![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
মনে যা আয়, হেইয়্যাই কই !
সেবার প্রথম ভারত যাচ্ছি, লোকমুখে ভারতের কত কত গল্প শুনেছি। আবার ভারতীয় লেখকদের লেখনীতে ভারতকে যেভাবে দেখেছি সেটা কিভাবে আবিষ্কার করবো চিন্তা করতে করতে রিজেন্ট এয়ারের ড্যাশ-৮ বিমানটির ফাটানো আওয়াজ শুনতে শুনতে পঞ্চাশ মিনিটের বিমান ভ্রমন শেষে নামলাম নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে। কোলকাতায় এমনিতেই প্রথম তাই কোথায় হারিয়ে যাই ভেবে ছোটকালের বন্ধু Kripaan Biswas প্রান্তরের পথ পাড়ি দিয়ে আমাকে এয়ারপোর্টে নিতে চলে এলো। বেশ কয়েক মাসের ট্রিপে ভারত ঘুরবো বলে ল্যাপটপ, ক্যামেরা, জামাকাপড় মিলে ভারী ব্যাগটা পরম বিশ্বাসে যখন কাঁধে নিচ্ছিলেন তখন হয়ত ভাবেননি রীতিমত পাথর বইতে চলেছেন, আর তাহার বন্ধুবর এই এমন কেউ নই যে সৌজন্যের খাতিরে হলেও ব্যাগ ফেরত নিতে চাইবো
সিটিপুলিশের বুথ থেকে প্রিপেইড ট্যাক্সির টিকেট কেটে চড়ে বসলাম মান্ধাতা আমলের এ্যাম্বাসেডর হলুদ ট্যাক্সিতে। আহা, পরম আনন্দ ! ড্রাইভার দেখি মাঝে মাঝে পেছনের দিকে ফিরে তাকায়, এই আবড়া থাবড়া চেহারা যুক্ত ছেলে আবার প্লেনে চড়ে এয়ারপোর্টে এসেছে। ২০০৪ সালে একবার কমলাপুর থেকে ট্রেনে চড়ে চাষাড়া গিয়েছিলাম, এবার হবে আসল ট্রেনে যাত্রা। এয়ারপোর্ট থেকে অনেকটা পায়ে হাটা দূরত্ব হলেও ট্যাক্সি করেই চলে এলাম বিধাননগর স্টেশনে, বন্ধুবর আমাকে বলল শিয়ালদহে ভিড় হবে বলে এখান থেকে ওঠা ভালো হবে। কিন্তু একই ভিড় এড়াতে গিয়ে ট্রেনে ঢোকার সুযোগ না পেয়ে দুটো ট্রেন অলরেডি মিস ! কিছুক্ষন পরে এল মাতৃভূমী এক্সপ্রেস, ট্রেন থামতেই আমি যখন উঠতে যাবো তখন কৃপাণ হাত ধরে নামিয়ে দিলো, ওমা একি ! এই ট্রেনে উঠলে নাকি ৫০০ টাকা জরিমানা। মমতা ব্যানার্জি রেলমন্ত্রী থাকাকালীন মহিলাদের চলাচলের জন্য স্পেশাল এই ট্রেনটি নামিয়েছিলেন।
কোন রকমের ঠেলে ধাক্কায় যখন ট্রেনে উঠলাম তখন চাপাচাপি, আর চাপা গন্ধে টেকা যাচ্ছিলো না। কৃপা দেখি মাঝে মাঝে আমার দিকে তাকায়, কিভাবে যেন ভিড় ঠেলে ঠেলে চলন্ত ট্রেনে বিভিন্ন রকমের খাবারের ফেরিওয়ালারা আসে। বন্ধুর মন রক্ষার্থে সেবার কি কি যেন কিনে খাইয়েছিলো। কিছুক্ষন পরপর এক এক স্টেশনে ট্রেন থামে কিছু মানুষ নামে আবার কিছু মানুষ ওঠে, ট্রেনের বেশিরভাগ মানুষগুলো কোলকাতা থেকে এসেছে। দরজায় দরজায় ঝুলে ঝুলে চলে আসে মানুষগুলো কিন্তু একটুও শঙ্কা অনুভব করে না কারন তারা বাড়ি ফিরছে, হয়ত কেবল সকালেই প্রিয়জনকে ছেড়ে এসেছিলো তাতে কি? অফিস ফেরত মানুষগুলোর চেহারায় বাড়ি ফেরার তুষ্ঠি লক্ষ করতে পারি, তবে ভাবতে অদ্ভুত আনন্দ লাগে লোকগুলো শুধু নিজের বাড়িতে স্ত্রী-সন্তানদের সাথে থাকবে বলে দির্ঘ্যপথ ট্রেন ভ্রমন করে কলকাতা গিয়ে অফিস করে আবার বাসায় ফিরে যায়, সারাদিনের ৫/৬ ঘন্টাই চলে যায় এই স্টেশন আর ট্রেন করে করে। আসলেই জীবনের প্রয়োজনের আপনের পাশে থাকতে আমরা বাঙ্গালীরা কি না করি, পৃথিবীর অনেক দেশে এমন মেলা ভার।
স্টেশনে স্টেশনে অফিস ফেরত মানুষগুলো নামতে থাকে খালি হতে থাকে সিট গুলো, আমরাও সুযোগে বসে পড়ি। গল্প শুনি চারপাশের সহযাত্রীদের, কেউ কেউ অফিস শেষ করেছেন কেউ আবার কোলকাতায় গিয়েছিলো ডাক্তার দেখাতে, এই রুটটা এমনই বাংলাদেশিদের ব্যাপক চলাচল এখানদিয়ে, এমন কি বাংলাদেশ থেকে আসা সপ্তাহের দুটি ট্রেনও এই রাস্তা দিয়ে চলে। এই প্রথম কোন ইলেক্ট্রিক ট্রেনে চড়লাম, সা-সা করে ছুটে চলে ট্রেনটি। কষ্ট আনন্দ মিলে যে অভিজ্ঞতা তা হলো বাড়ি ফেরার আনন্দ দেখা। আমরা চলে আসি আমাদের গন্তবে, চাকদা ! ওহ হ্যা রবি ঠাকুরের গল্পেও এই চাকদার নাম এসেছিলো।
২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ভোর ৬:২১
সাইফুদ্দিন রাজিব বলেছেন: কমলাপুর-চাষাড়ার অভিজ্ঞতা অস্পষ্ঠ, তবে দূরত্ব কম হওয়ায় মজার অভিজ্ঞতা হয়নি। তবে প্রথম ট্রেন ভ্রমন বরাবর এক্সাইটিং।
২| ২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ সকাল ৭:৫১
রূপক বিধৌত সাধু বলেছেন: হাসোজ্জ্বল লোকটাই আপনে নাকি? এমতাবস্থায় ছবি তুললো ক্যাডা?
২৫ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ভোর ৬:২২
সাইফুদ্দিন রাজিব বলেছেন: লেখায় আমার যে অবস্থা, তা দেখে কি মনে হয় ওটা আমি ! ওটা কোন পাকা ট্রাভেলর হবে। তখন আমি সবে নতুন
৩| ২৬ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ রাত ১২:১৭
রেজা এম বলেছেন: শহরতলীর ট্রেন গুলা এমনই
©somewhere in net ltd.
১|
২৪ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৬ ভোর ৫:২৬
রক্তিম দিগন্ত বলেছেন:
বাহ! চমৎকার অভিজ্ঞতা।
কমলাপুর থেকে চাষাড়া পর্যন্ত যাওয়া ট্রেনে চড়্রেছিলাম কয়েকবার। ট্রেনে উঠতে পেরে মনে হয়েছিল যেন বিশ্ব জয় করে ফেলেছি। এত ভীড়!!!