নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
" আমার প্রাণের বন্ধু নুরুন্নবী মারা গেছে।
ভোলা ফকিরের বাড়ীর পাশ দিয়ে কখনো ভেতর দিয়ে আমরা মেহের আফজল হাই স্কুলের পথ ধরতাম। হাই স্কুলে পড়ার সময় হতে নুরুন্নবীর সাথে বন্ধুত্ব। ভোলা ফকিরের বাড়ীর ছেলে নুরুন্নবী। বাপ সূফী টাইপের মানুষ। মা কোনো অজ্ঞাত কারণে ইন্ডিয়া না কোথায় চলে গেছে। চাচীর কাছে মানুষ। এখন বুঝি সে আমাকে কেন দোস্ত টার্গেট করেছিল! সে আসলে নিঃসঙ্গ ছিল। আর ছিল দিলখোলা উদার প্রাণ। তার সরলতার বাস্তব রূপ টলস্টয়ের গল্পে ধরা পড়েছে। ফাদার সিয়ের্গি গল্পের পাশেনকা, তিনমুনি গল্পের তিন সরল বুজুর্গ এঁদের সাথে আমি নুরুন্নবীকে গুলিয়ে ফেলি। আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞ, দুনিয়াতে সারল্যের এক পরাকাষ্ঠার সাথে আমার বন্ধুত্ব করিয়ে দিয়েছিলেন। শৈশবে সে বুঝতে পেরেছিল আমার সাথে বন্ধুত্ব করা তাঁর অলৌকিক নিয়তি। সে নাইন বা টেন পর্যন্ত পড়েছে। আমি পড়েছি বিশ্ববিদ্যালয়। এসব তাঁর বন্ধুত্বে কোনো সমস্যা করেনি। ১৯৯২ সালে হালিশহর ছেড়ে আমি পতেঙ্গা চলে যাই। পতেঙ্গার কাউকে পেলেই আমার কথা জিজ্ঞেস করবে, আঁর দোস্ত ক্যা'ন আছে!
মোবাইল আসার পর থেকে ফোনে কথা হতো, সে ফোন করতো। বন্ধুত্বের জাগতিক যোগাযোগ তাঁর দিক হতেই রক্ষা হত। মানুষের প্রাণ যে অন্যজগত হতে এখানে এসেছে, নুরুন্নবীর সাথে বন্ধুত্বের মাধ্যমে আমি সেটা বুঝতে পারি। সে গতকাল রাতে মারা গেছে। আজ সকালে আমার আত্মীয়, নুরুন্নবীর প্রতিবেশী এমরান ফোনে যখন বলল তাঁর মৃত্যুর কথা, আমি আস্তে আস্তে অনুভব করতে থাকলাম পরকাল ছাড়া এই ক্ষতি পূরণ করা যাবে না... দোস্ত! আঁরে এক্কানা চাইতু আইসসো... আঁই বেশী অসুক...
যাব বলেছিলাম। অলসতা করেছি।
নুরুন্নবীর শৈশবের নিঃসঙ্গতা আমাকে দিয়ে অনেক পূরণ হয়েছে আমি বিশ্বাস করি। সে জানতো তাঁর গ্রাম্যতা, অসংস্কৃত সরলতা, তাঁর বিশেষ ধরনের কবিত্ব আমি অকৃত্রিমভাবে ভালোবাসতাম। তাঁর কোমল পাগলাগিপূর্ণ কথাবার্তা প্রগলভতা, আমার মতো আর কেউ প্রশ্রয় দিত না।
পরকাল যদি নিরুপদ্রব হয় আমি চাই সেই শৈশবের ভোলা ফকিরের বাড়ীর নুরুন্নবী সেখানেও আমাকে দোস্ত বলে ডাকবে, দুনিয়ায় তাঁকে দেখতে যেতে না পারার অপরাধ ক্ষমা করে দেবে। আর একটা স্বপ্ন আমি লালন করেছি যেটা নুরুন্নবীকেও কোনোদিন বলিনি, তাঁর আম্মাকে দেখার সাধ! এই পাগলা ছেলেটাকে কেন নিঃসঙ্গ ফেলে চলে গিয়েছিলে মা!
°
জুলাই ৯,২০০০ তেইশ ঈসায়ী"
১১ ই জুলাই, ২০২৩ দুপুর ১:১১
বাকপ্রবাস বলেছেন: এটা অবশ্য গল্প হিসেবে লেখেনায়, বড় ভাইয়া কবিতা লেখন, গল্প লিখতে দেখিনাই কখনো। ধন্যবাদ আপনাকে
২| ১১ ই জুলাই, ২০২৩ ভোর ৪:২২
ঢাকার লোক বলেছেন: হৃদয় ছুঁয়ে যাওয়া লেখা!
আল্লাহ নুরুন্নবীকে জান্নাত নাসিব করুন!
১১ ই জুলাই, ২০২৩ দুপুর ১:১১
বাকপ্রবাস বলেছেন: আমিন
৩| ১১ ই জুলাই, ২০২৩ সকাল ১০:০২
সাখাওয়াত হোসেন বাবন বলেছেন: আল্লাহ নুরুন্নবীকে জান্নাত নাসিব করুন
১১ ই জুলাই, ২০২৩ দুপুর ১:১২
বাকপ্রবাস বলেছেন: আমিন
৪| ১১ ই জুলাই, ২০২৩ দুপুর ১২:৩৩
ফুয়াদের বাপ বলেছেন: আপনার বন্ধুকে আল্লাহ জান্নাত দান করুন দোয়া করি। পৃথিবীতে ভালো হয়ে বেচেঁ থাকাটা কঠিন পরীক্ষা। মাঝে মাঝে নিজেকে নিজে প্রশ্ন করি-আমি এমন কি কাজ করলাম যার দরুন মৃত্যুর পর কেউ আমাকে স্বরন করে দোয়া করবে...
১১ ই জুলাই, ২০২৩ দুপুর ২:০৭
বাকপ্রবাস বলেছেন: নুরন্নবী বড় ভাইয়ার বন্ধু ছিলেন, আমার সাথেও পরিচয় ছিল। এটা বড় ভাইয়ার ফেবু থেকে কপি প্যাষ্ট করেছি
৫| ১১ ই জুলাই, ২০২৩ দুপুর ১২:৪৯
রাজীব নুর বলেছেন: একটি দীর্ঘশ্বাস।
১১ ই জুলাই, ২০২৩ দুপুর ২:০৭
বাকপ্রবাস বলেছেন: হুম।
৬| ১১ ই জুলাই, ২০২৩ বিকাল ৩:০২
কাজী ফাতেমা ছবি বলেছেন:
১৩ ই জুলাই, ২০২৩ দুপুর ১:১৪
বাকপ্রবাস বলেছেন: ধন্যবাদ
©somewhere in net ltd.
১| ১১ ই জুলাই, ২০২৩ রাত ১:৫৮
খায়রুল আহসান বলেছেন: খুবই ছোট্ট একটা গল্প, কিন্তু স্পর্শ করে গেল। সরলমনা নুরুন্নবীর জন্য মনটা ভারাক্রান্ত হলো। আর গল্পের শেষে ব্যক্ত লেখকের ইচ্ছেটা আমার মনেও জাগ্রত হলো।
পোস্টে প্লাস। + +