নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

পর্বতের চূড়া বেয়ে উঠে গেছে আমার বৃক্ষের মগডাল

রায়ান নূর

কবি ও কথাসাহিত্যিক

রায়ান নূর › বিস্তারিত পোস্টঃ

প্রতিরোধ(محاصره) (Poem of ahmad faraz in bengali)

২৪ শে মে, ২০১৪ ভোর ৫:২০

আহমেদ ফারাজ(Ahmad faraz)পাকিস্তানের বিখ্যাত কবি যিনি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর কঠোর সমালোচক ছিলেন এবং নির্বাসন বরণ করেছিলেন ৷ তারঁ বিখ্যাত সেই উর্দু ও ফারসী মিশ্রিত নাস্তালিক বর্ণে লেখা কবিতাটির সরাসরি মূল কবিতা থেকে সর্বপ্রথম বাংলায়(in bengali) অনুবাদ করে সম্পূর্ণরূপে পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত করা হল ৷



প্রতিরোধ(محاصره)

মূলঃআহমেদ ফারাজ(Ahmad faraz)

অনুবাদঃরায়ান নূর(Ryan Nur)



আমার শত্রু―

আমাকে চিঠি দিয়ে আজ জানিয়ে দিয়েছে;

তার অনুগত সৈন্যদের হাতে জিম্মি

আমার এই তুচ্ছ জীবন ৷



এই শহরের সীমানা-প্রাচীরে;

প্রত্যেক তোরণ;আর প্রত্যেক মিনারের উপর

তার যুদ্ধবাজ সৈন্যরা সজ্জিত হয়ে

বন্দুক হাতে দাঁড়িয়ে আছে ৷





হঠাৎ―

বিজলীছটার মত গুলি চারদিকে জাগালো কম্পন

মাটিতে যেন ঝড় আঁছড়ে পড়ল তার অগ্ন্যুৎসবে ৷

কামানের বারুদের সাদা ধোঁয়া

পানির মত ভাসতে লাগল চারদিকে;

আর―

বৃষ্টিরফোটার মত গুলি

আমার বাড়ির গলিতেও আছড়ে পড়া শুরু করল ৷



সেই বৃষ্টির ক্ষত-যন্ত্রণায়

সকলে ব্যথায় কাতরাতে লাগল

আর―

শাসকের অত্যাচার থেকে বাঁচতে সকলে

শহর ছেড়ে দিকবিদিক ছুটতে লাগল ৷



সকল সুফী ও সালেক,প্রত্যেক শায়েখ ও ইমাম

সামান্য দয়া ভিক্ষায়

অত্যাচারীর আদালতের শরণাপন্ন হল ৷

মর্যাদার খাতিরে,নীতির প্রশ্নে―

আদালতে মুহুরীর সেই হলফনামা তোলা পর্যন্ত

রাস্তার ধারে তারা একত্রে

ভিখারীর মত অপেক্ষা করতে লাগল ৷





তুমিই―

সেইসব খ্যাতিমান লেখকদের

জ্ঞানের প্রশংসা কর উচ্চবাচ্যে!

যাদের সামনে অগনিত পত্র-পত্রিকা আর মাধ্যম তাদের চিন্তা-বক্তব্য-লেখা প্রকাশে অপেক্ষারত ৷





মর্যাদায় খাতিরে,নীতির প্রশ্নে―

তাদেরও কি আজ দরবারে গিয়ে বলতে হবে?

যখন ভিখারীর মত জনতার কোলাহল সামনে ৷



তুমিই―

সেইসব খ্যাতিমান বিজ্ঞ লেখকদের

প্রতিষ্ঠার ভিত্তিটি ভালো করে একবার দেখ,

তোমাদের সঙ্গে আগে কেউ কি ছিল?

আজও আশেপাশে তাদের একটু খুঁজে দেখ৷

নিজেকে;

এবং এই জীবনগুলোকে যদি রক্ষা করতে চাও?

সেই খাতা-কলমকে মৃত্যুর ময়দানে নিয়ে যাও ৷

তুমিও রেহাই পাবেনা!



তাই তুমি

অত্যাচারীর বিরুদ্ধে এইসময়ে রুখে দাঁড়াও ৷

সফল হও কিংবা বিফল হও তুমিই তো পারবে

নিজ বিবেকের কাছে আত্নসমর্পন করতে!



একমাত্র আমিই;

নিজ চোখে সেইসব প্রত্যক্ষ দেখেছি,

সেগুলোই তাকে পুনর্বার স্মরণ করে দিয়েছি,

সে জানেনা অতীতের ইতিহাস কি শিক্ষা দেয়?





রাত যখন কোন সূর্যকে শহীদ করে

প্রভাত নবসূর্যে তাকে বিনাশ করে;

আমার একমাত্র উত্তর এটিই;

আমার অত্যাচারী শত্রুর প্রতি―



আমি কারো অনুগ্রহের ভিক্ষুক নই;

আমি আজ কোন যন্ত্রনায় কাতর নই;

সে শুধু শক্তি আর জানে তার ক্ষমতার দম্ভ

কিন্তু এখনো সে জানেনা,বোঝেনা,

কলমের কত দুর্নিবার প্রতিরোধ ক্ষমতা―



আমার কলম রক্ষকদের নিছক প্রেমসঙ্গীত নয়

যারা নিজ শহরকে কয়েদ করতে ছলনা করে ৷

আমার কলম কিছু জাঁকালো খাবারের বাটি নয়

যেগুলো নারকীদের স্তবগীতি রচিয়ে তুষ্ট করবে ৷



আমার কলম সিঁধেল চোরের হাতিয়ার নয়

যারা নিজ বাড়ির ছাদেও গর্ত কেটে রাখে ৷

আমার কলম সেই সিঁধেল চোরের বন্ধু নয়

যারা প্রদীপহীন বাড়িতে সিঁধ কাটতে যায় ৷



আমার কলম ধার্মিকের প্রার্থনার স্তবগীতি নয়

সারাজীবন যে সবকাজে হিসাব করে চলবে

আমার কলম এমন অাইনের দাঁড়িপাল্লা নয়

নিজ চেহারায় সর্বদা দুটো বেশ ধারণ করবে ৷



আমার কলম আমার জনগনের পবিত্রধন,

আমার কলম আমার বিবেকের আদালত:

সেই কারণে অবিরত প্রাণপণ লিখে চলেছি―

এর সুর বেহালার মত হৃদয়গ্রাহী,

তীরের মতই শক্তিশালী ৷





বন্দীদশায়ও

আমি এ'ই আশা রাখি,

আমার আজও বিশ্বাস হয়,

এই অত্যাচারীর কবর একদিন রচনা হবেই ৷

যন্ত্রণাক্লিষ্ট মানুষগুলোর ভাগ্যের শপথ

আমার কলম কখনো ক্ষান্ত হবে না,চলবে―

মন্তব্য ১ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (১) মন্তব্য লিখুন

১| ২৪ শে মে, ২০১৪ সকাল ৭:১২

মাইরালা বলেছেন: যুদ্ধের সময় উভয়পক্ষই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। কেবল বাঙালি মারা গেছে এমনটি নয়, বিহারী সহ বহু পাকিস্তানী মৃত্যুর ঘটনা আছে। এসব ঘটনা চেপে যাওয়া হয়।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.