![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
পৃথিবীর সবচেয়ে কঠিন কাজগুলোর মাঝে একটি হল নিজের সম্পর্কে কিছু বলা। তাই এই কাজটা আমি অন্যের উপর ছেড়ে দিলাম।নিজের বিবেকবোধ সদা জাগ্রত থাকুক এইটুকুই নিজের কাছে একমাত্র চাওয়া...।
চরম বিরক্তি নিয়ে ঘর থেকে বেরিয়ে পড়ল সোহান। রাগে নিজের মাথার চুল ছিড়তে ইচ্ছে করছে ওর। রাস্তায় বেরিয়ে ওর মেজাজটা আরো বেশী গরম হল। সূর্যটার তেজ যেন ওর রাগের সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়ে চলছে। তরতর করে ঘামছে সোহান। খুব জোড়ে হাটছে সে। কোথায় যাচ্ছে কেন যাচ্ছে জানেনা ও। মাথায় শুধু উল্টাপাল্টা চিন্তা ঘুরপাক খাচ্ছে। ইস... ওর বন্ধুরা কত্ত মজায় দিন কাটায়। আজ এর পাটি তো কাল ওর পার্টি লেগেই থাকে। কিন্তু ও বেশিরভাগ সময়ই নিজেকে এসব থেকে দূরে রাখে শুধুমাত্র স্ট্যাটাস এ মিল না থাকার কারনে। ওর প্রায় সব বন্ধুদেরই গাড়ি আছে।নিজেদের বাড়ি আছে। নিজের উপর খুব আক্ষেপ হল সোহানের। কি পচা কপাল ওর।
সোহান তার বাবা মা’র একমাত্র সন্তান। ওরা থাকে মগবাজারের এর এক ভাড়া বাসায়। ঢাকার স্বনামধন্য ইউনিভার্সিটিতে বি.বি.এ পড়ছে ও। বাবা একজন সাধারন চাকুরিজীবি হলেও ছেলেকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করার ইচ্ছা প্রবল। আর প্রতিবারই সেমিস্টার ফি দিতে হিমশিম খেলেও তিনি তা বুঝতে দেননা তার আদরের সন্তানকে।
হাটতে হাটতে অনেক আগেই নিজেদের পাড়া পার হয়ে গেছে সোহান। কোথায় যাবে ঠিক করতে করতে সামনে এগোতে লাগল সে। যে রাস্তা দিয়ে হাটছে তার পাশে অনেকগুলো ছোট ছোট খুপড়ি টাইপ ঘর যেগুলোর চারিদিকে পলিথিনের দেয়াল দিয়ে ঘেরা। রাস্তায় কয়েকটা বাচ্চা ছেলেমেয়ে ঝগড়া করছে। রাস্তার এই চিত্র প্রতিদিনকার মত হলেও আজ একটু অন্যরকম লাগছে ওর। কি জানি হয়ত সময় কাটানোর উপযুক্ত কিছু নেই এখন। ধীরে ধীরে সামনে এগোচ্ছিল সে। হঠাৎ দেখা একটি দৃশ্য হতবাক করে দিল সোহানকে। শত চেষ্টা করেও সেই জায়গা থেকে একবিন্দুও নড়তে পারছিলনা সে।
ছোট্ট সাত কি আট বছরের একটি শিশু খুব যত্ন করে ভাত খাইয়ে দিচ্ছে তার অন্ধ বাবাকে। খুব তৃপ্তি নিয়ে সেই ভাত খাচ্ছে লোকটি।দেখে মনে হল তিনি শারীরিক ভাবে মোটেও সুস্থ নন। ছোট্ট ছেলেটি খাওয়াতে খাওয়াতে বলল “বাজান পেট ভরছে?” অন্ধ লোকটির নিষ্প্রান চোখদুটো ছলছল করে উঠল। পরম মায়া নিয়ে তিনি বললেন “পেট ভরছে আব্বা। অখন তুমি খাও।” সোহান আবিষ্কার করল শিশুটি্র থালায় তখন কোন ভাত না ছিলনা। তবুও সে প্রতিউত্তরে বলল “হ খাইতাছি বাজান।”
অবিচল পা দুটো নিয়ে আর এগোতে পারছেনা সে। বুকের ভেতর কেউ যেন একটা বড়সড় পাথর বেধে দিয়েছে। মনে পড়ছে সেই ছোটবেলার কথা।ঠিক এইভাবে খাইয়ে দিত ওর বাবা। ছোট ছেলেটির কথাগুলো পিনের মত বিধছে। এ কি করল সে। আজ একজন অন্ধ বাবা তার ছোট্ট সন্তানের কাছ থেকে যে ভালবাসা পাচ্ছে তার কতটুকু ভালবাসা সে দিতে পেরেছে তার বাবাকে। মস্ত বড় অপদার্থ মনে হচ্ছে নিজেকে। সমস্ত শিক্ষা, নীতি, আদর্শ এখন ম্লান মনে হচ্ছে এই শিশুটির সামনে।
স্বম্বিত ফিরে পাওয়া মাত্রই সোহান আর এক মুহুর্তও অপেক্ষা করলনা। বাবার সাথে বড্ড বাড়াবাড়ি হয়ে গেছে আজ। সেমিস্টার ফি দিতে না পারায় বাবাকে খুব বেশি কথা শুনিয়েছে সে। যতবার কথাগুলো মনে পড়ছে ততবার নিজের গালে চড় বসাতে ইচ্ছা করছে ওর। বাসায় ফিরতে ফিরতে বিকেল গড়িয়ে স্বন্ধ্যা হয়ে গেল। বাসায় পৌছে বাবাকে পেয়ে জড়িয়ে ধরল সোহান। হাউমাউ করে কাদতে কাদতে বলল “বাবা আর কখনো তোমাকে কষ্ট দিবনা। আমাকে তুমি ক্ষমা কর। আমি কোনকিছুর বিনিময়ে তোমাকে হারাতে চাইনা। ” বাবার চোখদুটো জলে ভিজল কিনা সেটা তখন দেখা হলনা ওর। তবে তিনি আরেকটু বেশী শক্ত করে জড়িয়ে ধড়ল তার সবচেয়ে দামী সম্পদটিকে।
################
আসলে আমরা সবাই ভাল। তবে এই ভাল মনটা ধুলোর আস্তরনে ঢাকা পড়ে থাকে পরিস্থিতির কারনে। আমাদের চারপাশে এমন অনেক ঘটনাই ঘটে যা এক মুহুর্তে আমাদের কৃত্তিম মুখোশে ঢাকা মনটাকে ধুয়ে মুছে পরিস্কার করে দিতে পারে। তাই আসুন নিজেদের সুস্থ মনটাকে আর কোন অসুস্থতার সাথে না জড়াই।
###################
এই লেখাটি অনেকদিন আগে থেকে লিখতে চাচ্ছিলাম কিন্তু লিখছিলামনা প্রথম পাতায় পোস্ট না করতে পারার দরুন।
তবে এই লেখাটা এখন আর কেউ না পড়লেও কিছু আসে যায়না।বাবা তুমি আমার লেখা পড়তে অনেক ভালবাস তাই তোমার জন্মদিনে তোমাকে দেয়া আমার ছোট্ট উপহার। একটু দেড়ি হয়ে গেল।
তুমি অনেক আক্ষেপ কর মাঝে মাঝে নিজের উপর। কিন্তু বিশ্বাস কর বাবা তোমাদের ছেলেমেয়েরা আর কিচ্ছু চায়না তোমাদের কাছে। কারন তুমি এবং মা আমাদের যে শিক্ষা দিয়েছ তাতে আমরা শুধু ইহলোকে না, পরলোকেও শান্তিতে থাকব। ভীষন ভালবাসি তোমাদের।
২| ২১ শে জানুয়ারি, ২০১২ রাত ৯:৫৩
কক বলেছেন: আমি মন্তব্য করলাম.....সেটাই প্রথম পাতায় আসেনাই......দেয়ার মাসবি সামথিং রং .....
৩| ২১ শে জানুয়ারি, ২০১২ রাত ১১:৩৩
সমসাময়ীক বলেছেন: প্রথমেই আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই লেখাটি পড়ার জন্য। আমি খুবই আপসেট। আপনার কথা রাখার চেষ্টা করব। তবে কমপ্লেন করতে গেলে সত্যি নিজেকে খুব অসহায় মনে হয়।
৪| ২৪ শে জানুয়ারি, ২০১২ বিকাল ৩:৪৯
কক বলেছেন: আপনি কি তাহলে এখনো মেইল করেন নাই......?ওদের কিন্তু সমস্যা হয়.....এজন্য একটা ট্যাব আছে....কোনো সমস্যা? সুতরাং সমস্যা হলে সেটা না যানানোর কিছু নাই।
©somewhere in net ltd.
১|
২১ শে জানুয়ারি, ২০১২ রাত ৯:৫০
কক বলেছেন: আপনার বাবার জন্মদিনে শুভেচ্ছা.....লিখাটা প্রথমপাতায় আসে নাই। সামুর বাগ গুলো মাঝে মাঝে খুব জ্বালায়। আপনি কি আর একবার লিংক দিয়ে মডুদের কমপ্লেন করবেন?