নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি একজন মুক্ত মনের লেখক। আমার যা ভালোলাগে আমি তাই লেখার চেষ্টা করি।

শেখ সাকিবুল ইসলাম

আসসালামু আলাইকুম, আমি সাকিব। আমি একজন ব্লগার ও ইউটিউবার। আশাকরি আমার লেখা আপনাদের ভাল লাগবে।

শেখ সাকিবুল ইসলাম › বিস্তারিত পোস্টঃ

পা হারিয়ে কি পেলাম ? পর্ব-১

১৬ ই মে, ২০২০ সকাল ৭:৪৪

লেখকঃ শেখ সাকিবুল ইসলাম (কাল্পনিক গল্প)
২৯ জুলাই ২০১৮ থেকে ৮ অগাস্ট ২০১৮ পর্যন্ত সংঘঠিত নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনে অংশ নেয়া এক ছাত্রের গল্প বলব আজ। ছেলেটির নাম রাতুল। কুর্মিটোলা স্কুলে পড়ে সে। খুবি ভাল ছেলে। স্কুলের টিচার ও বন্ধুরা তাকে খুব পছন্দ করে। সে কখনো স্কুল ফাঁকি দেয়না। পড়াশুনাতে বেশ ভাল। সবসময় ১ম হয়। ওর সাথে পড়াশুনাতে কেউ পারেনা। একদিন হঠাত এক ঘটনা ঘটলো। তাদের স্কুলের এক বন্ধু রাস্তা পার হতে গিয়ে বাস চাপায় মারা যায়। পুলিশ বাস ড্রাইভারকে ছেরে দিয়েছে কোন একটি অজানা কারনে। রাতুলের সব বন্ধুরা রাস্তায় নেমেছে প্রতিবাদ করতে। রাতুলও গেছে তাদের সাথে। সব ছেলে মেয়ে গুলো we want justice বলে চিৎকার করছে। সারাদিন তারা রাস্তায়। খাওয়া নেই বিশ্রাম নেই শুধু ওই একই কথা we want justice । এদিকে পুলিশ এসে তাদের শান্ত হবার জন্য নির্দেশ দিচ্ছে। কিন্তু বন্ধুকে চোখের সামনে মারা যেতে দেখে তাদের এতোটাই খারাপ লেগেছে যে তারা শান্ত হতে পারছেনা। যে বন্ধুটা গতকাল তাদের সাথে ছিল আজ সে নেই এই দুনিয়াতে। এটাকি মেনে নেওয়া যায় ? সন্ধ্যা হয়ে যাওয়াতে আজকে যে যার বাসায় চলে গেছে। পরের দিন সকালে ছাত্র ছাত্রিরা রাস্তায় জমা হয়। তারা ট্রাফিককে সাহায্য করছে। গাড়ির জন্য একটি লাইন করেছে, রিক্সার জন্য একটি লাইন করেছে, আর ইমারজেন্সি লেন যেখানে শুধু এ্যাম্বুলেন্স যাবে। এর সাথে ড্রাইভারের লাইসেন্সও দেখছে তারা। আজকে কোনো যানজট নেই। রাস্তায় কোন দুর্ঘটনাও হয়নি। অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের ড্রাইভারের লাইসেন্স পাওয়া যায়নি। তারা ট্রাফিকের দায়িত্ব পালন করছে আর ভাবছে এভাবে যদি সবাই নিজেদের দায়িত্ব নিজেরাই সঠিক ভাবে পালন করতো তাহলে আজ সড়ক দুর্ঘটনাতে এতো মানুষ মারা যেতনা। কিন্তু আজকেও পুলিশ তাদের বাধা দিচ্ছে রাস্তায় থাকতে দিচ্ছেনা। কয়েক জাগায় পুলিশ লাঠি চার্জ করেছে। রাতুলও তার বন্ধুদের সাথে নিরাপদ সড়ক চাই আন্দোলনে যোগ দিয়েছে। তারা একজাগায় দাড়িয়ে স্লোগান দিচ্ছে we want justice । পুলিশ তাদের চলে যেতে বলেছে কিন্তু তারা বিচার না নিয়ে যাবে না। এক সময়ে পুলিশ তাদের উপর লাঠি চার্জ শুরু করলো । রাতুল এবং তার বন্ধুরা বেশ আহত। কিন্তু তারা পিছিয়ে আসেনি প্রতিবাদ চালিযে গেছে। পরের দিন পুলিশের সাথে সাধারন পোশাক পড়া কিছু লোক যোগ দিয়েছে। তাদের সবার মাথায় হেলমেট। তাদের দেখে পুলিশ মনে না হলেও তারাও পুলিশের সাথেই আছে। এবারে পুলিশ ও হেলমেট পরিহিত বাহিনি সহ লাঠি চার্জ শুরু করেছে রাতুলদের উপর। এসবের এক পর্যায়ে রাতুলের উপর লাঠির আঘাত আসে।রাতুলের দুই পায়ে বেশ কয়েকটা আঘাত আসে। কিন্তু রাতুলরা পিছু হটেনি। পড়ে আচমকা হেলমেট বাহিনি গুলি করা শুরু করলো। রাতুলের হাটুতে গুলি লাগে তার দুই বন্ধু রাতুলকে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে যায়। সেখানে রাতুলের বাবা মা আগের থেকেই উপস্থিত ছিলেন। রাতুলকে অপারেশন কক্ষে নিয়ে যাওয়া হলো।দীর্ঘ অপারেশনের পড় ডাক্তার বাহির হয়ে বললেন রাতুলের একটি পা কেটে বাদ দিতে হয়েছে।রাতুলের মা কান্নায় ভেঙ্গে পরলো। রাতুলের বাবা বিশ্বাস করতে পারছেনা তার ছেলের পা নেই। রাতুলকে হাস্পাতালে আনতে যে বন্ধুরা সাহায্য করেছিল তারাও বিশ্বাস করতে পারছেনা। এদিকে দেশের আবস্থা ভালো না। ছাত্রদেরকে সমর্থন দিয়েছে পাবলিক / প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় এর শিক্ষারথিরা । জাগায় জাগায় চলছে আন্দোলন । বন্ধুরা রাতুলকে খবর দিলো ধানমুন্ডিতে কয়েকজন ছাত্রিকে স্থানীয় এক নেতার ক্লাবে বন্দি করে রাখা হয়েছে।এভাবেই কেটে গেলো রাত। পরের দিন সকালে খবর এলো একজন মহিলা সাংবাদিকের মাধ্যমে ছাত্রিদের উদ্ধার করা হয়েছে । কিন্তু সেদিনো অনেক ছাত্র আহত হয়েছে পুলিশ ও হেলমেট বাহিনির মাধ্যমে । এভাবে বেশ কয়েক দিন চলে। অনেক আহত এবং কিছু মারাও গেছে । ডাক্তার রাতুলকে বাড়ি যেতে বলে । রাতুল তার বাবা মায়ের সাথে বাড়ি যায়। আসতে আসতে সে লাঠিতে ভর দিয়ে চলতে শিখছে । সেই ঘাতক ড্রাইভারের কোন বিচার হয়নি । শুধু কিছু ছাত্রের রক্ত ঝরেছে ।
চলবে,,,,,,,

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.