নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

বার বার মুছি আবার নতুন করে লিখি। শব্দ সংকট প্রকট ভাবেই দেখা দিয়েছে। এমন হয় কিছু কিছুদিন শেষে শুন্যতা প্রগাড় ভাবে ঘিরে ধরে,কেমন যেনো চাপা হাহাকার,কারন ছাড়াই অনর্থক কিছু বিষন্নতা,অথবা অনাগত আগামীর নির্মমতা মেনে নেয়ারভয় ।

শাহরীন মাহাদী

শাহরীন মাহাদী › বিস্তারিত পোস্টঃ

\'\'বেকারের আত্মহত্মা\'\'

০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:১২

বেকার ছেলেদের কোনাপ্রিয় থাকতে হয়, চায়ের দোকানে কোন এক কোনায়, বাসায় কোন এক কোনার রুমে, ফ্রেন্ডদের সাথে চললেও সবার পিছনে, সবখানে কোনাপ্রিয় হলেও মাঝে মাঝে ইচ্ছে হয় ট্রেনের সামনে ঝাপ দিতে, বাসের সামনে ঝাপ দিতে।
.
আর গত কাল ঘরে বসিয়ে বসিয়ে খাওয়াবে, সেই বাল্য থেকে আজ পর্যন্ত।
.
গতকাল রাফি যেমন গিয়েছে। অপদার্থ রাফি।
হয়ত প্রতিবেলায় খোটা খেতে হত দেরী করে ঘরে ফেরা হয়। মা বসে থাকে ভাত নিয়ে। ভেতরের ঘর থেকে বাবার চীৎকার কানে আসে..
- খাওয়াও আরও খাওয়াও। খাইয়ে খাইয়ে তো দামড়া বানাইছ, এখন এই গন্ডারটাকে শুশুরি দিলেও ৪ দিন পরে হুস হবে না। এখন এ দামড়া পালতে আমার সমস্যা কি?
খোটায় নুনের পরিমানটা একটু বেশি থাকে। অর্ধেক ভাত খেয়ে উঠে যাওয়া... সবটুকু ভাত কোনদিন খাইতে পারে নি। মায়ের কপালে আরেকটা ভাজ জমে। ছেলেটা এত্ত পাগল কেন? বন্ধুরা ততদিনে অনেক এগিয়ে গেছে। সবাই মিলে পার্টি থ্রো করে। প্রতিনিয়ত সবে টিশার্ট চেঞ্জ করলেও রাফি সেই ৪ বছরের টিশার্টি চেঞ্জ করতে পারে নি। পার্টিতে বহুবার পরা টিশার্টটা গয়ে আবার বেকার ছেলের আগমন ঘটে। সুন্দরী জি এফ দের সাথে পরিচিত হওয়ার ফাকে পড়ে অসস্তিতে..
.
- আমার ফ্রেন্ড রাফি
- হাই
- হ্যালো
- কি হালে আছেন?
- না ইয়ে...
কোণায় আছে বোধহয়। সাপ্তাহ পর সাপ্তাহ, মাসের পর মাস এটা-সেটা বলে বিয়ে ঠেকানো মেয়েটা আজ ৫ বছরের সর্ম্পকের কাছে আত্মসার্পন করলো।
- শুনো তুমি আমার উপর রাগ করনি তো?
- আরে না। তোমার কিছু করার ছিলোনা. (আসলে আমার ভাগ্য’ই ভালো না)
- আসলে আর পারছিলাম না।
- আগামী সপ্তাহে ফ্লাইট তো তোমার
- হু। আই উইল মিস ইউ
- ভালো থাকিস পাগলী
.
বুকটা দুমড়ে মুচড়ে গেলেও হাসিমুখে বিদায় দিতে হয় প্রিয়তমাকে। চোখের নীচে আরেকটু কালি জমিয়ে বেকার ছেলে শহরের বুকে ভেসে ভেড়ায়। মাথার উপর দিয়ে উড়োজাহাজে উড়ে যায় প্রিয়তমা তার নতুন সঙ্গী কে নিয়ে নতুন জীবনের খোজে। যেতে দিতে হয়, অনুযোগ অভিযোগের অধিকার নেই। এঁকে বাড়ে শেষ পর্যন্ত সাথে থাকে মা। কিন্তু আর কত, মানুষতো।
.
আদরের ছেলের অপমান সহ্য করতে না পেরে একদিন ফুপিয়ে কেদে উঠে মা..
- মরে যেতে পারিস না তুই। এতো অপমান এতো কথা... তোর কি লজ্জা লাগে না। এত্ত বড় দামড়া হইছিস এখনো বাবা গারের উপরে বসে বসে খাস..... আল্লায় যেন তোর মুখ আমাকে না দেখায়।
.
প্রতিদিনের মতো আজকে আর রাফির ঘরে ফিরার তারা থাকে না। ধিরে সুস্থে চা খেতে খেতে সে উপলব্ধি করে তার ফেরার অপেক্ষায় আসলে কেউ নেই। যার ফেরার অপেক্ষায় কেউ নেই তার আর ফেরা কেন। ছোটবেলায় শেখা রচনার লাইন মনে আসে আ ম্যান উইদআউট এইম ইজ লাইক আ বোট উইদআউট রাডার। বেকার ছেলে বুঝে নেয় সে আসলে অক্সিজেনের নিদারুণ অপচয়ে ব্যাস্ত এক রাডারলেস হোমো স্যাপিয়েন্স।
.
সেদিন রাতে শুয়ে শুয়ে তার শেষ ঠিকানা বেচে নেয় ট্রেনের কোনায়। হয়তো কাউকে জানিয়ে কিংবা না জানিয়ে। বেঁচে থেকে পত্রিকা/টিভিতে শিরোনাম না হতে পারলে কি হবে মরে গিয়ে অন্তত একটু পত্রিকায়/টিভিতে শিরনাম শিরোনাম হতে পারবো........
.
অত:পর পরের দিন তার শেষ ঠিকানা ট্রেনের নিচেই হয়ে গেল, সকালের খাবার খেয়ে বাড়ি থেকে বের হয় রাফি আর ফেরা হয় নি তার বাড়ি, তার বেছে নেওয়া ট্রেনের নিচেই তার ঠিকানা..

মন্তব্য ২ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (২) মন্তব্য লিখুন

১| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:০০

আম আদমি বলেছেন: অত:পর পরের দিন তার শেষ ঠিকানা ট্রেনের নিচেই হয়ে গেল, সকালের খাবার খেয়ে বাড়ি থেকে বের হয় রাফি আর ফেরা হয় নি তার বাড়ি, তার বেছে নেওয়া ট্রেনের নিচেই তার ঠিকানা.

খুব ভালো লেগেছে ভাই। শুভকামনা রইলো।

২| ০৪ ঠা ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ রাত ১০:২৬

দ্যা ব্যাকডেটেড বলেছেন: জীব্ন যতই দুর্বিসহ হোক না কেন?????? আত্নহত্যাকে না বলুন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.