![]() |
![]() |
নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
পড়ন্ত বিকেলে সকলেই অনেক খাটাখাটুনি করে মাংস কেটে-কুটে নানা বাহারি পদের রান্না করা খাবার দিয়ে ভূড়ি ভোজ সেরে মনের আনন্দে ছোট থেকে মাঝ বয়সিরা দিচ্ছেন আড্ডা সঙ্গে বিভিন্ন চ্যানেলে ঘোরাফেরা আর বড়রা (চাকরীজীবিরা) দিয়েছেন গভীর ঘুম। আর বয়স্ক মহিলারা দেখছেন স্টার জলসা অথবা জি-বাংলার মত চ্যানেল। এখন আর ঐ সব চ্যানেল দেখা দোষের কিছু না কারন আমাদেরই পন্যের এড. দেখতে পাওয়া যায় সেখানে। দেখতে পাওয়া যায় ভারতের বড় বড় মাপের চ্যানেলে বাংলাদেশের আরএফএল-প্রান এর অহরহ বিজ্ঞাপন। এতে কতটাকা খরচ হয় এটা খুব জানতে ইচ্ছা করে বৈকি। ওরা যখন আমাদের চ্যানেল দেখাচ্ছে না, তখন না হয় আমরা যাই ওদের ওখানে এটা হয়তো আমাদের বিজ্ঞাপন দাতাদের যুক্তি। কিন্তু এত টাকা খরচ করে ভারতের বাজারে পন্যগুলো কতটুকু জায়গা করতে পেরেছে এটাও জানতে ইচ্ছা করে।
যাইহোক, ঈদতো আসবে বলে কতই না অপেক্ষা আমাদের সবার। আজকে সেই কাঙ্খিত পবিত্র ঈদুল আজহা।
পবিত্র ঈদুল আজহার উদ্দেশ্য স্রষ্টার সন্তুষ্টির জন্য নিজেকে উৎসর্গ করতে প্রস্তুত থাকা। পশু কোরবানি করা হয় প্রতীকী অর্থে। আসলে কোরবানি দিতে হয় মানুষের সব রিপুকে: কাম, ক্রোধ, লোভ, মোহ, পরনিন্দা, পরশ্রীকাতরতা। সৎ পন্থায় উপার্জিত অর্থের বিনিময়ে কেনা পশু কোরবানির মাধ্যমেই তা সম্পন্ন হয়। কিন্তু কয়জন সৎ পথে থেকে করেন ? কোরবানীর নিয়ম মেনে নিয়ে একটি নির্দিষ্ট পরিমান গোশত দিয়ে দিতে হয় গরীব-দুখী মানুষদের। যারা বছরের এই একটা দিনেই পরম তৃপ্তি নিয়ে গোশত খেয়ে থাকেন। কিন্তু দেখি আমরা যারা মেসে থাকি বাজারের একটি অংশ মাছ-মাংস রাখি বাড়ীওয়ালর ফ্রীজে, কিন্তু যখন বলা হয় আগামী এতদিন ফ্রীজে কিছু রাখা যাবে না! কারন ততদিন ভর্তি থাকবে কোরবানীর গোশত। আসলে এতদিন কি রাখার কোন নিয়ম থাকে!
আমি যেখানে থাকি হিন্দু এলাকা, এখানেও কিছুক্ষন আগে এসেছে কিছু মানুষ তাদের আশা যদি গোশত পাওয়া যায়। অনেক নিতান্তই গরীব মানুষকে দেখি যারা অন্যের কাছে চাইতে লজ্জা বোধ করেন তারা জমানো টাকা দিয়ে কিনে খান। খেতেতো হবেই কারন বছরের এই একটি দিনইতো। বেশকিছুদিন আগে এক ঈদ প্রোগ্রাম করার জন্য জনাব শাইখ সিরাজ স্যার গিয়েছিলেন আইলা বিধ্বস্ত এলাকায়, সেখানকার জমিতে ফসল হয়না তেমন, কারন লবনাক্ততা। কৃষকেদর সাক্ষাত নিতে গেলে বলেন সারা বেছরে এই একটি দিনই তারা গোশত খান। কতই না কষ্টের জীবন তাদের আর যাদের ফ্রীজ থাকে তাদের দুঃখ-কষ্ট যখন ফ্রীজ ভর্তি গোশত অথচ বিদ্যুৎ নেই! এক এক জনের এক এক কষ্ট।
এত কষ্ট করে আমরা শত শত মাইল জামে আটকে থেকে বিরক্ত হয়ে গন্তব্যে পৌছি মাত্র 2/3 দিনের জন্য । আসতে যেমন কষ্ট তেমানি আবার যেতেও এর মাঝেও থাকে সীমাহীন আনন্দ।
এবারের ঈদে সবাই আনন্দ উপভোগ করবেন শুধুমাত্র সরকার ও বিরোধী দলের নীতি নির্ধারকদের মত নেতারা ছাড়া। তারা সবাই বলছেন 25 অক্টোবর এর কথা। কি হতে পারে সেদিন! আমরা কেউ জানিনা। এমনকি ওনারাও জানেননা। এর মধ্যে একজন নেতা কর্মীদের বলেছেন দা-কুড়াল নিয়ে প্রস্তুত থাকতে! অন্য একজন বলছেন উপযুক্ত জবাব দেয়ার কথা। এই যদি হয় ঈদ পরবর্তী মিলন মেলা তাহলে আনন্দ একটু ম্লান হয়ে বটে। তবুও আমরা মনেকরি তাদের শুভ বুদ্ধির উদয় হবে। সকলেই যেন সইছালামতে আবার কর্মস্থলে ফিরতে পারেন এটাই প্রত্যাশা রইল।
জীবনের প্রতিটি দিন হোক ঈদের দিনের মত আনন্দময়। সবাইকে ঈদ মোবারক। ভালো থাকবেন সবাই।
©somewhere in net ltd.