নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

Our sweetest songs are those that tell of saddest thought (Shelly).

রূপক বিধৌত সাধু

মন রে, কৃষিকাজ জানো না; এমন মানবজমিন রইলো পতিত আবাদ করলে ফলত সোনা! রামপ্রসাদ সেন ([email protected])

রূপক বিধৌত সাধু › বিস্তারিত পোস্টঃ

বড়োলোকদের বড়ো বড়ো ব্যাপার

০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ১১:২১


সবে ঢাকায় এসেছি। কাজ শুরু করেছি একটা অফিসে। হিসেবনিকেশের কাজ করতে হয়। দিতে হয় কর্মচারীদের দিক-নির্দেশনা। যদিও খাপ খাওয়াতে একটু-আধটু সমস্যা হয়, ভাবলাম নিজেরই অযোগ্যতা হয়তো। ঢাকায় তো আগে থাকি নি, মিশি নি তেমন কারও সাথে।

৭ তলা ভবনে ৪ টা অফিস। বাকি অংশে বাচ্চাদের স্কুল। আমার বস একজন সচিবের ছেলে। ওনার সহকারী হিসেবেই কাজ করি আমি। ৪ টা অফিসের বিল দেখতে হয়, কত টাকা বিদ্যুৎ বিল আসে সেসব ভাগ করতে হয়। ব্যাংকে দৌড়াতে হয়। স্কুলটাও দেখাশোনা করতে হয়।

করোনার সময় তখন। স্কুল আপাতত বন্ধ। তবুও অনলাইনে ক্লাস হয়। শিক্ষক কর্মচারীরা আসেন। তাদেরকে সহযোগিতা করতে হয়। কোনো কিছু দরকার পড়লে কেয়ারটেকারকে দিয়ে আনাই।

সশরীরে একসময় ক্লাস শুরু হলো। শিক্ষার্থী কম। দেখা যায় শিক্ষার্থীদের চেয়ে শিক্ষক বেশি। কেউ ভর্তির ব্যাপারে এলে আমি তেমন কিছু জানাতে পারি না। আমাকে তেমন নির্দেশনা দেওয়া হয়নি।

৬ বছরের টিচিং এর অভিজ্ঞতা আছে আমার। কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কেমনে চালাতে হয়, ভালোমতোই জানি। আমার বস যে প্রতিষ্ঠান ভালোমতো চালাতে পারছেন না, বিলক্ষণ বুঝতে পারি। কিন্তু বলি কেমনে? যদি কিছু মনে করেন?
আমি ভাবি এভাবে স্কুল চালিয়ে লাভ কী? মনে হয় না খরচও উঠে। লাভ তো পরের কথা। নিজস্ব ভবন হওয়ায় হয়তো কোনোমতে টেনেটুনে চলছে।

সপ্তাহে ২-৩ দিন এসে অফিসে বসে জ্ঞান ঝারলে তো লাভ নেই। শিক্ষার্থী আনতে হলে তো প্রচার করতে হবে। লিফলেট টাঙাতে হবে। কোনো অভিভাবক এলে তো কমপক্ষে বসারও জায়গা দিতে হবে। এখানে এসে অভিভাবকরা দাঁড়িয়ে থাকেন।

উপযাচক হয়ে প্রিন্সিপাল হিসেবে যে ম্যাডাম আছেন, ওনাকে বললাম করণীয় সম্পর্কে। ওনি হ্যাঁ, হু করলেন। বুঝলাম ওনারও করার কিছু নেই। সরকারি চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার পর ওনি নিজেই অন্যের গলগ্রহ। এখানে অনুকম্পায় চাকরি করছেন। ওনি তেমন কোনো অবদান রাখতে পারবেন না।

বস রেজওয়ান সাহেবকে জানানো হলো আমি কী বলতে চাই। যদ্দুর বুঝলাম ওনি বিরক্ত হলেন। আমি দু টাকার কর্মচারী। আমার কথা ওনি শুনবেন কেন?

একটা সময় পর ওনি বুঝলেন আমি ওনার ভালোর জন্যই বলছি। কিছু কার্ড রাখলেন আমার কাছে যাতে আমি ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের অভিভাবকদের সাথে কথা বলে কার্ডগুলো তাদের মধ্যে বিতরণ করি।

গাড়ির কাগজ আপডেট করতে হবে। ড্রাইভারকে নিয়ে গেলাম গাজীপুর। ম্যালা টাকা পয়সার ব্যাপার। রেজওয়ান সাহেব বিশ্বাস করছেন না আমাদের। মনে করলেন ড্রাইভারকে নিয়ে ধান্দা করছি।

কোথায় কোথায় যেন ফোন করলেন তিনি। দেখা গেল আমি এক পয়সাও বেশি বলিনি। তাও ওনার সংশয়। অফিসে চলে আসতে বললেন। যদিও একসময় কাজটা আমাকেই করতে হলো।

গাড়ির গ্যাস বাঁচাতে বনানীর একটা শাখায় বিল জমা দিলাম। ওনি রুষ্ট। কিছুতেই বুঝতে চাননি এনআরসিসি ব্যাংকের যে কোনো শাখায় টাকা জমা করলেই হয়।

গাড়ি ঠিক করাতে গ্যারেজ খুঁজছেন তিনি। আমাকেও বললেন খুঁজতে। খুঁজে কত খরচ হতে পারে জানালাম। ওনার বিশ্বাস হয় না।

কয়েকদিন পর জানলাম, আমি যত বিল বলেছি, তার চেয়ে বেশি টাকা খরচ করে ওনি গাড়ি ঠিক করেছেন। আমার কাছে ছোটো হতে হবে বলে আমাকে জানাতে চাননি।

এরকম মানুষ আমি আরও দেখেছি, পেছন দিয়ে লাখ টাকা গেলেও ওদের জ্বলুনি হয় না অথচ সামনে দিয়ে ১ টাকা গেলেও হা-হুতাশ শুরু করে। অধীনস্থ কাউকে মূল্যায়ন করতে জানে না এরা। নিজেদের সবসময় ঠিক মনে করে। পদে পদে ভুল করে আফসোস করবে, তবুও অন্যের সাথে শেয়ার করবে না ছোটো হয়ে যাওয়ার ভয়ে। ভীষণ অদ্ভুত এদের ব্যাপার-স্যাপার।

ছবিঃ ইন্টারনেট

মন্তব্য ২২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ১১:৩৭

আহমেদ জী এস বলেছেন: রূপক বিধৌত সাধু,





যারা মনের দিক থেকে আসলেই ভিখিরী, তারাই হঠাৎ তথাকথিত "বড়লোক" হলে এমনটাই হয়!

০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ১১:৪১

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: আমি ভীষণ অবাক হই এদের মানসিক দীনতা দেখে।

২| ০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ১১:৫৪

জ্যাক স্মিথ বলেছেন: ভীষণ অদ্ভুত এদের ব্যাপার-স্যাপার। আপনার স্মৃতিকথা পড়ে খারাপ লাগলো, আশা রাখি খুব শিঘ্রই অন্যের বলয় থেকে বের হয়ে নিজ পায়ে দাঁড়াতে পারবেন। খুবই অদ্ভুত এই দুনিয়া।

০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ১১:৫৮

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: বিচিত্র পৃথিবী, বিচিত্র একেকজনের মন।

৩| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ১২:৩৩

শূন্য সারমর্ম বলেছেন:


এদের এই "ছোট হয়ে যাবার ভাবনাকে কীভাবে ক্যাশ করা যায় দেখেন।

০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ১২:৩৬

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: এরা এমনই। গোঁয়ার।

৪| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ১২:৪৩

রাজীব নুর বলেছেন: আপনি একদিন ধনী হবেন।

০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ১২:৪৯

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: আমি ধনী হলে আমার আশপাশের লোকদের সুখি রাখব। এখনও সাধ্যমত চেষ্টা করি। চেষ্টা করি কাউকে কোনোভাবে কষ্ট না দিতে।

৫| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ১২:৪৬

শূন্য সারমর্ম বলেছেন:


আপনি ঢাকার বাহিরে থেকে, কিভাবে চাকুরীটি পেয়েছিলেন, বিজ্ঞপ্তি থেকে? এখন কাজ আছে?

০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ১২:৫০

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: রেফারেন্স ছিল।

৬| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ১২:৪৮

কামাল১৮ বলেছেন: তার পরেও ওনারা বস আপনি তার কর্মচারী।আবার আপনি যখন ওনার মতো হবেন তখন বস হয়ে যাবেন।

০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ১২:৫১

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: সব বস একরকম হন না। কেউ কেউ মানুষ হন।

৭| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ১:০২

কামাল১৮ বলেছেন: মানুষরাইতো বস হয়।

০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ১:০৬

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: মনুষ্যত্ব না থাকলে তাকে মানুষ বলা যায়? দুপেয়ে সব প্রাণিই কি মানুষ?

৮| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ ভোর ৬:৫২

হাসান জামাল গোলাপ বলেছেন: আপনিও একদিন বস হবেন, লেখাটি ভালো লেগেছে।

০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ সকাল ১০:৩৮

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: আপনিও একদিন বস হবেন। তবে তাই হোক :|

৯| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ১২:২৮

গেঁয়ো ভূত বলেছেন: আপনি যখন কারো কোম্পানিতে চাকুরী করেন তখন মালিক কি চান সেটাই আসল কথা, আপনি কি চান সেটা পরের কথা।

আর একটি জিনিস খেয়াল রাখবেন, আপনি যেখানে কাজ করছেন, সেখানে আগে থেকে যারা কাজ করছেন তারা যদি অসৎ হয়ে থাকেন আর আপনি যদি সৎ হন, তাহলে তারা কখনো আপনাকে স্টাবলিস হতে দিতে চাইবেনা। আপনার অনুপস্থিতিতে তারা আপনার বিরুদ্ধে আগেই মালিকের কান ভারী করে রাখবে যাতে আপনি সুবিধা করতে না পারেন। এই বিষয়টি মাথায় রেখে খুব ধৈর্যের সাথে কাজ করতে হবে তবেই আপনি সফল হবেন। সততা, ধৈর্য্য আর বিচক্ষণতার সম্মিলন ঘটান সফলতা আসবেই।

০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ১২:৪৩

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: শতভাগ সহমত।

১০| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ১:১০

রাজীব নুর বলেছেন: লেখক বলেছেন: আমি ধনী হলে আমার আশপাশের লোকদের সুখি রাখব। এখনও সাধ্যমত চেষ্টা করি। চেষ্টা করি কাউকে কোনোভাবে কষ্ট না দিতে।

আপনি সহজ সরল মানুষ। খুব বেশি সহজ সরল।

০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ দুপুর ১:২০

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: আপনি সহজ সরল মানুষ। খুব বেশি সহজ সরল। সম্ভবত এ কারণে কষ্ট বেশি পাই।

১১| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ বিকাল ৫:৪৩

ইসিয়াক বলেছেন: আমি একদম ছোটবেলাতে ঠিক করেছিলাম কোন দিন চাকরি করবো না। ভীষণ স্বাধীনচেতা ছিলাম। যা মনে আসবে সেটাই করতাম । তবে আমার মায়ের খুব বাধ্য ছিলাম। তিনি সবসময় বলতেন যা করিস না কেন লেখাপড়া চালিয়ে যাবি। একসময় আমি শহরের সব সুযোগ সুবিধা ছেড়ে একা একা গ্রামে চলে গেলাম। সেখানেও বিচিত্র অভিজ্ঞতা হলো। পৃথিবীতে যত মানুষ তত জীবন তত তাদের চরিত্রের বিচিত্র দিক।
এক সময় আবার শহরমুখী হলাম। তবে এবারের শহরটা ছোট। জীবন চালিয়ে নিতে কিছু একটা করতে হয়। টিউশনি শুরু করলাম। সেখান থেকে প্রস্তাব এল স্কুলে যোগ দেবার। আমি আমার সিদ্ধান্তে অটল। না কোনমতে কোন চাকরি করবো না। কারো অধীনে যাব না। কিন্তু প্রস্তাবকারী আমার আত্নীয়, ঘনিষ্ঠ আত্নীয়। বিশেষ কারণে উনার স্কুল ভাঙনের মুখে তার কিছুদিন আগে স্কুলের বেশ কজন শিক্ষক নানা ষড়যন্ত্র করে ওনাকে বেশ ঝামেলায় ফেলে দিয়েছেন।নানা কারণে তাঁর মানসিক সমস্যা দেখা দিয়েছে। এ অবস্থায় তিনি বিশ্বাসী একজনকে পাশে চান অগত্যা নিমরাজি হলাম। ক'বছর পর....
আগে উনি স্কুল থেকে একপয়সাও নিজের কাজে লাগাতে পারতেন না।বাসা থেকে টাকা আনতে হতো প্রতিমাসে। অনেক চেষ্টার পর এখন স্কুলটি মোটামুটি ভালো চলছে ।অন্তত অন্য উৎস থেকে টাকা আনা লাগে না। তিনিও খুশি অন্য সকলেও খুশি।ছোট বড় সবার বুদ্ধিতে একটা প্রতিষ্ঠান ভালো ভাবে চলে। অনেকে অধীনস্থ কর্মচারীদের দাম দিতে চায় না আত্নঅহংকারের কারণে। ফলশ্রুতিতে লোকসানে পড়েন।

০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ রাত ১১:৫৬

রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: নিজের অবস্থানে থেকে সন্তুষ্টি অর্জন করাটাই বড়ো কথা। আমি কখনও এটা করতে পারিনি। ভালো পরিবেশও অবশ্য তেমন পাইনি। তবে গাজীপুরে একটা প্রতিষ্ঠানে ভালোই জমিয়েছিলাম। করোনা না এলে হয়তো ওটাই করতাম। টিচিং এর প্রতি এখনও আগ্রহ কাজ করে। প্রাইমেরি, বা নিবন্ধনের চেষ্টা এখনও চালিয়ে যাচ্ছি।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.