নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি খুবই সাধারন ছেলে।

সাদ্দাম বিডি

সাদ্দাম বিডি › বিস্তারিত পোস্টঃ

এটাকেই নিঃসঙ্গ প্রবাস জীবন বলে!!

২৬ শে জুলাই, ২০১৫ সকাল ৮:৪৪

সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে গোয়ালের গরুর জন্য ধুক্গা ঘাস আনতে গেলাম মাঠে। মা যাওয়ার সময় বললেন, এতো সকালে না গিয়ে একটু দেরী করে গেলে কি হয়? ঠান্ডা লাগলে পরে বুঝবি!!

বাড়িতে ঘাস এনে শরীরের ভিজে শার্টটা খুলে রাস্তায় গিয়ে হাওয়া খাচ্ছিলাম। ছোট চাচিমা দেখে বললেন রাস্তাঘাটে খালি শরীরে দাড়ায় থাকলে পরিবার ও স্বজনদের অমঙ্গল হয়। তাছাড়া এটা শোভনীয় নয়।

দুপুরবেলা হালকা বৃষ্টিতে যখন ভিজছিলাম তখন বন্ধুরা বলল, চল ফুটবল খেলি গিয়ে। হুড়মুড়্ করে আমরা কয়েকজন যখন ফুটবল খেলতে যাচ্ছি ঘরে বড় ভাবি বলে উঠলো.. যাও এখন শখ মজায় আসো আবার রাইতে যখন জ্বরে সর্দিতে ঘোঙাইবা পরে বুঝবা ঝড়বৃষ্টিতে ফুটবল খেলার বিরম্বনা কি।

রাতের বেলা পরিবারের সবাই যখন খেতে বসলাম তখন বোন বলে, ভাই তুই এতো কম খাস কেরে? বেশি করে খেলেইতো শরীর ভালো থাকবো। খাওয়ার সময় সবার সামনে মাতাব্বরি করে তাই দিলাম এক ধমকি! ধমকে বোন নিজে না খেয়েই উঠে অন্য ঘরে গিয়ে কাঁদছে দেখলাম। পরে আমি গিয়ে বললাম, আইচ্ছা আমার ভুল হইছে। তুইতো আমার ভালোর জন্যই বলছোস চল এবার নিজে কয়েকটা খেয়ে ভাইয়ের অনুরোধ রক্ষা করেন। না খেয়ে ঘুমাইলে বাবায় আবার আমার সাথে চিল্লাচিল্লি করবো।।

মাঝে মাঝে বন্ধুদের সাথে রাতবিরাতে আড্ডা দিতে যেতাম। কিন্তু বাবার শাষনে আড্ডাটা জমতো না। রাত দশটার আগেই ফোন করা শুরু করতেন আর বলতেন সময়কাল ভালো না এতো রাতে ঘরের বাইরে কিসের আড্ডাফাড্ডা? জলদি বাড়িতে আসো নইলে তোমার বড় ভাইরে পাঠাইতাছি তোমারে নিয়া আসতো।

তখন মনে মনে প্রায়শই ভাবতাম শালার আমার বুঝি জীবনে শান্তি নাই! কাজে সমস্যা, খেলতে সমস্যা, খাইতে সমস্যা এমনকি বন্ধুদের সাথে আড্ডাবাজিতেও সমস্যা!!

___কিন্তু আজ স্বজনহীন পরবাসে ডিউটির সময় দেশে থাকার সেই স্মৃতিগুলো খুব মনে পরছিলো। একেতো খুব গরম সৌদি আরবে তারউপর পরণের শার্টটা ভিজে গিয়েছিল। এক অসস্তিতে পড়ে গিয়েছি মনে হচ্ছিল কিন্তু কেউ খেয়াল করার নেই!

ক্লান্ত লাগলেও কেউ মায়ের মত বলেনা একটু জিরিয়ে নে বাপ। ক্ষুধায় ছটফট করলেও বোনটির মত কেউ বলেনা ভাই আয় কয়েকটা খেয়ে নে! বাবার মত কেউ বলেনা রাত দশটা বেজে গেছে এর আগেই বাড়িতে তোমায় দেখতে চাই!

সেই সকালে ঘুম থেকে উঠি রাত বারোটায় ঘুমোই। প্রতিদিন একই কাজ একই রুটিন ভাল্লাগেনা আর। দেশে মায়ের খানা বানানো দেরি হলে চিল্লাচিল্লি করতাম কিন্তু কি দুর্ভাগ্য এখন আমি ___!!

ডিউটি শেষে রুমে এসে খানা না বানালে না খেয়ে থাকতে হয়। আবার খানা ভালো হয়নি এটাও কাউকে বলার জো নেই।

মনে হয় প্রতিটি মানুষ এটাকেই নিঃসঙ্গ প্রবাস জীবন বলে!!
যেখানে ভালোবাসাহীন এক পৃথিবী। বুঝতে পারছি বললে ভুল হবে হাড়ে হাড়ে ঢেঢ় পাচ্ছি! আসলে আমার পরিবার আমাকে শাষন যেটা করেছে সেটা শাষন নয় আমাকে ভালোবেসেছিলেন তারা। আমার খেয়াল রাখতেন ঘরের প্রতিটি সদস্য। সেখানে তখন শাষনের মত মনে হলেও এখন তা ভালোবাসার মতোই মনে হয় শুধু সময়ে বুঝতে পারলাম স্বজনদের ভালোবাসাতেই বেচেঁ ছিলাম।।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.