নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

নিঃসঙ্গ

সবচেয়ে কষ্ট হয় যখন একা থাকি আর একা থাকতেই সবচেয়ে বেশি ভালো লাগে।

ইমদাদুল হক সাব্বির

সত্য ও সুন্দর ভালো লাগে।

ইমদাদুল হক সাব্বির › বিস্তারিত পোস্টঃ

হুদাইবিয়ার সন্ধি ও গণতান্ত্রিক ইসলামী দলগুলোর Misconception

২৭ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ১০:৩৪

আমাদের দেশের গণতান্ত্রিক ইসলামী (!) দলগুলোর নেতা কর্মীদের যখন গণতান্ত্রিক পন্থা, ধর্মনিরপেক্ষ বা জাতীয়তাবাদী দলগুলোর সাথে জোট বাধা বা আপস করার ব্যপারে জিজ্ঞেস করা হয় তখন তারা হুদাইবিয়ার সন্ধির কথা বলেন এবং এই সন্ধির দোহাই দিয়ে কুফর শক্তির সাথে আপস বা জোট করার ব্যপারটা কে বৈধতা দান করেন। যদিও তাদের অনেককেই হুদাইবিয়ার সন্ধিতে কি বলা হয়েছে বা এটি কি ধরনের সন্ধি সে ব্যপারে জিজ্ঞেস করে কোন সদুত্তর পাইনি। যাই হোক হুদাইবিয়ার সন্ধির ব্যপারে কিছু বলার আগে সন্ধিটির মূল বিষয়বস্তুগুলো একবার দেখে নেই।



হিজরি ৬ষ্ঠ সনের জিলকদ মাস। নবী করীম (সাঃ) চৌদ্দশ সাহাবীসহ উমরা পালন করার জন্য মক্কা রওনা হলেন। মক্কার কাছাকাছি উসফান নামক স্থানে পৌছার পর রাসুল (সাঃ) কুরাইশদের যুদ্ধ প্রস্তুতির খবর পান। সংঘাত এড়ানোর জন্য রাসুল (সাঃ) এর নির্দেশে সাহাবীগন দুর্গম পথ দিয়ে হুদাইবিয়া উপত্যকার দিকে এগিয়ে যেতে থাকেন। সানিয়াতুল মুরার নামক স্থানে গিয়ে রাসুল(সাঃ) এর উট থেমে যায় এবং সেখানে তিনি যাত্রাবিরতির নির্দেশ দেন। অপরদিকে কুরাইশদের পক্ষ থেকে সামরিক অভিযানের হুমকি আসতে থাকে। একপর্যায়ে কুরাইশদের পক্ষ থেকে সুহায়ল ইবনে আমরকে রাসুল (সাঃ) এর নিকট দূত হিসাবে পাঠান হয়। সন্ধির ব্যপারে উভয়পক্ষের মতৈক্য প্রতিষ্ঠিত হলে শেষপর্যন্ত সেখানে সন্ধিচুক্তি লিপিবদ্ধ হয় এবং নিম্ন লিখিত সমঝোতাগুলিই হুদাইবিয়ার সন্ধি হিসাবে পরিচিত হয়ঃ



(১) মুসলমানগণ এ বছর উমরা না করেই মদীনায় ফিরে যাবে।

(২) আগামী বছর উমরার জন্য এসে তারা তিন দিন মক্কায় অবস্থান করতে পারবে।

(৩) মুসলমানরাকোষবদ্ধ তলোয়ার নিয়ে আসবে, অন্য কোন অস্ত্র আনবে না এবং তাদের অবস্থানকালে কুরাইশরা মক্কা ত্যাগ করে অন্যত্র চলে যাবে।

(৪) কুরাইশদের এবং মুসলমানদের মধ্যে আগামী দশ বছর যুদ্ধ বন্ধ থাকবে।

(৫) কুরাইশদের কেউ মদীনায় আশ্রয় নিলে তাকে ফেরত দিতে হবে। কিন্তু মদীনায় কোন মুসলমান মক্কায় আশ্রয় নিলে, তাকে ফেরত দেয়া হবে না।

(৬) আরবের যেকোন গোত্রের লোক মুসলমানদের বা কুরাইশদের সাথে সন্ধিসূত্রে আবদ্ধ হতে পারবে। [সীরাতে ইবনে হিশাম]



হুদাইবিয়ার সন্ধি ছিল মুলত একটি পররাষ্ট্র চুক্তি যা মদীনা ইসলামি রাষ্ট্র কর্তৃক সম্পাদিত হয়েছিল। এই সন্ধিচুক্তি ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যম হিসেবে ব্যবহৃত হয়নি। আর হুদাইবিয়ার চুক্তিতে কোন হারাম শর্ত থাকার প্রশ্নই আসে না। কেননা সন্ধিটি আল্লাহ সুবহানাহু তা’লা ও তাঁর রাসূল (সাঃ) এর ইচ্ছায় সম্পাদিত হয়েছিল। এঈ চুক্তির ব্যপারে রাসুল (সাঃ) উমর (রাঃ) কে বলেছিলেন, “আমি আল্লাহর বান্দা ও রাসুল। আমি তাঁর নির্দেশ কখনও লঙ্ঘন করবোনা আর তিনিও আমাকে কখনও বিপথগামী করবেন না” [সীরাতে ইবনে হিশাম]। তাই গণতন্ত্র বা কুফরি মতবাদের সন্ধিচুক্তির সাথে হুদাইবিয়ার মত মহান চুক্তির কোন তুলনাই হতে পারে না।



সুতরাং যে সব সন্ধিচুক্তি বা জোট দ্বারা গণতন্ত্র, নারী নেতৃত্বকে বৈধতা দেয়া হয়, জাতীয়তাবাদী বা ধর্মনিরপেক্ষ সরকারকে ক্ষমতায় বসানো হয় তা শরীয়তের অকাট্য দলিল দ্বারা নিশ্ছিতভাবে হারাম। এ প্রসঙ্গে রাসুল (সাঃ) এর হাদীস হল-

“মুসলিমদের মধ্যে চুক্তি বৈধ – যদি চুক্তিতে এমন কোন শর্ত না থাকে, যা হালালকে হারাম করে বা হারামকে হালাল করে” [তিরমিজী]



সুতরাং কতিপয় শায়খ, মুফতি, মুফাসসির বা মাওলানা দ্বারা এসব চুক্তি বা জোট গঠিত হলেই তা যে বৈধ হবে এমন ভাবার কোন অবকাশ নেই। তাই কাউকে অন্ধ অনু্করন করে নয় বরং কুরআন হাদিস ও ইসলামী মুলনীতি সমূহ কি বলে সেদিকে লক্ষ রেখেই ইসলামী রাজনীতি করা উচিৎ। আল্লাহ সুবহানাহু তা’লা আমাদের জ্ঞান অর্জন করার ও অর্জিত জ্ঞান অনুযায়ী আমল করার তাওফিক দান করুন।

(Collected)

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.