![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
বিশেষণে অজ মানে খাঁটি (চেয়ে চেয়ে দেখি অজপাড়াগাঁর চেহারা -মনোজ বসু), নিরেট (তার মত অজমূর্খ খুব একটা চোখে পড়ে না)। এই অজ শব্দটি এসেছে সংস্কৃত 'আদ্য' থেকে।শব্দটির বিবর্তন হচ্ছে : আদ্য > অজ্জ > অজ।
বিশেষণ হিসেবে অজ শব্দ দিয়ে জন্মহীন বা চিরবর্তমানও বোঝায়। এক্ষেত্রে শব্দটির গঠন হচ্ছে সংস্কৃত অ (নঞ) + জন (উৎপন্ন হওয়া) + অ (ড)।
আবার বিশেষ্য হিসেবে অজ শব্দের গঠন হচ্ছে সংস্কৃত অজ (গমন) + অচ্। এই অজ অর্থ ছাগল, মেষ (পুত্র হৈলে দুই অজা সুতা হৈলে এক - আলাওল)।
রামের 'পিতামহ' এবং 'ছাগ' এই দ্ব্যর্থবাচক 'অজ' শব্দ ব্যজস্তুতি অলঙ্কারে স্তুতিচ্ছলে নিন্দাও প্রকাশ করে। যেমন 'বিবাহ করিয়া সীতারে লয়ে, আসিছেন রাম নিজ আলয়ে, শুনিয়া যতেক বালক সবে, আসিয়া হাসিয়া কহে রাঘবে, শুন হে কুমার; তোমারি আজ, কুলের উচিত হইল কাজ, তবে হে জনম অতি বিপুলে, ভুবন-বিদিত অজের কুলে; জনকদুহিতা বিবাহ করি তাহাতে ভাসালে যশের তরি - কাব্যনির্ণয়)।
এখানে স্তুতি হিসেবে অজ = অজরাজ, জনকদুহিতা = সীতা। অন্যদিকে নিন্দা হিসেবে অজ = ছাগল, জনক-দুহিতা = ভগিনী বা বোন।
মূলানুগ অর্থে অজ মানে 'যে জন্মে না'। সোজা কথায় ঈশ্বর বা সৃষ্টিকর্তা। তবে শব্দটির অনেক অর্থ রয়েছে। 'অজ' শব্দের আরেকটি ব্যুৎপত্তিগত অর্থ হল 'যে তৃণের খোঁজে অন্যত্র গমন করে' (পুষ্ট অজা আনিয়া সকলে দিল বলি - সৈয়দ সুলতান)।
অজ বা অজা থেকে অজামুখ শব্দটিও এসেছে। এটার অর্থ ছাগলের ন্যায় মুখ (ভুঞ্জিবা এহার ফল হৈবা অজামুখ - গৌরীমঙ্গল, কবিচন্দ্র মিশ্র)।
সংস্কৃতে অজ মানে অনাদিকাল থেকে বর্তমান। কিন্তু বাংলায় শব্দটির অর্থাবনতি ঘটেছে। মন্দ অর্থে বাংলায় অজ শব্দের প্রয়োগ রয়েছে। যেমন অজপাড়াগাঁ, অজমূর্খ।
অজ শব্দের প্রাচীন অর্থ ছিল মেষ। কালের বিবর্তনে এটি ছাগলের প্রতিশব্দ হয়ে গেছে।
আদি, খাঁটি, ঠিক অর্থে যে অজ (অজ পাড়াগাঁ) শব্দটি বাংলায় চালু রয়েছে, তা বাংলা বিশেষণ, এমনটাই লিখেছেন হরিচরণ বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর বঙ্গীয় শব্দকোষে। তিনি ধারণা করেছেন, বাংলা বিশেষণ অজ শব্দের মূল সংস্কৃত 'আদ্য', যা প্রাকৃতে 'অজ্জ' হয়ে বাংলায় অজ হয়েছে। তিনি একাধিক উদাহরণ দিয়েছেন। যেমন অজ কোণ - ঠিক কোণ, অজ গোড়া - আদৎ গোড়া, অজ চাষা - আদৎ চাষা, অজ বঞ্জর - আদৎ অনুর্বর পতিত জমি।
আবার অজাগলস্তন মানে ছাগীর গলদেশে স্তনের মতো দেখতে মাংসপিণ্ডের ন্যায় অপ্রয়োজনীয় অংশ।
১১ ই অক্টোবর, ২০১০ বিকাল ৪:৪৩
সাইমুম বলেছেন: আবু ইসহাক সাহেবের বই দুটি সংগ্রহে রয়েছে। খুবই ভালো বই। ধন্যবাদ।
২| ১৬ ই অক্টোবর, ২০১০ দুপুর ১:৪৬
ডলুপূত্র বলেছেন: আপনাকে ধন্যবাদ। প্রেসিডেন্ট পুরস্কার কি আবারও দখল করার ধান্দা করছেন????
১৬ ই অক্টোবর, ২০১০ দুপুর ১:৫৩
সাইমুম বলেছেন: হয়তো বা। ধন্যবাদ।
©somewhere in net ltd.
১|
১১ ই অক্টোবর, ২০১০ বিকাল ৪:৩৯
এ.টি.এম.মোস্তফা কামাল বলেছেন: ভালো লাগলো। আমাদের আরেকটা ভালো অভিধান প্রণয়ন করছিলেন আবু ইসহাক। দুই খন্ড (স্বরবর্ণ অংশ ও ব্যঞ্জনবর্ণ ক-ঞ) প্রকাশের পর তিনি মারা গেলেন।