নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আমি একজন মুক্ত মনের লেখক। আমার যা ভালোলাগে আমি তাই লেখার চেষ্টা করি।

শেখ সাকিবুল ইসলাম

আসসালামু আলাইকুম, আমি সাকিব। আমি একজন ব্লগার ও ইউটিউবার। আশাকরি আমার লেখা আপনাদের ভাল লাগবে।

শেখ সাকিবুল ইসলাম › বিস্তারিত পোস্টঃ

দাদুর সেই যাদুর বই

০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪৬



ঘূর্ণিপাককে উলটো করে দিলে দেখতে যেমন হয় পাহাড় গুলোও দেখতে ঠিক সেরকম। তার সাথে বাতাসে ফিসফিসে শব্দ তোলা নাচতে থাকা গাছ গুলো। ঘুড়ি যেমন আকাশে উড়ে ঠিক তেমন করে উড়ে বেরানো পাখি গুলো। পাহাড়ি ঢল থেকে তৈরি হওয়া নদীতে সূর তুলে বয়ে চলা পাল তোলা নৌকা গুলো। এর মধ্যেই অবস্থিত একটি অদ্ভুত গ্রাম, কচি সে গ্রামেই বাস করতো। কচি সবার কাছে পরিচিত তার অসীম কৌতূহল আর সবকিছুর ভেতর সৌন্দর্য খুঁজে পাওয়ার মতন গুণের জন্য। 


একটি পরিষ্কার শরতের সকালে, যখন গাছের সোনালি পাতা গুলি বাতাসে হালকা দোল দিচ্ছিল, কচি তার চিলেকোঠায় আপন মনে পায়চারি করছিল, হঠাৎ সে একটি পুরন ধুলোমাখা বইয়ের উপর হোঁচট খায়। বইটি বহু দিনের পুরোনো মলাটের এবং দীর্ঘদিনের মেখে থাকা গন্ধে ভরা। 


কৌতূহলে ভরা মন নিয়ে সে বইটি খুললো, অদ্ভুত অঙ্কন আর রহস্যময় লেখায় ভরা পাতাগুলো দেখতে লাগলো। বইটি তার দাদুর। যিনি তখনকার সময়ে একজন প্রখ্যাত শিল্পী এবং গল্পকার ছিলেন। প্রতিটি পৃষ্ঠা যেন একটি নতুন গল্প বলছে। সে যতই পাতা উল্টাচ্ছে ততই যেন আরো গভীরে হারিয়ে যাচ্ছে। দূরের থেকে তারারা যেমন চাঁদের জন্য গান গায়, কিংবা যেখানে বনের মাঝে গাছ বাতাসের সাথে ফিসফিসিয়ে কথা বলে ঠিক তেমন। 


এইসব গল্পে মুগ্ধ হয়ে কচি নিজেকে সেই গল্পের একজন ভাবতে শুরু করলো। বইটি নিয়ে সে একটি নির্জন বট গাছের নিচে বসে পড়লো। কচি সেই বট গাছের নিচে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কাটিয়ে দিত। দাদুর গল্পগুলো তার মনের ভেতর এমন দৃশ্য তৈরি করলো যেগুলোকে তার বাস্তব মনে হতে লাগলো। কচি দাদুর বই দ্বারা এতটাই মোহিত হলো যে সে নিজেই একদিন কাগজ কলম নিয়ে লিখতে বসে গেল। তার দিন কাটছিল কাগজে স্বপনের ছবি এঁকে এবং তার চারপাশের প্রকৃতি যে গল্পগুলো ফিসফিস করে বলে যেত সেগুলো লিখে। 


শীত শুরু হওয়ার সাথে সাথে গ্রামটি কুয়াশার চাদরে ঢাকা পরতে থাকে আর কচির গল্পের ঝুলি বাড়াতে থাকে। কচি সেগুলি তার বন্ধুদের কে বলে। শীতের সন্ধ্যায় উঠানে ঝরাপাতা জড় করে আগুন জ্বালিয়ে তারা বসে গল্প শুনে। কচির গল্প গুলি তার দাদুর বইয়ের আশীর্বাদ পুষ্ট ছিল। এই গল্পগুলো তার বন্ধুদের হৃদয় স্পর্শ করে আর তাদের স্বপ্নবাজ করে তুলে। তার বন্ধুরা প্রতিদিনই জড় হয় গল্প শুনতে।


এভাবে বছর কেটে গেল, কচির গল্পগুলি গ্রামে সবার মাঝে ছড়িয়ে গেল। দূরদূরান্ত থেকে মানুষ আসতো তার সেই গল্প শোনার জন্য। এই গল্পগুলি শুনতে গিয়ে সবাই এতটা কল্পনা প্রবন হয়ে পরতো যেন মনে হয় ঘটনা গুলো তাদের সাথে ঘটছে। সবাই খুব প্রশংসা করতো সেই গল্পগুলোর। এত প্রশংসার পরও কচি নিরহংকার ছিল। সে মনে মনে তার দাদুকে কৃতিত্ব দিত। 


এক বসন্তের সকালে, কচি দেখতে পায় নানান রঙের ফুল দিয়ে প্রকৃতি খুব সুন্দর একটি দৃশ্য এঁকেছে। ডাকপিয়ন একটি চিঠি দিয়ে যায় তাকে। একজন বিখ্যাত প্রকাশকের কাছ থেকে এসেছে চিঠিটি। প্রকাশক কচির গল্পগুলো নিয়ে একটি বই প্রকাশ করতে চায়। কচি রাজি হয়েছিল কারণ সে জানতো এটি একটি সুযোগ যেটি তার জীবন বদলে দিবে। 


এরপর কচির এই বইটি মহাদেশ মহাসমুদ্র পাড়ি দিয়েছিল। বইটি একজন সপ্নবাজকে ধারণ করে। বিশ্বের প্রতিটি কোনে পাঠকরা আশা খুঁজে পায় বইটি পড়ে। বইটি পড়ে পাঠক নিজের স্বপ্নকে বিশ্বাস করার সাহস খুঁজে পায়। এভাবেই কচি হয়ে উঠলো বিশ্ব সেরা লেখক।

মন্তব্য ০ টি রেটিং +০/-০

মন্তব্য (০) মন্তব্য লিখুন

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.