![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলার নাল্লাপাড়ায় এলাংজানী নদীর উপর ব্রিজ নির্মান না হওয়ায় প্রায় ৪০টি গ্রামের মানুষ চরম দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে একটি ব্রিজের জন্য প্রহর গুনছে এলাকাবাসী। দুই যুগ ধরে এই ব্রিজের নির্মান প্রক্রিয়া চলছে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। সংসদ ও উপজেলা নির্বাচনে ভোটের বৈতরনী পার হওয়ার জন্য অনেকেই প্রতিশ্রুতি দিয়ে সংসদ সদস্য, উপজেলা চেয়ারম্যান হয়েছেন। কিন্তু নির্বাচিত হওয়ার পর ভুলে গেছেন এই ব্রিজটির কথা।
স্থানীয় এমপি খন্দকার আব্দুল বাতেন স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে জয়ী হয়ে আওয়ামী লীগে যোগদান করেন। তিনি ব্রিজটি নির্মান করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। পাঁচ বছর চলে গেলেও কোন কাজ হয়নি। বিগত নির্বাচনে তিনি আবারও এমপি হয়েছেন। বাঁশের সাকো দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে পারাপার হচ্ছে স্কুল, কলেজের ছাত্র, ছাত্রী ও হাজার হাজার সাধারণ মানুষ।
ব্রিজটির কারনে দেলদুয়ার পশ্চিমাঞ্চলের সাথে উপজেলা সদরের যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রায় বিচ্ছিন্ন রয়েছে। পশ্চিমে এলাসিন, দেউলি ও আটিয়া ইউনিয়নের কয়েক হাজার লোকজনকে উপজেলা সদরে আসতে হলে টাঙ্গাইল সদর হয়ে ২০/২৫ কিলোমিটার ঘুরে আসতে হয়। এতে যেমন অর্থের অপচয় হয় তেমনি সময়ও লাগে বেশী।
সড়ক ও জনপথ সুত্রে জানা গেছে, সড়ক ও জনপথ বিভাগ ১৯৮৬ সালের ১৩ ডিসেম্বর ব্রীজটি নির্মানের জন্য দরপত্র আহবান করে। ইউনিয়ন বিল্ডার্স নামের একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ব্রীজটি নির্মানের দায়িত্ব পায়। দরপত্রের চুক্তি অনুযায়ী ব্রীজের পিলার নির্মান না করার কারনে সড়ক ও জনপথ বিভাগ ওই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। ফলে বন্ধ হয়ে যায় নির্মান কাজ।
পরে ১০% জরিমানা করে ওই ঠিকাদারের কার্যাদেশ বাতিল করে পুনরায় দরপত্র আহবান করা হয়। কিন্তু উক্ত ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান এবং সড়ক ও জনপথ বিভাগ পাল্টাপাল্টি মামলা দায়ের করায় আবারও বন্ধ হয়ে যায় নির্মান কাজ। মামলা সংক্রান্ত জটিলতা শেষ করে ২০০৬ সালে ৫ কোটি ২৩ লাখ ৫৮ হাজার টাকায় অন্য একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে ব্রীজটি নির্মানের দায়িত্ব দেয় সড়ক ও জনপথ বিভাগ। কিন্তু ডিপিপি অনুমোদন হয়ে না আসায় নির্মান কাজ বন্ধ থাকে।
মুশুরিয়া, এলাসিন, আটিয়া এলাকাবাসী বলেন, দেলদুয়ার টাঙ্গাইলের সাথে সংযুক্ত থাকায় সদর আসন থেকে কোন এমপি হয়ে এদিকে তাকাননি। এবার এলাকার লোক এমপি হয়েও ব্রিজ নির্মানে কোনো আগ্রহ দেখাননি। নদীর উপর কোন ব্রীজ না থাকায় আমরা কোন রোগী নিয়ে উপজেলা সদরে যেতে পারিনা। দেলদুয়ার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স আমাদের খুব কাছাকাছি হওয়া সত্বেও রোগী নিয়ে দেলদুয়ারের পরিবর্তে টাঙ্গাইল সদর হাসপাতালে যেতে হয়। এতে যেমন অর্থের অপচয় হয় তেমনি প্রানহানির আশংকাও থাকে।
নাগরপুরের সাথে দেলদুয়ারের কোন সড়ক যোগাযোগ নেই। এলাংজানি নদী দ্বারা বিচ্ছিন্ন রয়েছে এ দুই উপজেলা।
ব্রীজটি নির্মিত হলে দেলদুয়ারের সাথে আরিচার সড়ক যোগাযোগসহ ব্যবসা বানিজ্যের দ্বার উন্মোচিত হবে।
লালহাড়া গ্রামের রফিকুল ইসলাম বলেন , এইতো কয়েকদিন আগে সাঁকো ভেঙে CNG নদীতে পড়ে গিয়েছিল, আহতও হয়েছে কয়েক জন। আমরা এলাকাবাসী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে নদী পার হচ্ছি। বাঁশের সাঁকো ভেঙ্গে যে কোন সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
স্থানীয় ব্যবসায়ী রাজু তালুকদার বলেন, এই ব্রিজটা খুবই জরুরী, দেখুন নাল্লাপাড়া বাজারে আবুল হোসেন কলেজ, বেলায়েত হোসেন বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় রয়েছে অন্য দিকে এলাসিন রয়েছে মাওলানা আব্দুল হামিদ খান ভাসানী ডিগ্রী কলেজ। এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গুলোতে ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক, শিক্ষিকা বৃন্দদের যাতায়াত এর এক মাত্র পথ এটা।
©somewhere in net ltd.