![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
এটা আমার ১৪ নাম্বার প্রোজেক্ট । ১৩ টা প্রোজেক্ট করে , বলা ভাল ফেল করে এসব আমার কাছে ডাল-ভাত হয়ে গেছে । তাছাড়া আনলাকি থারটিন-তো কাটিয়ে এসেছি গত মাসে !!!
যদি বলেন- লাকি সেভেন তো গেল, সে সময় কি এমন হাতি ঘোড়া করেছিলে !!! তবে কোন উত্তর দিতে পারব না !!
আমি এনায়েত । নামের আগে বা পরে কিছু নাই ; মানে আহমেদ বা মোহাম্মাদ কিছু নাই ; খালি এনায়েত । আমার বন্ধুদের (শত্রুদেরও) কত সুন্দর সুন্দর নাম ! আর আমার...... কপাল ...
ওরা দেখতেও সুন্দর, যাকে বলে “ফেরারি” আর আমি নামে ও চেহারায় “মহেন্দ্র অ্যান্ড মহেন্দ্র” !
নাহ! নামটাই আসল ।
আমার বন্ধু জিসান যখন তার গার্লফ্রেন্ড তিয়ানা-কে বলেছিল- “এনায়েত তোমার বান্ধবী মিলি-কে হেব্বি লাইক করে । তুমি একটু গ্লু-র কাজটা কর না।”
তিয়ানা ঠোট উল্টে বলেছিল-“ নামটাই তো জলিল জলিল, মিলি খাবে না । অন্য মেয়ে দ্যাখো ।”
এই নামের জন্য মিলি ফসকে গেল । প্রোজেক্ট ওপেন করার আগেই ক্লোজড ।
সব দোষ ওই বুড়ো জমিদার খান মোঃ দবির উদ্দিনের ।
আমার দাদা, কোন এক কালে জমিদার ছিলেন । জমিদারি গেছে কিন্তু তার ভাব যায় নাই ।
মা দাদার কাছে গিয়ে বললেন- “ বাবুর একটা সুন্দর নাম ঠিক করেছি । ওর ...............”
দাদা কথা শেষ করতে দিলেন না । বললেন- “ নাম আমি রাখব । ওর নাম এনায়েত ।”
মা উসখুস করতে লাগলেন । বললেন- “খালি এনায়েত ? আগে পরে কিছু দেন !”
দাদা হুংকার ছাড়লেন। বললেন- “ এনায়েত এর আগেও কিছু নাই, পরেও কিছু নাই । কেউ এই নাম ছাড়া ওরে ডাকলে তার গর্দান যাবে।”
আগেই বলেছি, সে চলনে বলনে এখনও জমিদার । আরে মিয়া, আপনি কারো গর্দান নিলে সরকার-তো আপনার গর্দানটাই ধার চাইবে ।
সেই মাছুম বাচ্চা না বুঝেই বিনা প্রতিবাদে যে নাম ঘাড়ে নিয়েছে, এই আমি এখনও তা বয়ে বেড়াচ্ছি ! ফেলার জো নাই । পরে অবশ্য আমি এনায়েত নামের হিস্ট্রি বের করেছি । যাকে বলে কেঁচো খুড়তে গিয়ে সাপ বেড়িয়ে পড়া !!!!
আমার জমিদার দাদাজান যুবক কালে তার পাশের গায়ের এক সুন্দরী ললনাকে বড়ই লাভ করতেন । তাকে বিয়ে করার জন্য তার প্রান আকুলি বিকুলি করতো । সেই ললনা আমার দাদাজান কে আদর করে ডাকতেন ‘এনায়েত’ । কেন ডাকতেন তা বের করতে পারিনি । ওই বুড়ির সাথে আমার দেখা হয়নি । দেখা হলে বলতাম- “আপনি দাদাজান-কে অমিতাভ বচ্চন কিংবা অন্য কিছু ডাকতে পারতেন !! আপনার জন্য আমি ফেঁসে গেছি।”
যাই হোক, মাঝখান থেকে ঐ ললনার (নাকি বুড়ির)-র বাবা অমরেশ পুরীর ভুমিকা নিলেন !! আর আমার দাদাজান শাজাহান হতে হতে হলেন আধা-দেবদাস !!
দেবদাস হবেন ভাল কথা ; তো দেবদাস এর উত্তরসূরি রাখার কি দরকার !!
আপনার নামের অকল্যাণে আমার ১৩ টি প্রোজেক্ট ফেল করেছে ।
দাদাজান আমি আপনার গর্দান নেবো ।
মরে গিয়ে আপনি আপনার গর্দানটা বাঁচিয়ে দিলেন ।
আজ আর এই অকল্যাণকর ছাইপাঁশ ভাববো না । মেজাজ আর মন দুইটাই ফুরফুরা রাখতে হবে !!
শেষ বারের মতো আয়নায় তাকালাম । নাহ ! সব ঠিক আছে । গিফটের প্যাকেট হাতে নিয়ে বেড়িয়ে পরলাম ।
জয় সজীব কি জয় !!!!!!
সজীবের নাম নিয়ে উপায় আছে ! ও এই লাইনে ইমরান হাশমি !! বর্তমানে ওর ১৬ নাম্বার সফল প্রোজেক্ট চলছে । ব্যাটায় ক্যামনে যে এতোগুলা পটিয়েছে তাও এক মিস্ট্রি !!
তাছাড়া হাতের গিফটটাও ওর কল্যাণে প্রাপ্ত !!
নতুন এক মেয়ে কে ফেবুতে পটিয়ে দেখা করতে গেছে চট্টগ্রাম । এদিকে আবার ১৬ নাম্বার এর সাথে আজ ডেট ।সো, তাকে ম্যানেজ করতে আমাকে বানিয়েছে ডাক হরকরা । আর আমি .........
চট্টগ্রাম থেকে আসো, বুঝবা ঠ্যালা । শুনেছি ওর ১৬ নাম্বার নাকি বক্সিং খেলে ।
বুঝবা, কত পাঞ্চে কত পয়েন্ট !!!
১৩ টি প্রোজেক্ট ফেল মেরে নিজেকে এখন প্রেমের আদু ভাই মনে হয় । মেয়েরা আমার চেহারা আর নামটাই দেখল, আফসোস ...
আমার মন......
“তুমি কি অনেকক্ষণ হয় এসেছো ?”
আমার সামনে আমার ১৪ নাম্বার প্রোজেক্ট, মানে তিমা ।
পার্লার না থাকলে এই মেয়েগুলার যে কি হতো !!
আমার চোখ বড় বড় হয়ে গেল আর সাথে মুখ হয়ে গেল হাঁ । এই মুখে কপাট লাগানো আমার সাধ্যাতীত । মেয়ে দেখলেই আমার এমন হয় ।
আমার খাম্বা দশা দেখে সে আবার প্রশ্ন করলো- “ তুমি কি অনেক সময় ধরে আমার জন্য ওয়েট করছ ?”
আমি প্রবল বেগে মাথা ঝাঁকাতে শুরু করলাম, প্রায় মাথা খুলে যাবার পযার্য়ে !!
“ হাউ সুইট !”
ইস কি সুন্দর করে সুইট বলল । আমার মুখ কি আরও খানিকটা হাঁ হয়ে গেল নাকি !! ?? চাপা ব্যাথা করছে কেন ! এমন চলতে থাকলে তো বিপদ । ও সুইট বলতে থাকবে আর আমার চাপা-র ব্যাথা বাড়তে থাকবে ।
“এই! সত্যিই কি তোমার নাম এনায়েত ? নাকি ফেবুতে মজা করার জন্য লিখছ ?”
“হুম ! আমার দাদাজান রাখছেন । কেন ? নামটা সুন্দর ?”
আমার অতি উৎসাহে সু-মেরু আর কু-মেরুর সব ঠাণ্ডা পানি ঢেলে সে বলল- “ নামটা চরম খ্যাঁত । তবে তোমার চেহারার সাথে মানিয়েছে । গাধার নাম টম ক্রুজ হলে মানায় বল !!!”
ভুমি তুমি দ্বিখণ্ডিত হও, আমি প্রথিত হব ।
“ রাগ করছ ?”
“নাহ ! বড় আনন্দ পেয়েছি !! বাকবাকুম... বাকবাকুম...”
সে অনাবিল ভাবে হাঁসতে শুরু করলো । আর আমার রাগ কমতে শুরু করলো !!
“ দ্যাখো , আমি সোজা-শাপটা কথা বলতে ও শুনতে পছন্দ করি । তোমার নাম আর চেহারা, দুটোতেই আমার আপত্তি ছিল !!!”
দাদাজান, আপনি আর আপনার প্রেমিকা দুজনেরই আমি গর্দান নেবো ?
“ তবে চিন্তা করে দেখলাম, চেহারাটা মানুষের মুখ্য না! আসল হল মন ! তাছাড়া জলিল মার্কা ছেলেরা খুব প্রেমিকা ভক্ত হয় । খুব কথা শোনে ।
এখন আসো নামে- ”
আমি নড়ে চরে বসলাম । দাদজান.........
“এই তুমি তোমার নাম বদলাতে পারবে ?”
“কিভাবে ?”
এবার আমার মুখের চাপা লেগে গেল !
“এফিডেভিট করে !!!! খুব সোজা !! পারবে না ?”
“ মা বকবে !!”
“মানে ? এতো বড় ছেলে, তাও কিনা বলে- মা বকবে !!! এই তোমার মা বড় না আমি ?”
“ মা বড় ; মার বয়স ৫০ !!!”
তিমা হাঁসতে শুরু করলো ।
আমি আমার স্মৃতিতে তার হাঁসি জমা করছি । আমার স্মৃতি হবে তার হাসির ব্যাংক ।
দাদাজান, এই প্রোজেক্ট ফেল করলে আমি সত্যি সত্যি দেবদাস হয়ে যাবো...... আধা আধি না, পুরোপুরি .....................।
২| ১৬ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ সন্ধ্যা ৭:৪৫
মোঃ হাফিজুর রহমান সাগর বলেছেন: ধন্যবাদ
©somewhere in net ltd.
১|
০৮ ই সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:৫৭
সেলিম মোঃ রুম্মান বলেছেন: