![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
-আচ্ছা মুয়ীদ,আমার সাথে সেক্স করবা??
-হুম...যখন বলবা তখনই....
-হুম...ঠিক আছে...
-রিলেশান থাকা অবস্থাতে তো কোনদিন হাত ধরতে দাওনি...
-আচ্ছা তখনকার অবস্থা আর এখনকার অবস্থাতো আর এক না!এখন আমাকে বদলাতে হয়েছে.....
এই কথোপকথনরত অবস্থায় কখন যে ফ্লাশব্যাকে চলে গেলাম বুঝলামই না!
তৃষার সাথে প্রথম পরিচয় রাশেদ স্যারের বাসায়।ওর মত এতো ভদ্র মেয়ে কোনদিনও দেখিনি....ওর চেহারার প্রেমে নয় তো! ওর মত একটি ভাল মেয়ের প্রেমেই পরে গেলাম।ওকে প্রথম যেদিন প্রপোজ করি,সাথে সাথে গিয়ে আঙ্কেলকে বলে দেয়।ব্যাছ ওর বাবার হাতের মার খাওয়ার আগেই সেই যে রাশেদ স্যারের প্রাইভেট থেকে পলায়ন করলাম...আর গেলাম না!
তারপর দেখা হল দেড় বছর পর!
একা যাওয়ার মেয়ে ও না! কিন্তু সেদিন কেন একা রাস্তায় যাচ্ছে।আমি রাস্তার এপারে দাঁড়িয়ে!সবই বোধ হয় ভাগ্য সেট করে রেখেছিল!
দেখি এলাকার দুই ছোট ভাই ওকে বিরক্ত করছে! ব্যাছ মাথা হয়ে গেল গরম।কতগুলা থাপ্পর দিয়েছিলাম তার নাই ঠিক! সেই দিন যে তৃষা একটা মায়াবী হাসি দিলো,যার সংকেত যে হ্যা বোঝায় যাচ্ছিল!ব্যাছ হয়ে গেল একটি প্রেম কাহিনীর জন্ম।
-হ্যালো!মুয়ীদ!কি হলো??
-আরে...কল ড্রপ করেছিল!
-আচ্ছা সেক্স করবা ভাল কথা! তয় আমাকে দুইটা হাজার টাকা দিও....
-আমার কাছে পনেরশো আছে!
-মার ওষুধ ১৫০০ টাকা!আর আমার একটা বই কিনতে হবে! প্লিজ তুমি দুই দিও!
-আচ্ছা!এখন রাখি....
চোখ দিয়ে অঝরে পানি ঝরছে...আমার তৃষাতো কোন বাজারের মেয়ে নয়!
১ বছর হলো তৃষার বাবা মারা গেছে।ওর মা লেখাপড়া জানে না! হাঁপানি রোগি তিনি! গার্মেন্টসে যা কাজ নিয়েছিল,হাপানির জন্য তাও করতে পারে না! মায়ের চিকিৎসার জন্য এখন এই পেশায় মেয়েটি! বাবা উকিল ছিল! সৎ উকিল! তাই উপরি আয় ছিলনা! হঠাৎ চলে যাওয়ায় মেয়েটি আজ......
এত্তসব তখনও জানতাম না!
একদিন এলাকার এক বড় ভাই বল্লেন তৃষা নাকি অন্য এলাকায় ভাড়ায় যায়! বিশ্বাস হতো না! একদিন মানিক ভাই নিজেই আমাকে প্রমাণ সহ দেখালেন।ঐ দিন আমাকে এ পাশে খদ্দের সাজিয়ে রেখেছিলেন।ও যখন আসলো,হৃদয়টা ভেঙ্গে গেল মনে হলে,মেয়েটি দরজার কোনে দাঁড়িয়ে কাঁদতে লাগলো!জুতাটা খুলে ওর গালে কতগুলো বারি মেরেই চলে এলাম।
পরে জানলাম ওর বাবা মারা গিয়েছে..আর অভাবে আছে।মন চাচ্ছিল ওর কাছে ফিরে যায়।কিন্তু কেন যেন স্বার্থপর হয়ে গেলাম।ওকে আর তখন থেকে তৃষা নয়,বাজারের মেয়েই মনে হতে লাগলো।
একদিন তৃষার এলাকায় সব জানাজানি হয়ে গেল! ব্যাছ বের করে দিলো সমাজ!
আমার মত যে সমাজও নিষ্ঠুর।জানি দরিদ্রের শিকার! তাও পাশানের মত আমরা ওদের উপকার না করে,অপমান করি....পাশে না দাঁড়িয়ে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে সমাজের নিচু আসনে ছুড়ে ফেলি।
কাল তৃষার সাথে সেক্স করতে যাবো।তামিমের বাসাটাও রেডি..কারণ,আংকেল-আন্টি ঢাকায়....
তৃষা বোরকা পরে এসে পরলো সময় মত....
সব হয়েও গেল!
যাওয়ার সময় বলে গেল...
-প্রত্যেক প্রেমিকায় কল্পনা করে তার প্রেমিকের সাথে মিলন হবে,বিয়ে হবে।আমাদেরটা এভাবে!কল্পনাও করিনি!
-তকে টাকা দিছি না! তুই ন*! তুই কারর প্রেমিকা হতে পারিছ না....
চুপচাপ চোখের দুটো পানি ফেলে,নীরব ভূমিকা পালন করেই চলে গেল! চোখ দেখেই বোঝা যাচ্ছিল কিছু বলতে চাচ্ছিল,কিন্তু না বলেই চলে গেল।
৬ মাস পর...
তৃষার মাও ওকে ছেড়ে চলে গেছেন।সেই না ফেরার দেশে...
মেয়েটিও আত্নহত্যা করেছে।
আসলে কি ভাল মেয়েরা খারাপ পথে যায় অভাবে পরে বা চাপে পরে বা কাউকে বাঁচানোর জন্য! হয়তবা মায়ের জন্য নিজেকে বিলিয়ে দিয়েছিল হাজার পুরুষের কাছে!আর সেই মা ই নেই...তার নিজেকে এই পতিতা রুপে আর গ্রহণ করতে পারেনি।তাই নিজেকেও শেষ করে দিল।চাইলে মায়ের গার্মেন্টসেও চাকরি করতে পারতো...কিন্তু সেই বেতনে কি আর থাকা-পরা,মায়ের চিকিৎসা, মেয়ের নিজের ব্যক্তিগত জিনিস কেনা এসব চলে????
আমার না খুব কান্না পায় এখন।কেন এ পথে জেনে নিয়েও মেয়েটিকে কস্ট দিয়েছি।তখন যদি একটু বোঝার চেস্টা করতাম,পাশে না দাঁড়াতে পারলেও,সহানুভূতি দেখাতাম।সমাজে এরকম কত তৃষারা আছে!
আসলে কি ও চলে যাওয়ার পরেই আমার মনে ভালবাসাটা দ্বিগুণ হয়ে গেছে।
আসলে হারালে জিনিসের মর্ম বোঝা যায়!
আর কারর খুত পেলে তা আমরা বাজিয়েই যায়।
সেদিন যদি সেক্স না করে ওকে টাকাটা দিয়ে হেল্প করতাম! আমিও তো কম খারাপ না! আসলে তৃষাদের পতিতা হতে হয় কেন??
আর পতিত পুরুষরাই কি দ্বায়ী,নাকি পতিত সমাজের কবলে অভাব এর জন্য দ্বায়ী???
আর পতিত পুরুষদের ভোগের জন্যই কি এই তৃষারা????
(কাল্পনিক)
©somewhere in net ltd.