নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

যে ভালকাজের পথ প্রদর্শন করল, তার জন্য রয়েছে এর সম্পাদনকারীর অনুরূপ সওয়াব” (সহীহ মুসলিম)

সাইফুল্লাহ্

সত্কর্ম ও খোদাভীতিতে একে অন্যের সাহায্য কর। পাপ ও সীমালঙ্ঘনের ব্যাপারে একে অন্যের সহায়তা করো না। আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ তা’আলা কঠোর শাস্তিদাতা। (আল ময়েদা:২)তার কথা অপেক্ষা উত্তম কথা আর কার, যে আল্লাহর দিকে দাওয়াত দেয়, সত্কর্ম করে এবং বলে, আমি একজন আজ্ঞাবহ (মুসলিম)। (আল কুরআন ৪১:৩৩)কেউ হেদায়েতের দিকে আহবান করলে যতজন তার অনুসরণ করবে প্রত্যেকের সমান সওয়াবের অধিকারী সে হবে, তবে যারা অনুসরণ করেছে তাদের সওয়াবে কোন কমতি হবেনা (সহীহ্ মুসলিম: ২৬৭৪)

সাইফুল্লাহ্ › বিস্তারিত পোস্টঃ

আমাদের মুসলমানিত্বের অন্তঃসারশূন্যতা

২৯ শে অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৪:৪০

মাননীয় পাঠক! অবিশ্বাসীদের কথা বলছি না আমি – কিন্তু অধিকাংশ মুসলিম নামধারীদের দ্বীন নিয়ে না ভাবা, দ্বীনের কাজ না করা, জীবনে দ্বীন ইসলাম প্র্যাকটিস না করা বা দ্বীন সম্বন্ধীয় আলোচনায় অংশগ্রহণ না করার পিছনে উচ্চারিত বা অনুচ্চারিত, উহ্য যুক্তিটি প্রায় সবেক্ষেত্রই হচ্ছে: “সময় নেই”। আমি এই ‘সময় নেই’ ব্যাপারটার বাস্তবতা বা সত্যাসত্য নিয়ে ভাবতে চেষ্টা করেছি। প্রতিটি মানুষের জীবনের প্রতিটি মিনিট তো ৬০ সেকেন্ডেই হয় – এমন নয় যে তা আপেক্ষিক – অর্থাৎ, কারো মিনিট ৩০ সেকেন্ড দিয়ে আবার কারো বা ৯০ সেকেন্ড দিয়ে গঠিত – না তা তো হবার কোন উপায় নেই! অন্তত, যতক্ষণ আমরা সবাই এই পৃথিবীরই বাসিন্দা অর্থাৎ Space-Time-এর একই মাত্রায় অবস্থানরত। তাহলে, এমন কেন হয় যে, জামালুদ্দিন জারাবোযো বা বিলাল ফিলিপ্সরা নিজেদের ব্যক্তিগত জীবন, দ্বীন সম্মত উপায়ে, সমূহ খুঁটিনাটি সমেত যাপন করার পরও, তাদের হাতে এমন অফুরন্ত সময় থাকে যে, তারা যা বিভিন্ন সভায় মানুষের উদ্দেশ্যে বলে থাকেন বা যা লিখে থাকেন, সেসব খুৎবার রেকর্ডিং শুনে বা সেসব বই পড়েই শেষ করতে পারি না আমরা। সবার জীবনের প্রতিটি মিনিটই যদি ৬০ সেকেন্ডে গঠিত হয়, প্রতিটি ঘন্টা যদি ৬০ মিনিটের সমষ্টি, আর প্রতিটি দিনই যদি ২৪ ঘন্টা দিয়ে গঠিত হয়, তাহলে যুক্তরাষ্ট্রে জন্মগ্রহণকারী জামাল জারাবযো যদি জীবনের প্রতিটি দিন, দ্বীনের রাস্তায় ব্যয় করতে পারেন, তবে বাংলাদেশের জকিগঞ্জে জন্মগ্রহণকারী খাদ্য বিভাগের ঘুষখোর কোন কেরানী বা ছাগলনাইয়ায় জন্মগ্রহণকারী টেলিফোনের ঘুষখোর কোন কর্মকর্তা কেন বলেন যে ‘এসব কথা শোনার’ ‘সময়’ তার নেই! এই লাইনে ভাবতে গিয়ে আমি বারবার একটা অবস্থানেই ফিরে গেছি – আমরা, অধিকাংশ মুসলিম নামধারীরা, মূলত উপর্যুক্ত আয়াতের বক্তব্যে বিশ্বাসই করি না – অর্থাৎ আমরা বিশ্বাস করি না যে, ‘আমাদের সৃষ্টিই করা হয়েছে কেবল আল্লাহর ইবাদত করার জন্য’ – তাঁর ইচ্ছা অনুযায়ী চলার জন্য – তাঁকে উপাসনা করার জন্য।..............

আমাদের জীবনের যে ‘মূষিক-দৌড়’ – যার পরিণতি বা পরিণাম নিয়ে ভাবারও আমাদের ‘সময় নেই’ – একবার আপনি যদি সুনির্দিষ্ট উদ্দেশ্য নিয়ে নিজেকে তার বাইরে নিয়ে গিয়ে ঐ ‘মূষিক-দৌড়’ পর্যবেক্ষণ করতে পারেন, তাহলে নিশ্চয়ই বুঝতে পারবেন যে, হাস্যকর অনেক লক্ষ্যের জন্য আমাদের তৈরী করা হয়েছে বা ‘সৃষ্টি করা হয়েছে’ – এমনটা মনে-প্রাণে ধারণ করে আমরা প্রাণান্তকর মূষিক-দৌড়ে ব্যস্ত । অথচ, সৃষ্টিকর্তা যে বলছেন, কেবল ‘একটি’ উদ্দেশ্যেই আমাদের সৃষ্টি করা হয়েছে(51:56) – তার কোন আলামত তো ৯৯% মুসলিমের জীবনে নেইই – এমনকি তারা জানেন কি না বা কখনো শুনেছেন কিনা যে, ঐ ধরনের একটি চূড়ান্ত সংজ্ঞা-জ্ঞাপনকারী আয়াত কুর’আনুল করীমে রয়েছে – আমার সে নিয়েও সন্দেহ আছে!

তবলীগ জামাতের এক কর্মী – আমার এক ছোট ভাই, বছর দুয়েক আগে আমাকে বলছিলেন যে, তারা দেশের একটি গ্রামাঞ্চলে জামাত নিয়ে গিয়ে বুঝতে পারেন যে অনেকে হয়তো ‘কলেমা’ও জানেন না। এমত অবস্থায় কোন তরুণকে আমাদের নবীর নাম জিজ্ঞেস করলে সে উত্তর দেয় : “শেখ মুজিব”। আমি তবলীগ জামাতের কর্মী নই, সমর্থকও নই। কিন্তু আমার ঐ ছোট ভাইকে একজন মানুষ হিসেবে আমি যতটুকু জানি – তাতে তথ্যটা নির্ভরযোগ্য। তাহলে বুঝুন ৮৭% মুসলমানের দেশ বলে আমাদের দেশের পরিচয়টা আসলে কেবলি একটা demographic তথ্য – এতে কিছ্ই আসে যায় না – এমনকি এধরনের মুসলমানের সংখ্যা যদি গোটা পৃথিবীর ৮৭%ও হতো তবু এটা নিশ্চিত যে, অবিশ্বাসীরা তা নিয়ে বিচলিত হতো না। আমাদের মুসলমানিত্বের আসল গোপন রহস্য – অর্থাৎ, আমাদের মুসলমানিত্বের অন্তঃসারশূন্যতার কথা তারা জানে না। তাহলে তারা আমাদের আলোকপ্রাপ্তি নিয়ে মোটেই বিচলিত হতো না – আমাদের মেয়েদের কষ্ট তথা অর্থনৈতিক কাঠিন্য লাঘব করতে “জন্ম-নিয়ন্ত্রণ” তাদের প্রধান এজেন্ডা হতো না। তারা নিশ্চিন্ত থাকতো এই ভেবে যে, এদের সংখ্যা যতই বাড়ুক না কেন, তা থেকে তাদের আশঙ্কার কিছুই নেই।...........................

গ্রামের ঐ তরুণ, নবীর নাম না জানলেও দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ইতিমধ্যে পৌঁছে যাওয়া A to Z চ্যানেলের পূর্ণ দৈর্ঘ্য ছায়াছবির ও নাটকসমূহের বদৌলতে, এরই মধ্যে দেশী ও দেশী ছবিতে অভিনয় করা ভারতীয় রূপ-ব্যবসায়ী নায়িকা ও সহ-নায়িকাদের মাপজোক সম্পর্কে যে সম্যক জ্ঞানলাভ করেছেন, তা একরকম নিশ্চিতই বলা যায়। দেশের যে অংশে আমার বাড়ী, সেখানে কতিপয় চায়ের দোকানে রঙিন টেলিভিশন লাগিয়ে টিকিট দিয়ে পূর্ণদৈর্ঘ্য ছায়াছবি তথা বিনোদনমূলক অনুষ্ঠান দেখানো হয়।

আপনি যদি সত্যিই জন-জীবন থেকে ক্ষণিকের জন্য নিজেকে বিচ্ছিন্ন করে Rat-race বা ‘মূষিক-দৌড়’ পর্যবেক্ষণ করতে পারতেন, তাহলে বেশ মজার কিছু ব্যাপার দেখতে পারতেন। আপনাকে আমি একটু সাহায্য করছি। প্রায়ই দেখা যায় সাবধানী যাত্রীদের একটা অভিযোগ হচ্ছে এমন যে, আন্তঃজেলা বাসগুলোর ড্রাইভাররা বেপরোয়া ভাবে গাড়ি চালায় – প্রায়ই শুধু শুধু ঝুঁকিপূর্ণ ওভারটেকিং-এ আত্মনিয়োগ করে। আপনি যদি দেখেন যে, এই তাড়াহুড়ার বা প্রাণান্তকর প্রতিযোগিতার পরে তার অর্জন কি বা কতটুকু, তাহলে অবাক হয়ে ভাবতে বসবেন যে, is it worth it?? প্রায়ই দেখবেন যাত্রীদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে গন্তব্যে আগে পৌঁছে চালক হয়তো আয়েশ করে পায়ের উপর পা তুলে একটা সিগারেট ফুঁকতে ফুঁকতে এক কাপ চা খাচ্ছে। একই কথা রিক্সাচালকদের বেলায়ও প্রযোজ্য।………………

………………….তাহলে দেখা যাচ্ছে আধুনিক যান্ত্রিক সভ্যতার মানুষেরা আমাদের পিতামহদের যুগের তুলনায় এক জীবনে যে বাড়তি প্রায় সাড়ে নয় বছর সময় লাভ করছেন (৫৭ বছরের গড় আয়ু ধরে নিয়ে এবং নানাবিধ যান্ত্রিক উন্নতিবলে প্রতিদিন ৪ ঘন্টা সময় বেঁচে যাচ্ছে বলে ধরে নিলে মোট সাশ্রয় হচ্ছে ৫৭x৩৬৫x৪ = ৮৩২২০ ঘন্টা = ৯.৫ বছর) তা মূলত ব্যয় হয়:
১) মূষিক দৌড়ের মাধ্যমে অর্থ উপার্জনে
২) TV দেখতে
৩) অন্যান্য বিনোদনে
বা
৪) অশ্লীল ও শরীয়ত বিরূদ্ধ কাজে।

অন্যভাবে বলতে গেলে বলতে হয়: ‘আমাদের জীবনের ধরন এবং জীবনযাত্রা থেকে এমনটা মনে হবার কথা যে আমাদের সৃষ্টিই করা হয়েছে কেবল অর্থ–উপার্জনের জন্য বা TV দেখার জন্য বা বিনোদনে গা ভাসানোর জন্য অথবা ভোগ–সুখে আত্মনিয়োগ করার জন্য।’……………………..(বিস্তারিত)

(muslim55 এর মুসলিম জীবনে সময় প্রবন্ধ থেকে - https://muslim55blog.wordpress.com/2015/10/16/মুসলিম-জীবনে-সময়/)

মন্তব্য ৪ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (৪) মন্তব্য লিখুন

১| ২৯ শে অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৪:৫২

আহলান বলেছেন: নবীর নাম জানে না এমন কথা কথা শুনলেও বিশ্বাসক করতাম না ভাই ... তাবলিগের লোকজন বহুত অসত্য ঘটনা বলে মানুষেকে ইসলামের দিকে দাওয়াত দেয় .... কাকরাইল মসজিদে ঢুকলে বোঝা যায় তারা কতটা পরিচ্ছন্ন .....

আমরা মুসলমানরা ইসলাম কম বেশী মানি এটা ঠিক, তবে নবীর নাম বলবে শেখ মুজিব , এটা অবিশ্বাস্য ..সে মুজিবের নাম কিভাবে জানলো ...? এটা একটা ফালতু জোকস ছাড়া আর কিছু না .... তাবলীগরা এমনই ...

২| ২৯ শে অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৫:২৩

জেকলেট বলেছেন: আচ্ছা চলেন আমরা সবাই নিজেকে একটা প্রশ্নের করি এবং এই ব্লগে উত্তর দেই। আল্লার সাথে সম্পর্কের গুরুত্ব একজন মুমিনের কাছে কেমন হওয়া উচিত??? এই প্রশ্নের উত্তরের উপর ই আমাদের ইমানের জোর বোঝা যাবে?? আপনাদেরকে একটু সাহায্য করি: মানুষের জীবনের অসংখ্য গুরুত্বপুর্ন কাজের মাঝে আল্লাহর সাথে সম্পর্ককে কতটুকু গুরত্ব দেয়??
ব্লগটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ন একটা ব্যাপারে। আমরা সময়ের ব্যাপারে পুরপরি উদাসীন।

৩| ২৯ শে অক্টোবর, ২০১৫ বিকাল ৫:৩৬

নতুন বলেছেন: তবলীগ জামাতের এক কর্মী – আমার এক ছোট ভাই, বছর দুয়েক আগে আমাকে বলছিলেন যে, তারা দেশের একটি গ্রামাঞ্চলে জামাত নিয়ে গিয়ে বুঝতে পারেন যে অনেকে হয়তো ‘কলেমা’ও জানেন না। এমত অবস্থায় কোন তরুণকে আমাদের নবীর নাম জিজ্ঞেস করলে সে উত্তর দেয় : “শেখ মুজিব”। আমি তবলীগ জামাতের কর্মী নই, সমর্থকও নই। কিন্তু আমার ঐ ছোট ভাইকে একজন মানুষ হিসেবে আমি যতটুকু জানি – তাতে তথ্যটা নির্ভরযোগ্য।

এটা বিশ্বাসযোগ্য হইলো না।

যে শেখ মুজিবের নাম জানে... তিনি জানে যে মুজিব নবী না। এটা বাড়াবাড়ী এবং বানানো কাহিনি।

আপনি যদি সত্যিই জন-জীবন থেকে ক্ষণিকের জন্য নিজেকে বিচ্ছিন্ন করে Rat-race বা ‘মূষিক-দৌড়’ পর্যবেক্ষণ করতে পারতেন, তাহলে বেশ মজার কিছু ব্যাপার দেখতে পারতেন।

Rat-race এর বিষয়ে একমত .. বত`মানে সবাই Rat-race এ আক্রান্ত..

কিন্তু মানুষ এখন বিশ্বাস করেনা যে তাদের সৃস্টির উদ্দেশ্য শুধু মাত্র সৃস্টি কতার এবাদতের জন্য।.

৪| ৩০ শে অক্টোবর, ২০১৫ সন্ধ্যা ৬:১০

সাইফুল্লাহ্ বলেছেন: Apnar akhanka jeno sotto hoy.....

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.