নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নিলনয়না নিলাঞ্জনা

নিজের ব্যাপারে অবগত নই

নিলনয়না নিলাঞ্জনা › বিস্তারিত পোস্টঃ

নতুন জীবন (অধ্যায় ২)

১২ ই মার্চ, ২০১৫ রাত ১২:২০

(১)
-মামণি একটু হাসো তো!!
- হাসি কি এমনি এমনি আসে? উল্টা পাল্টা কথা বল কেন? সব সময় দাঁত কেলিয়ে হাসা যায় না!!!
বাবা কে ইচ্ছামতো ধমক দিলাম। তার দোষ ছবি তুলতে গিয়ে আমাকে হাসতে বলেছিলো।ধুর!! কেন যে সেদিনের চেষ্টাটা বিফল গেল!!! মামনি আর একটু পরে আমার ঘরে আসলে কি হত? মরতেই তো বসেছিলাম।মামনি এসেই সব ওলটপালট করে দিল। দড়ি থেকে নামিয়ে সাথে সাথে হাসপাতালে দৌড়াদৌড়ি।তিনদিন অজ্ঞান থাকার পর যখন জ্ঞান ফিরল, মামনি তখন আমাকে ধরে কি কান্না!! ভেবেছিলাম, ও খবর পাবে।হয়ত হাসপাতালে দৌড়ে আসবে।কিন্তু আমার ধারণা ভুল ছিল। মানুষ সত্যি অনেক নিষ্ঠুর হয়। ওর অন্যে সব কিছু ত্যাগ করার প্রস্তুতি ছিল আমার।শুধু আমার অকারণ জিদ মেনে নেয়ার প্রস্তুতি অর ছিলনা।আর তার জন্যে এভাবে ওকে হারাতে হবে, ভাবতেই পারিনি।

(২)
বাবার সাথে বাইরে যাচ্ছি। উদ্দেশ্য, বাবার শার্ট কেনা। মামনি সুস্থ থাকলে আমাকে যেতে হত না। তবে আমার ধারণা আমার মানসিক অবস্থা ভালো করার জন্যই বাবা আমাকে নিয়ে বের হয়েছে। দুই দিন পর গেলে কি হত? তবে খারাপ লাগছে না। মনে হচ্ছে অনেক দিন পর বুঝি মুক্ত হাওয়ায় শ্বাস নিলাম। বাবার পছন্দের দোকান হচ্ছে লুবনান। আমার যেতে ইচ্ছা করে না সেখানে। ফ্রেঞ্চকাট দাড়ির বদমাশটা আমার দিকে কেমন করে যেন তাকায়। ইচ্ছা করে চোখ গেলে দেই। আচ্ছা, ওর সাথে কথা বলতে মামনি আমাকে একবার দেখেছিল বলে কি বকাটাই না দিল। এত যত্নে আমাকে রাখতে পারলে এই বদমাশ এভাবে তাকিয়ে থাকে তা মামনির চোখে কখনো পড়ে না কেন? আজকেও শয়তানটা এভাবে তাকিয়ে আছে!!!! বলব নাকি বাবাকে?
-উমমম বাবা?
-কি মা?
-আমার কেমন যেন লাগছে।আমি একটু বাইরে গিয়ে খোলা জায়গায় দাড়াই?
-একা যাবে? আচ্ছা, যাও।

আমি বাইরে এসে দাড়ালাম। একি!!! বদমাইশটা এদিকে আসছে কেন? বাবা কি দেখে না? উফফ, আরো এদিকে আমার কাছে চলে আসলে তো বাবা দেখতেও পাবে না!!! এখান থেকে বাবাকে দেখা যাচ্ছে না!! এখন কি করি? লোকটার দৃষ্টি ভালো না..!!!!

(৩)
-এক্সকিউজ মি!!
-আমাকে বলছেন?
-হ্যা। আপনি দেখতে অনেক সুন্দর।
- (ভয়ে ভয়ে বললাম) জি ধন্যবাদ।
-আসলে আমি আপনাকে একটা কথা বলতে চাইছিলাম।
-জি বলেন।
- আপনাকে প্রায় ই দেখি আপনার বাবা মার সাথে এখানে আসতে। আপনাকে আমার অনেক ভালো লাগে। এই কার্ডে আমার নাম্বার দেয়া আছে। ইচ্ছা হলে কল দেবেন।
অনিচ্ছা সত্বেও কার্ড টা নিলাম। বাবাকে দিয়ে বলব, লোকটা দিয়েছে।
-আমি কি আপনার নাম্বারটা পেতে পারি?
আমি কি উত্তর দেব বুঝে ওঠার আগেই-
-এই যে ভাই, মেয়ে মানুষ দেখলে মাথা খারাপ হয়ে যায়,তাই না? আপনার বদ স্বভাব ভালমতই জানা আছে। ওর থেকে ১০০ হাত দুরে থাকবেন।
চিরপরিচিত কন্ঠ শুনে ফিরে দাড়াতে বাধ্য হলাম। ওমা!! এই তিন মাসে ও কত শুকিয়ে গেছে। চাহনিটা এখনো আগের মতই নিষ্পাপ।আমি কি করে ওকে দোষী ভাবলাম? কেন নিজেকে শেষ করে দিতে চেয়েছিলাম? অথচ মনেপ্রাণে বিশ্বাস নিয়ে আমি !জানতাম ও ফিরে আসবেই !! ধুর!! আমি যে কি বোকা না!!! ও আমার দিকে তাকিয়ে একটা মিষ্টি হাসি দিয়ে বলল, "সরি লক্ষিটা, তুমি তো জানো, তোমাকে ছাড়া থাকতে আমার একদম ইচ্ছা হয়না। পারলাম না তোমাকে ভুলে থাকতে। সত্যি বলছি, আগের চেয়েও বেশি ভালবাসি তোমাকে।"
হাত দুটো বাড়িয়ে দিল আমার দিকে। এক মুহুর্তের জন্যে চিন্তাশক্তি হারিয়ে ফেললাম।যখন হুশ হলো, নিজেকে আবিস্কার করলাম ওর বুকে। জাহান্নামে যাক দুনিয়া!!! আমার ভালবাসা আমার কাছে ফিরে এসেছে।আর ও তো শুধুই আমার।

(পরিশেষ)
দিনের শেষে ওর বুকে মাথা রেখে মনে হলো, থাক না, নতুন জীবনের শুরু আপাতত না-ই বা করলাম........!!!

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.