নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
দিয়ে গেনু বসন্তেরও এই গানখানি বরষ ফুরায়ে যাবে ভুলে যাবে, ভুলে যাবে,ভুলে যাবে জানি...তবু তো ফাল্গুন রাতে, এ গানের বেদনাতে,আঁখি তব ছলো ছলো , সেই বহু মানি...
আমরা যারা এখনকার দিনে শিশুদেরকে পড়াই এবং এই আমরাই যেমনটা পড়েছি আমাদের শিশুবেলায় সে সব নিয়ে ভাবলে বিশাল বৈসাদৃশ্য চোখে ভেসে উঠবে। শুধু তাই নয় শিশুকালে এই পড়ালেখা নিয়ে আমরা অনেকেই প্রায়ই যে ভীতি বা মনোকষ্টের শিকার হয়েছিলাম তা মনে করলে আজও আমরা কেউ কেউ নিশ্চয়ই শিউরে উঠি। কিন্তু এমনটা হবার কথা ছিলো না, শিশুরা শিখবে আনন্দ নিয়ে, এটাই হওয়া উচিৎ। তবে এ কথাটাও মাথায় রাখতে হবে যে যুগের সাথে সব কিছুই বদলায় ও মানুষ দিনে দিনে নিজেকে ও পরিবেশকে পরিবর্তন করে। শিশুশিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে নানা পরীক্ষা নিরীক্ষা ও গবেষনার পর আজ মানুষ যতটুকু ভাবতে পারছে বা শিশুদের জন্য করতে পারছে তা এত সহজে এই পর্যায়ে আসেনি। তারপরও থাকে অনেক কথা।
যাইহোক প্রত্যেকটা মানুষই সতন্ত্র ও ভিন্ন। শিশুরা প্রত্যেকেই এক একজন ভিন্ন ও নিজস্ব বৈশিষ্ঠে বিদ্যমান। প্রতিটা মানুষই শিশুকাল থেকেই ভিন্ন অবয়ব, ভিন্ন চিন্তা চেতনা, ভিন্ন দক্ষতা, মানসিকতা ও মননে বেড়ে ওঠে। কাজেই শিক্ষাও হওয়া উচিৎ প্রত্যেকটা সতন্ত্র মানুষের মেধা মনন দক্ষতা ও আগ্রহের কথা মাথায় রেখেই কিন্তু আমাদের দেশের শিশুশিক্ষায় এর কোনো প্রতিফলন নেই। সকলকেই ঢালাওভাবে একই ছাঁচে ফেলে গড়ে তোলার চেষ্টাকেই আমাদের শিশুশিক্ষা ব্যবস্থা বলে। কে কোন ক্ষেত্রে বেশি দক্ষ, কে কোন কাজে কতটা উপযোগী তা নিয়ে না ভেবে ঢালাওভাবে সকল শিশুকে একই ছাঁচে ঢেলে শেখানোর প্রতিযোগীতা চলতে থাকে। কাজেই ফলাফল হয় কখনও নেতিবাচক, কখনও কুলিয়ে উঠতে না পেরে হিমশিম খাওয়া কিংবা শূন্য আর কিছু কিছু হয় কার্য্যকরী। সবচেয়ে যে বড় ক্ষতিটা হয় যখন শিশু কোনো শিক্ষাগ্রহনে হিমশিম খায়, ব্যর্থ হয় তা শিশুমনের উপর চাপ ফেলে। এই ব্যবস্থা শিশুকে হীনমন্যতার মাঝে ফেলে দেয়। তাই শিক্ষাব্যবস্থায় আমার মতে সবার আগে যে বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে তা হলো-
১। প্রত্যেক শিক্ষার্থীর জন্য স্বতন্ত্র পরিকল্পনা ও পদ্ধতি
একটি ক্লাসে কখনই সকল শিক্ষার্থীকে আমরা সমান বয়সী, সমান শারীরিক ও মানসিক ক্ষমতার অধিকারী পাবো না। ভিন্ন ভিন্ন শারীরিক ও মানসিক ক্ষমতার শিক্ষার্থীরা একই ক্লাসে পড়ালেখা করে। সবার জন্য সকল অংক বা সাহিত্য বা যে কোনো বিষয় একই রকম সহজ বা কঠিন নয়। কোন শিক্ষার্থী যদি সকলের জন্য দেয় একটি নির্দিষ্ট কাজ করতে না পারে তবে শিক্ষক তার জন্য স্বতন্ত্র পরিকল্পনা করে থাকবেন এবং তার জন্য শিক্ষার্থীর ক্ষমতার ভিত্তিতে আলাদা টাস্ক ডিজাইন করবেন। এই ধরনের শিক্ষা ব্যবস্থা আমরা উন্নত দেশগুলির কিছু কিছু শিক্ষা ব্যবস্থায় দেখতে পারি যেমন ফিনল্যান্ড, জাপান বা পৃথিবীর আরও আরও দেশে। তবে এই ব্যপারে সঠিক পরিকল্পনা ও যথার্থ কর্মশালা বা প্রশিক্ষন প্রয়োজন। যথার্থ প্রশিক্ষন না পেলে কিংবা কিভাবে এই ধরনের লেসন প্ল্যান বানানো হবে, কি করে শিক্ষক সেটা একই সময় বা ভিন্ন সময়, একই ক্লাসরুম না ভিন্ন ক্লাসরুম ব্যবহার করে শিক্ষার্থীদেরকে শেখাবেন তা অবশ্যই শিক্ষককে জানতে হবে। তাই প্রাইমারী, প্রি প্রাইমারী সকল সেকশনেই যথার্থ শিক্ষক প্রশিক্ষন প্রয়োজন।
২। প্রচলিত নম্বর সিস্টেম পরিবর্তন বা বর্জন
আমরা ছোট থেকে শুনি আমাকে ১০০ পেতে হবে। আমাকে প্রথম হতে হবে। কোমলমতী শিশুর মস্তিস্কে এই ধরনের কমান্ড কি রকম চাপের সৃষ্টি করে তা মনে হয় কাউকেই বলে বুঝাতে হবে না কারণ আমরা প্রত্যেকেই কম বেশি এই অভিজ্ঞতার ভেতরে দিয়ে এইখানে আজ এসেছি। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এই সিস্টেমটির পরিবর্তন বা বর্জন প্রয়োজন। কারণ এই চাপের পরিবর্তে আমরা যদি শিশুদেরকে মুক্ত ও আনন্দময় মনে তাদের শিক্ষা গ্রহন করাতে পারি তো সেইটিই বেশি কার্য্যকরী হবে। এই কারণে শিশুস্কুলে কোনো মার্কস সিস্টেম কাম্য নয়। অনেক ভালো স্কুলগুলোতে শিশুদের জন্য কোনো পরীক্ষা বা মার্কিং করা হয় না। শুধুমাত্র মৌখিক ফিডব্যাক ও প্রশংসাবাক্যই তাদেরকে কোনো লেসন বা টাস্ক সুষ্ঠভাবে শিখতে সাহায্য করে।
৩। শিশুদের জন্য কোন নির্দিষ্ট স্কুল ইউনিফর্ম আসলে দরকার নেই
আমাদের দেশের অনেক স্কুলেই আমরা দেখি ছোট ছোট বাচ্চারা আটোসাটো ইউনিফর্ম, বো টাই, নেকটাই পরে এই গরমেও হাসফাক লাগিয়ে স্কুলে যাচ্ছে। কিন্তু ছোট বয়সে বাচ্চাদের এমন ইউনিফর্মের আসলে প্রয়োজনই নেই। অসস্তিকর আটোসাটো পোশাকে ধরে বেঁধে স্কুলে না পাঠিয়ে বরং আরামদায়ক ও সস্তিকর পোশাকে স্কুলে পাঠালেই মনে হয় সস্তিদায়ক অবস্থাটা শিশুর শিক্ষা গ্রহনের জন্য বেশি উপযোগী হবে। কাজেই বাচ্চাদেরকে নির্দিষ্ট ইউনিফর্মের মাঝে না বেঁধে আরামদায়ক পোষাকে স্কুলে আসতে দেওয়া উচিৎ।
৪। ক্লাসরুম এবং ক্লাসের আসবাবপত্র
আমাদের স্কুলগুলোতে চেয়ার বা বেঞ্চে বসতে হয়। তাই শিশুদের উপযোগী নিরাপদ ও তাদের উপযোগী উচ্চতার ছোট ছোট চেয়ার টেবিল কার্পেট সোফা ও জিরিয়ে নেবার স্থানও থাকা উচিৎ। আমাদের দেশের সাধারণ বেঞ্চ টেবিল চেয়ার শিশুদের জন্য আসলে তেমন উপযোগী নয়। তাই একটি শিশুর সুবিধার কথা মাথায় রেখেই স্কুলের আসবাবপত্র ডিজাইন করতে হবে। শিশু যেন হাতের নাগালে তার ব্যাগ রাখার তাকটি পায়। খেলনার বাক্সটি হাতের কাছে পায় সেসব ভাবতে হবে। চেয়ারও বেঞ্চের পাশাপাশি তারা যেন হাতের কাছে গল্পের বই,ছবির বই এসবও পায় সেই ব্যবস্থা রাখতে হবে। রিডিং কর্ণার, পেইন্টিং কর্ণার, টয় কর্ণার এসবের ব্যবস্থাও ক্লাসরুমে থাকা জরুরী। তবে এই সাথে আরও প্রয়োজন শিশুদের এই সকল জিনিস ব্যবহারের ক্ষেত্রে সঠিক নির্দেশনা।
৫। শিক্ষার্থীদের জন্য প্রতিটা ক্লাসের ফাকে বিরতী
প্রতিটা ক্লাসের ফাঁকে যদি কিছুটা বিরতি থাকে তবে শিক্ষার্থীরা পানি পান, টয়লেট করা বা কিছু খেয়ে নেবার সময় পায়। এটা যেমনই রিফ্রেসমেন্টের কাজ করে তেমনই উদ্যম বাড়িয়ে তোলে। এছাড়াও ফাস্ট লার্নার বা দ্রুত কাজ শেষ করে ফেলা শিক্ষার্থীরা তাদের কাজ শেষে সহপাঠিদের কাজ শেষ হবার জন্য অপেক্ষা না করে নিজেরাই স্টোরী বুক, বা পিকচার বুক দেখতে পারে তার জন্য ব্যবস্থা রাখতে হবে। পেইন্টিং বা ড্রইং কর্নারে কিছু আঁকতে পারে। এতে তাদের সময়টাও যেমন কাজে লাগাতে পারে তেমনই সৃজনশীল প্রতিভারও বিকাশ ঘটে। সুষ্ঠ বিদ্যালয়গুলিতে শিশুদের এই ধরণের কাজগুলির পাশাপাশি কনস্ট্রাকটিভ কিছু শিক্ষাব্যবস্থারও আয়োজন থাকে।
৬।ডিটেইল এবং সেল্ফ কনফিডেন্স বাড়িয়ে তোলা
একটি টপিক নিয়ে শিক্ষার্থীরা নানা ভাবে শিখবে। প্রশ্নত্তর পর্ব, পেয়ার লার্নিং, গ্রুপ লার্নিং এর মাধ্যমে ছাত্র-ছাত্রীরা নিজেরাই তাদের জন্য প্রশ্ন তৈরি করবে এবং সেই প্রশ্নের উত্তর ও নিজেরাই খুঁজে বের করবে। অনেক কিছুই শিশুরা অনেক সময় একা শিখতে পারে না। কিন্তু সহপাঠিদেরকে দেখে বা শুনে বা তাদের সহায়তায় ঠিক ঠিক শিখে ফেলে। তাই মাঝে মাঝে পেয়ার লার্নিং বা পার্শ্ববর্তী সহপাঠির সাথে আলোচনা বা গল্পের মাধ্যমে শেখার জন্য কিছু টপিক তুলে দিতে হবে। অনেক শিশু একা না শিখলেও গ্রুপ ওয়ার্কে শিখে ফেলে। গ্রুপ ওয়ার্ক এমন এক পদ্ধতি যেখানে সবচাইতে কনফিডেন্সলেস শিশুটিও নিজেকে একা মনে করে না। সে ভাবে তার সাপোর্ট আছে। সে না পারলেও তার বন্ধুরা সবাই মিলে একটা কিছু পারবেই। এই ধরনের কাজ শুধু বড় শিক্ষার্থীদের দ্বারাই সম্ভব তা কিন্তু নয়, শিশু শ্রেনী বা প্লে গ্রুপের শিক্ষার্থী থেকেও তাদের লেভেলে উপযুক্ত প্রশিক্ষন ও শিক্ষকের সৃজনশীলতা দিয়ে করানো সম্ভব।
৭।পুঁথিগত বিদ্যার চাইতে জীবনের জন্য প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো বিশেষ জরুরী
শিশুদেরকে সাঁতার, এক্সারসাইজ এসব প্রয়োজনীয় কাজের পাশাপাশি গার্ডেনিং,পশুপাখির প্রতি ভালোবাসা ও যত্ন, মানবিকতার শিক্ষা দিতে হবে। আজকাল অনেক স্কুলেই এসব শিক্ষাব্যবস্থা থাকে।নৈতিকতা, সমাজের নিয়ম কানুন ও নিজেকে রক্ষার কৌশল এসব শিক্ষার জন্য নানা রকম ম্যুভি ডকুমেন্টারীর ব্যবস্থা থাকতে হবে। শিক্ষা সফরের বাবস্থা করতে হবে এবং ফিডব্যাক নিতে হবে। বাচ্চার পোর্টফলিও রাখাও বিশেষ প্রয়োজন। এ বিষয়ে আমরা জাপানের শিক্ষাব্যবস্থার দিকে খেয়াল করলেই কিছু হদিস পেতে পারি-
জাপানের শিক্ষা ব্যবস্থা:
জাপানের অপরাধ শতকরায় শূন্য। জাপানিদের এমন সুন্দর সমাজব্যবস্থার ভিত্তি আসলে কি? বা আপনি যদি অন্যভাবে প্রশ্ন করেন তাদের এমন চরিত্র গঠনের ভিত্তি কোথায়? তাহলে একবাক্যে বলতে হয় সেটা শেখানো হয় তাদের স্কুলগুলোতে। তাদের স্কুলে অনেক কিছু শেখানো হয়। যার মধ্যে গণিত, ভাষা, নৈতিকতা ইত্যাদি। জাপানের স্কুলগুলোতে জীবনমুখী শিক্ষা দেয়া হয়। শেখানো হয় সামাজিকতা, ন্যায়-অন্যায়, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা ইত্যাদি। ......
দিনের শুরুতে প্রধান শিক্ষক সবার আগে স্কুলে আসেন। তিনি স্কুল গেটে দাঁড়িয়ে সব ছাত্র-ছাত্রীকে অভ্যর্থনা জানান। শিক্ষার্থীরা স্কুলে ঢুকে বিভিন্ন কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেন। ক্লাস শুরু হওয়ার আগ পর্যন্ত কেউ খেলাধুলা, কেউ বিভিন্ন প্রোগ্রামিং কার্যক্রম, কেউ হ্যান্ড ক্রাফটে কাজ করে। ক্লাস শুরু হওয়ার ইঙ্গিতস্বরূপ এক ধরনের বিশেষ মিউজিক বেজে উঠে। তখন সব ছাত্র-ছাত্রী দলবেঁধে ওয়াশরুমে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হয়ে শ্রেণিকক্ষে ফেরে।
প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নানারকমের সাবজেক্ট পড়ানো হয়। যেমন জাপানি ভাষা, গণিত, ইতিহাস, শরীরচর্চা, সংগীত ও শিল্প, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, বিজ্ঞান, অংকন বিদ্যা, নৈতিক শিক্ষা ইত্যাদি। এ সব ক্লাসের সঙ্গে সঙ্গে আরও বিশেষ কিছু ক্লাস এবং সমন্বিত পাঠ্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে হয় নিয়মিত। প্রতিটি ক্লাসে ৩০-৩৫ জন ছাত্র-ছাত্রী থাকে। প্রতিটি ক্লাসে একজন শিক্ষক থাকেন। সংগীত আর শিল্পকলা এবং শারীরিক শিক্ষার জন্য একজন বিশেষজ্ঞ শিক্ষক থাকেন।জাপানের স্কুলগুলোতে শিশুদের কিছু বৈশিষ্ট্যপূর্ণ কাজ করতে হয়। যেমন সকালের সমাবেশের সময় শৃঙ্খলা রক্ষার দায়িত্ব পালন করা, শ্রেণিকক্ষে ছাত্র-ছাত্রীদের হাজিরা ক্ষেত্রে শিক্ষককে সহযোগিতা করা, বাগানের পরিচর্যা করা, খাবার পরিবেশন করা এবং খাবারের পর পরিষ্কার করা ইত্যাদি।
জাপানের প্রাথমিক স্কুলগুলোতে দুপুরের খাবার বিদ্যালয় থেকে পরিবেশন করা হয়। খাদ্য তালিকা এবং খাবারের গুণগত মান নিশ্চিত করার জন্য একজন ডায়েটেশিয়ান থাকেন। ডায়েটেশিয়ান বাচ্চাদের কোন্ খাদ্যের কতটুকু ক্যালরি প্রয়োজন তা হিসাব করে ব্যালান্সড ডায়েট তৈরি করেন যা দেখে দক্ষ এবং প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত বাবুর্চিরা খাবার রান্না করেন। প্রত্যেকটি স্কুলে নিজস্ব রান্নাঘর রয়েছে।
দুপুরের খাবারের সময় ছাত্র-ছাত্রীরা সংগীতের তালে তালে খুব আনন্দের সঙ্গে বিশেষ ধরনের পোশাক পরে সারিবদ্ধভাবে রান্নাঘরের সামনে গিয়ে দাঁড়িয়ে শ্রেণিভিত্তিকভাবে নিজেদের উপস্থিতির জানান দেয়। তখন রান্নাঘরের দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিগণ খাবার বুঝিয়ে দেন। খাবার নিয়ে ক্লাসে ফিরে ছাত্র-ছাত্রী নিজেরাই খাবার পরিবেশন করে।
খাবার গ্রহণের সময় শিশুদের জানানো হয়, তারা কি খাচ্ছে এবং কেন খাচ্ছে ইত্যাদি। শেখানো হয় যিনি খাদ্য রান্না করেছেন তার প্রশংসা কিভাবে করতে হয়। খাবার গ্রহণের সময়টাতে শিশুরা প্রার্থনা শুরু করে এবং খাবার শেষেও। খাবার গ্রহণ শেষ হলে শ্রেণিকক্ষ পরিষ্কার করে আবার শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়। স্কুলে খাদ্যগ্রহণ করার জন্য রয়েছে সুন্দর ব্যবস্থাপনা। খাবার গ্রহণের আগে এবং পরে যাতে শিশুরা হাত ধুতে পারে তার জন্য প্রতিটি ক্লাসরুমে এবং ফ্লোরে রয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা। বেসিন এবং পানির ট্যাপগুলো শিশুদের বয়স বিবেচনার উপর ভিত্তি করে বসানো হয়।
জাপানে প্রায়ই বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ ঘটে। তা ক্লাসগুলোতে গুরুত্ব দিয়ে দুর্যোগকালীন কি করণীয় এবং কি বর্জনীয় তা শেখানো হয়। ভূমিকম্প শব্দ উচ্চারণ করামাত্র দেখলাম ছাত্র-ছাত্রীরা ক্লাসের টেবিলের নিচে আশ্রয় নিল। সেখানে ছাত্রদের একটি ছক দেখিয়ে জিজ্ঞাসা করা হয় তুমি দুর্যোগকালীন উক্ত তালিকার কি কি সঙ্গে নিয়ে নিরাপদ আশ্রয়ে ছুটবে?প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে নিয়মিত শারীরিক ব্যায়াম করানো হয়। সেখানে তারা ফুটবল, দৌড়সহ বিভিন্ন ধরনের খেলাধুলায় অংশগ্রহণ করে। বিশেষ ধরনের ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য আলাদা ক্লাসরুমের ব্যবস্থা রয়েছে। কোনো ছাত্র-ছাত্রী লেখাপড়ায় ভালো না করলে তাকে সেই বিশেষ রুমে নিয়ে আলাদাভাবে যত্ন নিয়ে পড়ানো হয়।প্রতিটি বিদ্যালয়ে প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র রয়েছে। স্বাস্থ্যকেন্দ্রে একজন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নার্স থাকে। দায়িত্বপ্রাপ্ত নার্স শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্যাগুলো দেখেন।প্রতিদিন ক্লাস শেষে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন ধরনের ক্লাব এক্টিভিটিস কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করে। সেখানে তারা বিভিন্ন অংকন, বিভিন্ন কোম্পানির লোগো সংগ্রহ করা, জন্মদিন পালন ইত্যাদি কাজ করে। সর্বোচ্চ সংখ্যক লোগো সংগ্রহকারীকে পুরস্কৃত করা হয়।
ডা. নাজমুল ইসলাম, প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক, অ আ ক খ স্কুল, ৮ই জানুয়ারী ২০২০ যুগান্তর
৮। হোমওয়ার্কের চাপ কমাতে হবে
শিশুদের বাসায় বিশ্রাম নেওয়া ও পরিবারের সাথে বেশি সময় কাটানো উচিত তাই তাদের হোমওয়ার্ক বা বাড়ির কাজ খুব একটা দেওয়া উচিৎ না। দিলেও তা যেন সহজ ও মজার হয়। অনেক সময় আমাদের দেশে হোমওয়ার্কের চাপের পাশাপাশি হোমওয়ার্ক দেবার ক্ষেত্রেও কিছু ভুল থেকে যায়। স্কুলে যা শেখানো হয়নি তা দিয়ে শিক্ষার্থীর নিজের মেধাশক্তির উপর নির্ভর করে হোমওয়ার্কের বোঝা চাপিয়ে দেওয়া হয়। এমন শিক্ষা ব্যবস্থা কখনও কাম্য নয়। হোমওয়ার্ক হতে হবে আনন্দময় তা হতে পারে নিজের ভাবনা চিন্তায় কোনো গল্প লেখা বা ছবি আঁকা বা নিজের মত করে কিছু বানিয়ে আনা বা বাড়ির লোকজনের সাক্ষাৎকার বা ফ্যামিলী ট্রি জানা ইত্যাদি ইত্যাদি।
৯। শিক্ষা সম্পূর্ণভাবে নিরখরচায় হওয়া উচিৎ
অনেক উন্নত দেশে শিক্ষাব্যবস্থার সমস্ত সুযোগ-সুবিধা বিনামূল্যে প্রদান করা হয়। মধ্যাহ্নভোজ, টিফিন, বই-খাতা-স্টেশনারি, শিক্ষা সফর এমনকি স্কুলে যাতায়াত সব বিনামূল্যে শিক্ষার্থীরা পেয়ে থাকেন কিন্তু আমাদের দেশে প্রাইমারী লেভেলে সরকারীভাবে শিক্ষাব্যবস্থার কিছু খরচ বিনামূল্যে হলেও তা অপ্রতুল বলেই আমার মনে হয়। শিক্ষাব্যবস্থার কাঠামোটাই সঠিকভাবে প্রয়োগ করতে হবে। গ্রামে গঞ্জে প্রত্যন্ত অঞ্চলে শিশুর জন্য সঠিক শিক্ষা পৌছে দিতে হবে। সকল শিশু যেন আনন্দ ও সুব্যবস্থার মাঝে সঠিক শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে সেই দিকে নজর দিতে হবে।
১০। দক্ষ ও নিবেদিত শিক্ষক
এসব কিছুর উপরে যেটা প্রয়োজন সেটা একজন দক্ষ শিক্ষক। শুধু সিস্টেম বই খাতার উন্নয়নে কোনো কিছুই সফল হবে না যদি এক একজন দক্ষ শিক্ষক তৈরী না হয়। এই দক্ষ শিক্ষক তৈরীতে প্রয়োজন সঠিক প্রশিক্ষন এবং হাতে কলমে শিক্ষা। আমার মতে শুধু ট্রেইনিংই যথেষ্ঠ নয় একজন শিক্ষক অন্তত ৬ মাস একজন সিনিয়র বা অভিজ্ঞ এবং অবশ্য দক্ষ শিক্ষকের সাথে হাতে কলমে শিশুদের সাথে কাজ করার পরই তার শিক্ষকতার পদটি নিশ্চিৎ করা উচিৎ।
ফিনল্যান্ড সমাজ ও রাষ্ট্র ব্যবস্থা অনেকটাই অন্যরকম। যাকে অনেকে ন্যানি স্টেট বলে থাকে। এই ন্যানি স্টেট হলো, এমন একটা সমাজ ব্যবস্থা যেখানে জন্মের আগে থেকে মৃত্যু পর্যন্ত রাষ্ট্রই তাদের নাগরিকদের দেখভাল করতে থাকে।সন্তান জন্মের আগেই ফিনিশ সরকার সমস্ত হবু মা বাবাদের এই ধরনের একটা বেবি বক্স পাঠিয়ে দেয়।
এতে একবছর পর্যন্ত বাচ্চার যা যা দরকার তার প্রায় সব কিছুই থাকে।
স্কুল শুরু করার আগেই ফিনিশ বাচ্চারা শারীরিক ও মানসিক ভাবে একদম তরতাজা অবস্থায় থাকে। এরপর শুরু হয় আনন্দ পাঠ।
স্কুল চলাকালীন বাচ্চারা যাতে আনন্দের সাথে পড়াশোনা করতে পারে, সেই দিকেও কড়া নজর রাখা হয়। একদিকে যেমন প্রাথমিক শ্রেণী থেকেই উঁচু বেতনে খুব ভালো মানের শিক্ষক নিয়োগ করা হয়, অন্যদিকে পড়ার পাশাপাশি খেলাধুলোর জন্যেও প্রচুর সময় দেওয়া হয়। তাছাড়া হোমওয়ার্ক তো দেওয়াই হয় না, আর খুব দরকার না থাকলে বেশির ভাগ ক্লাসে পরীক্ষাও নেওয়া হয় না।
কোন দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা সবচেয়ে ভালো? কেন ভালো?
আমার মতে আনন্দময় এবং নৈতিক ও সুস্ঠভাবে জ্ঞানার্জনের জন্য পৃথিবীর সবচাই্তে উপোযোগী শিক্ষা ব্যবস্থা ফিনল্যান্ডের শিক্ষাব্যাবস্থাকে মনে হয়েছে। ফিনল্যান্ডের পড়ালেখা সম্পর্কে অনেক পড়েছি। টিচার্স ট্রেইনিং এ ডকুমেন্টারী দেখেছি। যদিও আমার লেখাটি শিশু শিক্ষা নিয়ে তারপরেও আমি আমার পড়া ফিনল্যান্ডের শিশুশিক্ষা থেকে উচ্চতর শিক্ষার প্রায় সম্পূর্ণ আইডিয়া পাওয়া যায় এমন একটি লেখা এখানে শেয়ার করছি। কিছু অংশ ছাড়া প্রায় পুরো লেখাটাই এখানে তুলে দিচ্ছি।
ফিনল্যান্ডের পড়াশোনা
ফিনল্যান্ডের অধিবাসীদের ফিনিশ বলা হয়ে থাকে। ফিনিশদের জন্য শিক্ষা ব্যবস্থা একেবারেই ফ্রি, মানে কোনো টাকা পয়সা দিতে হয় না। বলা চলে এদিক থেকে ফিনিশরা খুবই ভাগ্যবান। আর এদের শিক্ষার হার শত ভাগ। ফিনল্যান্ড পড়াশোনার মানের ব্যাপারে আপসহীন। ছোটকালে এদের পড়াশোনা শুরু হয় আমাদের দেশের বাল্যশিক্ষার মতো করে। যেটাকে এখানে বলা হয়ে থাকে ‘পাইভাকোতি’। যার বাংলা হচ্ছে ‘দিবা যত্নকেন্দ্র’। ৩ বছর বয়স থেকে বাচ্চাদের পাইভাকোতিতে দিতে হয়। পাইভাকোতিতে খেলাধুলা, খাওয়া দাওয়া, ঘুমানো আর আধো আধো ভাষা শিক্ষা শুরু হয়।
নিয়মিত বাচ্চাদের বাবা-মায়ের অনুমতিক্রমে ঘুরতে নেওয়া হয় বিভিন্ন জায়গায়। এদের এক ধরনের বিশেষ গাউন পরানো হয় কোথাও নিয়ে যাওয়ার সময়। গাউন দেখেই সবাই বুঝতে পারে এরা কে। এদের ট্রাফিক সিগন্যাল কী সেটা শেখানো হয় ব্যবহারিকভাবেই এবং এভাবেই এরা সিগন্যাল মানতে শেখে। এদের জন্য বাস, ট্রাম ও মেট্রো এসব যানবাহন ফ্রি। আর দলবাঁধা অবস্থায় ওই বিশেষ গাউন থাকলে বাস, ট্রাম ও মেট্রোর চালকেরা বিশেষভাবে সতর্ক থাকেন। যাতে করে বাচ্চাদের অসুবিধা না হয়। কারণ বাচ্চাদের অসুবিধা হলে চালকেরা আইনি ঝামেলায় পড়তে পারেন। বাচ্চারা যখন বাবা-মায়ের সঙ্গে ট্রেনে চলাফেরা করে তখন কন্ডাক্টরেরা বাচ্চাদের বিশেষ টিকিট দেয়, যেটা ফ্রি। এর অর্থ হলো বড় হয়ে বাচ্চারা যেন টিকিট কিনতে অভ্যস্থ হয়।
এই দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সরকারি। বাচ্চারা হেসেখেলে পড়াশোনা করে এখানে। নাই কোনো হোমওয়ার্ক আর নাই কোনো ভারী ব্যাগ বহন করার ঝামেলা। ন্যায়, নীতি, সততা, মানবিকতা সবকিছুই এদের শেখানো হয় ব্যবহারিকভাবে।
পাইভাকোতি শেষ করে ছয় বছর বয়স থেকে প্রাইমারি স্কুল শুরু করে। এখানে প্রাইমারি স্কুলকে বলা হয় ‘পেরুছ কৌলু’। কৌলু শব্দের অর্থ হচ্ছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। আর হাইস্কুলকে বলা হয় ‘লুকিও’। এখানকার হাইস্কুল হচ্ছে বাংলাদেশের এইচএসসি সমমানের। প্রতি বছর এপ্রিলের ৩০ তারিখ ও পয়লা মেতে এরা লুকিও গ্র্যাজুয়েশন উদ্যাপন করে সাদা ক্যাপ পরে। বয়স্ক মানুষজনও তাদের ক্যাপ নিয়ে নতুনদের সঙ্গে শামিল হয়। ৩০ এপ্রিল বিকেলবেলা থেকে বড় আকারে সারা ফিনল্যান্ডে এই অনুষ্ঠান হয়।
লুকিও শেষ করে ব্যাচেলর ডিগ্রি শুরুর পালা। ব্যাচেলর ডিগ্রিকে এখানে বলা হয় ‘কান্ডি তুতকিমুস’। দুই ধরনের প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হতে পারে তারা। ইউনিভার্সিটি অথবা অ্যাপ্লাইড সায়েন্স ইউনিভার্সিটিতে। ইউনিভার্সিটির পড়াশোনা থিওরি আর অ্যাপ্লাইড সায়েন্স ইউনিভার্সিটিতে ব্যাবহারিক বেশি। সাড়ে তিন থেকে চার বছরের কোর্স। ডিসেম্বর আর জুলাই ছাড়া প্রতি মাসেই গ্র্যাজুয়েশন হয় একটি করে। চার বছরের কোর্স কেউ তিন বছরে করে। আবার কেউ করে আরও বেশি সময় নিয়ে। এটা স্টুডেন্টদের ওপর নির্ভর করে। যারা বেশি সময় নিয়ে করে তারা মূলত পার্ট টাইম জব করে। এখানে গ্র্যাজুয়েশনের জন্য কোনো গাউন নাই। সার্টিফিকেটের পাশাপাশি সবাইকে একটিকরে গোলাপ ফুল ধরিয়ে দেওয়া হয়। গ্র্যাজুয়েশনে কেউ উপস্থিত না থাকতে পারলে তার বাসায় সার্টিফিকেট পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এখানে পাস করতে হলে শতকরা ৫০ ভাগ মার্ক পেতে হবে।
অ্যাপ্লাইড সায়েন্স ইউনিভার্সিটিতে শিক্ষকের নিয়োগ দেওয়া হয় মূলত অল্প সময়ের জন্য। এদের চাকরি নির্ভর করে স্টুডেন্টদের মতামতের ওপর। প্রতিটি কোর্স শেষে স্টুডেন্টদের কাছ থেকে মতামত নেওয়া হয়। খারাপ মতামত পেলে ওই শিক্ষকের চাকরি থাকে না আর। মানে হচ্ছে এরা যদি ভালো না পড়ায় তাহলে তার চাকরি আর থাকবে না বা মেয়াদ আর নবায়ন করা হবে না। তাই সব সময় শিক্ষকেরা ভালো পড়াশোনা করানোর চেষ্টা করেন। আর এখানে ভালো শিক্ষক হতে হলে ভালো স্টুডেন্ট হতে হবে। সবাই চাইলেই শিক্ষক হতে পারেন না। যারা শিক্ষক হতে চান তাদের প্রতি ১০ জনে একজন শিক্ষক হওয়ার সুযোগ পান। আর ইউনিভার্সিটিতে শুধুমাত্র পিএইচডি ডিগ্রিধারীদের নিয়োগ দেওয়া হয় শিক্ষক ও গবেষক হিসেবে। শিক্ষকতার চেয়ে গবেষণার দিকে এদের মনোযোগ বেশি থাকে। যার রিসার্চ পেপার যত ভালো জার্নালে প্রকাশিত হবে তার তত দাম বেশি। আর এর মানে হচ্ছে ওই শিক্ষকের পরবর্তীতে বড় আকারের ফান্ড। দুঃখ জনক হলেও সত্য আমাদের বাংলাদেশে এর কোনোটাই নাই।
ব্যাচেলর ডিগ্রির পরে মাস্টার্স ডিগ্রিকে ফিনিশ ভাষায় বলা হয় ‘মাইসতেরি’। মাস্টার্স ডিগ্রি সাধারণত ২ বছরের হয়। ফিনল্যান্ডে বাংলাদেশের মতো এমএ বা এমকম নাই। সব মাস্টার্সই এমএসসি। এর কারণ হচ্ছে সবার জন্য উচ্চমানের গবেষণাপত্র বা থিসিস বাধ্যতামূলক। এখানে ব্যাচেলরেও থিসিস করতে হয়। বলাবাহুল্য ফিনল্যান্ডে এমবিএ করতে হলে প্রচুর টাকার দরকার। আর এর জন্য কমপক্ষে তিন বছরের চাকরির অভিজ্ঞতা দরকার। কারণ এটা প্রফেশনাল ডিগ্রি। আর আমাদের দেশে যে এমবিএ করা হয় সেটা মূলত একাডেমিক ডিগ্রি। খুব কম ক্ষেত্রেই প্রফেশনাল ডিগ্রি অফার করা হয় বাংলাদেশে।
লক্ষণীয় বিষয় হচ্ছে, এখানে যে শিক্ষক পড়ান তিনি নিজেই প্রশ্ন করেন, আবার নিজেই খাতা দেখেন। একটিই প্রশ্ন সেট। আমাদের দেশের মতো বিভিন্ন প্রশ্ন সেট নাই। আর আমাদের জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের কথা নাই বা বললাম। ফিনল্যান্ডে একজন শিক্ষকের সঙ্গে একজন ছাত্রের যতই ভালো সম্পর্ক হোক না কেন, ওই শিক্ষক কখনোই প্রশ্ন সম্পর্কে ধারণা দেন না। আর কাউকে কখনো কম বা বেশি নম্বর দেওয়া হয় না। একবার আমি এক বিষয়ে পেয়েছিলাম ৭৯। আর ১ নম্বর হলে আমার গ্রেড বাড়ত। শিক্ষককে রিভিউ করতে বললাম আমার উত্তরপত্র। এক দিন পরে আমাকে মেইল দিয়ে জানিয়ে দিলেন যে, তিনি আমার উত্তরপত্র রিভিউ করেছে এবং আমি যেটা পাওয়ার যোগ্য সেটাই পেয়েছি। নীতির প্রশ্নে এখানকার শিক্ষকেরা আপসহীন। যার ফলে বলা চলে সবাই নীতিবান।
ফিনল্যান্ডে পড়াশোনা করার জন্য শুধুমাত্র খাতা ও কলম ছাড়া আর কিছুই কিনতে হয় না। বই, ইন্টারনেট, কম্পিউটার সব ফ্রি ব্যবহার করা যায়। এখানকার বিদ্যালয়গুলোতে ১০০ এমবিপিএস ইন্টারনেট স্পিড। সবাই ক্লাস শেষে লাইব্রেরিতে গিয়ে ক্লাসের অ্যাসাইনমেন্ট বা গ্রুপ ওয়ার্ক শেষ করে। কম্পিউটার ও বইয়ের জন্য রয়েছে প্রতিটি স্কুল-ইউনিভার্সিটিতে লাইব্রেরি। বই, জার্নাল বা কোনো রিসার্চ পেপার ১৪ দিনের জন্য ধার নেওয়া যায়। কেউ ১৪ দিনের বেশি বই রাখলে জরিমানা গুনতে হয়। লাইব্রেরিতে কোনো বই না পাওয়া গেলে লাইব্রেরিয়ানকে বললে কিছুদিনের মধ্যে বই হাজির। হয়তো অন্য কোনো লাইব্রেরি থেকে ধার করে আনা হয় অথবা নতুন কেনা হয়।
আমি একবার আমার ওয়ালেট হারিয়েছিলাম ইউনিভার্সিটিতে। ওয়ালেটে ছিল ক্যাশ ৭০ ইউরো, আইডি কার্ড, এটিএম কার্ড, বাস কার্ড, লাইব্রেরি কার্ড, ওয়ার্ক আইডি। ক্লাস শেষে বাস ধরতে স্টপেজে যাওয়ার সময় খেয়াল করলাম আমার ওয়ালেট নাই। আবার ইউনিভার্সিটিতে ফিরলাম। সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজ করলাম। প্রায় আধা ঘণ্টা পর ইউনিভার্সিটির ইনফোতে গেলাম লস্ট রিপোর্ট করতে। আমি ইনফোতে আসার আগেই কেউ একজন আমার ওই ওয়ালেট পেয়ে ফেরত দেন ইনফোতে। তারা আমার আইডি চেক করার জন্য আমার ওয়ালেট খুলে আমার আইডি দেখেন। নাম দিয়ে ইউনিভার্সিটির ডেটাবেইসে আমার দেশ খুঁজে বের করেন। গুগলে বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন ফিনল্যান্ড খুঁজে বের করেন।
এখানকার ছাত্র সংগঠনগুলোতে নেই কোনো মারামারি, খুনখারাবি বা টেন্ডারবাজি। প্রতিটি ইউনিভার্সিটির স্টুডেন্ট কাউন্সিলরেরা পরবর্তী নীতিনির্ধারণ করে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানদের সঙ্গে নিয়মিত মিটিং করে, আলাপ আলোচনা করে পরবর্তী নীতিনির্ধারণ করা হয়ে থাকে। এরপরে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে সামারি পাঠানো হয়।
ফিনল্যান্ডের স্টুডেন্টরা অনেক ছুটি পেয়ে থাকে। গ্রীষ্মে তিন মাস জুন, জুলাই আর আগস্ট। আর ক্রিসমাসে প্রায় মাসখানিক। সব মিলিয়ে চার মাসের মতো ছুটি থাকে। গ্রীষ্মের ছুটিতে প্রায় সবাই ফুল টাইম কাজ করে। কেউ কেউ ভ্রমণে বের হয়। গ্রীষ্মে এখনকার আবহাওয়া থাকে চমৎকার। সব সময় থাকে সূর্যের আলো। গ্রীষ্মে সূর্য উদয় হয় রাত আড়াইটার পর আর অস্ত যায় রাত সাড়ে এগারোটার পর। ২৩ জুন সবচেয়ে বড় দিন। এই দিনে উত্তর ফিনল্যান্ডে (রোভানিয়েমি) সূর্য অস্ত যায় না। গ্রীষ্মে রমজান পালন করা বেশি কষ্টকর এখানে। অন্যদিকে, শীতকালে থাকে প্রচণ্ড ঠান্ডা। নভেম্বর ও ডিসেম্বর থাকে সবচেয়ে অন্ধকারাচ্ছন্ন। দিনের আলো থাকে প্রায় আড়াই থেকে তিন ঘণ্টার মতো। এই সময় সূর্যের দেখা পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার। জানুয়ারি থেকে আস্তে আস্তে দিনের আলোর পরিমাণ বাড়তে থাকে। ফেব্রুয়ারি থাকে সবচেয়ে ঠান্ডা। সব লেকের পানি বরফে পরিণত হয় এই সময়ে। এপ্রিলের শেষ দিক থেকে বরফ গলতে থাকে। মে মাসে স্প্রিং। জুন থেকে ছুটি শুরু।
আমি ফিনল্যান্ডে ব্যাচেলর (বিবিএ) ও মাস্টার্স (এমএসসি) ডিগ্রি করেছি। ব্যাচেলর ডিগ্রি হেসেখেলে করা গেলেও মাস্টার্সে প্রচুর সময় দিতে হয়। থাকার উদ্দেশ্য নিয়ে আসিনি। এসেছিলাম পড়াশোনা করতে। টাকা পয়সা দেইনি বরং পেয়েছি। ফিনল্যান্ডকে ধন্যবাদ দিতেই হয়। আর একটা বিষয় হলো, সবার প্রতি সমান শ্রদ্ধা থেকে বলছি, অনেকেই বিদেশের মাটিতে পড়াশোনা করতে এসে পড়াশোনা না করে অড জব করেন। এটা শুধু ফিনল্যান্ডে না আরও অনেক দেশেই আছে এই প্রবণতা। আর এটাই আমাদের বাংলাদেশিদের এবং বাংলাদেশের জন্য ইমেজ সংকট বিদেশের মাটিতে।
লেখক- কফিল উদ্দিন আহমদ: রিসার্চ এনালিষ্ট, ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম, থমসন রয়টার্স ১৪ই মার্চ ২০১৭, প্রথম আলো, নাগরিক সংবাদের পাতা থেকে।
নর্থ লাইট স্কুল
সেরাদের দেশ সিঙ্গাপুর, কিন্তু তা হলে হেরো'রা যায় কোথায়? তাদের জন্যে আছে আশ্চর্য এক ইসকুল, যেখানে লুকোনো ক্যামেরায় ধরা হয় শুধুই ভালোর ছবি। শাস্তি নেই, আছে শুধু সম্মান আর আদর।
ক্লাসের সব ডেস্কের থেকে দূরে, আলাদা করে রাখা একটা ডেস্ক। এমন জায়গায়, যেখানে বসলে ক্লাসের অন্য ছেলেমেয়েদের সঙ্গে চোখাচোখি হওয়ারই সুযোগ নেই, কথা বলার সুযোগ দূরস্থান। স্কুলের প্রিন্সিপাল ঘুরিয়ে দেখাচ্ছিলেন সেই ক্লাসঘর। জানতে চাইলাম, নিশ্চয়ই খুব দুষ্টু ছেলেদের জন্য এই ব্যবস্থা? মধ্য চল্লিশের ভদ্রমহিলা হাসলেন। বললেন, এই স্কুলের সবাই তো দুষ্টু ছেলে। এই চেয়ারটা তাদের জন্য, যাদের বাড়িতে আজ কোনও একটা অশান্তি হয়েছে। সেই অশান্তির জন্য তার মন খারাপ। স্কুলে এসে এই চেয়ারে বসে পড়লেই অন্যরা বুঝতে পারে, তার আজ মন খারাপ। টিচাররাও বুঝতে পারেন। যে এই চেয়ারে এসে বসে, তাকে সবাই সেদিনের জন্য ছেড়ে দেয়। তার সঙ্গে কেউ ঝগড়া করে না, পড়া ধরে না।
মন খারাপের চেয়ার। সিঙ্গাপুরের নর্থ লাইট স্কুলে প্রথম পরিচয় হল এই চেয়ারটার সঙ্গেই।
এশিয়ার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আমরা ১৪ জন সাংবাদিক সিঙ্গাপুরে গিয়েছিলাম, সেখানকার এক সরকারি সংস্থার দেওয়া এশিয়া জার্নালিজম ফেলোশিপে। আয়োজকরা গোটা দেশ ঘুরিয়ে দেখাচ্ছিলেন আমাদের। দেশ মানে শুধু শহরটাই। ওইটুকুই দেশ। বছর ষাটেক আগেও শান্ত, অলস একটা মফস্সল ছিল সিঙ্গাপুর, জেলেদের বসতি। স্বাধীনতার পর হঠাৎই ঘুম ভেঙে উঠল যেন, চড়চড় করে উন্নতি, ভোল বদলে শহরটা হয়ে উঠল দুনিয়ার আধুনিকতম শহরগুলোর একটা। এখন গোটা দুনিয়ার ব্যাঙ্কের সদর দফতর এই শহরে, এখানকার চাঙ্গি এয়ারপোর্ট বিশ্বের ব্যস্ততম বিমানবন্দরের তালিকায় পড়ে। আর, এই মহাকাশযানের গতিতে উন্নতি করতে গেলে একটা শর্ত অপরিহার্য, এই শহরে শুধু সফলদেরই দাম। সে দাম অনেক, কিন্তু শুধু তাদের জন্য, যারা বাকিদের হারিয়ে দৌড়ে এক নম্বর হতে পারে। যারা সে দৌড়ে হেরে যায়, তারা হেরেই যায়। সেই হেরোদের কী হল, তা নিয়ে ভাবার সময় এই শহরের নেই। মনও কি আছে?
সেই দেশের একটা স্কুলে মন খারাপের চেয়ার? প্রথমে অবাক লাগে। তার পর এই স্কুলের গল্প শুনি। এই স্কুলটা হেরোদেরই স্কুল। এই নর্থ লাইট স্কুলে ভর্তি হওয়ার একটাই শর্ত অন্য কোনও স্কুলে দু’বার ফেল করতেই হবে! আর, সেই স্কুলের প্রিন্সিপালের থেকে লিখিয়ে আনতে হবে, এই ছেলেটার, বা মেয়েটার কিছু হওয়ার কোনও আশা নেই। ব্যস, এই অবস্থায় পৌঁছতে পারলেই হল নর্থ লাইট স্কুলের দরজা খোলা।
সেই খোলা দরজা দিয়ে কারা ঢুকে পড়ে এই স্কুলের মধ্যে? তারাই, যাদের প্রায়ই মন খারাপ করে স্কুলে আসতে হয়। মন খারাপের কারণ অনেক। হয়তো বাবা নেশার তাড়নায় স্কুলের মাইনে খরচ করে ফেলেছে, অথবা মা আর বাবার মধ্যে তুমুল মারপিট হয়েছে কাল রাতে, অথবা দাদাকে পুলিশ তুলে নিয়ে গিয়েছে ড্রাগ অ্যাবিউজের অভিযোগে। এই ছেলেমেয়েগুলো সিঙ্গাপুরের হেরে যাওয়া দুনিয়ার সন্তান। এদের মা-বাবা কেউ কোনও দৌড়ে জিততে পারেনি। তাই তারা এক কামরার ফ্ল্যাটে পাঁচ জন গাদাগাদি করে থাকে। সেই ঘরেই মারপিট দেখে, ঝগড়া দেখে, হয়তো কখনও কখনও ঘুমের ভান করে চোখের কোণ দিয়ে আদরও দেখে। যে দিন রাতের খাবার কেনার পয়সা থাকে না, সে দিন শুধু জল খেয়েই ঘুমিয়ে পড়ে। তাই সকালে উঠে এদের মন খারাপ হয়। স্বাভাবিক। যে দিন সেই মন খারাপের খুব বাড়াবাড়ি হয়, সে দিন ক্লাসঘরে আলাদা করে রাখা চেয়ারে এসে বসে পড়ে তারা। সে দিন তার সঙ্গে কেউ ঝগড়া করে না, কেউ পড়া ধরে না।
সিঙ্গাপুর দেশটা আশ্চর্য। সেখানে প্রতি রাস্তায়, প্রতি মোড়ে, প্রত্যেক অফিসে-স্কুলে-মেট্রো স্টেশনে ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরা বসানো। সারাক্ষণ প্রশাসনের চোখ নজর রাখে সবার ওপর। সামান্যতম বেচালও ধরা পড়তে বাধ্য। আর তার শাস্তিও মারাত্মক। আমরা তখনও সিঙ্গাপুরেই এক দিন কাগজে পড়লাম, সরকারি সম্পত্তির ওপর রং লেপে দেওয়ার শাস্তি হয়েছে এক জনের। পনেরো ঘা চাবুক! আঁতকে উঠবেন না। সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়ার মতো কয়েকটি দেশে চাবুক বা বেত্রাঘাত বেশ প্রচলিত শাস্তি। আর এই শাস্তির আদেশ দেয় আদালতই।
নর্থ লাইট স্কুলেও ক্যামেরা বসানো আছে। প্রত্যেক ক্লাসঘরে, প্রতিটি সিঁড়িতে। সেই ক্যামেরা রেকর্ড করে চলেছে ছাত্রদের সব চালচলন। কিন্তু, এই স্কুলের নিয়ম আলাদা। এখানে ছাত্রদের খারাপ আচরণগুলোকে পাত্তা দেওয়া হয় না। বেছে নেওয়া হয় শুধু ভাল আচরণগুলো। আর তার জন্য পুরস্কারেরও ব্যবস্থা আছে। প্রতিটি ক্যামেরার তলায় টাঙানো বোর্ডে লেখা আছে, ‘এই ক্যামেরায় তোমাদের সব ভাল জিনিস রেকর্ড হয়ে থাকছে’। যে ছেলেমেয়েগুলো বাড়িতে শুধু অভাব দেখে, হিংস্রতা দেখে, ঝগড়া দেখে তারা এই ক্যামেরার সামনে এসে কেমন করে যেন বদলে যেতে থাকে। স্কুলে ভর্তি হওয়ার পরেই যে ছেলেটা রেগে গিয়ে কাচের জানালা ভেঙে দিয়েছিল, সেই ছেলেটাই নিজের রুমাল বার করে মুছে দেয় দেওয়ালে লেগে থাকা দাগ। খারাপ আচরণের জন্য শাস্তি হয় না, অথচ ভাল আচরণের জন্য সবার সামনে প্রশংসা পাওয়া যায় এই বোধটা যখন মনে বসে যায়, তখনই ভিতর থেকে বদলে যেতে থাকে তারা। এক জন নয়, সবাই। সব্বাই। তার পর ক্যামেরা থাক আর না-ই থাক, সেই ভাল আচরণগুলো সঙ্গে থেকে যায়। হয়তো আজীবন থাকবেও।
স্কুলের প্রিন্সিপাল একটা গল্প বলছিলেন। তাঁর ছেলের গল্প। তখন ছেলের বয়েস তেরো। সে পড়াশোনায় ভাল, শহরের নামী স্কুলে পড়ে। সচ্ছল পরিবারের এই বয়সের ছেলেরা যেমন হয়, সে-ও একেবারেই সে রকম। মায়ের স্কুলের কোনও একটা বিশেষ দিনে মায়ের সঙ্গে এসেছিল সে, দেখবে বলে। স্কুলের অনুষ্ঠান উপলক্ষে স্থানীয় এক বেকারি কিছু উপহার পাঠিয়েছিল। সামান্য উপহার কাপ কেক। ছাত্রছাত্রীদের জন্য। একটা টেবিলের ওপর কয়েকটা রেকাবিতে রাখা ছিল সেই কেকগুলো। ছেলেমেয়েরা লাইন করে এসে সেই রেকাবি থেকে কেক তুলে নিচ্ছিল, প্রত্যেকে একটা করে। প্রিন্সিপালের ছেলে দাঁড়িয়েছিল সেখানেই, কিন্তু সে মোটেই ভালবাসে না ওই সাধারণ কেক। ফলে, সে নেয়নি। সে দাঁড়িয়ে দেখছিল। এমন সময় তারই বয়সী একটা ছেলে এগিয়ে গেল প্রিন্সিপালের দিকে। জিজ্ঞেস করল, সে কি একটার বদলে দুটো কেক নিতে পারে? প্রিন্সিপাল জিজ্ঞেস করলেন, কেন? ছেলেটি বলল, তার দাদা এই কেক খেতে খুব ভালবাসে। সে দাদার জন্য একটা কেক নিয়ে যেতে চায়। প্রিন্সিপাল বললেন, সবার নেওয়া হয়ে গেলে যদি অবশিষ্ট থাকে, তবে সে অবশ্যই নিতে পারে। ছেলেটি শান্ত ভাবে দাঁড়িয়ে থাকল। সবার নেওয়া হয়ে গেলে সে আর একটা কেক তুলে যত্ন করে ব্যাগে ভরে রাখল। একটাই। অনেকগুলো পড়ে ছিল যদিও।
প্রিন্সিপালের ছেলে বাড়ি যাওয়ার পথে পুরো রাস্তা কেঁদেছিল। তার পর সে আর কোনও দিন কোনও খাবার খেতে আপত্তি করেনি।
আমরা স্কুল দেখতে থাকি। ঘুরতে ঘুরতে পৌঁছে যাই একটা ঘরে খেলার ঘর। সেখানে মস্ত বিলিয়ার্ড বোর্ড, টেবিল টেনিস বোর্ড।
দারুণ। আমাদের পোড়া কলকাতায় তো প্রশ্নই নেই, সিঙ্গাপুরেও খুব বেশি স্কুলে অমন বোর্ড আছে বলে মনে হল না। সবই ছাত্রছাত্রীদের খেলার জন্য। তবে সব ছাত্রছাত্রীর জন্য নয়। যাদের কাছে পয়েন্ট আছে, শুধু তারাই খেলতে পারে। সেই পয়েন্ট পাওয়া যায় ভাল হয়ে থাকলে। ভাল আচরণ ক্যামেরায় রেকর্ড হলেও পয়েন্ট, টিচাররা প্রশংসা করলেও পয়েন্ট। সেই পয়েন্টের টোকেন পাওয়া যায়। পয়েন্ট জমিয়ে জমিয়ে একটা বোর্ড খেলার মতো অবস্থায় এলেই খেলতে চলে আসে ছেলেমেয়েরা। আসল গল্প অবশ্য সেটা নয়। এই ঘরে কোনও নজরদার নেই, কোনও ক্যামেরাও নেই। যথেষ্ট পয়েন্ট না থাকলেও খেলতেই পারে কেউ, যদি তার ইচ্ছে করে। কিন্তু, কেউ খেলে না। সবাই পয়েন্ট জমা পর্যন্ত অপেক্ষা করে। অবাক হলাম। তার পর মনে হল, বিশ্বাসের এই এক গুণ। যদি কাউকে সত্যিই বিশ্বাস করা হয়, সে প্রাণপণ চেষ্টা করে সেই বিশ্বাসের মর্যাদা রাখতে। আর, এই ছেলেমেয়েগুলো যে পরিবেশ থেকে আসে, যে পরিবার থেকে আসে, সেখানে বিশ্বাসের কোনও গল্প নেই। সেখানে একে অপরকে অবিশ্বাস করাই দস্তুর। সেখান থেকে এসে হয়তো প্রথমে এই বিশ্বাসের আলোহাওয়া অলীক লাগে, তার পর তারা নিজেরাই বুঝতে পারে, না চাইতেই কী দুর্মূল্য সম্পদ তাদের কাছে এসেছে। তাকে প্রাণপণ রক্ষা করার কথা তখন তাদের বলে দিতে হয় না।
আমরা স্কুলের বাগান দেখতে যাই। এই বাগানেরও একটা গল্প আছে। স্কুলের পিছনে খানিকটা জমি পড়ে ছিল। এমনিই। এক দিন ছাত্রছাত্রীরা এসে প্রিন্সিপালকে বলে, তারা সেই জমিতে গাছ লাগাতে চায়। প্রিন্সিপাল এক কথায় নাকচ করে দেন এই আবদার। পাগল নাকি! স্কুলের পিছনে শেষে আগাছার জঙ্গল হবে! ছেলেমেয়েরা হাল ছাড়ে না। তারা ঘুরেফিরে একই দাবি জানাতে থাকে। তারা যেখানে থাকে, সেখানে এক ফোঁটাও জমি নেই। একচিলতে বারান্দাতেও সংসারের জিনিস ঠাসা। তারা গাছ লাগাবে কোথায়? শেষ পর্যন্ত প্রিন্সিপাল রাজি হন। একটাই শর্ত, মাঝপথে বাগানের দায়িত্ব ছেড়ে দিলে চলবে না। ছেলেমেয়েরা প্রবল উৎসাহে ঝাঁপিয়ে পড়ে। সেই জমিতে একটা একটা চারা ক্রমে বড় হয়ে উঠতে থাকে। কুমড়ো, পেঁপে, শসা থেকে ফুলকপি সবই ফলে সেই বাগানে। সেই ফসল বিক্রি হয়, সেই টাকা স্কুলের তহবিলেই দিয়ে দেয় ছেলেমেয়েরা। স্কুল শেষ হওয়ার পরেও তারা বাড়ি যেতে চায় না। বাগানে নিজেদের গাছের কাছে যায়। তার কতটা বাগানের টানে, আর কতটা বাড়ি ফেরার সময়টাকে যত দূর সম্ভব পিছিয়ে দেওয়ার জন্য, কে জানে!
তারা তো দুই পৃথিবীর বাসিন্দা। স্কুল থেকে বাড়ি ফিরলেই আবার সেই ঝগড়াঝাটি, অশান্তির দুনিয়া ছোটরাও তো পালানোর পথ খোঁজে।
ছেলেমেয়েদের গল্প বলেন প্রিন্সিপাল, আর আমরা দেখতে পাই, তাঁর চোখে ক্রমশ জমে উঠছে মায়া। এই ছেলেমেয়েগুলোর জন্য মায়া, যারা নিজেদের বাড়ির, পরিবারের না-পাওয়াগুলোকে খানিকক্ষণের জন্য সরিয়ে রাখতে স্কুলে আসে প্রতি দিন। শরীর খারাপ নিয়েও আসে। তারা স্কুল কামাই করতে চায় না পারতপক্ষে। কী পায় তারা এই স্কুলে? শুধু একটা খেলার ঘর, একটা বাগান? পড়াশোনায় ভুলের জন্য তেমন কঠিন শাস্তি না পাওয়ার আশ্বাস? নাকি তার চেয়েও বেশি কিছু? একটা মমতার আস্তরণ, তাদের না-পাওয়া, তাদের সংকটগুলোকে বুঝতে পারার মতো কয়েক জন শিক্ষক? তাদের হেরো বলে দেগে না দেওয়ার প্রতিশ্রুতি? হেরে যাওয়া লড়াই জিততে সব রকমের সাহায্যের বাড়িয়ে দেওয়া হাত? জিজ্ঞেস করে ফেলি। প্রিন্সিপাল বলেন, এই ছেলেমেয়েগুলোর জন্য সবচেয়ে বেশি জরুরি কী জানেন? তাঁদের এই বিশ্বাসটুকু দেওয়া যে তারা অন্য কারও চেয়ে একটুও কম যায় না। তারা কোনও লড়াই এখনও হেরে যায়নি। সবাই তো লেখাপড়ায় ভাল হয় না। আর, এই স্কুলে আসার জন্য পর পর দু’বার ফেল করতেই হয়! কাজেই, এখানে যারা আসে, তারা কেউই পড়াশোনায় ভাল না। আমরা তাই পড়াশোনাতেই সব জোর দিই না। এখানে হাতের কাজ শেখাই। কেউ ইলেকট্রিশিয়ান হওয়ার কোর্সে ভর্তি হয়, কেউ হোটেল ম্যানেজমেন্ট শেখে, কেউ বিউটিশিয়ান কোর্স করে। তারা শিখেও ফেলে চটপট। নিজেরাও অবাক হয়। আর, সবচেয়ে বেশি যেটা হয়, ওদের মধ্যে নিজের প্রতি বিশ্বাস তৈরি হয়ে যায়। ছোটবেলা থেকে যে দুনিয়াটা ওদের ঘাড়ে চেপে বসেছে, তার থেকে যে বেরিয়ে আসা সম্ভব ওরা বুঝতে পারে। আমাদের কাজ, এই বিশ্বাসটুকু তৈরি করে দেওয়া।
কথা বলতে বলতেই চোখে পড়ে, স্কুলের দেওয়াল জুড়ে মস্ত এক পোস্টার অন্ধকার আকাশ, আর তাতে ঝলমল করছে কয়েকটা তারা। নীচে লেখা, অন্ধকার যত গাঢ় হবে, তুমিও ততই উজ্জ্বল হয়ে উঠবে। সত্যিই তো, নর্থ লাইট মানে ধ্রুবতারা। অন্ধকার আকাশে যে আলো নাবিকদের কখনও পথ হারাতে দেয়নি। এই ছেলেমেয়েগুলোও নিজেদের পথ খুঁজে নেয়। বিশ্বাসের পথ। স্কুলের নিয়ম, কোনও ছাত্র সিগারেট খেতে পারবে না। স্কুলের ভিতরে তো নয়ই, বাইরেও নয়।
এক দিন স্কুলের কয়েকটি ছাত্র, স্কুল থেকে অনেক দূরে একটা পার্কে দাঁড়িয়ে সিগারেট খাচ্ছিল। স্কুলের এক শিক্ষিকার এক আত্মীয়ের চোখে পড়ে তারা। তিনি স্কুলের ইউনিফর্ম চিনতেন। তিনি সেই ছেলেগুলিকে কিছু বলেননি, কিন্তু তাঁর পরিচিত সেই শিক্ষিকাকে কথাটি জানান। পরের দিন স্কুলের অ্যাসেম্বলিতে দাঁড়িয়ে সেই শিক্ষিকা শুধু বলেন, তোমাদের মধ্যে কয়েক জন কাল লুকিয়ে সিগারেট খাচ্ছিলে। কারা, আমি জানি না। জানতেও চাই না। কিন্তু, তারা স্কুলের বিশ্বাস নষ্ট করেছ। তাঁর কথা শেষ হওয়ার পর মিনিট খানেকের স্তব্ধতা। তার পর এগিয়ে এল ছেলেগুলি। স্বীকার করে নিল নিজেদের দোষ। সবার সামনে। এই ছেলেগুলোকে আমি চিনি না, কিন্তু নিশ্চিত জানি, এরা কোনও দিন বিশ্বাসের পথ থেকে সরে আসবে না।
আমাদের স্কুলের অডিটোরিয়ামে নিয়ে যান প্রিন্সিপাল। সেখানে একটা ফিল্ম দেখানো হবে। স্কুলের অ্যানুয়াল ডে-র ছবি। অ্যানুয়াল ডে-তে এখানে অনেক তাঁবু খাটানো হয়। প্রত্যেক ছাত্রের জন্য একটা করে তাঁবু। তাদের বাবা-মা এসে থাকেন তাদের সঙ্গে। টানা দু’দিন। ছেলেমেয়েদের বন্ধুদের দেখেন, তাদের স্কুলের জীবন দেখেন। ফিল্ম চলে, আমরা দেখতে থাকি। একটা বছর বারোর মেয়ে স্টেজে উঠে গান গায়। তার বাবা-মা অবাক হয়ে দেখেন। তার পর স্কুলের এক শিক্ষিকা সেই মেয়েটির সব ভাল দিকগুলোর কথা বলেন, তার সমস্ত সাফল্যের কথা বলেন। সেই মেয়েটি নেমে যায়। তারই বয়সী একটি ছেলে স্টেজে ওঠে। সে-ও তার মা-বাবাকে অবাক করে দারুণ সিন্থেসাইজার বাজায়। তার পর তার সম্বন্ধেও বলতে থাকেন এক শিক্ষিকা।
এ ভাবেই চলতে থাকে। তার পর হঠাৎ অন্য দিকে ঘুরে যায় ক্যামেরা। প্রথম যে মেয়েটা স্টেজে উঠেছিল, তাকে জড়িয়ে ধরে হাউহাউ করে কাঁদছেন তার বাবা-মা। মেয়ে বাবার পিঠে হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। কান্না থামলে বাবা বললেন, আমার মেয়ে যে এত ভাল, এত কিছু পারে, আমি জানতামই না। ওকে তো সময় দিইনি কখনও। শুধু কষ্টই দিয়েছি। আজ থেকে আর না। আমি আমার মেয়েকে নিয়ে খুব ভাল ভাবে বাঁচব। ফিল্ম শেষ হয়। আমরাও ফিরে আসি। স্কুলের গেট পেরোতে পেরোতে মনে হয়, অনেকগুলো মানুষের জীবন পাল্টে দেওয়ার একটা চেষ্টা কি আমরাও করতে পারি না? কখনও?কোন দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা সবচেয়ে ভালো? কেন ভালো?
পড়তে পড়তে চোখ ভিজে আসে আমার। আহা আমাদের দেশের বাচ্চারা কেনো এমন সুযোগ পেলো না! ধন্যবাদ জানাই লেখক- সুশোভন চ্যাটার্জীকে
আমি নিজে যে স্কুলটিতে কাজ করি সেখানে শিশুরা অনেকটাই সুষ্ঠ ও সঠিক শিক্ষাব্যবস্থার মাঝে শিক্ষাগ্রহন করছে কিন্তু বাংলাদেশের গ্রামে গঞ্জে কোমলমতী শিশুরা এই ধরনের শিক্ষা ব্যবস্থা থেকে আজও বঞ্চিত। তবে আশার আলো থেকে যায়। আশা নিয়েই বাঁচি আমরা
এবং যুগে যুগে পূর্বের উপর নির্ভর করে নতুনভাবে উজ্জীবিত ও উন্নত হই। আমার চাওয়া বাংলাদেশের গ্রামে গঞ্জে প্রত্যন্ত অঞ্চলে সকল শিশু হাসিমুখে আনন্দ নিয়ে সৃজনশীলতার মাঝে বড় হোক, শিক্ষা গ্রহন করুক। তবে আশার আলো দেখা যায়।
২০২৩ সাল থেকে শিশুশিক্ষায় আসবে আমূল পরিবর্তন
আগামীতে প্রাক-প্রাথমিকের দুই শিফটের ক্লাস হবে এক শিফটে। বাড়বে শ্রেণিকক্ষের সংখ্যা। নতুন কারিকুলামে থাকবে শিল্পকলা, সংগীত, শারীরিক শিক্ষাসহ মানসিক বিকাশের বহুমূখী আয়োজন। বইয়ের বোঝা দূর করে ২০২৩ সালে আনন্দময় হবে শিশুশিক্ষা।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রাক প্রাথমিকের শ্রেণিকক্ষে দেখা যায় খেলার ছলে পড়ালেখায় মশগুল শিক্ষার্থীরা। নেই পরীক্ষার ঝক্কি, ঝামেলা নেই বইয়ের বোঝা টানার। এর উল্টো চিত্র দেখা যায় বাংলাদেশে। ওজনের চেয়ে পিঠে বইয়ের ভারি বোঝা। মেরুদণ্ডে অতিরিক্ত চাপ নিয়ে প্রতিদিন স্কুলে যাওয়া-আসা কোমলমতিদের । হন্তদন্ত হয়ে ক্লান্ত শিশুদের গোমরা মুখে শুরু হয় পড়ালেখা। আনন্দের লেশ মাত্র নেই শ্রেণিকক্ষে। নেই মজার উপকরণ। যে কারণে শিক্ষার্থীর সঙ্গে শিক্ষকেরাও থাকেন গম্ভীর, নিরুৎসব। উভয়ের কাছে পড়ালেখার ব্যাপারটি হয়ে ওঠে বিষন্ন কিংবা দায়সারা। পড়ালেখায় নিরানন্দের এই ধারা চলমান অনেকদিন। ২০২৩ সাল থেকে তাই আমূল পরিবর্তন আসবে শিশুশিক্ষায়। ওয়ান থেকে থ্রি পর্যন্ত থাকছে না পরীক্ষার উত্তাপ। আনন্দদায়ক অনেক উপকরণও পাবে শিক্ষার্থীরা। প্রাথমিক শিক্ষাক্রমের সদস্য অধ্যাপক ড. একে এম রিয়াজুল হাসান বলছেন, ‘প্রথম পর্যায়ে ৬৫ স্কুলের ৪শ শিক্ষককে দেয়া হবে শিশুবান্ধব প্রশিক্ষণ।’নতুন শিখন পদ্ধতি বাস্তবায়ন হলে শিশুরাই মতামত জানাবে ক্লাসে। জানাবে তার ভালো লাগা, মন্দ লাগা। ৪ মাস পর হবে মেধার ধারাবাহিক মুল্যায়ন। অতঃপর শিশুদের দক্ষতা জানানো হবে অভিভাবককে। সরকারের এমন উদ্যোগের সমলোচনাও করেছেন কেউ কেউ। জানিয়েছেন ভিন্নমত। দ্রুত শিশু বান্ধব শিক্ষা ব্যবস্থা চালু না হলে আগামী দিনে জাতি গঠনে মারাত্বক প্রভাব ফেলবে শিক্ষার বর্তমান পদ্ধতি।
২০২৩ সাল থেকে শিশুশিক্ষায় আসবে আমূল পরিবর্তন
বাংলাদেশ ও পৃথিবীর সকল শিশুরা সুষ্ঠ ও সঠিক আনন্দময় শিক্ষাব্যবস্থার মাঝে বড় হয়ে উঠুক এবং দেশ ও দশের সেবায় নিয়োজিত হোক এই হোক আমাদের সকলের চাওয়া। ধর্ম বর্ণ গোত্র নির্বিশেষে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম জ্ঞানের আলোয় উদ্ভাষিত হয়ে উঠুক। সমগ্র পৃথিবীকে করে তুলুক আলোকিত সুন্দর!
ছবিঃ নিজের এ্যলবাম ও ফিনল্যান্ড এবং জাপান, সিঙ্গাপোরের ছবি তিনটি উইকিপিডিয়া থেকে।
ফিচার- বিষয় - শিক্ষা
১৮ ই নভেম্বর, ২০২২ বিকাল ৩:১৪
শায়মা বলেছেন: আমাদের ইংলিশ মিডিয়ামের বাচ্চাদের মধ্যে প্লে গ্রুপ আর নার্সারীতে কোনো ইউনিফর্ম থাকে না । তারা যে যার মত আরামদায়ক পোষাক পরে আসে। এর পিছেও কিছু কারণ আছে। বাচ্চাদের কমফোর্ট এবং আরও কিছু কারণ। আর ৩/৪/৫ বছরের বাচ্চারা এমনিতেই যে আত্মবিশ্বাসী হয়েছে আজকাল আমি দেখে নিজেই অবাক হয়ে যাই।
একটা বাচ্চাকে কিছুতেই পেন্সিল নীচের দিকে টান দিয়ে নামাতে শেখাতে পারছিলাম না। অনেকবার অনেকভাবে রিকোয়েস্ট করে হাতে ধরে দেখাবার পরেও সে যতবার বলি গো ডাউন সে উল্টা দিকে গো আপ করে। যাইহোক হতাশ হয়ে এক পর্যায়ে বললাম, বেবি আই এ্যাম শোইং ইু সো মেনি টাইমা বাট হ্যোয়াই ডোন্ট ইউ আন্ডাস্টান্ড? দেখো গো ডাউন মানে নীচের দিকে। সে লেখা থামিয়ে বললো, মিস, আই এ্যাম স্মল। আই ডিড নট লার্ন হাউ টু গো ডাউন, সো আই কাম টু স্কুল।
আমি তো অবাক! সে তো হান্ড্রেড পারসেন্ট রাইট! আমি তখন নিজেই ঘুরে ওর পিছে দাঁড়ালাম আর বললাম গো ডাউন। সে তখন ঠিক করে করলো। মানে সে গো ডাউনটা নিজের দিকে না করে আমার দিকে করছিলো।
যাইহোক ভাইয়া থ্যাংকস আ লট। ইউনিফর্ম মানেই সবাই সমান। কোনো ছোট বড় ভেদাভেদ নেই। কিন্তু ছোট্ট ছোট্ট শিশুদের মাঝে এমনটা ভাবতে পারে না বলেই হয়ত আমার আর আমাদের স্কুলের মত আরওকিছু স্কুলের মনে হয়েছে ইউনিফর্ম নো নিড ইন দিস এইজ।
২| ১৮ ই নভেম্বর, ২০২২ বিকাল ৩:১৮
রাজীব নুর বলেছেন: ম্যাডাম আসসালামু আলাইকুম।
সুন্দর লিখেছেন। সেই সাথে অনেক অপ্রয়োজনী উদাহরনও দিয়েছেন। কিন্তু আসল উদাহরন দেন নি। আমাদের রবীন্দ্রনাথ তার শিক্ষা প্রবন্ধে সব কিছু স্পষ্ট বলে দিয়েছেন, কিভাবে একটা শিশুকে শিক্ষা দিতে হবে। আপনি দেশ বিদেশের শিক্ষা নিয়ে আলোচনা করলেন। কিন্তু রবীন্দ্রনাথকে ভুলে গেলেন।
১৮ ই নভেম্বর, ২০২২ বিকাল ৩:২৬
শায়মা বলেছেন: ওয়ালাইকুম সালাম!
রবীন্দ্রনাথ তার শিক্ষা প্রবন্ধে যা যা প্রয়োজনীয় বলেছে আমাকে জানাও শিঘ্রী। আমি লিখে দিচ্ছি। আর কোন কোন উদাহরণ অপ্রয়োজনীয় বলো মুছে দিচ্ছি!
ফিনল্যান্ড, জাপান আর সিঙ্গাপোরের নর্থ লাইট স্কুলের উদাহরন দিয়েছি!
এই তিন উদাহরন আমার চোখে আজকের দিনে সর্বশ্রেষ্ঠ মনে হয়েছে।
কাজেই এইগুলি মুছবো না। অন্যগুলি বলতে পারো।
১৮ ই নভেম্বর, ২০২২ বিকাল ৪:৩৩
শায়মা বলেছেন: ভাইয়া থ্যাংক ইউ সো মাচ! রবিঠাকুরের কথা এই মন্তব্যে আনার জন্য। আমি এতক্ষন গিয়ে আবারও রবিঠাকুরের শিক্ষা বিষয়ক প্রবন্ধ আলোচনাগুলো পড়ে আসলাম।
আমার লেখার কথাগুলোতেও রবিঠাকুরের ভাষ্যই রয়েছে। কিছু পরে এসে আমি সেটা ব্যাখ্যা করবো।
আবারও ধন্যবাদ এই মন্তব্যটার জন্য।
১৮ ই নভেম্বর, ২০২২ রাত ১১:০৩
শায়মা বলেছেন:
রবিঠাকুরের মতে- শিশুর শৈশবে ভাষা জ্ঞানটা হওয়া উচিত মাতৃভাষায়। তাহলে একটি শিশুর মধ্যে শিক্ষার সাথে জীবনের সামঞ্জস্য সাধন ঘটবে।রবিঠাকুর বলেছেন, ভাষাশিক্ষার সঙ্গে সঙ্গে ভাবশিক্ষা একত্রে অবিচ্ছেদ্যভাবে বৃদ্ধি পায় না বলিয়াই য়ুরোপীয় ভাবের যথার্থ নিকটসংসর্গ লাভ করি না এবং সেই জন্যই আজকাল আমাদের অনেক শিক্ষিত লোক য়ুরোপীয় ভাব সকলের প্রতি অনাদর প্রকাশ করিতে আরম্ভ করিয়াছেন। অন্যদিকেও তেমনি ভাবের সঙ্গে সঙ্গেই আপনার মাতৃভাষাকে দৃঢ় সম্বন্ধ রূপে পান নাই বলিয়া মাতৃভাষা হইতে তাঁহারা দূরে পড়িয়া গেছেন এবং মাতৃভাষার প্রতি তাঁহাদের একটি অবজ্ঞা জন্মিয়া গেছে।
কথা সত্যি। এটা ইংলিশ মিডিয়ামের বাচ্চাদেরকে দেখলেই বুঝা যায়।
রবীন্দ্রনাথ বলেছেন, আনন্দের সহিত পড়িতে পড়িতে পড়িবার শক্তি অলক্ষিতভাবে বৃদ্ধি পাইতে থাকে; গ্রহণশক্তি ধারণাশক্তি চিন্তাশক্তি বেশ সহজে এবং স্বাভাবিক নিয়মে বল লাভ করে...।” আর তাই শুধু পাঠ্য পুস্তক নহে পাঠ্য পুস্তকের সাথে সাথে আরও অন্যান্য বইও পড়তে দিতে হবে তবেই পড়ার আনন্দ শিশু লাভ করবে।
নিজের প্রতি, জীবন ও জগতের প্রতি ভালোবাসা ও মমত্ববোধের শিক্ষাটা কোনো শিশুই মাতৃগর্ভ থেকে শিখে আসে না। পরিবারে, স্কুলে তাকে শেখাতে হয়। পাঠ্যপুস্তকের ও সহপাঠ বইয়ের আশ্রয়ে ও শিক্ষা-ব্যবস্থার ভিতর দিয়ে শিশুকে শেখাতে হয় কী করে দেশ, দেশের প্রকৃতি ও পরিবেশকে আপন করে নেবে; কী করে দেশের মহৎ অর্জনগুলোকে ভালোবাসতে ও সম্মান করতে শিখবে, জাতি-ধর্ম-গোত্র-ধনী-দরিদ্র-সকল মানুষকে কী করে ভালোবাসতে, শ্রদ্ধা করতে, সম্মান করে শিখবে।
এই শিক্ষাই সর্বাগ্রে জরুরি। শুধু কাগজ-কলমে পরীক্ষার ব্যবস্থা করে শিশুর সুনাগরিক হয়ে ওঠার দক্ষতা পরিমাপ করা যায় না; পরিশীলিত মানুষ হয়ে ওঠার প্রবণতা যাচাই করা যায় না। এর জন্য দরকার নিবিড় পরিচর্যা। শিশুর সকল সম্ভাবনাকে বিবেচনায় রেখে গভীর মমতা ও স্নেহ দিয়ে তাদের শিক্ষিত করে তোলা দরকার।
রবীন্দ্রনাথ এ সম্পর্কে বলেছেন, “ছেলে যদি মানুষ করিতে চাই তবে ছেলেবেলা হইতেই তাহাকে মানুষ করিতে আরম্ভ করিতে হইবে; নতুবা সে ছেলেই থাকিবে, মানুষ হইবে না। শিশুকাল হইতেই, কেবল স্মরণশক্তির উপর সমস্ত ভর না দিয়া, সঙ্গে সঙ্গে যথা পরিমাণে চিন্তা-শক্তি ও কল্পনাশক্তির স্বাধীন পরিচালনার অবসর দিতে হইবে। সকাল হইতে সন্ধ্যা কেবলই লাঙল দিয়া চাষ এবং মই দিয়া ঢেলা ভাঙ্গা, কেবলই ঠেঙালাঠি মুখস্থ এবং একজামিন আমাদের এই ‘মানব-জনম’- আবাদের পক্ষে, আমাদের এই দুর্লভ ক্ষেত্রে সোনা ফলাইবার পক্ষে যথেষ্ট নহে। এই শুষ্ক ধুলির সঙ্গে, এই অবিশ্রাম কর্ষণ পীড়নের সঙ্গে রস থাকা চাই।” (শিক্ষার হেরফের)
বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পাশ করা শিক্ষার্থীদের মধ্যে আর একটা বিষয় লক্ষ্য করলে দেখা যায়, অর্জিত শিক্ষার সাথে ব্যবহারিক জীবনের বিস্তর ফারাক। যেমন-তত্ত্বীয় বিজ্ঞানে পড়াশোনা করেও খুব স্বাভাবিকভাবেই কু-সংস্কার, আত্মকেন্দ্রিক মানসিকতা ও সাম্প্রদায়িক চিন্তাভাবনা দ্বারা নিজেকে চালিত করা। আবার এও দেখা যায়, বিজ্ঞানের কোনো সূত্রের সাথে ধর্মীয় গ্রন্থের কোনো ঘটনা, শ্লোক বা আয়াত প্রমাণের চেষ্টা করা। ধর্ম হলো বিশ্বাসের বিষয়, আর বিজ্ঞান-দর্শন হলো যুক্তি ও পরীক্ষার বিষয়। এই বিষয়গুলো ঘটে সিলেবাসে শুধু বিষয়ের বিষয়ীকরণ করার কারণে। কারণ-যে শিক্ষার্থী বিজ্ঞান, প্রকৌশল বা চিকিৎসা বিদ্যায় অধ্যয়ন করে, তারা শুধু ওই বিষয়ের উপরই পড়াশোনা করে। এসব বিষয়ের সিলেবাসে সাহিত্য, দর্শন, ইতিহাস, বিজ্ঞানের ইতিহাস ও দর্শন, ইতিহাসের দর্শন প্রভূতি বিষয়গুলো অন্তর্ভূক্ত থাকে না। তাই শিক্ষার্থীরা এক ধরনের একমুখী জ্ঞান নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সনদ অর্জন করে ও পরগাছা গোত্রের মানুষে রূপান্তরিত হয়।
তাই রবীন্দ্রনাথ তার ‘শিক্ষার বাহন’ প্রবন্ধে বলেছেন, “আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় হইতেও আমরা সেই ডিগ্রীর টাকশালের ছাপ লওয়াকেই বিদ্যালাভ বলিয়া গণ্য করিয়াছি। ইহা আমাদের অভ্যাস হইয়া গেছে। আমরা বিদ্যা পাই বা না পাই বিদ্যালয়ের একটা ছাঁচ পাইয়াছি। আমাদের মুশকিল এই যে, আমরা চিরদিন ছাঁচের উপাসক। ছাঁচে-ঢালাই করা রীতিনীতি চাল-চলনকেই নানা আকারে পূজার অর্ঘ্য দিয়া এই ছাঁচ-দেবীর প্রতি অচলা ভক্তি আমাদের মজ্জাগত। সেই জন্য ছাঁচে ঢালা বিদ্যাটাকে আমরা দেবীর বরদান বলিয়া মাথায় করিয়া লই; ইহার চেয়ে বড়ো কিছু আছে এ কথা মনে করাও আমাদের পক্ষে শক্ত।
আমাদের শিক্ষাপদ্ধতিতে চিন্তাশক্তি বাড়ানোর ও সৃষ্টিশীল হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। এই শিক্ষাপদ্ধতিতে ভালো শিক্ষার্থী নির্ধারণের মাপকাঠি হলো- পরীক্ষার খাতায় কে কতো ভালোভাবে প্রশ্নের উত্তর দিতে পারে, তার উপর নির্ভর করে ভালোত্ব নির্বাচন। কিন্তু চিন্তা যে নিরন্তর চর্চার বিষয় ও চর্চায় মাধ্যমেই শিক্ষার্থী উন্নততর ও জটিল চিন্তায় ব্যাপৃত হতে পারে, এ বিষয়টি কখনো বিবেচনায় আনা হয় না। অধিকন্তু প্রাথমিক থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত নোট মুখস্থ করার জোর প্রতিযোগিতা। আর এর মাধ্যমে ঘটে পরীক্ষার পাশের সনদ। মুখস্ত করার এই ভয়ংকর প্রবণতাকে রবীন্দ্রনাথ চৌর্যবৃত্তির সাথে তুলনা করেছেন। ‘শিক্ষা’ নামক গ্রন্থের ‘শিক্ষার বাহন’, এবং ‘শিক্ষার সাঙ্গীকরণ’ নামক প্রবন্ধে পরীক্ষা পাসের জন্য শিক্ষার্থীদের মুখস্তনির্ভরতার প্রতি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
তিনি তার ‘শিক্ষার বাহন’ প্রবন্ধে লিখেছেন, “কেননা মুখস্থ করিয়া পাশ করাই তো চৌর্যবৃত্তি। যে ছেলে পরীক্ষাশালায় গোপনে বই লইয়া যায় তাকে খেদাইয়া দেয়া হয়; আর যে ছেলে তার চেয়েও লুকাইয়া লয়, অর্থাৎ চাদরের মধ্যে না লাইয়া মগজের মধ্যে লইয়া যায়, সেই বা কম কী করিল? সভ্যতার নিয়ম অনুসারে মানুষের স্মরণশক্তির মহলটা ছাপাখানায় অধিকার করিয়াছে। অতএব, যারা বই মুখস্ত করিয়া পাশ করে তারা অসভ্যরকমে চুরি করে, অথচ সভ্যতার যুগে পুরষ্কার পাইবে তারাই?”
তবে একটি কথা না বললেই নয় যে, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর আমাদের শিক্ষাপদ্ধতির যে সব ত্রুটির কথা বলেছেন, সেসব কিভাবে সমাধান হতে পারে তা তিনি মূল সমস্যার জায়গা থেকে উপলব্ধি করতে পারেননি। অর্থাৎ একটি দেশের রাষ্ট্র পরিচালনাকারী গোষ্ঠী যেভাবে জনগণকে রাষ্ট্রের অনুগত রাখতে চান, তারা সেভাবেই রাজনৈতিক পলিসির পাশাপাশি রাষ্ট্র কাঠামোর সাথে সম্পর্কিত অন্যান্য বিষয়সহ শিক্ষাপদ্ধতিও তাদের মতো করে ঢেলে সাজাবেন, এটাই স্বাভাবিক বিষয়।
কিন্তু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এ বিষয়টিকে এড়িয়ে গিয়ে শুধু পাঠপদ্ধতি ও সিলেবাস এর যথার্থ ত্রুটি নির্দেশ করেছেন। পরিশেষে বলা যায়, রবীন্দ্র শিক্ষাদর্শনের আলোকে ও বর্তমানে প্রতিষ্ঠিত ঔপনিবেশিক শিক্ষা কাঠামোকে প্রশ্নবিদ্ধ করার মাধ্যমেই আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার ত্রুটিগুলোকে শনাক্ত ও সমাধানের রূপরেখাই শিক্ষাব্যবস্থাকে তার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে সাহায্য করবে।
করবে।
তুমি বলার পরে আরও পড়লাম ভাইয়া। ঠিকই বলেছো সেই যুগেও রবিঠাকুরের এমন ভাবনা দেখে অবাক হলাম। যদিও জানি তিমি একজন জ্ঞানী এবং শুধু জ্ঞানী নন মহাজ্ঞানি সর্বকালের সর্বযুগের !!!
৩| ১৮ ই নভেম্বর, ২০২২ বিকাল ৩:৩৬
গেঁয়ো ভূত বলেছেন: শিশুদের জন্য আনন্দময় ও সুষ্ঠ শিক্ষা ব্যবস্থা - শুধু শিক্ষা কেন যেকোনো কাজই হোক না কেন সেটাতে যদি আনন্দের যোগ থাকে তাহলে সেটা অবশ্যই স্বতঃস্ফূর্ত পরিপূর্ণ হতে বাধ্য, আর যদি তাতে আমরা কাউকে বাধ্য করতে যাই তাহলে সেটা দিয়ে কোনো মতে কাজ চলতে পারে কিন্তু তা দিয়ে এর বেশি কিছু সম্ভব নয়।
ধন্যবাদ আপু, ফিচারে খুবই প্রয়োজনীয় ও প্রাসঙ্গিক বিষয়টি নিয়ে আসার জন্য। আমার মতে ১০ নম্বর পয়েন্ট টি সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ। দক্ষ ও নিবেদিত শিক্ষক ছাড়া কোনো ক্রমেই শিক্ষা ব্যাবস্থায় পূর্ণতা আনা সম্ভব নয়। আমার মতে আমাদের প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত প্রতিটি স্তরেই দক্ষ ও নিবেদিত শিক্ষকের অভাব রয়েছে।
আর আমরা শিক্ষা নিয়ে যত বড় পরিকল্পনাই করি না কেন সর্বাগ্রে প্রাথমিকেই হাত দিতে হবে। কেননা, সুউচ্চ অট্টালিকা নির্মাণ করতে হলে প্রথমেই তার ভিত্তি বা ফাউন্ডেশন নির্ভুল ও মজবুত ভাবে তৈরী করতে হয়, তা যদি না হয় তাহলে সবই পন্ডশ্রম ছাড়া আর কিছু নয়।
১৮ ই নভেম্বর, ২০২২ বিকাল ৪:১৭
শায়মা বলেছেন: আমার সারা জীবনের শিশুদের জন্য শিক্ষকতা অভিজ্ঞতায় মনে হয়েছে একজন দক্ষ শিক্ষক তার সদিচ্ছা ও সৃজনশীলতার মাধ্যমে একটি শিশুর শিক্ষা জীবন মূল্যবান করে তুলতে পারেন। শিক্ষকের ইচ্ছা, অধ্যাবসায়, একটি ভালো লেসন প্লান, শিক্ষার্থী এবং অভিভাবকের সাথে সহযোগী মনোভাব, শিক্ষার্থীর পিছনে শ্রম ও সময় দেওয়া এসবই একজন ভালো শিক্ষকের শিক্ষা নীতিতে আসা উচিৎ।
শিশুর পড়ালেখা জীবন আনন্দময় করতে হলে শিক্ষকের নিজের জীবনেও আনন্দে থাকা প্রয়োজন। এই ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক নিরানন্দতাও একটি বড় ব্যপার। আমাদের দেশের প্রাথমিক স্তরের শিক্ষকদের স্যালারী হওয়া উচিৎ সবচাইতে বেশি। কারণ-
আর আমরা শিক্ষা নিয়ে যত বড় পরিকল্পনাই করি না কেন সর্বাগ্রে প্রাথমিকেই হাত দিতে হবে। কেননা, সুউচ্চ অট্টালিকা নির্মাণ করতে হলে প্রথমেই তার ভিত্তি বা ফাউন্ডেশন নির্ভুল ও মজবুত ভাবে তৈরী করতে হয়, তা যদি না হয় তাহলে সবই পন্ডশ্রম ছাড়া আর কিছু নয়।
তুমিই বলে দিয়েছো ভাইয়া।
৪| ১৮ ই নভেম্বর, ২০২২ বিকাল ৪:২২
নীল-দর্পণ বলেছেন: ফিনল্যান্ডের চমতকার শিক্ষা ব্যবস্থা সম্পর্কে আগে একটু জানতাম। সিংগাপুরের ব্যবস্থায় অপরাধকে/ভুলকে সামনে না ধরে ভালো কাজের যে প্রশংসা এটা পড়েই মনে হল মাস্টার্স করার সময় এবং পরবর্তীতে এম এড করার সময় বিভিন্ন থিওরিতে রিওয়ার্ডের কথস যে এসেছে বারবার তা এমনিই নয়! অথচ আমরা কত শাস্তি পেয়ে এসেছি! মনে মনে ভাবলাম ভুলকে ইগনোর করে ভালো কাজের প্রশংসা…এটা ভবিষ্যতে আমার মেয়েদের উপর প্রয়োগ করে দেখবো। (আমার যে কন্যা চুলের মুঠি ধরে টেনর ছিড়ে ওকে সেই সময় আদর করে কোলে তুললে কিন্তু আরো খুশি হয়, বকা দিলে বোঝে না।)
খুবই সুন্দর হয়েছে আপু তোমার এই ফিচারটা।
১৮ ই নভেম্বর, ২০২২ বিকাল ৪:৩১
শায়মা বলেছেন: অনেক ভালোবাসা আপুনি!
এটা সত্যি কথা যেই ক্লাসে টিচার হাউ মাউ খাউ চিল্লায় মাথায় তোলা হয় সেই ক্লাসের বাচ্চারা নয়েজি হয় বেশি। যেই ক্লাসের টিচার কাম এন্ড কোয়ায়েট জেন্টেল সেই বাচ্চাগুলিও অমনই। আর যেই ক্লাসের টিচার আমার মত আনন্দময় সেই ক্লাসের বাচ্চাগুলিও আমার মতই।
আমরা গল্প পড়ার পর ছবি আঁকি সেই সেই গল্পের চরিত্রদের। যারা পারে না তাদেরকে একটু হাল্কা করে এঁকে দেই। বাস তার উপর হাত ঘুরিয়ে তারা কনফিডেন্স পেয়ে যায়। আবার কখনও কখনও আমাব গোল হয়ে দাঁরিয়ে সিলেবাসের বাইরে গান গাই হারে রে রে রে আমায় ছেড়ে দেরে দেরে .. যেমন ছাড়া বনের পাখি মনের আনন্দেরে!!! আমরা সেদিন পিকনিক করলাম। সেই ছবিটা আমি জুড়ে দিয়েছি এই পোস্টে।
তারপর সেদিন গেলাম ফিল্ডট্রিপে বাসে করে শাহাবুদ্দিন পার্কে। সেখানে গিয়ে মনিরা আপুর রক্ত চন্দনের বীজ পড়ে রয়েছে। সবাই মিলে তুলতে বসে গেলাম।
আনন্দে আছি আমি তাদের আনন্দে রে .....
শুনো চুল ছেড়ার সময় বকা না দিয়ে ওকে বুঝাবে যে তুমি ব্যথা পাচ্ছো। দেখবে বকা না বুঝলেও তোমার কষ্ট বেদনা ব্যথা সে ঠিকই বুঝবে।
৫| ১৮ ই নভেম্বর, ২০২২ বিকাল ৪:৫৬
জুল ভার্ন বলেছেন: ফিচার লেখা ভালো হয়েছে। আমার পড়া প্রতিযোগিতায় এখন পর্যন্ত সেরা লেখা।
১৮ ই নভেম্বর, ২০২২ বিকাল ৫:০৭
শায়মা বলেছেন: থ্যাংক ইউ সো মাচ ভাইয়া।
আরও অনেক কথা বলার ছিলো। কিন্তু লিখতে লিখতে পোস্টের দৈর্ঘ থেকে থমকেছি।
আসলেই দুঃখ লাগে ভাইয়া যখন শুনি এখনও কত প্রতিকূল পরিবেশে বাচ্চারা বড় হচ্ছে আমাদের দেশে।
৬| ১৮ ই নভেম্বর, ২০২২ রাত ৮:০৩
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: আপনার ফিচারটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু সমস্যা হল এই পরামর্শ অনুযায়ী শিক্ষা পদ্ধতি বাংলাদেশের সব জায়গায় বাস্তবায়ন করা অনেক ব্যয়বহুল হবে। আমাদের শিক্ষা বিভাগের সেই যোগ্যতা আছে কি না এটা নিয়ে সন্দেহ আছে। এদেরকে প্রশিক্ষিত করতে গেলে লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা এরা প্রশিক্ষণ, খাওয়া দাওয়া, বিদেশ ভ্রমণ, ঘোরাফেরা, হাওয়া খাওয়া ইত্যাদি খাতে ব্যয় করে ফেলবে। আবার আপনার দেয়া অনেক পরামর্শ বেশ ব্যয়বহুল গ্রামের স্কুলের জন্য। আপনি যে সব বিষয় উল্লেখ করেছেন সেগুলি সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে হলে সরকারের অনেক বড় বাজেট লাগবে। সরকারের সহযোগিতা ছাড়া এবং ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি ছাড়া সারা দেশের সকল মানুষের জন্য এটা বাস্তবায়ন করা কঠিন হবে।
ভালো একটা কথা বলেছেন যে "সবচেয়ে যে বড় ক্ষতিটা হয় যখন শিশু কোনো শিক্ষাগ্রহনে হিমশিম খায়, ব্যর্থ হয় তা শিশুমনের উপর চাপ ফেলে। এই ব্যবস্থা শিশুকে হীনমন্যতার মাঝে ফেলে দেয়। "
প্রত্যেক শিক্ষার্থীর জন্য স্বতন্ত্র পরিকল্পনা ও পদ্ধতিঃ আসলে একেকটা বাচ্চার একেক ধরণের মেধা থাকে। কিন্তু আমরা সবাইকে একই ছাঁচে ফেলে দেই। ফলে অনেক বাচ্চা লেখাপড়ায় আগ্রহ হারিয়ে ফেলে।
একটা বাচ্চা পেল ১০০ তে ১০০ আর আরেকটা বাচ্চা পেল ৩০ মার্ক। তখন ঐ বাচ্চাটা হীনমন্যতায় ভোগে। আবার অনেক শিক্ষক পক্ষপাতিত্ব করে আমাদের দেশে। ফলে ভালো ছাত্রকে কম নম্বর দেয়া হয়।
ছোট বাচ্চাদের জন্য ইউনিফর্মের প্রয়োজন নেই। ইউনিফর্মের পিছনে গ্রামের বাবা মাদের অনেক টাকা খরচ করতে হয়। তবে ইউনিফর্মের একটা ভালো দিক হল ধনী আর দরিদ্রের ব্যবধান স্কুলে পোশাকের দ্বারা বোঝা যায় না।
রিডিং কর্ণার, পেইন্টিং কর্ণার, টয় কর্ণার এসবের ব্যবস্থাও ক্লাসরুমে থাকা জরুরী। কিন্তু ব্যয়বহুল।
ক্লাসের ফাঁকে বিরতি দেয়া ভালো। আমাদের হাই স্কুলে ক্লাসের ফাঁকে বিরতি ছিল না। কিন্তু আমরা ঘণ্টা পড়লেই লাইন ধরে টয়লেটে চলে যেতাম। পরের পিরিয়ডের স্যার ক্লাসে ছাত্র কম দেখে গড়গড় করতে থাকতেন।
আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধির জন্য গ্রুপ ওয়ার্ক একটা ভালো সমাধান।
শিশুদেরকে সাঁতার, এক্সারসাইজ এসব প্রয়োজনীয় কাজের পাশাপাশি গার্ডেনিং,পশুপাখির প্রতি ভালোবাসা ও যত্ন, মানবিকতার শিক্ষা দিতে হবে। । এটাও ব্যয়বহুল।
হোম ওয়ার্কের চাপ কমানো খুব দরকার। এটা একটা মানসিক চাপ বাচ্চাদের জন্য। অনেক ফাঁকিবাজ শিক্ষক ক্লাসে না পড়িয়ে বা কম পড়িয়ে হোম ওয়ার্ক দিয়ে দেয়।
সবচেয়ে বড় সমস্যা হল দক্ষ এবং নিবেদিত শিক্ষক পাওয়া। এগুলি টাকা দিলেও পাওয়া যাবে কি না সন্দেহ। কারণ আমাদের দেশের শিক্ষকদের নৈতিকতার মান অনেক কমে গেছে। অনেক ক্রিমিনাল টাইপের শিক্ষক আছে। এখন শিক্ষকদের প্রহার করা নিষেধ থাকলেও এরা বাচ্চাদের মানসিক নির্যাতন করে থাকে। আমার বাচ্চাদের নিয়ে কিছু ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে বললাম।
আপনি যা বলেছেন সেটা বাস্তবায়ন হলে অনেক ভালো হত। এই লেখাটা দেশের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী বা সচিবদের নজরে আসলে ভালো হত।
১৮ ই নভেম্বর, ২০২২ রাত ৮:৪৪
শায়মা বলেছেন: আমাদের একজন ব্লগার ভাইয়া আছেন শিক্ষা মন্ত্রনালয়ে।
ভাইয়ার সাথে আমার যোগাযোগ আছে এবং ভাইয়া আমাকে একবার তাদের শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের শিশুদের জন্য পাঠ্যপুস্তক প্রনয়নের এক সেমিনারে আমন্ত্রন করেছিলেন। সেখানে আমি অবাক হয়ে দেখেছি কত শত জ্ঞানী গুনিজন। ঐ সেমিনারে না গেলে আমি জীবনেও জানতামনা আমাদের দেশের শিক্ষা মন্ত্রনালয়ে শিক্ষা গবেষকেরা কত জানেন। আমি মুগ্ধ হয়েছি।
তবে আমার মনে হয়েছে প্রবলেমটা আসলে শিক্ষক প্রশিক্ষনে। পাঠ্যপুস্তক যত সুন্দর করেই বানিয়ে দেওয়া হোক না কেনো যদি না শিক্ষক সেটা প্রপারলী পড়াতে পারেন তবে কোনো লাভ নেই। আর ভাইয়ার কাছে শুনেছি আমাদের দেশের বিদ্যালয় শিক্ষকদের ট্রেনিং এর সময় সীমা যতটুকু তা বড়ই অপ্রতুল ও বলতে গেলে ইউজলেস।
আরও একটা কথা ভাইয়া থেকে জেনেছিলাম যে শিক্ষকদের বেতনও তেমন ভালো নয় কাজেই শিক্ষকেরা উৎসাহ হারায়।
আমার মতে বাচ্চাদেরকে আনন্দময় শিক্ষা দিতে গেলে শিক্ষকের মনেও থাকতে হবে প্রশান্তি।
৭| ১৮ ই নভেম্বর, ২০২২ রাত ৮:০৪
সেলিম আনোয়ার বলেছেন: ষষ্ঠ ভালো লাগাটা আমার। ব্রাজিল ফুটবল টিম এবার হেক্সা মিশনে সফল হওয়ার মত দল। ফিনিশদের শিক্ষা ব্যবস্থা সম্পর্কে জানা হলো। জীবনেও স্মোক করি নি। নেশা বলতে মাছ ধরার নেশা আছে। নৌকোয় করে ঘুরে ঘুরে ছিপ ফেলে মাছ ধরা দারুন লাগে। তোমার তথ্য বহুল পোস্ট খানি পাঠকের হৃদয় জয় করবে বলেই আমার বিশ্বাস। তোমার এই নিকের পোস্ট মিস করি না আমি। এই নিরস বিষয়ের উপর পোস্ট পড়ে তাই প্রমান হলো। আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থায় নৈতিক শিক্ষা এড করা উচিৎ। ভালোর প্রতি সম্মান আর মন্দের প্রতি অনাগ্রহ সৃষ্টি শিক্ষা জীবন থেকে শুরু হলে তা দেশ আর দশের জন্য মঙ্গলজনক হবে বলে আমি মনে করি।
সুন্দর।+
১৮ ই নভেম্বর, ২০২২ রাত ৮:২৪
শায়মা বলেছেন: অনেক অনেক সুন্দর মন্তব্য ভাইয়া!
ফিনিশদের শিক্ষা ব্যবস্থা এবং জাপান সিঙ্গাপোরের শিক্ষা ব্যবসথা অনেক খানিই সফল! মানে সফল মানুষ হতে সাহায্য করেছে এবং শিশুরা আনন্দ নিয়ে শিখছে।
৮| ১৮ ই নভেম্বর, ২০২২ রাত ৮:৩০
গিয়াস উদ্দিন লিটন বলেছেন: কত বড় লেখা পড়লাম রে!
১৮ ই নভেম্বর, ২০২২ রাত ৯:০৬
শায়মা বলেছেন: তুমি না শিক্ষাপিপাসু ভাইয়া।
তোমার বেবিগুলাও কত্ত ভালো পড়ালেখায়!
তাই এত বড় লেখা পড়ে অনেক ভালো করেছো!
৯| ১৮ ই নভেম্বর, ২০২২ রাত ৮:৪৬
একলব্য২১ বলেছেন:
Ananda Shankar - Mamata
১৮ ই নভেম্বর, ২০২২ রাত ৯:১৫
শায়মা বলেছেন: বাহ!! ভাইয়ু!!! ভেরী নাইস!
নাচতে ইচ্ছা হচ্ছে!!!
কত্তদিন নাচিনা!!!!!!!
লকডাউন এবং তার পরের দিন গুলো থেকে আজ পর্যন্ত শুধু একটা পহেলা বৈশাখের নাচ শিখাইছিলাম বাচ্চাদেরকে......
নাচ নাই তাই আমি দিন দিন এমন মটু হচ্ছি ! কদিন পর স্টেজ ভেঙ্গে যেতে পারে।
১০| ১৮ ই নভেম্বর, ২০২২ রাত ৮:৫৮
রানার ব্লগ বলেছেন: শিক্ষা ব্যাবস্থা যতই পরিবর্তন করুন বা পরিমার্জন করুন লাভ নাই। যতোদিনে না আপনি শিক্ষকদের কে শিক্ষার্থীদের প্রতি সঠিক আচরণ না শেখাবেন। লেখকের শিক্ষার্থীর মতই বলতে হয় আমি এখানে শিখতে আসছি আপনি আমাকে শেখাবেন কি করে নিচে যেতে হয়। শিক্ষিক এটাই ভুলে যায় শিক্ষার্থী স্কুলে বা কলেজে যায় শিখতে। তারা শিক্ষক পেশাকে প্রফেসনাল করতে গিয়ে যেদিকে যাওয়ার কথা তার ঠিক উল্টা পথে যাচ্ছেন। তার উপরে যে দেশের চার রকমের কারিকুলাম চলে সেখানে শেখানোর কাজটাও জটিল।
১৮ ই নভেম্বর, ২০২২ রাত ৯:২৬
শায়মা বলেছেন: ঠিক তাই ভাইয়া।
রাজীব নূর ভাইয়া রবিঠাকুরের শিক্ষা প্রবন্ধের উদাহরন দেইনি কেনো অভিযোগ করেছিলেন। তাই তারপর সেটা নিয়ে কিছুক্ষন পড়লাম। আর রবিঠাকুরের মতে শিশু শিক্ষা শুরুটাই হওয়া উচিৎ মাতৃভাষা দিয়ে। নইলে শিশু কনফিউজড তো হবেই বরং এটা এক রকমের চাপও।
সত্যি কথা বলি আমি নিজেই বাংলা মিডিয়ামে পড়েছিলাম। কিন্তু আমি ছোটবেলা থেকে যতই দুষ্টামী বুদ্ধি নিয়ে চলিনা কেনো পড়ুয়াও ছিলাম। মানে ঐ সে ফার্স্ট হতে হবে মানসিকতায়। যতই পড়ুয়া হই বাংলা মিডিয়াম থেকে যখন ইংলিশ মিডিয়ামে জব করতে আসি তখন মাথায় এই চাপ ফিল করেছি।
ব্রিটিশ কাউন্সিলে জেনেরাল ইংলিশ কোর্স একটার পর একটা করেছি এমনকি আইইএলটিএসও করেছি। বুড়িকালেই আমার ঐ অবস্থা হয়েছিলো আর ছোট্ট বাচ্চাদের উপর কেমন চাপ চিন্তা করো।
তবে আশার বিষয় হলো আজকাল কার্টুন, নেট ইউটউবের যুগে বাচ্চারা পেট থেকে পড়েই ইংলিশ বুঝে এবং বলেও।
১১| ১৮ ই নভেম্বর, ২০২২ রাত ৯:৩৩
রানার ব্লগ বলেছেন: ইংরেজিতে কথা বলাটা কি খুব জরুরী?! যেখানে বাংলাদেশের সকল রাষ্ট্রিয় কাজ চলে বাংলায় সেখানে ইংরেজি শেখার জন্য আমরা বেহুস। অন্যান্য দেশের কথা ভাবুন তারা তাদের ভাষায় কথা বলছে আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে নিজের ভাষায় ভাব প্রকাশ করছে। তারা সরাসরি আমাকে বুঝিয়ে দিচ্ছে তোমাকে আমার সাথে আলোচনা করতে হলে আমার ভাষাটা শিখতে হবে। ভাষার প্রতি ভালোবাসার শ্রেষ্ঠ উদাহরণ আমাদের আর আমরাই ইংরেজি শেখার জন্য মাথা কুটে মরি।
১৮ ই নভেম্বর, ২০২২ রাত ৯:৪২
শায়মা বলেছেন: কোনো জরুরী না!!!!!!!!! বিশ্বাস করো আমি স্কুলে জব না করলে জীবনেও ইংলিশে কথা বলতাম না। আমি বাংলায় গান গাই আমি বাংলাকে ভালোবাসি। আমি প্রায়ই সুযোগ পেলে বাচ্চাদেরকে বলি ধানের খেতের উপর বাতাস বয়ে গেলে কেমন লাগে জানো? পাল তোলা নৌকা কেমন হয় বা রাখাল ছেলর কাকে বলে?
আমি যখন গল্প বলি এই শহুরে বাচ্চারাও চুপ করে নিস্পলক চোখে আমার দিকে চেয়ে থাকে........ তারা গ্রাম চেনে না আমার মত করে প্রজাপতি ফড়িং বা জোনাকী দেখেনি আমি তাদেরকে আমার চোখে দিয়ে স্বপ্ন দেখাই....
১২| ১৮ ই নভেম্বর, ২০২২ রাত ১০:৩১
একলব্য২১ বলেছেন: মোট ৩টি ফিচার লেখা যাবে। তুমি কি তোমার পূর্ণাঙ্গ কোটা পূরণ করতে চাও। তাহলে বাকীটা অন্য কোন বিষয় নিয়ে লিখবে।
আনন্দ শঙ্করের সেতার শুনে তোমার নাচতে ইচ্ছে করছে সেটা কি আনন্দ শঙ্করের সাথে নাচের connection আছে বলে নাচের কথা মনে পড়লো না এমনি এমনি।
তুমি কি আনন্দ শঙ্করের সেতার আগে শুনেছ।
সময় করে তোমার সব ফিচারই পড়বো।
১৮ ই নভেম্বর, ২০২২ রাত ১০:৪২
শায়মা বলেছেন: হ্যাঁ শুনেছি। তার সুর শুনেই নাচতে ইচ্ছা হলো।
যাইহোক আমার মিররমনি কোথায়?
সে না পড়লে আমার কিছু লিখতে ভালো লাগে না!!
যাইহোক, আমি আরেকটাও লিখবো কিন্তু কোন বিষয়ে তুমি বলো দেখি.....
আজকের বিষয় কিন্তু আমি ভাবিনি। আমাকে দুইটা টপিক দিয়েছে যে আমি সেই দুইটা টপিকেই লিখবো আর বস্ত্র শিল্প শাড়ি এমনিতেই লিখেছি কারণ এই বিষয়টা নিয়ে অনেক আগে থেকেই আমি ম্যাগাজিনে লিখেছিলাম ডিটেইলস এবং ধারাবাহিক।
তাই ব্লগের জন্য নতুন করে সব গুলো একসাথে লিখলাম আবারও।
এখন তুমি বলো তো দেখি আমি কিসের উপরে লিখবো!! দেখি পারো কিনা....
১৩| ১৮ ই নভেম্বর, ২০২২ রাত ১০:৫৮
একলব্য২১ বলেছেন: আয়নাপুতুলের মনে হয় কিছুটা মন খারাপ। সে ব্লগে একটা ক্যাচালের সাথে জড়িয়ে গেছে। তাই একটু disturb আছে মনে হয়। মনে শান্তি ফিরে আসলে তোমার পোস্টে ঝাঁপিয়ে পড়বে নিশ্চিত।
কি বিষয় নিয়ে লিখবে? আসলে তুমি তো সব্যসাচী যে কোন বিষয় নিয়ে লিখতে পারো। আর লিখে অন্যে বাড়া ভাতে ছাই দিতে পারো।
মুশকিল! না পারছি না। বিষয় তুমি যদি ঠিক করে থাকো তবে বলতে পারো।
১৮ ই নভেম্বর, ২০২২ রাত ১১:০৭
শায়মা বলেছেন: হুম!!
তাই আমারও মন খারাপ!
ফিচার লিখতে হবে তাই অন্য দিকে মন আর মাথা দিচ্ছি না তবে মন খারাপ আমারও।
আর কি নিয়ে লিখবো বলা যাবে না। সবাই শুনে ফেলবে না?? তাই বলাই যাবে না। কিন্তু ২৪ তারিখের আগে তো লিখবো তাই সময় বেশি নেই।
১৪| ১৮ ই নভেম্বর, ২০২২ রাত ১১:১৪
একলব্য২১ বলেছেন: মন আছে বলেই তো মন খারাপ হয় শায়মা আপু।
১৮ ই নভেম্বর, ২০২২ রাত ১১:২০
শায়মা বলেছেন: হুম তাহা বটে.....
১৫| ১৮ ই নভেম্বর, ২০২২ রাত ১১:৩৫
নেওয়াজ আলি বলেছেন: আমার গ্রামের প্রাইমারি স্কুল পরিচালনা কমিটির আমি একজন নগণ্য সদস্য। অনেক কিছু দেখেও বলা যায় না রাজনৈতিক চাপে। শিক্ষার মান নিচে নেমেছে আর দুর্নীতি উপরে উঠেছে। ভুয়া শিক্ষার্থীর নাম দিয়ে শিক্ষক বৃত্তির টাকা মেরে খায় সেখানে এইসব কথার কী মুল্য দিবে।
১৯ শে নভেম্বর, ২০২২ সকাল ১০:১৬
শায়মা বলেছেন: হ্যাঁ ভাইয়া।
এ কথাও শুনেছি। শিক্ষার সাথে এই সব দূনীতি যতদিন না যাবে শিশুরাই বঞ্চিত হবে।
১৬| ১৮ ই নভেম্বর, ২০২২ রাত ১১:৩৭
একলব্য২১ বলেছেন: বিষয় আর লেখা ভাল লাগলে অনেকের লেখাই আমি পড়ি কিন্তু কেন জানি কমেন্ট করি না। কালকে চাঁদ নিয়ে কাছের মানুষের লেখাটা দারুণ লেগেছে। আর আজ শাহ আজিজভাইয়ের লেখাটার ২/৩ লাইন পড়েছি, এই লেখা না পড়লে শান্তি পাবো না।
১৯ শে নভেম্বর, ২০২২ সকাল ১০:১৮
শায়মা বলেছেন: চাঁদের জন্ম নিয়ে আমি জানতাম শুধু এটা পৃথিবী থেকে ছুটে যাওয়া এক খন্ড আরও যে মতবাদ জানতামই না।
চাঁদ ছাড়া পৃথিবীর কি হবে জেনে তো আমি এখুনি ভয়ে মরছি!!
১৭| ১৮ ই নভেম্বর, ২০২২ রাত ১১:৪২
মোহাম্মদ গোফরান বলেছেন: আমি শুধু মন্তব্য পড়ি। কোন মন্তব্য না করি।
১৯ শে নভেম্বর, ২০২২ সকাল ১০:২২
শায়মা বলেছেন: কেনো কেনো কেনো???
বুঝেছি ফিচারের দৈর্ঘ থেকে পালিয়েছো পড়া ছেড়ে। হা হা
আমিও ভাবছিলাম এত বড় হয়ে গেলো লেখাটা কিন্তু আরও কত কথা বলার ছিলো। আরও আরও ভালো স্কুলগুলোর কার্য্যক্রম আরও আরও ভালো ভালো দেশের স্কুল গুলোর গল্প।
আমাদের দেশের শিক্ষকদের কম বেতন তাদের আনসাটিসফেকশন। দূর্নিতীর কারণে শিক্ষার্থীদের দূর্ভোগ! ও মাই গড!
মডু ভাইয়ারা আমার গলা চেপে ধরতো মনে হয় এই বক বক শুনলে।
আমি মুনাব্বির ভাইয়ার সেই সেমিনারে গিয়ে শুনেছিলাম বাংলাদেশের স্কুলগুলোতে নাকি কোন দেশ যেন অনেকগুলো পিয়ানো দিয়েছে। একদম ১ নং পিয়ানো। কিন্তু সে সব পিয়ানো অনাদরে অবহেলায় পড়ে আছে স্কুলগুলোতে কারণ পিয়ানো বাজানোর টিচার নেই।
আমার শুনে এত কষ্ট লেগেছিলো।
১৮| ১৯ শে নভেম্বর, ২০২২ সকাল ১১:০৯
করুণাধারা বলেছেন: শিশু শিক্ষা নিয়ে তোমার ভাবনাটা অবশ্যই খুব ভালো, কিন্তু আমাদের দেশে এটা করা সম্ভব কেবল উচ্চবিত্তর সন্তানদের জন্য, আমজনতার সন্তানদের জন্য না। যে দেশে শিক্ষার মান এমন যে শিশুদের কোচিং এ যাওয়া লাগে, সেখানে আনন্দে শিক্ষা লাভ সম্ভব না, তৃতীয় শ্রেণী পর্যন্ত পরীক্ষা তুলে দিলেও না।
আমি তো দেখি গুটিকয় সরকারি স্কুল ছাড়া কোথাও খেলার মাঠ পর্যন্ত নেই, সাঁতার শেখার ব্যবস্থা ঢাকায় কই!! আবাসিক এলাকায় ফ্ল্যাটবাড়ি ভাড়া নিয়ে চলে স্কুলের ব্যবসা, এখানে আনন্দময় শিক্ষার কোন ভাবনা নেই।
তবে তোমার ভাবনার সাথে আমি একমত, শিশুদের শিক্ষা ব্যবস্থা এমন হলে তা কল্যানকর হতেই হবে।
নিতান্তই কৌতুহলে গুগল সার্চ দিলাম তোমার উল্লিখিত তিন দেশের পার ক্যাপিটা ইনকাম ২০২২ দেখার জন্য। দেখলাম সিঙ্গাপুর ৬১,০০০/০০ ডলার, জাপান ৩৬,২০০/০০ ডলার, ফিনল্যান্ড ৪৮৩০০/০০ ডলার।
বাংলাদেশের ২৮২৪/০০ ডলার।
আমাদের দেশে ঐসব দেশের মতো শিক্ষা ব্যবস্থা কি করে হবে!
দুই নম্বর প্রতিমন্তব্যে রবীন্দ্রনাথের শিক্ষা ভাবনা তুলে এনেছ। এদেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে খুব চমৎকারভাবে উপস্থাপন করেছেন 'তোতাকাহিনী'তে।
১৯ শে নভেম্বর, ২০২২ সকাল ১১:২৪
শায়মা বলেছেন: ঠিক তাই আপুনি!
আমার স্কুলে আমি নিজেও আনন্দের সাথে পড়াই আমাদের বাচ্চাগুলোর গায়ে ফুলের টোকা লাগতে দেই না। মহানন্দে প্রায় এপ্রোপ্রিয়েট উপায়েই তারা স্কুলে আসছে কিন্তু নিম্নবিত্ত এবং গ্রামে গঞ্জে শিক্ষাব্যবস্থার কি হবে?
এই কঠিন কঠোর শিক্ষা পদ্ধতি এবং ভীতি ভয় বা অদক্ষতা যেমনই বাচ্চাদের জন্য ক্ষতিকর তেমনই শিক্ষকের জন্যও।
আমাদের সরকারী শিক্ষা ক্ষেত্রে নাকি দূর্নীতি এতটাই জড়িয়ে আছে যে শিশুরা বঞ্চিত হয়।
১৯| ১৯ শে নভেম্বর, ২০২২ সকাল ১১:১৩
মনিরা সুলতানা বলেছেন: নতুন শিক্ষাক্রমে পাঠ্যবই এবং শিক্ষা-পদ্ধতিতে বেশ বড় পরিবর্তন আসছে শুনলাম।
আপাতত চলছে ট্রেইনারদের প্রশিক্ষণ চলছে। আমার খুব জানতে ইচ্ছে করছে সেখানে কী থাকছে সেই বড় পরিবর্তনের মাঝে ?
অসাধারণ পোষ্ট ! চমৎকার ধাপে ধাপে গুছিয়ে লেখা এবং উদহারন। সেরা পোষ্ট !!!!
ভালোবাসা নিও।
১৯ শে নভেম্বর, ২০২২ সকাল ১১:২৮
শায়মা বলেছেন: আপুনি
সেখানে কি থাকবে মুনাব্বির ভাইয়া বলতে পারবে। মুনাব্বির ভাইয়া শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের পাক প্রাথমিক নিউ টেক্সবুক প্রনয়নের সাথে জড়িত।
নতুনভাবে বই এবং তার শিক্ষা পদ্ধতি এসব নিয়ে কাজ চলছে। কিন্তু টিচারস ট্রেইনিং এর সময়টা এত কম যে আমার মনে হয় না সেটা খুব কার্য্যকরি হবে।
বইগুলি কিন্তু খারাপ না কিন্তু দরকার সঠিক প্রশিক্ষনপ্রাপ্ত শিক্ষক।
আরও জড়িয়ে রয়ছে নাকি দূর্নীতি, শিক্ষকদের আনস্যাটিসফেকশন, কম বেতন ইত্যাদি ইত্যাদি....
২০| ১৯ শে নভেম্বর, ২০২২ সকাল ১১:২২
সাড়ে চুয়াত্তর বলেছেন: আপনার পরামর্শগুলি খুব ভালো। কিন্তু এটাকে সারা দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে বাস্তবায়ন করা অনেক কঠিন হবে। কারণটা সুন্দরভাবে উপরে করুনাধারা আপু বলেছেন। এক কালে এই দেশে ডাক্তার আর শিক্ষককে সম্মান করা হত। এখন কিন্তু মানুষ করতে চায় না। এটার অনেক কারণ আছে। আমার এই ব্যাপারে ডাক্তার এবং শিক্ষকদের নিয়ে অনেক অভিজ্ঞতা আছে। অভিভাবকরাও সেই রকম। ১০ লাখ টাকা ঘুষ দিয়ে নামীদামী স্কুলে ভর্তি করাবে। যার টাকা নাই সে পারবে না। আমরা প্রাইমারী স্কুলে মাসে ১ টাকা চাঁদা দিয়ে পড়েছি। এখন একটা বাচ্চার পিছনে হাজারে হাজারে টাকা লাগে। শিক্ষা এখন আন্তর্জাতিক পর্যায়েও একটা ব্যবসা। ইংল্যান্ডের অনেক প্রতিষ্ঠান এইভাবে সার্টিফিকেট বেঁচে চলছে। আমার এই ব্যাপারে কিছু ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা আছে সাময়িক শিক্ষক হিসাবে।
তারপরও আশা করবো আপনার এই প্রস্তাবগুলি নিয়ে যেন শিক্ষা বিভাগ চিন্তা করে। ওনাদের নজরে যেন পড়ে। একটা জাতির উন্নতির জন্য সবার আগে দরকার শিক্ষা। উন্নত শিক্ষা ছাড়া একটা জাতি কখনও আগাতে পারে না। শিক্ষার মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা হল শিশুদের শিক্ষা। আমাদের দেশে প্রাইমারী শিক্ষকদের বেতন কাঠামো ভালো না। কিন্তু এরাই কিন্তু জাতির ভবিষ্যৎ কর্ণধারদের বুনিয়াদ তৈরির দায়িত্বে আছেন।
১৯ শে নভেম্বর, ২০২২ সকাল ১১:৩১
শায়মা বলেছেন: একদম তাই।
আর প্রাক প্রাথমিক থেকে প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক পর্যন্ত ফ্রি পড়ালেখার সকল খরচ ফ্রি করে দিলে মনে হয় এই অবস্থার কিছুটা উন্নতি হত।
২১| ১৯ শে নভেম্বর, ২০২২ দুপুর ১:০৩
রাজীব নুর বলেছেন: প্রথমেই আপনাকে ধন্যবাদ আপনি আমার মন্তব্যে রাগ করেন নি বলে।
আসলে আমাদের সুখে দুঃখে, বিপদে আপদে সব সময় রবীন্দ্রনাথের কাছেই যেতে হবে। সে একজন ম্যাজিশিয়ান।
আপনাকে অনুরোধ করবো, কাজী নজরুল ইসলামের 'আমার পথ' প্রবন্ধটি পড়বেন। অবশ্যই পড়বেন। অনলাইনে পেয়ে যাবেন। এই প্রবন্ধটি সকলের পড়া উচিৎ।
১৯ শে নভেম্বর, ২০২২ দুপুর ১:৫০
শায়মা বলেছেন: না রাগ করবো কেনো? আমি কি পাগল নাকি? নাকি দুনিয়ার সব জানি!!
আমি আসলে শুধু শিক্ষাব্যবস্থা একটা স্কুলে ক্লাসে কি কি রকম করে পড়ালে ভালো হয় সেটাই লিখতে চেয়েছিলাম আর এই রকম পরালেখা এখন বর্তমানে কোথায় হচ্ছে সেসব নিয়ে লিখেছিলাম কিন্তু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর লিখেছেন আমাদের সীমাবদ্ধতা, প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আমি রবীন্দ্রনাথের গান কবিতা গল্প নিয়েই বেশি থেকেছি। শিক্ষা নিয়ে যা বলেছেন তা নিয়ে এত মাথা না ঘামিয়ে উন্নত দেশের দিকে চলে গেছিলাম। কিন্তু নিজের দেশের কথা তো দেশের মানুষই ভাববেন। যাইহোক আমার পোস্ট এমনিতেই এত বড় এখন আবার রবিঠাকুরের কথা জুড়ে দিলে সামু আমার মাথায় বাড়ি দিতে পারে। তবুও রবিঠাকুরের কথাগুলো একটু ছোট আকারে লেখা যায় কিনা ভেবে চিন্তে দেখে লিখে জুড়ে দেবো পোস্টে।
নজরুল ইসলামের আমার পথে আবার কি আছে!!! গেছি এইটা আবার এখন পড়তে গেলে নেক্সট ফিচারের লেখা লিখবো কখন!!!!
ওকে যাই হোক পড়ছি আগেই।
২২| ১৯ শে নভেম্বর, ২০২২ বিকাল ৩:০৪
মিরোরডডল বলেছেন:
বাচ্চাদের ওপর প্রেশার আমার কখনোই ভালো লাগে না ।
বাচ্চাদের নিয়ে পারেন্টসদের মাঝে যে কম্পিটিশন, চরম বিরক্তকর লাগে ।
সহমত, একটা সময় পর্যন্ত বাচ্চাদের পড়ালেখা ফ্রি হওয়া উচিৎ, কিন্তু মান ঠিক রাখতে হবে ।
শিক্ষার মান নির্ভর করে ভালো প্রশিক্ষিত টিচারদের ওপর ।
এই দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সরকারি। বাচ্চারা হেসেখেলে পড়াশোনা করে এখানে। নাই কোনো হোমওয়ার্ক আর নাই কোনো ভারী ব্যাগ বহন করার ঝামেলা।
চমৎকার! শৈশব ঠিক এমনটাই হওয়া উচিৎ ।
ফিনল্যান্ডের এডুকেশন ওয়ার্ল্ডের টপ থ্রির মাঝে আছে ।
আমাদের আপুটা কতোকিছু জানে !
১৯ শে নভেম্বর, ২০২২ বিকাল ৩:১২
শায়মা বলেছেন: কিন্তু আমরা বড় হয়েছিলাম এই প্রেশার মাথায় নিয়েই।
অংক আমার একদম ভালো লাগতো না। আমার ভালো লাগতো ছবি আঁকতে নাচতে, হারমোনিয়াম তানপুরা বাঁজাতে।
কিন্তু রোজ সকালে ঐ অংক বিভিষিকা ছিলো আমার কাছে।
কম্পিটিশন এটা আমার মা আমাকে শিখিয়েছিলো সব কিছুতে ফার্স্ট না হতে পারলে জীবন নিরানন্দ করে দেবো!
সেই ভয়ে ভয়ে আমি
মিররমনি আমি কত কিছু জানি কিনা জানিনা জানার চেষ্টায় রত থাকি। আমি অস্ট্রেলিয়ায় ৩ মান্থসের একটা কোর্স এর অফার পেয়েছি। মেঘ না চাইতেই জল! মানে আমি জীবনেও চাইনি কিন্তু আমার জীবনে এমন অনেক কিছুই কই থেকে যেন উদয় হয়েছে।
তোমার সাথে দেখা হয়েও যেতে পারে। আমি তো তোমাকে চিনবো না
শাড়ি পরা ছবিও তো দিলে না।
২৩| ১৯ শে নভেম্বর, ২০২২ বিকাল ৩:২৮
মিরোরডডল বলেছেন:
অনেক কিছু শেখা নাথিং রং, যতক্ষণ সেটা প্রেশার না হয় বা আনন্দের সাথে শিখবে ।
ওয়ান আফটার আনাদার, নট অ্যাট এ টাইম এভ্রিথিং ।
তাহলেতো প্রেশার হবেই ।
তুমি লাকি, যা ভালো লাগে সেগুলো শিখেছো ।
মনের আনন্দ সবচেয়ে ইম্পরট্যান্ট ।
তারমানে এই না যা দরকার সেগুলো শিখবে না ।
অবশ্যই শিখবে যেটা প্রয়োজন কিন্তু লিমিটের মাঝে ।
প্রেশার দিয়ে একদমই ঠিক না ।
এতে মানসিক চাপ হয় ।
কিসের কোর্স আপু ?
খুবই ভালো নিউজ !
ইউ ইউল ডু ওয়েল আই’ম সিওর ।
১৯ শে নভেম্বর, ২০২২ বিকাল ৩:৪০
শায়মা বলেছেন: টিচিং কোর্স
হ্যাঁ যদি বেঁচে থাকি তো ভালো করি না করি ভালোর জন্য প্রান মন দিয়ে খাঁটা খাঁটি!!!!!!!!
তুমি কি সুকুমারের ঐ কবিতাটা পড়েছো?
এমন আমার জেদ যখন অং নিয়ে বসি।
একুশবারে না হয় যদি বাইশবারে কষি।
আর এটাও শুনেছো ?
আমার নাম বটে
আমি সদাই আছি চটে!
কটমটিয়ে তাকাই যখন সবাই পালাই ছুটে
চশমা পরে বিচার করে চিরে দেখাই চুল
উঠতে বসতে করছে সবাই হাজার গন্ডা ভুল
আমার চোখে ধুলো দেবে সাধ্যি আছে কার?
ধমক শুনে ভূতের বাবা হচ্ছে পগার পার
হাসছো!! বটে!! ভাবছো বুঝি মস্ত তুমি লোক
একটি আমার ভেংচি খেলেই উটে যাবে চোখ....
https://prokashoni.net/article/sukumar-ray-kajer-lok/
২৪| ১৯ শে নভেম্বর, ২০২২ বিকাল ৩:৫২
মিরোরডডল বলেছেন:
তোমার সাথে দেখা হয়েও যেতে পারে। আমি তো তোমাকে চিনবো না
সেই ভালো, সেই ভালো ।
দূরত্ব সম্পর্ক মধুর করে ।
অজানাতেই জানার আগ্রহ থাকে ।
সেই ভালো, সেই ভালো
শাড়ি পরা ছবিও তো দিলে না।
ছবি তোলাতে আগ্রহ না থাকায় ছবি ভিডিও এগুলো থেকে দুরেই থাকি ।
ব্লগে যেখানে এনোনিমাস হয়েই থাকতে চাই, সেখানে কি ছবি দিবো
আমি মনে হয় কিছুটা অসামাজিক।
সেলফ আইসোলেশনে পর্দার আড়ালের জীবনে থাকতেই পছন্দ করি ।
আমার সব আনন্দ নেচারকে ঘিরে, প্রকৃতির মাঝে ঘুরে বেড়াতে পছন্দ করি ।
মানুষ থেকে কিছুটা দূরে থাকতেই ভালো লাগে ।
People hurt people.
People betray people.
But nature always welcome and embrace you.
১৯ শে নভেম্বর, ২০২২ বিকাল ৫:০৪
শায়মা বলেছেন: আমাকে চিনলে একটা ছবি তুলে রেখো ওকে!!!!
নীল জামদানীটা পরে থাকবো।
হুম মানুষ কথা বলতে পারে মারতে পারে ধরতে পারে ভালোবাসতেও পারে!!!
নেচারকে শুধু দেখতেই পারো সে কি তোমাকে মারতে ধরতে ভালোভবাসতে পারবে? তার তো মুখ হাত পা কিছুই নেই।
২৫| ১৯ শে নভেম্বর, ২০২২ বিকাল ৩:৫৮
মিরোরডডল বলেছেন:
সুকুমারের আমার প্রিয় হচ্ছে সৎপাত্র
শুনতে পেলুম পোস্তা গিয়ে-
তোমার নাকি মেয়ের বিয়ে ?
গঙ্গারামকে পাত্র পেলে ?
জান্তে চাও সে কেমন ছেলে ?
মন্দ নয় সে পাত্র ভাল-
রঙ যদিও বেজায় কালো ;
তার উপরে মুখের গঠন
অনেকটা ঠিক প্যাঁচার মতন ।
বিদ্যে বুদ্ধি ? বলছি মশাই-
ধন্যি ছেলের অধ্যবসায় !
উনিশটি বার ম্যাট্রিকে সে
ঘায়েল হয়ে থাম্ল শেষে ।
বিষয় আশয় ? গরীব বেজায়-
কষ্টে-সৃষ্টে দিন চলে যায় ।
মানুষ ত নয় ভাই গুলো তার-
একটা পাগল একটা গোঁয়ার ;
আরেকটি সে তৈরি ছেলে,
জাল ক'রে নোট্ গেছেন জেলে ।
কনিষ্ঠটি তব্লা বাজায়
যাত্রাদলে পাঁচ টাকা পায় ।
গঙ্গারাম ত কেবল ভোগে
পিলের জ্বর আর পাণ্ডু রোগে ।
কিন্তু তারা উচচ ঘর
কংসরাজের বংশধর !
শ্যাম লাহিড়ী বনগ্রামের
কি যেন হয় গঙ্গারামের ।-
যাহোক্, এবার পাত্র পেলে,
এমন কি আর মন্দ ছেলে ?
১৯ শে নভেম্বর, ২০২২ বিকাল ৫:১১
শায়মা বলেছেন: হা হা এটা কমন! কিন্তু মজার...
বাট আরও আরও আছে .... যদিও সেগুলোও কমন...
আসলে সুকুমারের সব লেখাই শিক্ষামুলক।
২৬| ১৯ শে নভেম্বর, ২০২২ বিকাল ৪:০৪
ভুয়া মফিজ বলেছেন: আমাদের এখানে আন্ডা-বাচ্চা থেকে বুড়া-ধাড়ি সব স্কুলেরই ইউনিফর্ম আছে। এটা জরুরী......কেন? বিস্তারিত বলার টাইম নাই। তবে আবহাওয়ার সাথে মানানসই ইউনিফর্ম ঠিক করা স্কুলের দায়িত্ব। আর আমাদের দেশের শিক্ষা-ব্যবস্থার কথা বলে লাভ নাই। এটাকে দিনে দিনে ইচ্ছাকৃতভাবে পঙ্গু বানানো হচ্ছে। আমলারা খিচুড়ি বানানো শেখার জন্য বিদেশ ভ্রমন করতে পারে, কিন্তু সরেজমিনে বিশ্বমানের শিক্ষাব্যবস্থা শেখার জন্য কোথাও যায় না।
সবই কপালের লিখন!!!
বাই দ্য ওয়ে.........ফিচার নিদারুণ হয়েছে।
১৯ শে নভেম্বর, ২০২২ বিকাল ৫:১৩
শায়মা বলেছেন: থ্যাংক ইউ সো মাচ ভাইয়ু!!!!!!!!
ফিচার লেখা সুন্দর বলার জন্য কিন্তু আমি সত্যি চাই শিক্ষার উন্নয়ন হোক আমাদের দেশের সকল শিশুর জন্য।
২৭| ১৯ শে নভেম্বর, ২০২২ বিকাল ৪:১৩
ভুয়া মফিজ বলেছেন: ছবি তোলাতে আগ্রহ না থাকায় ছবি ভিডিও এগুলো থেকে দুরেই থাকি ।
ব্লগে যেখানে এনোনিমাস হয়েই থাকতে চাই, সেখানে কি ছবি দিবো
আমি মনে হয় কিছুটা অসামাজিক।
সেলফ আইসোলেশনে পর্দার আড়ালের জীবনে থাকতেই পছন্দ করি ।
আমার সব আনন্দ নেচারকে ঘিরে, প্রকৃতির মাঝে ঘুরে বেড়াতে পছন্দ করি ।
মানুষ থেকে কিছুটা দূরে থাকতেই ভালো লাগে ।
হে হে হে..........মিড দেখি আমার ফিমেইল ভার্সান। নয়তো মনের কথা পরে (মানে মিড আর কি!!! ) জানলো কেমনে?
১৯ শে নভেম্বর, ২০২২ বিকাল ৫:১৮
শায়মা বলেছেন: মনের কথা পরে জানলো তোমাদেরকে দেখে দেখেই এই যে তুমি কতদিন যাবৎ ব্যাঘ্র হয়ে বসে আছো। নট নড়ন চড়ন....
https://www.youtube.com/watch?v=kCFbiVnqTIo' target='_blank' >পায়ে পড়ি বাঘ মামা করো নাকো রাগ মামা....
২৮| ১৯ শে নভেম্বর, ২০২২ বিকাল ৪:৫৯
মিরোরডডল বলেছেন:
হে হে হে..........মিড দেখি আমার ফিমেইল ভার্সান। নয়তো মনের কথা পরে (মানে মিড আর কি!!! ) জানলো কেমনে?
স্বপ্নে পেয়েছি ম্যান ! স্বপ্নে পেয়েছি
১৯ শে নভেম্বর, ২০২২ বিকাল ৫:২০
শায়মা বলেছেন: কেউ কখনও খুঁজে কি পায় স্বপ্নলোকের চাবি
গাচ্ছি ....
২৯| ১৯ শে নভেম্বর, ২০২২ বিকাল ৫:০৫
ভুয়া মফিজ বলেছেন: স্বপ্নে পেয়েছি ম্যান ! স্বপ্নে পেয়েছি
ডরাইছি! ছোটদেরকে ভয় দেখানো ঠিক না। স্বপ্নে আমাকে না দেখলেই খুশী!!!
১৯ শে নভেম্বর, ২০২২ বিকাল ৫:২১
শায়মা বলেছেন: ভাইয়া দুঃস্বপ্ন হবে মনে হয়... হা হা
৩০| ১৯ শে নভেম্বর, ২০২২ বিকাল ৫:১২
মিরোরডডল বলেছেন:
হা হা হা…… ভুম অনেক মজার, ইয়াম্মি, মুখরোচক
১৯ শে নভেম্বর, ২০২২ বিকাল ৫:২১
শায়মা বলেছেন: ভুম কি খানা পিনা?
৩১| ২০ শে নভেম্বর, ২০২২ সকাল ৭:২০
সোহানী বলেছেন: তুমি যা বলেছো আমাদের এখানকার বাচ্চারা ঠিক একইভাবে স্কুলে শিখে। কিংবা ফিনল্যান্ডের যে উদাহরন এনেছো এখানেও ঠিক একইভাবে চলে। বরং বলা যায় আরো বেশীই করে। যেমন এখানে বাচ্চা হবার পর মায়েদের দেখাশোনা হাড়িপাতিল মাজা রান্না করা সব কিছুর জন্য দরকার হলে হেল্পার আসে। এবং সবই সরকারী পয়সায় যদি তোমার বেতন কম থাকে।
যাহোক, এতো কিছু বলে দেশের মানুষদের কষ্ট দিতে চাই না কারন আমাদের দেশে সম্ভব নয়। কেন সম্ভব নয়, ইউনিফর্মের কথাই বলি। তোমরা সবাই ইউনিফর্ম এর বিপক্ষে। কিন্তু আমাদের দেশের জন্য আমি ইউনিফর্ম এর পক্ষে।
কেন?
কারন ইউনিফর্ম না থাকলে বাচ্চারা একেজন একেক রকম ড্রেস পড়ে আসবে। তখন তার ড্রেস দেখে আরেকটি বাচ্চা বাবা-মাকে বলতেই পারে আমি ওরকম ড্রেস চাই। অনেকটা রেসারেসি তৈরী হতে পারে। কারন আমাদের কালচার খুব ড্রেস নিয়ে ভাবে। কে কি পড়লো তা নিয়ে কথা বলি। কিন্তু দেশের বাইরে আমরা ড্রেস ধার ধারি না। আমার মেয়ে এক ড্রেস পরে দিনের পর দিন স্কুলে যায়। তার কোন মাথা ব্যাথা নেই, আমারো নেই। পড়লেই হলো। যেটা দেশে সম্ভব নয়।
ফিচারে ভালোলাগা। আর, তোমার স্বপ্নের মতো স্কুলগুলো হোক এ প্রত্যাশায়।
২০ শে নভেম্বর, ২০২২ রাত ৯:৪৪
শায়মা বলেছেন: আমাদের স্কুলও এইভাবেই প্রায় চলে কিন্তু আমি বলতে চেয়েছি বাংলাদেশের সকল শিশুদের এমন কিছু শিক্ষাব্যবস্থা হোক যেন তারা ভীতিকর লেখাপড়ার স্মৃতি না নিয়ে আনন্দময় স্মৃতি নিয়ে পড়ালেখা করতে পারে।
অনেক অনেক থ্যাংকস আপুনি!
৩২| ২০ শে নভেম্বর, ২০২২ দুপুর ১:০১
বাকপ্রবাস বলেছেন: ডিটেইল্ড সব দিয়ে দিলেন, কমেন্ট করার যেন কিছুই আর বাকী রইলনা
বাংলাদেশ প্রেক্ষাপটে আমাদের অনেক সীমাবদ্ধতা আছে আমরা চাইলে অনেক কিছু পারিনা
আবার আমাদের অনেক সক্ষমতা আছে আমরা চাইওনা ওসব করার
আবার আমাদের কী কী সক্ষমতা আছে আমরা হয়তো জানিওনা, জানার চেষ্টাও করিনা
প্রথমত প্রাথমিক শিক্ষা ব্যাবস্থায় রাষ্ট্র তার যে ভুমিকার রাখা দরকার এবং যে সামর্থ সেটা সে রাখছেনা চেষ্টাও করছেনা, সকলের সমান শিক্ষা দেয়া উচিত সেটা রাষ্ট্র ভুলতে ভুলতে এখন জানেওনা
আমাদের ধনী দরিদ্র বৈষম্য এর নাগাল আর ধরে রাখতে না পারার অন্যতম কারনও এই প্রাথমিক শিক্ষায় রয়ে গেছে যেন, সেখানে যে বৈষম্যটা সৃষ্টি করা হয়েচে সেটা শিশুর কাছে স্বাভাবিক ভাবে ধরে নিয়ে বেড়ে উঠছে এবং নিজেকে এলিট শ্রেণিতে রেখে সে বড় হচ্ছে এবং অন্যদের আর গোনায় ধরবেনা
গরীবরা পয়সার অভাবে আর সুশিক্ষা পাবার সম্ভবনা থাকছেনা এবং তার পক্ষে আর ঘুরে দাড়ানোর কোন উপকরণই থাকছেনা, অথচ আগে এমনটা ছিলনা, ধনী গরীব সব জায়গা থেকে মেধাবীরা উঠে আসতো
তিন নাম্বার পয়েন্টে অনেকেই আপত্তি তুলেছে, আসলে সেটা মধ্যবিত্ত এবং নিম্নবিত্তের স্কুলের জন্য রাখতেই হবে, কারন নতুন কাপড় পরে সকলে স্কুলে যেতে পারবেনা, শিশুরা অন্যের নতুন দামী কাপড় দেখে নিজেরাও চাইবে
আমাদের স্কুলে সৃজনশীলতাকে জোর দিতে হবে, শিশুর কোন দিকে ঝোক সেটা দেখার বোঝার জন্য প্রয়োজনীয় শিক্ষক, সাবজেক্ট ও পরিবেশ গড়ে তুলতে হবে সীমাবদ্ধতা থাকা সত্বেও
২০ শে নভেম্বর, ২০২২ রাত ৯:৪৬
শায়মা বলেছেন: আসলেই এত বৈষম্য আগে ছিলো না। কারণ এত ইংলিশ মিডিয়াম এত প্রাইভেট স্কুল বিশ্ববিদ্যালয় ছিলো না। এখন যেহেতু বৈষম্য হয়েছেই তবেই উচিৎ সরকারেরও উদ্যোগ নেওয়া।
২২ শে নভেম্বর, ২০২২ রাত ৯:২৮
শায়মা বলেছেন: হা হা এত আনন্দ কেনো ভাই্য়ু?
যাইহোক আমাকেও আনন্দ দেবার জন্য থ্যাংকস।
২২ শে নভেম্বর, ২০২২ রাত ৯:৪৮
শায়মা বলেছেন: না!!!!!!!!!!!!!!! দুঃখ শুনবো কেনো??
এটাও আনন্দ!
৩৫| ২২ শে নভেম্বর, ২০২২ রাত ১০:০৫
একলব্য২১ বলেছেন: এটা প্রথম থেকে শুনেছ। আমি ১৪ মিনিট পর্যন্ত শুনি তারপর আর শুনি না। র লাগে। আমার ফিউশন ভাল লাগে।
এই জাতীয় মিউজিক কি শুনো শায়মা আপু। এখন ব্যাকগ্রাউন্ডে হরিপ্রসাদ চৌরাশিয়ার সৃষ্টি বাজছে। আরও অনেকের মিউজিকও শুনি পণ্ডিত শিব কুমার শর্মার সন্তুরও ভাল লাগে।
২২ শে নভেম্বর, ২০২২ রাত ১০:২২
শায়মা বলেছেন: লোনলী মানুষেরা নাকি বেশি গান শোনে।
আমি কিন্তু নেভার এভার লোনলী। আমার সঙ্গ আমার হাজার হাত হা হা
এমন ওমন সবই শুনি আমি কাজের সময় মিউজিক ইনস্ট্রুমেনতাল কিন্তু বানী ও সূরে যে সব গান আমি গানের কথায় হারিয়ে যাই।
সব গানই মনে হয় আমার জন্য লেখা হা হা
নিজেকে ছাড়া কিছুই বুঝিনা রুমী বলেছিলো একদিন ...... হা হা তুমি আমার প্রথম সকাল যার কনভারসেশন স্টাইল নিয়ে লিখেছিলাম হা হা
৩৬| ২২ শে নভেম্বর, ২০২২ রাত ১০:১০
একলব্য২১ বলেছেন: মলির মন খারাপ মনে হয়। ব্লগে মন কষাকষি হচ্ছে দুই একজনের সাথে। ব্লগে কারও সাথে এই রকম হলে তোমার কি মন খারাপ হয়। আর হলে কি কর। মন খারাপ থেকে মুক্তিও বা করে মিলে।
২২ শে নভেম্বর, ২০২২ রাত ১০:২৬
শায়মা বলেছেন: মানুষের কষ্ট দেখলেই আমার শুধু মন খারাপ হয় কিন্তু ব্লগে বা এমনিতে সত্যিকারের দুনিয়ায় মানুষ যখন আমার সাথে খারাপ বিহেব করে আমার জীবনেও মন খারাপ হয়না আমার যেটা হয় মেজাজ খারাপ। ইচ্ছা করে এক চড়ে মুন্ডু ঘুরাই দেই সেই গুলার।
আমি নিজে যেচে কখনও কারো সাথে লাগিনা কাজেই যারা লাগে তারা আসলেই নাম্বার ওয়ান শয়তান এর লাঠি বা বোকা......
যাইহোক ব্লগে অনেক কিসিমই আছে আমিও এক কিসিম কিন্তু কিসিমের কিসিম তারও কিসিম আছে সেইগুলারে পাত্তায় নিলে জীবনে আর সৃজনশীল কিছুই করা হবে না...... শুধুই টাইম নষ্ট...... আর টাইম ইজ মানি......
৩৭| ২৩ শে নভেম্বর, ২০২২ রাত ১২:৫২
শার্দূল ২২ বলেছেন: তোমার পয়েন্ট গুলো পড়েছি, অনেক ভালো লেখা। ইউনিফ্রম নিয়ে নুর আলম ভাইকে সমর্থন দিলাম,তোমার জবাবাটাও ঠিক আছে। আর উন্নত দেশের বিষয় গুলো আমাদের এখানেও আছে, বরং অনেক দিক দিয়ে আরো উন্নত। দুর্ভাগ্য আমাদের দেশের সেই দিকে এখনো নজর দেয়নি। আসলে রাজনীতির মানুষ গুলো এসবে কোন নজর রাখেনা, তারা শুধু ভোট ভোটার ক্ষমতা নিয়েই পড়ে থাকে। কোন নেতা নেত্রীর নেই যারা নির্বাচনী ইস্তেহারে শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য নিয়ে কোন কমিটমেন্ট করে ভোট চান। এই দিক দিয়ে দিল্লি মুখ্য মন্ত্রী কেজরিওয়াল এগিয়ে, দিল্লির শিক্ষা ব্যবস্থা একদম বদলে দিয়েছেন।
সরকারের উচিৎ শিক্ষকদের এবং শিক্ষা মন্ত্রীকে রাষ্টিয় খরচে উন্নত দেশ থেকে শিক্ষা বিষয়ে বিশেষ জ্ঞান বা ধারণা নিয়ে আসা।
আশার বাণী হলো যেসব দেশের কথা বলছি তারা একদিনে এই জায়গায় আসেনি। একেকটা দেশের ৩০০ বছরের ইতিহাস। হয়তও আগামি ২০/৩০ বছরে বদলে যাবে এভাবেই যেভাবে তুমি ভাবছো এভাবে একদিন তোমাদের দিকে সরকারের নজর পড়বে।
সব মিলিয়ে খুব মুল্যবান পোষ্ট।
২৪ শে নভেম্বর, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:৫৯
শায়মা বলেছেন: হ্যাঁ আসলেই শিক্ষকদেরকে রাষ্ট্রিয় খরচে প্রশিক্ষন দিয়ে আনা উচিৎ।
আশার বাণী হলো যেসব দেশের কথা বলছি তারা একদিনে এই জায়গায় আসেনি। একেকটা দেশের ৩০০ বছরের ইতিহাস। হয়তও আগামি ২০/৩০ বছরে বদলে যাবে এভাবেই যেভাবে তুমি ভাবছো এভাবে একদিন তোমাদের দিকে সরকারের নজর পড়বে।
সেই দিন হয়ত আমরা থাকবো না। তবুও আশা থাকুক।
৩৮| ২৩ শে নভেম্বর, ২০২২ সন্ধ্যা ৬:৪৯
একলব্য২১ বলেছেন: শায়মা আপু,
আমার আর ডলের মধ্যে বাৎচিত হচ্ছে। তুমি সাম্প্রতিক মন্তব্য দেখে সেখানে জয়েন্ট কর।
২৪ শে নভেম্বর, ২০২২ সন্ধ্যা ৭:৫৫
শায়মা বলেছেন: কোথায় তোমরা???
ওকে তোমাদের বাৎচিৎ দেখতে যাচ্ছি!
৩৯| ২৪ শে নভেম্বর, ২০২২ রাত ১০:৪৩
একলব্য২১ বলেছেন: তবে এত শোবীজের বোকা বোকা কান্ড দেখো না তার চাইতে ব্লগ লেখো পড়ো।
অনেক ব্যস্ততার মধ্যে এই প্রশ্নের ছোট আকারের উওর ডলের পোস্ট দিয়েছি।
২৫ শে নভেম্বর, ২০২২ সকাল ৯:৪৭
শায়মা বলেছেন: হা হা ওকে ওকে বেবিভাইয়ু......
তুমি কি এখন ঢাকায়?
মনে হচ্ছে সামার ভ্যাকেশনে এসেছো........
৪০| ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০২২ সকাল ৭:০৭
জোবাইর বলেছেন: ফিচার প্রকাশের দুই সপ্তাহ পর পুরো লেখাটি সময় নিয়ে পড়লাম। বাংলাদেশের শিশুশিক্ষার বাস্তবতা এবং ট্রেনিং ও পেশাগত অভিজ্ঞতার সমন্বয়ে আপনার লেখা গুরুত্বপূর্ন ফিচার- 'শিশুদের জন্য আনন্দময় ও সুষ্ঠ শিক্ষা ব্যবস্থা' পড়ে ছাত্র-শিক্ষক-অভিভাবকসহ সব ধরনের পাঠক উপকৃত হবে। ফিচার প্রতিযোগীতার অল্প সময়ের মধ্যে অনেক পরিশ্রম করে পরপর দুটি চমৎকার লেখার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।
অতিমাত্রায় ক্যাপিটালিস্ট কিছু দেশ বাদ দিলে (যুক্তরাস্ট্র, যুক্তরাজ্য ...) উন্নত বিশ্বের বেশিরভাগ দেশেই শিশুদের শিক্ষা পদ্ধতি প্রায় একইরকম। আমাদের দেশেও শিশুদের জন্য আনন্দময় ও সুষ্ঠ শিক্ষা ব্যবস্থা করতে হলে প্রথমে বদলাতে হবে শিক্ষা পদ্ধতি। সেইসাথে বদলাতে হবে শিক্ষক-শিক্ষিকা ও অভিভাবকদের মন-মানসিকতা। ২০২৩ সালে শিশুশিক্ষা ব্যবস্থায় কী পরিবর্তন আসবে তা দেখার অপেক্ষায় রইলাম।
১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২২ রাত ১০:২৩
শায়মা বলেছেন: আমাদের দেশের শিশুরাও বেড়ে উঠুক আনন্দময় শিক্ষায়! এই হোক চাওয়া। অনেক অনেক থ্যাংকস ভাইয়া।
৪১| ০৩ রা ডিসেম্বর, ২০২২ সকাল ১১:২১
অপু তানভীর বলেছেন: ইউনিফর্মের ব্যাপারে আমার মত খানিকটা ভিন্ন । শিশুদের ইনিফর্ম পরে আসাটাই আমার কাছে যুক্তিযুক্ত বেশি মনে হয় । এর পেছনে একটা কারণ হচ্ছে আমাদের দেশের পরিস্থিতি তো তুমি জানো ! বিশেষ করে আর্থিক অবস্থাটা । যাদের আর্থিক অবস্থা ভাল তারা নিত্যদিন ভাল আর দামী পোশাক পরে আসছে আর যাদের আর্থিক অবস্থা ভাল না তারা প্রতিদিন একই পোশাক পরে আসছে - এমন পরিস্থিতি তৈরি হলে ছোট থেকে বাচ্চাদের মনের উপরে একটা বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে । ইউনিফর্মের বেলায় এই প্রভাবটা পরে না । তবে হ্যা ইউনিফর্ম অবশ্যই আরামদায়ক, ঢিলাঢোলা আর হালকা রংয়ের হওয়ার উচিৎ । অবশ্যই আটোসাটো নয়, তাপশোষক রংয়ের নয় ! আমার যাদের সাথে থাকি তাদের বাচ্চাটা যে স্কুলে পড়ে সেই স্কুলে তিন ধরনের ইউনিফর্ম রয়েছে তার ভেতরে একটা সম্পর্ণ কালো । সপ্তাহ দুইদিন ওকে এই কালো ড্রেস পরে যেতে হবে । তীব্র গরমের সময়ও এই কালো ড্রেস পরে স্কুলে যেতে হয় ! ব্যাপার টা একবার ভাবো দেখি !
১৮ ই ডিসেম্বর, ২০২২ রাত ১০:২৯
শায়মা বলেছেন: কালো ড্রেস!!!
কেনো!!!
মনে হয় ময়লা কম হবে তাই।
©somewhere in net ltd.
১| ১৮ ই নভেম্বর, ২০২২ দুপুর ২:৫৯
নূর আলম হিরণ বলেছেন: ইউনিফরমের ব্যাপারটি আসলে মনে হয় দরকার আছে। ইউনিফর্ম বাচ্চাদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস এর মত কাজ করবে। এছাড়াও আমাদের দেশে সব বাচ্চাদের আর্থিক অবস্থা সমান নয়। এক্ষেত্রে যে যার মত করে পোশাক পরিধান করলে এক বাচ্চা আরেক বাচ্চার পোশাক নিয়ে আলোচনা করতে গেলে পরিবারের অর্থনৈতিক সামর্থ্যের ব্যাপারটি চলে আসবে। এবং এখানে মন খারাপের মত ঘটনাও ঘটতে পারে। তাই আমার মতে সবার জন্য একই ধরনের পোশাক থাকা উচিত। অবশ্যই সেই পোশাকটি আরামদায়ক যেন হয় সেদিকে লক্ষ্য রাখা দরকার।