেই করেন । আমার এক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকও করেছিলেন ।

ভালো থাকুন আপনিও ।

২৯| ০৬ ই নভেম্বর, ২০১৭ সকাল ৭:৫০

অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য বলেছেন: জিন্নাহর মেয়ে দিনা আর নেই
পাকিস্তানের জাতির পিতা কায়েদ-ই-আজম মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর একমাত্র মেয়ে দিনা ওয়াদিয়া আর নেই। পাকিস্তানের সংবাদমাধ্যম জিও নিউজ, এনডিটিভি ও টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবরে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার (৩ নভেম্বর) ৯৮ বছর বয়সে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে মারা যান।
১৯১৯ সালের ১৪ আগস্ট মধ্যরাত পেরিয়ে ১৫ আগস্ট লন্ডনে দিনার জন্ম। ওই দিন লন্ডনে একটি থিয়েটার হলে জিন্নাহ ও তাঁর স্ত্রী রতনবাই সিনেমা দেখছিলেন।
তিনি জিন্নার দ্বিতীয় স্ত্রী রতনবাই ওরফে মরিয়ম জিন্নাহর একমাত্র সন্তান। তাঁদের পূর্বপুরুষেরা বর্তমান ভারতের গুজরাটের বাসিন্দা ছিলেন। ১৮৭০ সালে তাঁরা ব্যবসাসূত্রে বর্তমান পাকিস্তানের করাচিতে চলে যান। সেখানেই জিন্নাহর জন্ম।
দিনা ওয়াদিয়া ১৯৪৮ সালে তাঁর বাবার মৃত্যুর পর প্রথম পাকিস্তানে যান। এরপর ২০০৪ সালে ভারতীয় ক্রিকেট দলের ঐতিহাসিক সফরের সময় পাকিস্তানের তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জেনারেল পারভেজ মোশাররফের আমন্ত্রণে শেষবার সে দেশে গিয়েছিলেন।
মুম্বাইয়ের শিল্পপতি নেভিল ওয়াদিয়াকে বিয়ে করেছিলেন দিনা। নেভিল ওয়াদিয়াকে বিয়ে করতে চাইলে বাবা জিন্নাহর সঙ্গে দিনার মতবিরোধ তৈরি হয়। নুসলি ওয়াদিয়া এবং ডায়না ওয়াদিয়া তাঁরই সন্তান। দিনার ছেলে নুসলি ওয়াদিয়া ভারতের একজন সফল ব্যবসায়ী এবং পার্সি কমিউনিটিরও একজন প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব। নেভিলের সঙ্গে বিয়ে দীর্ঘস্থায়ী হয়নি। দিনা বহু বছর ধরে নিউইয়র্কে বসবাস করছিলেন। মুম্বাইয়ে কায়েদ-ই-আজম মোহাম্মদ আলী জিন্নাহর যে বাড়ি সম্প্রতি ভেঙে ফেলার দাবি উঠেছে, সেই বাড়িতেই ছিলেন দিনা। তাঁর দাবি ছিল, বাড়িটা আইনত তাঁরই প্রাপ্য।

০৬ ই নভেম্বর, ২০১৭ দুপুর ১২:২৯

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: ৯৮ বছর বেঁচে ছিলেন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.