![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমাদের একতলার বাড়িটিতে দুইটি সাধারণ আমগাছ, এবং একটি পাখিময় মাঝারি নারকেলগাছ ছিলো। আমরা তখন পনির খেতাম। আমার বাবাও প্রবাসী ছিলেন। আমরা তখন আঙুর খেতাম। আমার চাচাই এনে দিতেন। আমাদের সকালগুলো অনেকটা রাজহাঁসের মতন ছিলো। বাচ্চা রাজহাঁস। কিছুদিন আগে স্বপ্নের ভেতরে আমি একদল বাচ্চা রাজহাঁসকে দেখেছি। ওরাও হাঁটছিলো, এমনকি আমাদের ছেলেবেলার সকালগুলোর মতন। আমি রাজহাঁস দেখে নস্টালজিয়ার বিষণ্ণ হাসি ছুঁড়েছি।
আমাদের একতলার বাড়িটিতে যখন রোদ চড়তো, আমাদের টিনের চা্লে অদ্ভুত শব্দ হতো। আমদের পাকা-করা মেঝেটির রং ছিলো মসৃণ কালো। কালো মেঝেটিও কেমন সাবধান শীতল। মাঝে মাঝেই আমরা সবাই ঘুমুতে যেতাম। আমি ঘুমাইনি অনেকদিন, আমাদের কেউ কেউ ঘুমাতো না। ফুফুদের মেয়েদের সাথে আমরা মেঝেতে ঘুমুতে যেতাম। দুপুরের খাবারের পর। তখন কাক ডাকতো। আমরা কেনো যেনো খুব কম খেলেছি হাড়ি-মাছ। আমরা এডাল্ট হতে চাইতাম। কোন একটা মেয়ে আমার খেলার বউ। আমাদের খেলাটাই এমন ছিলো। এই যেমন, আমি ওর ছোট্ট দুইটা বুক ছেনে ছেনে দেখছি।
আমাদের একতলার বাড়িতে বৃষ্টি হতো। সন্ধ্যার পরে বৃষ্টি হলে আমরা কোমড় ঢেকে কাঁথা-চাপা দিতাম। বেশি না। আমরা বসে বসে গল্প করতাম। যেদিন আমাদের বিদ্যুত চলে যেতো, আকাশে অনেক বিজলি নাচতো। কী ভয, একতলার বাড়িটি অন্ধকার। আমাদের যৌবনবতী বড় ফুফাতোরা খুশি হতো কিনা, আমরা ভুলে গেছি। তারা খুব কাছে ঘেঁসে বসে, মাঝের একটা ঘরে, আমাদের ছোট ছোট হাতে সুন্দর বুক ধরিয়ে দিতো। একপাশের বুকে এক হাতের পুরোটা মুঠি, দুই পাশে ঠিক দুই হাত লাগে। তারা জামার ভেতর দিয়ে নিয়ে যেতো। আমি একদিন ভয় পাচ্ছি, আমার হাতের মুঠি ভরে যাচ্ছে।
আমাদের একতলার বাড়িটা সেদিন ভঙ্গুর হয়ে গেছে। মনে আছে একদিন, আমার প্রবাসী পিতা বিদেশ ছেড়ে এসেছেন। একদিন মরে গেছে আমাদের চাচাজান। সেইসব শুধুমাত্র ইতিহাস। আমি কষ্ট পাচ্ছিনা। আমাদের একতলা বাড়ি, মূলত একদিন ছিলো। এখন নেই। আমার মাতা এখন প্রয়শই পাশে এসে বসেন। তিনি একটা গর্জিয়াস ফ্লাটের স্বপ্ন দেখেন। অনেক ফার্নিচার হবে। আমাকে বলেন। খুব বেশি দিন নেই। কাজ তো প্রায় শেষ, সবগুলো ছাদ উঠে গেছে। মাতা বলেন। আমি চুপ করে থাকি। আমাদের একতলা বাড়িটা নেই। আমার মনে আছে। আর সকল চোখা বুকের ফুফাতোরাও- ওরা সব ভুলে গেছে। আমাদের বাড়ি হচ্ছে। ফুফাতোদের হচ্ছে নতুন নতুন বিয়া।
©somewhere in net ltd.