নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

সাহাবুব আলম

সাহাবুব আলম › বিস্তারিত পোস্টঃ

এতোটা অকৃতজ্ঞ যে বলতেও লজ্জা লাগে

২১ শে জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ১১:২৬

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বপ্নদ্রষ্টা নবাব স্যার সলিমুল্লাহর গতকাল ছিল মৃত্যুবার্ষিকী।

যার দান করা ৬০০ একর জমির উপর আজকের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মেডিকেল, বুয়েটের মতো দেশের শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো দাঁড়িয়ে আছে। অথচ তাঁর মৃত্যুবার্ষিকীতে এইসব প্রতিষ্ঠানে কোন দোয়ার আয়োজন করা হয়নি। করা হয়নি কোনো স্মৃতিচারণামূলক অনুষ্ঠান। অন্যদিকে তৎকালীন সময়ে কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বাঙালি বিদ্বেষ এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় বিরোধীতার কথা কমবেশি সবারই জানা। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠায় শুধু কঠোরভাবে বিরোধিতা করেই ক্ষান্ত হননি বরং তিনি ব্রিটিশদের সাথে রীতিমতো দেন-দরবার করেছিলেন যাতে ঢাকায় বিশ্ববিদ্যালয় না করা হয়। সেসময় রবীন্দ্রনাথ এক অনুষ্ঠানে দাম্ভিকতার সাথে বলেছিলেন "মূর্খের দেশে আবার কিসের বিশ্ববিদ্যালয়, তারাতো ঠিকমতো কথাই বলতে জানেনা!" অন্যত্র এক অনুষ্ঠানে এদেশের মানুষকে তীব্রভাবে কটাক্ষ করে রবী ঠাকুর বলেছিলেন "সাত কোটি সন্তানের হে মুগ্ধ জননী, রেখেছো বাঙালী করে মানুষ করোনি"। অথচ সেই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মদিন, মৃত্যুদিন, সাহিত্য উৎসবসহ আরো অনেক অায়োজন ধুমধামের সাথে পালন করা হয়।

আর যে বঙ্গসন্তান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রূপকার সেই নবাব স্যার সলিমুল্লাহকে আজকের শিক্ষার্থীদের অনেকেই চেনাতো দূরের কথা নামটাও জানেনা। আমরা এতোটা অকৃতজ্ঞ যে বলতেও লজ্জা লাগে!

এক নজরে নবাব সলিমুল্লাহর জীবনীঃ
'নবাব স্যার সলিমুল্লাহ'- একটা জীবন, একটা ইতিহাস।

নবাব সুলিমুল্লাহ যার জন্ম ১৮৭১ সালের ৭ ই জুন। ছোটবেলা থেকেই ছিলেন অত্যন্ত ধর্মপ্রিয়। ফলে অভিজাত পরিবারের সন্তান হয়েও তিনি সাধারণ মানুষের কাছাকাছি অবস্থান করতেন। সাধারণ মানুষের দুঃখকে তিনি নিজের দুঃখ মনে করতেন। তিনি আকাতরে দান-খয়রাত করতেন।
--- নবাব সলিমূল্লাহ যিনি সর্বপ্রথম পানীয় জল, ইলেকট্রিসিটি এবং টেলিফোন ব্যবস্থা চালুর মাধ্যমে আধুনিক ঢাকার জন্ম দেন।
--- নবাব সলিমূল্লাহ যিনি জীবনের প্রথম দিকে জনগণের কথা চিন্তা করে নবাবীর লোভ না করে মোমেনশাহীর ম্যাজিস্ট্রেটের দায়িত্ব গ্রহণ করেন।
--- নবাব সলিমূল্লাহ যিনি ১৯০৩ সালে বড় লাট লর্ড কার্জন ঢাকায় সফরে এলে তার নিকট পূর্ব বাংলার সমস্যাগুলো তুলে ধরেন।
--- নবাব সলিমূল্লাহ যিনি ১৯১১ সালের ২৯ আগস্ট ঢাকার কার্জন হলে ল্যান্সলট হেয়ারের বিদায় এবং চার্লস বেইলির যোগদান উপলক্ষে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে নওয়াব আলী চৌধুরীকে নিয়ে পৃথক দুটি মানপত্র নিয়ে ঢাকায় একটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবি জানান।
--- নবাব সলিমূল্লাহ যিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের জন্য ঢাকার রমনা এলাকায় নিজ জমি দান করেন, বাবার নামে আহসানউল্লাহ ইঞ্জিনিয়ারিং স্কুল (বর্তমানে বুয়েট) প্রতিষ্ঠা করেন।
--- নবাব সলিমূল্লাহ যিনি ১৯০৬ সালে বৃটিশ সাম্রাজ্যবাদী ও তাদের দোশরদের ক্রমাগত আক্রমন থেকে নিজস্ব ইতিহাস ঐতিহ্য এবং ধর্ম রক্ষায় প্রায় ছয় মাসের প্রচেষ্টায় পাক-ভারত উপমহাদেশে ‘অল ইন্ডিয়া মুসলিম লীগ’ গঠন করেন।
--- নবাব সলিমূল্লাহ যিনি আন্দোলনের ফলে ব্রিটিশ সরকার কর্তৃক শিক্ষা বিভাগে মুসলমানদের জন্য সহকারী পরিদর্শক ও বিশেষ সাব ইন্সপেক্টরের পদ সৃষ্টি করেন।
--- নবাব সলিমূল্লাহ যিনি বর্ণবাদী-ব্রাহ্মণ্যবাদী চক্রান্তে বিট্রিশ সাম্রাজ্যবাদে শত বছরের অধিক চাষাভূষা, কোচোয়ান-দাঁরোয়ান ও গোলাম বানিয়ে রাখা মুসলিমদের কথা ভেবে প্রথম জেগে উঠেন তারপর মুসলিমদের সংগঠিত করার কাজ শুরু করেন।
--- নবাব সলিমূল্লাহ, যিনি ১৯০৫ সালে বঙ্গদেশকে দুই ভাগে ভাগ করে, ঢাকা, রাজশাহী, চট্টগ্রাম ও আসাম নিয়ে ঢাকাকে রাজধানী করে পূর্ববঙ্গ গঠন করেন।
--- নবাব সলিমূল্লাহ, যিনি সুদূর তুরস্কের ভূমিকম্পে মানুষের কষ্টের কথা শুনে সাহায্যের জন্য টাকা-পয়সা পাঠিয়েছিলেন।
--- নবাব সলিমূল্লাহ, যিনি মানুষকে তার সকল সম্পদ অকাতরে বিলিয়ে দিয়ে ঋণী হয়েছিলেন। সোনালী ব্যাংক সদরঘাট শাখায় এখনও তার বন্ধক রাখা সিন্ধুক “দরিয়ায়ে নূর” রক্ষিত আছে।
আচ্ছা আমরা ক'জন জানি এই মহান ব্যক্তির কথা? তার অসামান্য কীর্তির কথা? এই ঢাবি না থাকলে আজকে কারা ভাষা এনে দিতো আমাদের? এই ঢাবি না থাকলে কারা স্বাধীনতাকে এনে দিতো? এই বুয়েট না থাকলে কারা বিশ্বমানের ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার সুযোগ করে দিত?
আজ যত-শত আবর্জনারই আমাদের জ্ঞানের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে দাঁড়িয়েছে যেখানে এই মহান ব্যক্তিদের একটু যায়গা কোথায়!

রহস্যজনক মৃত্যুঃ
ঢাকার নবাব সলিমুল্লাহর পূর্ব পুরুষ ইংরেজদের দালালি করলেও নবাব সলিমুল্লাহ তিনি ছিলেন ব্যতিক্রম। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা নিয়ে তৎকালীন হিন্দু সমাজ এবং লাটের সাথে তার বাদানুবাদ হয়। কথিত আছে যে, বড়লাট রাজি ছিলেন না ঢাকায় কোন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে। এই নিয়ে নবাবের সাথে বড় লাটের তীব্র বিতর্ক হয়। নবাব সবসময় একটা ছড়ি নিয়ে ঘুরতেন। যখন বড়লাট রাজী হচ্ছেননা ঢাকায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করতে তখন নবাব রেগে গিয়ে ছড়ি দিয়ে বড়লাটের টেবিলে বাড়ি মারেন। বড়লাটের দিকে এগিয়ে আসেন। তখন বড়লাটের হুকুমে বড়লাটের দেহরক্ষী নবাবকে গুলি করেন। পরে প্রচার করা হয় যে তিনি হৃদক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যায়। আজ নবাব সলিমুল্লাহ মৃত্যু বার্ষিকী। অথচ যার দান করা ৬০০ একর জমির উপর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দাঁড়িয়ে আছে সেই বিশ্ববিদ্যালয়ে তাকে স্বরণ করা হয়না। মানুষের এমন অকৃতজ্ঞতা দেখে নবাব হয়তো কবর থেকেই বিস্মিত হচ্ছেন।
জ্বি ঢাকার নবাব স্যার সলিমুল্লাহ আপনি আমাদের ক্ষমা করে দিন।

সংগৃহীত

মন্তব্য ৭ টি রেটিং +৩/-০

মন্তব্য (৭) মন্তব্য লিখুন

১| ২২ শে জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ১২:১৮

সচেতনহ্যাপী বলেছেন: আমাদের একচোখে নুন,অন্য চোখে তেল (প্রবাদ)।। আর বড্ড অকৃতজ্ঞ!!

২| ২২ শে জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ১:৫৭

চাঁদগাজী বলেছেন:


নবাবের বিশাল অবদান, ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয় ও বুয়েট।

দরিয়ায়ে নুরের কি হবে? উহা কি আছে, নাকি সরায়ে ফেলেছে?

৩| ২২ শে জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ৩:৩৭

প্রফেসর এরোনেক্স বলেছেন: তথ্যবহুল।

৪| ২২ শে জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ৯:৩২

রাজীব নুর বলেছেন: জানলাম।

৫| ২২ শে জানুয়ারি, ২০১৮ সকাল ৯:৪৫

শ্রাবণধারা বলেছেন: রবীন্দ্রনাথ সম্পর্কে এই তথ্যগুলো আপনাদের জামাতের আব্বা-হুজুরেরা বানিয়েছে জনাব, তথ্যগুলো সঠিক নয়। রবীন্দ্রনাথের খেয়ে দেয়ে আরও কিছু কাজ ছিল, আপনাদের পশ্চাদ্দেশে আঙ্গুল দেবার জন্য বৃটিশদের সাথে দেন-দরবার করা ছাড়াও ।

২২ শে জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ১১:৫০

সাহাবুব আলম বলেছেন: লেখা গুলো আমার না সং গ্রহ করা ।আর হা রনীন্দ্রনাথ ধোয়া তুলসি পাতা না ওনার জীবনি পরতে পারেন ।ওনার লেখা নিয়ে কথা বলার মতো আমার যোগ্যতা হয়নি । আর হ্যা সব মানুশের দুইটা দিক আছে একটা ভাল আর মন্দো । আমাদের জামাতের আব্বা হুজুর বলে কি বুঝাতে চাইছেন ।খোজ নিলে দেখা যাবে আপনি অথবা আপনার কেউ এই আব্বা হুজুরের সাথে মিশে আছে ।কাউকে কিছু বলার আগে বুঝে শুনে বলবেন ।

৬| ২৩ শে জানুয়ারি, ২০১৮ রাত ১২:১০

ইমরান আশফাক বলেছেন: খুবই গুরুত্বপূর্ন পোষ্ট, আরেকটু হলে প্রায় এড়িয়ে যাচ্ছিলাম।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.