![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আহমেদ ফারাজ(Ahmad faraz)পাকিস্তানের বিখ্যাত কবি যিনি বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর কঠোর সমালোচক ছিলেন এবং নির্বাসন বরণ করেছিলেন ৷ তারঁ বিখ্যাত সেই উর্দু ও ফারসী মিশ্রিত নাস্তালিক বর্ণে লেখা কবিতাটির সরাসরি মূল কবিতা থেকে সর্বপ্রথম বাংলায়(in bengali) অনুবাদ করে সম্পূর্ণরূপে পাঠকদের জন্য উন্মুক্ত করা হল ৷
প্রতিরোধ(محاصره)
মূলঃআহমেদ ফারাজ(Ahmad faraz)
অনুবাদঃরায়ান নূর(Ryan Nur)
আমার শত্রু―
আমাকে চিঠি দিয়ে আজ জানিয়ে দিয়েছে;
তার অনুগত সৈন্যদের হাতে জিম্মি
আমার এই তুচ্ছ জীবন ৷
এই শহরের সীমানা-প্রাচীরে;
প্রত্যেক তোরণ;আর প্রত্যেক মিনারের উপর
তার যুদ্ধবাজ সৈন্যরা সজ্জিত হয়ে
বন্দুক হাতে দাঁড়িয়ে আছে ৷
হঠাৎ―
বিজলীছটার মত গুলি চারদিকে জাগালো কম্পন
মাটিতে যেন ঝড় আঁছড়ে পড়ল তার অগ্ন্যুৎসবে ৷
কামানের বারুদের সাদা ধোঁয়া
পানির মত ভাসতে লাগল চারদিকে;
আর―
বৃষ্টিরফোটার মত গুলি
আমার বাড়ির গলিতেও আছড়ে পড়া শুরু করল ৷
সেই বৃষ্টির ক্ষত-যন্ত্রণায়
সকলে ব্যথায় কাতরাতে লাগল
আর―
শাসকের অত্যাচার থেকে বাঁচতে সকলে
শহর ছেড়ে দিকবিদিক ছুটতে লাগল ৷
সকল সুফী ও সালেক,প্রত্যেক শায়েখ ও ইমাম
সামান্য দয়া ভিক্ষায়
অত্যাচারীর আদালতের শরণাপন্ন হল ৷
মর্যাদার খাতিরে,নীতির প্রশ্নে―
আদালতে মুহুরীর সেই হলফনামা তোলা পর্যন্ত
রাস্তার ধারে তারা একত্রে
ভিখারীর মত অপেক্ষা করতে লাগল ৷
তুমিই―
সেইসব খ্যাতিমান লেখকদের
জ্ঞানের প্রশংসা কর উচ্চবাচ্যে!
যাদের সামনে অগনিত পত্র-পত্রিকা আর মাধ্যম তাদের চিন্তা-বক্তব্য-লেখা প্রকাশে অপেক্ষারত ৷
মর্যাদায় খাতিরে,নীতির প্রশ্নে―
তাদেরও কি আজ দরবারে গিয়ে বলতে হবে?
যখন ভিখারীর মত জনতার কোলাহল সামনে ৷
তুমিই―
সেইসব খ্যাতিমান বিজ্ঞ লেখকদের
প্রতিষ্ঠার ভিত্তিটি ভালো করে একবার দেখ,
তোমাদের সঙ্গে আগে কেউ কি ছিল?
আজও আশেপাশে তাদের একটু খুঁজে দেখ৷
নিজেকে;
এবং এই জীবনগুলোকে যদি রক্ষা করতে চাও?
সেই খাতা-কলমকে মৃত্যুর ময়দানে নিয়ে যাও ৷
তুমিও রেহাই পাবেনা!
তাই তুমি
অত্যাচারীর বিরুদ্ধে এইসময়ে রুখে দাঁড়াও ৷
সফল হও কিংবা বিফল হও তুমিই তো পারবে
নিজ বিবেকের কাছে আত্নসমর্পন করতে!
একমাত্র আমিই;
নিজ চোখে সেইসব প্রত্যক্ষ দেখেছি,
সেগুলোই তাকে পুনর্বার স্মরণ করে দিয়েছি,
সে জানেনা অতীতের ইতিহাস কি শিক্ষা দেয়?
রাত যখন কোন সূর্যকে শহীদ করে
প্রভাত নবসূর্যে তাকে বিনাশ করে;
আমার একমাত্র উত্তর এটিই;
আমার অত্যাচারী শত্রুর প্রতি―
আমি কারো অনুগ্রহের ভিক্ষুক নই;
আমি আজ কোন যন্ত্রনায় কাতর নই;
সে শুধু শক্তি আর জানে তার ক্ষমতার দম্ভ
কিন্তু এখনো সে জানেনা,বোঝেনা,
কলমের কত দুর্নিবার প্রতিরোধ ক্ষমতা―
আমার কলম রক্ষকদের নিছক প্রেমসঙ্গীত নয়
যারা নিজ শহরকে কয়েদ করতে ছলনা করে ৷
আমার কলম কিছু জাঁকালো খাবারের বাটি নয়
যেগুলো নারকীদের স্তবগীতি রচিয়ে তুষ্ট করবে ৷
আমার কলম সিঁধেল চোরের হাতিয়ার নয়
যারা নিজ বাড়ির ছাদেও গর্ত কেটে রাখে ৷
আমার কলম সেই সিঁধেল চোরের বন্ধু নয়
যারা প্রদীপহীন বাড়িতে সিঁধ কাটতে যায় ৷
আমার কলম ধার্মিকের প্রার্থনার স্তবগীতি নয়
সারাজীবন যে সবকাজে হিসাব করে চলবে
আমার কলম এমন অাইনের দাঁড়িপাল্লা নয়
নিজ চেহারায় সর্বদা দুটো বেশ ধারণ করবে ৷
আমার কলম আমার জনগনের পবিত্রধন,
আমার কলম আমার বিবেকের আদালত:
সেই কারণে অবিরত প্রাণপণ লিখে চলেছি―
এর সুর বেহালার মত হৃদয়গ্রাহী,
তীরের মতই শক্তিশালী ৷
বন্দীদশায়ও
আমি এ'ই আশা রাখি,
আমার আজও বিশ্বাস হয়,
এই অত্যাচারীর কবর একদিন রচনা হবেই ৷
যন্ত্রণাক্লিষ্ট মানুষগুলোর ভাগ্যের শপথ
আমার কলম কখনো ক্ষান্ত হবে না,চলবে―
©somewhere in net ltd.
১|
২৪ শে মে, ২০১৪ সকাল ৭:১২
মাইরালা বলেছেন: যুদ্ধের সময় উভয়পক্ষই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। কেবল বাঙালি মারা গেছে এমনটি নয়, বিহারী সহ বহু পাকিস্তানী মৃত্যুর ঘটনা আছে। এসব ঘটনা চেপে যাওয়া হয়।