নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
আমি অতিআবেগী, আগে ব্যাপারটা লুকানোর চেষ্টা করতাম। এখন আর করিনা।
আজকের পর্বটি একটু আলাদা! এত পর্বে স্কুলের ভেতরে থাকতে পাঠক নিশ্চই বোরড, তাই আজকে স্কুলের বাইরে নিয়ে যাব সবাইকে!
আগের সিরিজ: কানাডার স্কুলে একদিন (এক থেকে বাইশ): পর্ব বাইশ । পর্ব বাইশে অন্য সকল পর্বের লিংক রয়েছে!
আগের পর্ব: কানাডার স্কুলে একেকটি দিন (পর্ব ১) - বাংলাদেশীদের যেসব বিষয় বিদেশীরা অদ্ভুত মনে করে!
কানাডার স্কুলে একেকটি দিন (পর্ব ২) - মফস্বলের কন্যের বৈদেশে শিক্ষাগ্রহন; ঘটন অঘটন এবং আমাদের নিয়ে বৈদেশীদের দর্শন!
তখন কানাডায় একদমই নতুন নতুন। কয়েক সপ্তাহই হয়েছে কেবল। সকাল সকাল উঠে স্কুলে যাবার সময়ে মনে হতো যুদ্ধক্ষেত্রে যাচ্ছি! ভয়ে ভয়ে গুটি গুটি পায়ে এক ক্লাস থেকে অন্য ক্লাসে আসা যাওয়া করি। ভাষা নিয়ে ভীষনই সমস্যায় পরলাম। আমি ওদের একসেন্ট বুঝিনা, আর ওরা আমারটা। এক কথা বুঝতে ও বোঝাতে দশবার রিপিট করতে গিয়ে বিরক্ত বোধ করি! কোন বন্ধু বান্ধব নেই। পড়াশোনায় থৈ খুঁজে পাচ্ছিনা। পদে পদে নানা কালচার শকে বেহাল অবস্থা। প্রতিদিনই নার্ভাস হয়ে স্কুলে যাই, আজকে আবার আজব দেশের কি আজব দৃশ্য দেখতে হবে ভেবে। আর দেশ ছাড়ার কষ্ট তো বর্ণনাতীত। মানিয়ে নেবার, মেনে নেবার চেষ্টায় ব্যস্ত আমি!
এমন সময়ে একদিন আমার E.S.L. ক্লাসের টিচার মিসেস ডি এসে বললেন আমরা স্টাডি ট্যুরে যাব। শহরের সবচেয়ে বড় লাইব্রেরীটা দেখাবেন আমাদেরকে। আর রেস্টুরেন্টে লাঞ্চ করবে সবাই। কানাডিয়ান এক্সপেরিয়েন্স হবে সবার। কানাডিয়ানদের সাথে কথা বলা, ওঠাবসা এসব শেখানো হবে। এসব বলে তিনি আমাদেরকে দুইটি ফর্ম দিলেন। একটি ফর্ম অন্য ক্লাসের টিচারদের দিয়ে সাইন করাতে হবে, কেননা তাদের ক্লাসটা আমার মিস করব। আরেকটি ফর্ম পরিবার সাইন করবে।
এই টিচারটিকে নিয়ে একটু বলি। চশমা চোখে, ভীষন খাড়া নাক ও ববকাট চুলের অধিকারী একজন কানাডিয়ান বয়স্কা নারী। সবমিলিয়ে কেমন যেন একটা বুদ্ধিমত্তার ঝিলিক ছিল চেহারায়। তবে টিচার হিসেবে ভীষনই বোরিং ছিলেন। উনি যা আউটলাইনে আছে তা না পড়িয়ে নিজের জীবনের গল্প বলে যেতেন ক্লাসের অর্ধেকটা সময়! বলতেন যে তিনি ৬৭ টা দেশে ভ্রমন করেছেন! আসলে ৬৭ র বেশি, তবে ৬৭ টা দেশ ভ্রমন করার পরে গোনাই বন্ধ করে দিয়েছেন। বিয়ের আগে ট্রাভেলিং পছন্দ করতেন না। হাসব্যান্ড এর প্রভাবে এখন নিজেরও ভালো লাগে। ওনার স্বামী, ছেলে, ছেলের গার্লফ্রেন্ড নিয়ে হাজার সব গল্প করতে করতে ক্লাস পার করতেন! ক্লাসে বেশিকিছু শেখাতেন না বলে আমাদেরকে বাড়িতে বেশি পরিশ্রম করে পড়তে হতো। ওনার গল্প মন দিয়ে না শুনলে ভীষন অসন্তুষ্ট হতেন। বলতেন, "ইউ গাইজ আর নট এপ্রিশিয়েটিং মাই প্রেসেন্স!" আমার পাশে একজন কোরিয়ান মেয়ে বসত, সে বিড়বিড়িয়ে বলত, "ইউ গট দ্যাট রাইট!" হাহা। আমি সেই গল্পগুলো প্রথমবার শুনছিলাম বলে খুব খারাপ লাগত না। তবে যারা সেই কোরিয়ান মেয়েটির মতো পুরোন ছিল, এবং বেশ কবছর ধরে ওনার গল্প শুনে আসছে তাদের বিরক্তি দেখার মতো ছিল।
যাই হোক, ট্যুরের কথা শুনে আমি প্রথমে বেশ খুশি হলাম। কেননা দেশে কখনো যাইনি স্টাডি ট্যুরে। বিদেশে থাকা আত্মীয়দের কাছে শুনতাম যে এদেশে স্টাডি ট্যুর হয়। স্কুল টাইমে সবাই বেড়াতে যায়! স্বপ্নীল চোখে শুনতাম আর কল্পনা করতাম। এখন আমি নিজেই সেই পজিশনে কিন্তু কি ভীষন এক অস্বস্তি জড়িয়ে! কানাডায় যেয়ে তখনো ততটা বাইরে যাওয়া হয়নি। ভীষন নার্ভাস ছিলাম। স্কুলেই অস্বস্তি বোধ করি, বাইরের পরিবেশে কিভাবে থাকব তা ভেবে ভয় করছিল। আবার আনন্দও লাগছিল।
দেখতে দেখতে ট্যুরের দিনটি চলে এলো! মেইন এনট্রেনসে সবাই জড়ো হলাম। টিচার এলেন। আমাদেরকে স্কুল বাসে নিয়ে গেলেন। বাসের প্রথম জানালার পাশের সিটে বসে পরলাম। আমার পাশে কেউ নেই। কেননা ক্লাসে সবারই নিজের নিজের দেশের মানুষ রয়েছে। আর ইংলিশ ভালো না হওয়ায় অন্য দেশের মানুষের সাথে সবাই কম কথা বলে। নিজেদের মধ্যে নিজেদের ভাষায় কথা বলে। আর যারা পুরনো তাদের তো বেশ ভালো বন্ধুত্বও রয়েছে একে অপরের সাথে। দূর্ভাগ্যবসত কোন বাংলাদেশী না থাকায় এবং নতুন হওয়ায় আমি একাই ছিলাম। সবাই নিজের দেশের মানুষের সাথে গল্প করতে করতে পাশাপাশি দল বেঁধে বসে পরল। একে অপরের সাথে হাসি ঠাট্টা করছে। চিপস, ড্রিংকস এসব শেয়ার করছে। আর আমি একা চুপচাপ বসে! একাকী ঘরে একাকীত্ব কঠিন, তবে ভীরে একাকীত্বটা বড্ড বেশি কাঁটার মতো বিঁধে!
সময়ে অসময়ে কানাডা আমাকে একাকীত্বের হাজার রং দেখিয়েছে! নতুনকালে বন্ধুহীন অবস্থায় কিছুটা, আর পুরোন হয়ে যাবার পরে বন্ধুসহ অবস্থায় হয়ত তার চেয়েও বেশি!!!
যাই হোক, গল্পে ফিরি। আমার পাশে খালি সিট থাকলেও অতোটা সমস্যা হতো না। আমার পাশে টিচার নিজেই বসে পরলেন! আমি জড়তা নিয়ে বসে আছি। টিচার পাশে বসা! কি করি, না করি! উনি বকবক শুরু করে দিলেন। কতদিন কানাডায় আছি, একা এসেছি না পরিবারের সাথে, কেমন লাগছে এসব হাজার প্রশ্ন। আমি ভাঙ্গা ইংলিশে সব জবাব দিয়ে যাচ্ছিলাম। বেশ অনেকক্ষন কথা বলতে বলতে চুপ হয়ে গেলেন। একটু হেলান দিয়ে চোখ বন্ধ করলেন। তখন আমি জানালা দিয়ে বাইরে তাকালাম।
আর বুকে ধক করে লাগল প্রকৃতি মায়ের অকল্পনীয় সৌন্দর্য! সারি সারি পাহাড়ের মেলা বসেছে চারিদিকে! স্বচ্ছ ঝকঝকে নীল আকাশের নিচে মাথা উঁচু করে দাড়িয়ে ছোট বড় নানা পাহাড়! আকাশে যেন পাহাড়ের প্রতিফলন দেখতে পাচ্ছিলাম! দেখে মনে হচ্ছিল পাহাড়ের চূড়ায় দাড়ালেই আকাশ ছোঁয়া যাবে! মেঘের পালে ভেসে যাওয়া যাবে! পাহাড়ের ভাজে ভাজে স্বপ্নের মতো সুন্দর সব বাড়ি ঘর! হঠাৎ দেখি পাহাড় তল ঘেষে একটা সরু নদী বয়ে চলেছে। আর তার চারিপাশে রং বেরং এর বুনো ফুল। নদীর সেই পানি এত স্বচ্ছ ছিল যে ফুলগুলোর ছায়ায় মনে হচ্ছিল সেগুলো নদীতেই ফুটে আছে! খুব ইচ্ছে করছিল বাস থেকে নেমে নদীর পানি ছুঁয়ে দিতে, ঘন্টার পর ঘন্টা সেখানেই বসে থাকতে! দূর থেকে পাহাড়, আকাশ, নদী, ফুল সবকিছুর সৌন্দর্য চোখে ধাঁধা লাগিয়ে দিচ্ছিল বারবার। এসব কি সত্যিই জানালার ওপাশে আছে নাকি কোন ভিডিও চলছে আমি আসলেই বুঝতে পারিনি অনেকক্ষন! মুগ্ধ হয়ে তাকিয়েই ছিলাম।
এভাবে জানালার কাঁচ দিয়ে প্রকৃতি দেখতে দেখতে অন্যমনস্ক হয়ে গেলাম। মনে হলো, এত সুন্দর প্রকৃতি, এত দেশের নানা মানুষের মাঝে কি ভীষন একা আমি! দেশে এতকিছু ছিলনা, কিন্তু সহজ সরল কিছু বান্ধবী ছিল। তাদের পাশে বসে কড়া শিক্ষকের কঠিন ক্লাসটাও হাসতে হাসতে পার করেছি। আর আজকে পুরো ক্লাস বেড়াতে এসেও আমার মনে আনন্দ নেই! মফস্বলের প্রজাপতির মতো চঞ্চলভাবে উড়ে বেড়ানো আমার জীবন কত রঙ্গিন ছিল! সব টিচার, বন্ধু, আত্মীয়দের ভীষণ আদরের আমি কত জড়তা নিয়ে একা বসে আছি আজ! মাসখানেক আগেও তো জীবন অন্যরকম ছিল! দেশের নানা সুখস্মৃতি বাসের জানালায় ভাসতে লাগল, আর আমার চোখ ঝাপসা হয়ে এলো। আমি ঝট করে চোখের আলগা পানি মুছে নিলাম টপকে পরার আগেই। নিজের মনকে ডাইভার্ট করতে হবে। দেশের কথা ভেবে কাঁদা যাবে না সবার সামনে!
এসব ভাবতে ভাবতে হুট করে সাফোকেশন ফিল করতে শুরু করলাম। কানাডার বাসগুলোর জানালা খোলা যায় না বলে কেমন যেন বদ্ধ লাগে। পাহাড়ি এলাকায় যখন বাস ওপরের দিকে যেতে থাকে দম আরোই আটকে আসে। তখনো পর্যন্ত এত লম্বা জার্নি করিনি আমি সেই এলাকায়। অনভ্যস্ততায় নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছিল। সালোয়ার কামিজের ওপরে পাতলা সোয়েটার পরে ছিলাম, সেটা খুলে ফেললাম। চুলগুলো হর্সটেইল করা ছিল, এবং জার্নিতে একটু এলোমেলো হয়ে গিয়েছিল। আমি খুলে বেনী করে নিলাম টাইট করে। পানি খেলাম। একটু পরে বেটার ফিল করতে লাগলাম। টিচার আমাকে জিগ্যেস করলেন, "এখন ভালো লাগছে?" আমি হেসে ফেললাম। মানে উনি আমাকে দেখছিলেন পুরোটা সময়। আমি ধাতস্থ হবার আগ পর্যন্ত কিছু বলেননি! বললাম, "হ্যা!" উনি বললেন, "তোমার চুল কত লম্বা! আমি অবাক হয়ে তোমাকে চুল বাঁধতে দেখছিলাম! এত লম্বা চুল কত তাড়াতাড়ি বেঁধে ফেললে! ব্যাংলাদেশে কি সবাই লম্বা চুল রাখে? তোমরাও কি ইন্ডিয়ানদের মতো রিলিজিয়াস কারণে চুল কাটো না?" আমি বললাম, না না, আমাদের তেমন কোন নিয়ম নেই। আমাদের দেশে ছোট, বড়, মাঝারি সব লেন্থের চুলের মানুষই রয়েছে। যে যার ইচ্ছে মতো চুল রাখে। উনি বললেন, "ওয়াও কুল!"
একটু বলে রাখি, কানাডায় ইমিগ্র্যান্টদের একটি বড় অংশই ভারতীয় পাঞ্জাবি। ইন্ডিয়ান কালচার বুঝতে তাই ওরা পাঞ্জাবি কালচারকেই বোঝে। ইভেন সাউথ এশিয়ান কালচার বুঝতেও ওরা পাঞ্জাবি কালচারকেই বোঝে!
একসময় বাস থেমে গেল। টিচার বললেন সবাইকে নামতে। নামার সময়ে বাস ড্রাইভারকে থ্যাংক ইউ বললেন। অন্যরাও বলল। আমরা নেমে টিচারকে ফলো করতে করতে ফুটপাত দিয়ে হাঁটতে লাগলাম। এখানে রাস্তাঘাট দেখে ছোটবেলায় খেলা ভিডিও গেইমস এর এনিমেটেড পরিচ্ছন্ন ছবির মতো রাস্তার কথা মনে হত। বিদেশীদের তৈরি সেসব গেইমের বিল্ডিং, পার্ক সহ আশেপাশের পরিবেশ এখানকার আদলে নির্মিত হতো। তাই ভিডিও গেইমস খেলতে খেলতে এর মধ্যে এসে পরলাম কিনা সেই ভাবনা মনে উঁকি দিত!
রাস্তা পার হবার সময়ে মিসেস ডি আমাদেরকে নিয়ম কানুন বলে দিলেন। দেখালেন যে, "pedestrian (পথচারী) ক্রসিং সিগন্যালস" কিভাবে কাজ করে। রাস্তার একপাশে লম্বা পোলে সুইচ থাকে। সেই সুইচ টিপে অপেক্ষা করতে হয়। রাস্তার অন্যপাশে ছোট স্ক্রিনে "চলন্ত মানুষ" সাইন দেখতে পেলে রাস্তা পার হতে হবে। একটা রাস্তায় কোন পথচারি সাইন ছিলনা। দেখি কি, চলন্ত গাড়ির ড্রাইভার আমাদের কাছাকাছি এসে গাড়ি স্লো করে থামিয়ে দিল। টিচার তার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসলেন, তিনিও হাসলেন। আমরা রাস্তা পার হলাম। আমি মনে মনে ভাবছি, "টিচারের পরিচিত নাকি? ওহ না, নিশ্চই স্টুডেন্টদের সাথে দেখে বুঝেছে উনি টিচার, এজন্যে সম্মান করে থামিয়েছে গাড়ি!" এসব হাবিজাবি ভাবছি।
টিচার তখন বুঝিয়ে বললেন, কানাডার রাস্তায় পথচারী যানবাহনের চেয়ে বেশি গুরুত্ব পায়। এটাই এখানে নিয়ম। কোন রাস্তায় সিগন্যাল না থাকলে, ড্রাইভার নিজেই গাড়ি থামিয়ে দেবে। যেকোন পথচারীর জন্যেই। আমাদেরকে এও শিখিয়ে দিলেন, তখন ড্রাইভারের দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসতে হবে যার মানে থ্যাংক ইউ!। উনি আরো বললেন, "তোমাদের জন্যে এটি নিশ্চই নতুন! সব দেশের ট্রাফিক রুলস এক নয়। এখানে রাস্তাঘাট তুলনামূলক ভাবে অনেক শান্ত না?" এশিয়ান বাচ্চারা হ্যা সূচক মাথা নাড়ল। ব্রাজিলিয়ান ছেলেমেয়েরা সবচেয়ে বেশি ইংলিশ পারত। ওরা বেশ ডিটেইলে বলল, ওদের দেশ অনেক বেশি ক্রাউডি। জ্যাম থাকে বেশি এসব।
আমিও মনে মনে ভাবছিলাম যে দেশে রাস্তায় কত শব্দ থাকত! গাড়ি, সিএনজি, বাসের প্যা পু হর্ণ, রিকশার টুং টাং শব্দ, সিডির দোকানে জোরে বাজতে থাকা গান, চায়ের দোকানে তুমূল আলোচনার ঝড়, রাস্তার ধারে নানা জিনিস বেঁচতে থাকা ক্রেতা বিক্রেতার দরদাম; সবমিলিয়ে রাস্তায় থাকলে বোঝা যায় যে রাস্তায় আছি! এখানে, মোটামুটি বিজি রোডেই হাঁটছি সবাই, কিন্তু তেমন কোন আওয়াজ নেই। ভিড় দেশের মতো অতোটা কোনভাবেই নয়। আর যতটা আছে তাও আশ্চর্য রকম নীরব!
এসব ভাবতে ভাবতে টিচারের কথা কানে এলো, আমার দিকে তাকিয়ে বললেন, "ইন ব্যাংলাদেশ, হাও ইজ ইট? ক্রাউডি এন্ড নয়েজি রাইট? পিপল ইয়েলিং, রিকশা রিকশা?" বলে হো হো করে হেসে নীরব রাস্তায় প্রানসঞ্চার করে ফেললেন। ওনার মুখে স্পষ্ট রিকশা উচ্চারন শুনে, এবং আমাদের মতো ডাকার ভংগিতে আমি ভীষনভাবে চমকে উঠলাম। পরে মনে হলো, ইন্ডিয়া ভ্রমণের ফল!
উনি বলছিলেন, "কিছু কালচারে খুব জোরে কথা বলে। যেমন আমার এক কলম্বিয়ান বান্ধবী হাসব্যান্ডের সাথে নরমাল আলোচনা করছিল। কিন্তু আমি ভেবেছিলাম ওরা নির্ঘাত ডিভোর্সের কথা বলছে! হাহা। ওদের ডায়ালগটা এমনই লাউড! কিন্তু কানাডায় খুব সফটলি, পোলাইটলি মানুষ কথা বলে!" আমার মনে হলো আসলেই তাইতো! কানাডিয়ানরা এমনভাবে কথা বলে যেন বেশি জোরে বললে কথা ব্যাথা পাবে! দেশের চিল্লাচিল্লি ভীষন মিস করছিলাম। মনে হচ্ছিল কেউ যদি আমাকে সেই শব্দগুলো রেকর্ড করে শোনাত তাকে লাখ টাকা দিতাম!
এভাবে হাঁটতে হাঁটতে লাইব্রেরী পৌঁছালাম সবাই। সে এক দেখার মতো লাইব্রেরী। বিল্ডিং বাইরে থেকে দেখেই থ! আর ভেতরে ঢুকে চমৎকার ইন্টেরিয়ার ডেকোরেশন দেখে আরোই অবাক। চারিদিক আর্টিফিশিয়াল গাছ দিয়ে সাজানো। গ্লাসের তৈরি লম্বা লম্বা জানালা। জায়গায় জায়গায় এত সুন্দর ও আরামদায়ক সব সোফা আর বসায় জায়গা! আমার মনে হচ্ছিল এখানে মানুষ বই পড়তে আসে না ঘুমাতে?
লাইব্রেরীর ভেতর দিয়ে সিড়ি চলে যায়। সেই সিড়ি দিয়ে সবাইকে তিন তলায় আনলেন মিসেস ডি। প্রতি তলায় সুসজ্জিত ভাবে বই সাজানো নানা তাকে। অজস্র বই। সবগুলো তালা মিলে কত বই আল্লাহই জানেন! জায়গায় জায়গায় টেবিল, চেয়ার, কম্পিউটারস। মিসেস ডি আমাদেরকে এক জায়গায় দাড় করিয়ে বললেন, "একটি নভেল ক্লাসে করানো হবে। এটি আমরা লাইব্রেরিয়ানের কাছে একে একে চাইব। চাইবার সময়ে প্লিজ বলতে হবে, এবং পাবার পরে থ্যাংক ইউ বলতে হবে।" শেখাতে শেখাতে আরো বললেন, "পৃথিবীর অনেক দেশে মানুষজন এসবের ধার ধারে না। কিন্তু এটা আমাদের কালচারে ভীষনই জরুরি।!" ওনার কথা শোনার পরে আমরা লাইন ধরে বই নিচ্ছি। হংকং এর একটা ছেলে প্লিজ বলতে ভুলে গিয়েছিল, টিচার ওকে মনে করিয়ে দিলেন, "সে প্লিজ!" তখন লাইব্রেরিয়ান মুচকি হাসতে লাগল। আমরা যে অন্যদেশের মানুষ, আর আমাদেরকে কথা বলা শেখানো হচ্ছে সেটা বুঝতে পেরে। টিচারের শেখানো নিয়মে ঠিক ইংলিশ বাক্যে চাইবার আগ পর্যন্ত বই পাওয়া যাবেনা। চেষ্টা করে যেতে হবে! কেউ কেউ একটু টাইম নিল। আর কেউ কেউ সহজেই বলে ফেলল। আমিও মনে করে ঠিকভাবে প্লিজ থ্যাংক ইউ সব বলে বই নিলাম।
কানাডিয়ানরা ভীষনই বিনয়ী একটি জাতি। কানাডার রাস্তায় কয়েক কদম হাঁটলেই সেটা টের পাওয়া যায়! বাস ড্রাইভারের কাছ থেকে টিকিট নেবার সময় যদি থ্যাংক ইউ বলতে ভুলে যান তবে তারা মনে করিয়ে দেবে! বাসের পিছের দরজা দিয়ে কেউ নামলে, চিৎকার করে থ্যাংক ইউ বলে। যাতে সামনে বসে থাকা ড্রাইভারের কানে যায়। এসব এখানে ধর্মের মতো মানা হয়। আর ওরা এটাও জানে যে পৃথিবীর বেশিরভাগ দেশে এসব কঠোরভাবে মানা হয়না। তাই এসব বিনয় কোন ভিনদেশী ভুলে গেলে মুচকি হেসে এমনভাবে তাকাবে যে, "তোমাদের দেশে অন্য নিয়ম থাকতে পারে। কিন্তু আমাদের দেশে এসব চলবে না! এটা কানাডা। এখানে প্লিজ, থ্যাংক ইউ, সরি ছাড়া কিছু হয়না!" হাহা। কানাডিয়ানরা অন্যদেশের সাজপোশাক, খাবার দাবার, উৎসব, গান মুভি সহ সবকিছুকে মারাত্মক সম্মান করে। সেসব নিয়ে কানাডায় চলা কোন ব্যাপারই না। ওরা বরং এনজয় করে যে নানা দেশের মানুষের সংস্কৃতি ওদের দেশকে রঙ্গিন করে তুলেছে। কিন্তু কিছু কিছু ব্যাপারে একদমই কম্প্রোমাইজ করবে না। বিনয় এমনই একটা ব্যাপার! বিনয় নানা দেশে যে রূপেই থাকুক, কানাডায় ওদের মতো করেই মানতে হবে!
যাই হোক, অসম্ভব সুন্দর ও বৃহৎ লাইব্রেরীটি ঘুরে আমরা বেরিয়ে আসছিলাম। টিচার বাইরে দাড়িয়ে ছিলেন। বেরিয়ে ওনার কাছে দাড়ানোর পরে আমাকে বললেন, "তুমি কিছু ভুলে গিয়েছ! শিখিয়েছিলাম তোমাদেরকে!" হাসতে হাসতে বললেও উনি যে অসন্তুষ্ট সেটা বেশ বুঝলাম। আমি ভাবলাম আমি আবার কি করলাম? কি ভুলেছি?
পরের পর্বে ভ্রমণ চলতে থাকবে...............
০৮ ই জুন, ২০১৭ রাত ১০:১১
সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: আসলে আমার বাবা কানাডায় আসার জন্যে এপ্লাই করেছিলেন। আর আমি কিশোরি বয়সে বাবা মায়ের হাত ধরে কানাডায় আসি। তাই কানাডায় আসার এবং পড়ার এপ্লিকেশন প্রসেস নিয়ে ডিটেইলে জানিনা। আর খরচ নিয়ে বলতে গেলে আমি অন্য সাবজেক্টে পড়ছি। তবে কিছু বন্ধু বিজনেসে পড়ছে এবং তাদের কাছে খরচ শুনি। সব ইনস্টিটিউশন ভেদে খরচ বেশ কম হয়। আর এগুলো আমার ফ্রেন্ডদের কাছে শোনা। তাই কিছুটা ইনএকুরেইট হতেই পারে।
কানাডিয়ান সিটিজেন দের খরচ ১০০০০ ডলার পার ইয়ার এবং ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্টদের ২৪০০০ ডলার পার ইয়ার। বিদেশী স্টুডেন্টদের মারাত্মক পরিমাণে বেশি টাকায় পড়তে হয় কানাডায়। আর এতো শুধু টিউশন ফি। আপনার থাকা, খাওয়া সহ আরো টাকা লাগবে। যা হয়ত পার্ট টাইম জব করে জোগাড় করতে পারবেন। তবে পড়ার খরচ এখানে অনেক বেশি রে। স্কলারশিপ এর জন্যে এপ্লাই করে পেলে তবেই আসা উচিৎ আমি বোধ করি।
আর স্টুডেন্ট ভিসা, স্কলারশিপ এসবে কিভাবে এপ্লাই করতে হবে, তাতে কত খরচ পরে তা আমি ঠিকভাবে বলতে পারবনা। যেহেতু সেই প্রসেসে আমি কানাডায় আসিনি। তবে নেট সার্চ করুন। সব তথ্য পেয়ে যাবার কথা। সরি, উপকারী কোন উত্তর দিতে পারলাম না রে!
আমার সকল শুভকামনা রইল।
নিজের প্রতিটি স্বপ্ন পূরন করুন।
২| ০৮ ই জুন, ২০১৭ রাত ৯:৫২
কুঁড়ের_বাদশা বলেছেন:
আপনি কানাডায় থাকাতে আপনার সুন্দর, সুন্দর অভিজ্ঞতার কথা জানলাম ।
ভালো থাকুন ।
০৮ ই জুন, ২০১৭ রাত ১০:১১
সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: ধন্যবাদ।
শুভেচ্ছা।
৩| ০৮ ই জুন, ২০১৭ রাত ১০:২৩
সোহানী বলেছেন: ভালো লিখা ....কানাডিয়ান জীবনে এগুলো স্বাভাবিক তবে দেশে বসে কেউ চিন্তা করতে পারবে না তা।
ধ্রুবক আলোকে বলছি, এখানে সরাসরি মাস্টার্সে ভর্তি খুব কঠিন। এখানে দু'টো বিষয় কাজ করে ১) আপনি কি ভবিষ্যতে কানাডায় সিটিজেন নিতে চান তাহলে এক প্রসেস ২) শুধু পড়াশুনা করার উদ্দেশ্যে আসতে চান তাহলে ভিন্ন প্রসেস।
শুধু এমবিএ করতে চাইলে লেখক যা বলেছে তা ঠিক, অনেক খরচ যা কুলায়ে উঠা কঠিন। কারন ইর্ন্টান্যাশানাল স্টুডেন্টদের এর টিউশন ফি ৪/৫ গুন।
০৮ ই জুন, ২০১৭ রাত ১০:৩১
সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: সোহানী আপু!!! অনেকদিন পরে আমার পোস্টে পেয়ে ভীষনই খুশি লাগছে। ভালো আছেন আশা করি।
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ ধ্রুবক আলোর প্রশ্নটি নিয়ে ভাবার জন্যে। আশা করি উনি কিভাবে আসতে চান সেটা বলবেন। তখন আরো ডিটেইলে উত্তর দিতে পারবেন আপনি বা অন্যকোন প্রবাসী ব্লগার। ওনার কিছু উপকারী হবে তাহলে।
হুমম সেটাই। পড়াশোনার খরচ এখানে অনেক বেশি। সিটিজেনদের জন্যেও, আর ইর্ন্টান্যাশানাল স্টুডেন্টদের এর টিউশন ফি তো আকাশ ছোঁয়া!
পাঠ ও মন্তব্যে কৃতজ্ঞতা।
ভালো থাকুন।
৪| ০৮ ই জুন, ২০১৭ রাত ১১:০৩
বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: সময়ে অসময়ে কানাডা আমাকে একাকীত্বের হাজার রং দেখিয়েছে! নতুনকালে বন্ধুহীন অবস্থায় কিছুটা, আর পুরোন হয়ে যাবার পরে বন্ধুসহ অবস্থায় হয়ত তার চেয়েও বেশি!!!
অনেক প্রকাশ যেন নিরেট বাস্তবতার চেয়ে বেশি কিছু প্রকাশ করতে পারে।
বরাবরেরই মতোই মুগ্ধতায় শেষ করলাম- সাসপেন্স টেনশ রয়েই গেল
আগামী পর্বের অপেক্ষায়
+++++
০৯ ই জুন, ২০১৭ রাত ১২:০৪
সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: আরেহ সখা যে! সবচেয়ে আবেগময় লাইনটি অনুভবে আনতে পারায় কৃতজ্ঞতা জানবেন।
হাহা, সাসপেন্স তো পরের পর্বেই খুলবে কেবল। তখনও পাশে পাব আশা করি।
পাঠ, ভীষন সুন্দর মন্তব্য ও প্লাসে আন্তরিক ধন্যবাদ।
সুখে থাকুন, ভীষন সুখে!
৫| ০৯ ই জুন, ২০১৭ রাত ১২:৩১
জাহিদ অনিক বলেছেন: আমি পর্ব এক দুই পড়তে গেলাম । পড়া শেষে যেন দেখি তোমার পর্ব ৪ লেখা শেষ হয়ে গেছে ।
বেশ বেশ ভাল লেগেছে ।
সত্যি দারুন লেগেছে । অনেক কিছু অনুধাবন করা গেল ।
কল্পনা করে নিচ্ছিলাম তোমার টিচার মিস ডি এর সামনে কতটা অসহায় তুমি ।
প্লাস + প্রিয়
০৯ ই জুন, ২০১৭ রাত ১:০০
সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: তুমি? আমি আবার আপনার তুমি কবে থেকে হলাম? কথা নেই বার্তা নেই আপনি থেকে তুমি? হাহা। না না অস্বস্তি বোধ করবেন না একদম। মজা করছি। তুমি ডাকটা ভীষনই আপন একটি ডাক, আপনি আপন ভেবে ডেকেছেন। সেজন্যে ধন্যবাদ। সবসময় তুমি ডাকতে পারেন। সমস্যা নেই।
মিসেস ডি এর সামনে বা তার জন্যে ঠিক না, পুরো পরিস্থিতিটা সবমিলিয়ে বেশ অসহায় করে রেখেছিল আমাকে।
বাপরে বাপ! কতকিছুর জন্যে ধন্যবাদ দিতে হবে এখন!
পাঠ, আন্তরিক মন্তব্য, প্লাস ও প্রিয়তে নেবার জন্যে ধন্যবাদ।
দুঃখ হতে বহুদূরে, সুখের ভীষন কাছে থাকুন। শুভকামনা!
৬| ০৯ ই জুন, ২০১৭ রাত ১:০৫
জাহিদ অনিক বলেছেন: এই যা !! না না না, সত্যি লজ্জিত । আমি কিছু ভেবে টেবে তুমি লিখিনি। আসলে আপনার গল্পের রেশ থেকেই এসেছে। গল্পের আপনি অনেক পিচ্চি তো তাই সাবকনসাস মাইন্ড থেকেই পিচ্চি একটা মেয়েকে কল্পনা করে তুমি লিখে ফেলেছি।
না না অস্বস্তি বোধ করবেন না একদম। মজা করছি। তুমি ডাকটা ভীষনই আপন একটি ডাক, আপনি আপন ভেবে ডেকেছেন। সেজন্যে ধন্যবাদ। সবসময় তুমি ডাকতে পারেন। সমস্যা নেই।
মাই প্লেজার ।
বাপরে বাপ! কতকিছুর জন্যে ধন্যবাদ দিতে হবে এখন!
নাহ, একদমই ধন্যবাদ টন্যবাদ দিতে হবে না, কানাডিয়ানদের মত এত থ্যাং ইউ আর প্লিজে আমি এখনো অতটা অভ্যস্ত না ।
০৯ ই জুন, ২০১৭ রাত ১:০৯
সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: আরেহ লজ্জিত হবার কিছু নেই। তুমিই বলবেন কিন্তু এখন থেকে। একবার কেউ তুমি বললে আপনি ডাকটা আর ভালো লাগেনা। যেমন অন্য একটি পোস্টে আপনি আমাকে আপনি বলেছেন। উদ্ভট লেগেছে। হাহা।
আমি এখন অতোটা পিচ্চি নই। একটু বড় পিচ্চি। হাহা। লেখনীতে ডুব দিলেই এমন হয়। আপনার মতো পাঠক পেয়ে ধন্য।
আমি আবার ধন্যবাদ না দিয়ে শান্তি পাই। এখন কি হবে? হাহাহা। আচ্ছা আপনার জন্যে ধন্যবাদ বাদ।
শুভকামনা অজস্র!
৭| ০৯ ই জুন, ২০১৭ রাত ১:১৪
জাহিদ অনিক বলেছেন: ধন্যবাদ বড় পিচ্চি । ধন্যবাদ উইথড্রো করে নেয়ার জন্য বিশেষ ধন্যবাদ
আমাকেও কিন্তু তাহলে তুমি করেই লিখতে হবে। জ্বি লিখতে হবে। বললে তো আর শুনতে পাব না ।
০৯ ই জুন, ২০১৭ রাত ১:১৮
সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: আপনাকে তুমি করে? বয়সে বোধহয় বড়ই হবেন আমার চেয়ে। আপনার ব্লগে কিছু লেখা ও কমেন্ট পড়ে মনে হয়। শিওর না যদিও।
যাই হোক, বলছেন যখন তুমিই সই!
তোমার জন্যে অনেক শুভকামনা রইল!
৮| ০৯ ই জুন, ২০১৭ রাত ১:২২
জাহিদ অনিক বলেছেন: যাই হোক, বলছেন যখন তুমিই সই!
হা হা হা ধন্যবাদ তোমাকে । বয়স গুনে কি করব ! হব ছোট বড় কিছু একটা !
০৯ ই জুন, ২০১৭ রাত ১:২৮
সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: ঠিকই, বয়স গোনার দরকার নেই। বিশেষ করে মেয়েদের বয়স তো গুনতেই হয়না। হাহা।
হা হা হা ধন্যবাদ তোমাকে ।
ধন্যবাদ? কে যেন কানাডিয়ানদের মত এত থ্যাং ইউ আর প্লিজে আমি এখনো অতটা অভ্যস্ত না? কে কে কে?
৯| ০৯ ই জুন, ২০১৭ রাত ১:৩১
জাহিদ অনিক বলেছেন: কে অভ্যস্ত না ! কে ?
হুম,
ওসব মনে তো নেই ! আমার আবার আপনভোলা ।
এসে যায় ধন্যবাদ । কানাডিয়ান হয়ে গেছি মনে হয় । হা হা হা
০৯ ই জুন, ২০১৭ রাত ১:৩৪
সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: এইটুকু সময়েই ভুলে গেলে? বড্ড ভুলোমনা তো!
বাবাহ! তিন পর্ব পরেই কানাডিয়ান হয়ে গিয়েছ। সামনের পর্বগুলো পড়লে আরো কি কি হবে কে জানে!
ভালো থেকো।
১০| ০৯ ই জুন, ২০১৭ রাত ১:৪০
জাহিদ অনিক বলেছেন: হাহা পরের পর্ব গুলোতেও এমনই থাকব আশা করি । তুমিও ভাল থেক ।
০৯ ই জুন, ২০১৭ রাত ১:৪২
সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: হুমম এমনই থেকো। বি ইওরসেল্ফ, বি হ্যাপি!
১১| ০৯ ই জুন, ২০১৭ রাত ২:২৪
অপরাজিত এয়ারবোর্ন বলেছেন: এটা খুব সুন্দর ও ভালো ব্যাপার যে,আপনি বাংলায় এত বড় প্রবন্ধ লিখে যাচ্ছেন এবং সম্ভবত বিজয় দিয়েই লিখছেন,আপনার এত টাইপ করতে বিরক্ত লাগছেনা এবং কখনোই বিরক্তি না লাগুক এটাই চাই।যদিও আপনি ইংরেজি ভাষায় সম্পূর্ণ অভ্যস্ত হয়ে গেছেন।
০৯ ই জুন, ২০১৭ সকাল ৭:৩৩
সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: হুমম ইংরেজীতে পুরোপুরি অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছি অবশ্যই। যেহেতু এখানে দিনের বড় একটা সময় ইংলিশেই কথা বলে যেতে হয়। তবে তার মানে তো এই নয় যে বাংলায় অনভ্যস্ত হব!
ব্লগিং তো শখে করি। এতে আর বিরক্তি কি? লিখতে বসলে কতটা লিখব সেটা নিজের প্ল্যান থাকেনা। চোখের সামনে ছোট ছোট অনেক স্মৃতি ভাসতে থাকে। নিজের সেই সময়গুলোকে আজকের আমার দৃষ্টিতে দেখে লিখে যাওয়া আসলে বেশ মজার। সে বড় হোক আর ছোট!
না, আমি বিজয় দিয়ে টাইপ করিনা।
আপনার মন্তব্যে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা।
শুভকামনা অফুরান!
১২| ০৯ ই জুন, ২০১৭ রাত ২:৩২
সচেতনহ্যাপী বলেছেন: মেয়ের জন্য একটু ভেবেছিলাম।। কিন্তু খরচের বহর দেখে পিছু হঠতে হলো।। সাধ্যের বাইরে যেয়ে ভিক্ষুক হবার মানে হয় না।।
তবে পর্বটি যে আমার অভিজ্ঞতাকে ক্রমান্বয়ে বাড়িয়ে তুলছে, তা না বলে পারছি না।।
ধন্যবাদ আপনাকে।।
০৯ ই জুন, ২০১৭ সকাল ৭:৩৮
সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: আরেহ সচেতনহ্যাপী! ভালো আছেন আশা করি।
হুমম, এসব দেশে যাওয়া এবং গিয়ে থাকার প্রসেসটায় অনেক টাকা লাগে। তবে স্কলারশিপ পেলে এবং পার্টটাইম জব করতে পারলে ভিন্ন ব্যাপার।
আমি আনন্দিত যে আমার লেখা আপনার অভিজ্ঞতা বাড়াচ্ছে। কিছু জানাতে পারছি!
পাঠ ও আন্তরিক মন্তব্যে আপনাকেও অনেক ধন্যবাদ।
শুভকামনা!
১৩| ০৯ ই জুন, ২০১৭ সকাল ৮:২৬
উম্মে সায়মা বলেছেন: আপনার গল্প বলার ভঙ্গি খুব সাবলীল। পড়তে বেশ লাগে। পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম আপু....
০৯ ই জুন, ২০১৭ সকাল ৮:৩৭
সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: আরেহ সায়মা আপু! কেমন আছেন? আশা করি ভালো।
মন্তব্যে অনুপ্রানিত হলাম। কৃতজ্ঞতা জানবেন।
আমার সকল শুভকামনা রইল।
১৪| ০৯ ই জুন, ২০১৭ সকাল ৯:৪৫
মানবী বলেছেন: "বাস ড্রাইভারের কাছ থেকে টিকিট নেবার সময় যদি থ্যাংক ইউ বলতে ভুলে যান তবে তারা মনে করিয়ে দেবে! বাসের পিছের দরজা দিয়ে কেউ নামলে, চিৎকার করে থ্যাংক ইউ বলে। যাতে সামনে বসে থাকা ড্রাইভারের কানে যায়।"
- এই চর্চাটি ইউরোপ আমেরিকায়ও আছে। আর এর বিপরীতে আমাদের দেশে কথায় কথায় রিক্শাওয়ালা, ঠেলাগাড়ি ওয়ালার গায়ে হাত তোলার ব্যাপারটি খুব বেশি পীড়াদায়ক।
"একাকী ঘরে একাকীত্ব কঠিন, তবে ভীরে একাকীত্বটা বড্ড বেশি কাঁটার মতো বিঁধে! "
- এধরনের কষ্টের অথচ মানবিক অনুধাবনের সবচেয়ে ভালো দিক হলো, পরবর্তীতে কাউকে এভাবে ভীড়ের মাঝে একা কষ্ট পেতে দেখলে তার পাশে বন্ধুসুলভ ভাবে এগিয়া যাওয়া :-)
মফস্বলের কন্যার বৈদেশ ভ্রমনের সরল বর্ণনা খুব ভালো লেগেছে পড়ে, ধন্যবাদ সামু পাগলা০০৭ ।
০৯ ই জুন, ২০১৭ সকাল ৯:৫৫
সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: আপনাকে পোস্টে পেয়ে ভীষনই খুশি হলাম মানবী আপু!
হুমম সেটাই। সব শ্রমের মর্যাদা দিয়ে মানুষকে মানুষের মতো সম্মান করা ভীষনই জরুরি! আমাদের দেশ সহ সব দেশে যেন সেই সংস্কৃতি গড়ে ওঠে সে কামনাই করি!
এধরনের কষ্টের অথচ মানবিক অনুধাবনের সবচেয়ে ভালো দিক হলো, পরবর্তীতে কাউকে এভাবে ভীড়ের মাঝে একা কষ্ট পেতে দেখলে তার পাশে বন্ধুসুলভ ভাবে এগিয়া যাওয়া
একদম! কাউকে একা এককোনে মন খারাপ করে বসে থাকতে দেখলে আমি তার সাথে ক্বথা বলার চেষ্টা সাধারণত করি। হয়ত নিজে একাকীত্বের স্বাদ ভোগ করেছি বলে অন্যকাউকে একা থাকতে দিতে ইচ্ছে করেনা!
আর তার চেয়েও বড় লাভ হচ্ছে আত্মবিশ্বাস এসে গিয়েছে মনের মধ্যে ছোট থেকেই। জানি আমি পাশে কেউ থাকুক বা না থাকুক আমার পথ ঠিকই আমি চলতে পারব!
পাঠ ও সুন্দর মন্তব্যে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা।
শুভচ্ছা রইল!
১৫| ০৯ ই জুন, ২০১৭ দুপুর ১:৪২
নিওফাইট নিটোল বলেছেন: ছুটির দিনে এমনিতেই ব্লগবাড়িতে ঘোরাঘুরি করা হয়......আরও এদিক-সেদিক ঢুঁ মারি.......সে হিসেবে এমন দিনে কানাডা পোষ্টাইলে বেশ ভাল হয়
"সময়ে অসময়ে কানাডা আমাকে একাকীত্বের হাজার রং দেখিয়েছে!"
সে অার বলতে! অামি নিজেও লাইফে একাকীত্বের কত শত রং দেখলাম........শান্তির কথা হল যে, নিজেকে অার প্রকৃতিকে নিয়ে থাকাটা অামি কেন জানি শুরু থেকেই এনজয় করতাম- তাই খুব কম সময়ই অাছে যে একাকীত্ব খারাপ লেগেছে কিংবা "অামার অামি" কে ভাল লাগছে না .......ব্লগার "মানবী"র সাথে একমত......অামি নিজেও অন্যের একাকীত্বে বন্ধুত্বের হাত বাড়াতে পছন্দ করি.......একাকীত্ব ঘোচাতেই শুধু নয়, বরং অামার সাথে তার একাকীত্বের মিলটা জানতেও!!
"এখানে রাস্তাঘাট দেখে ছোটবেলায় খেলা ভিডিও গেইমস এর এনিমেটেড পরিচ্ছন্ন ছবির মতো রাস্তার কথা মনে হত"
ছোটবেলায় গেমস খেলি নাই.......তবে বড় হয়েও গেইমসের রাস্তাও অামারে তত টানে নাই.....যতটা টেনেছিল কমিকসের রাস্তাগুলো। মনে অাছে "চাচা চৌধুরী"র সেই বিখ্যাত বইগুলি সহ অারও শত কমিকস বই? বলে বোঝাতে পারব না, কী যে একটা ঘোরের মধ্যে চলে যেতাম কমিকসে নানা রং-ডিজাইন করা সেই পাড়ার রাস্তা/ মাঠের রাস্তা/ গাছপালা দেখে দেখে.....এমনকি স্বপ্নেও চাইতাম ওইসব রাস্তাগুলোয় শুধু হাঁটি অার হাঁটি- পরিবেশের খুব সংক্ষিপ্ত উপাদান নিয়েই চারপাশ বানানো হত কমিকসে
"বাসের পিছের দরজা দিয়ে কেউ নামলে, চিৎকার করে থ্যাংক ইউ বলে"
হুম, অামরাও চিৎকার করি.....তবে এটা বলে - ওই ড্রাইভার, গাড়ি থামা!! ......বিদেশে মানুষ খুশিতে থ্যাংকায়.....অামরাও ভীড়ের কারণে চেঁচিয়ে বাস জায়গামত থামাই.......অাবার প্রায় সময়ই মুখের পেশিকে কষ্ট না দিয়ে মানুষ হাতের তালু দিয়ে কষে রাম থাপ্পর দেয় দরজায়.......ড্রাইভার তখন থাপ্পরের অনুবাদ করে নেয় এভাবে- ড্রাইভার ভায়া, অামাকে যদি এই মুহূর্তে এই স্থানেই বাস থেকে উন্মুক্ত রাস্তায় নিক্ষেপ করে দেন তাহলে সেই দয়ায় অাজীবন ঋণী হয়ে থাকব
কানাডার গাড়ি নিয়মিত চলতে থাকুক.......পাঠকতো অাছেই........হাজির!!
০৯ ই জুন, ২০১৭ বিকাল ৫:৪০
সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: আরেহ মাস্টারসাহেব! ভালো আছেন আশা করি! হাহা, ছুটির দিনেই দিতে হবে দেখছি সব পর্ব এখন থেকে!
শান্তির কথা হল যে, নিজেকে অার প্রকৃতিকে নিয়ে থাকাটা অামি কেন জানি শুরু থেকেই এনজয় করতাম
নিজের সাথে মিল খুঁজে পেলাম। আমিও নিজেকে নিয়ে থাকতে পছন্দ করি সেই ছোটবেলা থেকেই। তবে কেউ আমার সাথে কথা বলছে না এমন গোমট পরিস্থিতিতে নয়। সবার সাথেই মিশতে/হাসতে পারছি, তবে কিছুটা দূরত্ব রেখে, সেটা সবচেয়ে ভালো লাগে! আমি কখনো মিল দেখার চেষ্টা করিনি। ব্যাস একা কাউকে দেখলে একাকীত্ব ঘোচানোর দায়িত্ব অনুভব করি কেমন যেন!
মনে অাছে "চাচা চৌধুরী"র সেই বিখ্যাত বইগুলি সহ অারও শত কমিকস বই? বলে বোঝাতে পারব না, কী যে একটা ঘোরের মধ্যে চলে যেতাম কমিকসে নানা রং-ডিজাইন করা সেই পাড়ার রাস্তা/ মাঠের রাস্তা/ গাছপালা দেখে দেখে.....এমনকি স্বপ্নেও চাইতাম ওইসব রাস্তাগুলোয় শুধু হাঁটি অার হাঁটি
"চাচা চৌধুরী" ভালোই মনে আছে। আমি বেশ ছোট ছিলাম। দুনিয়াছাড়া মানুষ। এই কমিসকটির নামই শুনিনি। একদিন কাজিনের ঘরে দেখে জিগ্যেস করি, এটা কি? সে বলে, তুই চাচা চৌধুরী কে চিনিস না? হায়রে, তুই ওনাকে চিনিস না? এত মজা পেয়ে গেল সেটা এটা শুনে বলার নয়। শুধু ক্ষেপাত! কিছুক্ষন পরে পরে বইটি মুখের সামনে ধরত, আর বলত, চিনিস? আজকে সেইসব ভয়ংকর স্মৃতি মনে করিয়ে দিলেন! হাহা। কিন্তু হ্যা, সত্যিই ঘোর ছিল চাচা চৌধুরী সহ নানা কমিকস ও এর সাথে জড়িত স্মৃতিগুলো! উইশ কুড ব্রিং দোজ ডেইজ ব্যাক!
হুমম গাড়ি চলবে, পাঠক সিটবেল্ট বেঁধে বসে থাকুক!
পাঠ ও বরাবরের মতোই অসাধারণ সুন্দর মন্তব্যে ধন্যবাদ।
সকল শুভকামনা রইল।
১৬| ০৯ ই জুন, ২০১৭ দুপুর ১:৫১
আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: কানাডিয়ানরা এমনভাবে কথা বলে যেন বেশি জোরে বললে কথা ব্যাথা পাবে!
হাঃ হাঃ হাঃ। ভালো বলেছ। কানাডিয়ান কালচারে প্লিজ, সরি, থ্যাংক ইউ এসব শব্দের বহুল ব্যবহার আসলে সিভিলাইজেশনের প্রকাশ। আমাদের সমাজে ও দেশে এমনটাই হওয়া উচিৎ ছিল। কিন্তু দুর্ভাগ্যক্রমে তা' হয়নি।
যাই হোক, ৩য় পর্বও ভালো লাগলো। পরের পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম। ধন্যবাদ সামু পাগলা০০৭।
০৯ ই জুন, ২০১৭ বিকাল ৫:৪৩
সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: হেনাভাই! আপনাকে আমার যেকোন পোস্টে দেখলেই ভীষন খুশি হয়ে যাই।
হুমম, ঠিক। কানাডিয়ানরা ভীষনই বিনয়ী, সিভিলাইজড একটি জাতি। আমাদের দেশেও জলদিই হবে এমন। ব্যাস একটু সময়ের ব্যাপার!
আপনার ভালো লাগা ভীষনভাবে অনুপ্রানিত ও আনন্দিত করল।
পাঠ ও মন্তব্যে ধন্যবাদ হেনাভাই।
সুস্থ্য থাকুন, ভালো থাকুন!
১৭| ০৯ ই জুন, ২০১৭ বিকাল ৩:৩৪
উম্মে সায়মা বলেছেন: আমি ভালো আছি আপু। আপনিও ভালো আছেন আশা করি
০৯ ই জুন, ২০১৭ বিকাল ৫:৪৯
সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: আলহামদুলিল্লাহ! ভালোই আছি আপু।
পুনরায় আগমনে খবর দিতে ও নিতে এসে ভীষন আনন্দিত করলেন।
শুভকামনা!
১৮| ০৯ ই জুন, ২০১৭ বিকাল ৫:০৭
আলভী রহমান শোভন বলেছেন: উফ আপুনি ! তোমার কানাডার গল্প শুনতে শুনতে আমারই যেতে মন চায়। আর আজ যে সুন্দর লাইব্রেরির গল্প করলে মন চায় ওখানে অনেক খানি সময় কাটাই।
যাই হোক। চলুক তোমার ভ্রমণ। অনেক অনেক ভালো থেকো তুমি।
০৯ ই জুন, ২০১৭ বিকাল ৫:৫১
সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: মন চাইলে চলে এসো! কিছুদিন থেকে যাও বোনের কাছে!
লাইব্রেরিটা আসলেই সুন্দর ছিল। বই পড়তে যে পছন্দ করেনা তারও যেতে ইচ্ছে করবে এমন!
হুমম পাশে থেকো, চলবে....
তুমিও ভীষন সুখে থেকো, ভালো থেকো।
১৯| ০৯ ই জুন, ২০১৭ বিকাল ৫:১২
ফরিদ আহমদ চৌধুরী বলেছেন: সাবলিল, অনবদ্য এবং ভাল লেগেছে।
০৯ ই জুন, ২০১৭ বিকাল ৫:৫৩
সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: মন্তব্যে অনুপ্রাণিত করলেন। ভালো লাগায় আনন্দিত। কৃতজ্ঞতা জানবেন।
সকল শুভকামনা রইল!
২০| ০৯ ই জুন, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:০৯
গুলশান কিবরীয়া বলেছেন: বাহ!!! আপনার বাইরে পড়ালেখার জীবন পড়ে আমার অভিজ্ঞতার কথা গুলোও শেয়ার করতে মন চাচ্ছে । আপনার আরও কয়েকটা অভিজ্ঞতার কথা পড়েছি, কিন্তু সময়ের অভাবে মন্তব্য করা হয়নি ।
ভালো লাগলো , অনেক অনেক শুভ কামনা ।
০৯ ই জুন, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:১৬
সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: ইচ্ছে করলে শেয়ার করে ফেলুন না! নিজের ব্লগে লিখে ফেলুন। নিজে পড়ে আনন্দ পাবেন, এবং আমাদেরও জানতে ভালো লাগবে!
আমার সৌভাগ্য যে এ পর্বটিতে সময় করতে পারলেন।
পাঠ ও মন্তব্যে কৃতজ্ঞতা জানবেন।
অনেক শুভকামনা আপনার জন্যেও!
২১| ০৯ ই জুন, ২০১৭ রাত ১০:১৩
শুভ_ঢাকা বলেছেন: আপনার এইবারের লেখাটা অনেক ভাল ছিল। অপেক্ষাকৃত পরিপক্ব ও বেশ ডীটেইলে লিখেছেন। কিছু নমুনা দেই। আপনার এই পর্বের লেখায় টিচার মিসেস ডি এই একটা জোড়ালো ভূমিকা ছিল গোঁড়া থেকেই। আপনি তার চেহারার একটা ব্রিফ অবয়ব তুলে ধরেছেন। এটা না করলে পাঠক পড়ার সময় নিজে নিজেই একটা চেহারা কল্পনা করে নিত। আর সেটা অন্ধের হাতী দেখার মত অনেক ভয়ঙ্করও হতে পারত।
স্কুলেই অস্বস্তি বোধ করি, বাইরের পরিবেশে কিভাবে থাকব তা ভেবে ভয় করছিল। আবার আনন্দও লাগছিল।
মফস্বলের প্রজাপতির মতো চঞ্চলভাবে উড়ে বেড়ানো আমার জীবন কত রঙ্গিন ছিল! সব টিচার, বন্ধু, আত্মীয়দের ভীষণ আদরের আমি কত জড়তা নিয়ে একা বসে আছি আজ!
আমি ঝট করে চোখের আলগা পানি মুছে নিলাম টপকে পরার আগেই।
মনের সূক্ষ্ম অনুভূতিগুলো ভালভাবেই প্রকাশ করেছেন।
সময়ে অসময়ে কানাডা আমাকে একাকীত্বের হাজার রং দেখিয়েছে! নতুনকালে বন্ধুহীন অবস্থায় কিছুটা, আর পুরোন হয়ে যাবার পরে বন্ধুসহ অবস্থায় হয়ত তার চেয়েও বেশি!!!
এই বাক্যটা ক্লাসিক ছিল। জীবনের এই অভিজ্ঞতা শুধু আপনার একার নয়।
কানাডায় ইমিগ্র্যান্টদের একটি বড় অংশই ভারতীয় পাঞ্জাবি। ইন্ডিয়ান কালচার বুঝতে তাই ওরা পাঞ্জাবি কালচারকেই বোঝে। ইভেন সাউথ এশিয়ান কালচার বুঝতেও ওরা পাঞ্জাবি কালচারকেই বোঝে!
লেখার কিছু পয়েন্ট তথ্যপূর্ণ ছিল। যা পাঠকদের পড়ার আনন্দ নিশ্চয়ই আর বাড়িয়ে দেয়। আপনি বাংলাদেশের অবস্থানটা সাউথ এশিয়ান হিসাবে চিহ্নিত করতে পছন্দ করেন। এই ব্যাপারটা আপনার অনেক পুরানো একটা লেখায় পেয়েছিলাম।
গাড়ি, সিএনজি, বাসের প্যা পু হর্ণ, রিকশার টুং টাং শব্দ...............
শব্দের এই বর্ণনা আর পর্যবেক্ষণ আমার কাছে মজার লেগেছে।
কানাডিয়ানরা এমনভাবে কথা বলে যেন বেশি জোরে বললে কথা ব্যাথা পাবে!
ওয়াও! এইটা সেনট্যানসটা হেভি হইছে।
সো এই ছিল আপনার লেখা নিয়ে আমার মতামত। খামতি যে একটুও ছিল না তা বলবো না। তবে অনায়াসে তা অগ্রাহ্য করা যায়।
০৯ ই জুন, ২০১৭ রাত ১০:৩৩
সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: আমার লেখায় খামতি থাকলেও আপনার মন্তব্যে কোন খামতি ছিলনা শুভসাহেব। অনেক মন দিয়ে পড়েছেন মনে হলো, এবং সুন্দর ভাবে নিজের মতামত দিয়েছেন।
আমি বেশিরভাগ সময়েই মেইন চরিত্রগুলোর কিছু বর্ণনা তুলে ধরি। তাদের বয়স, জাতি তো বলিই। প্রয়োজন হলে আরো কিছু ডিটেইলস। তবে বিজ্ঞ পাঠকের হাতে কিছু কিছু কল্পনার দায়িত্ব তুলে দিতে দ্বিধা বোধ করিনা।
জ্বি ঠিক। কেউ যদি বাংলাদেশ কোথায় জিগ্যেস করে তবে ভারতের পাশে বলার যে সাউথ এশিয়ায় বলতে বেশি সাচ্ছন্দ্য বোধ করি। অন্যকোন দেশ সেটা ভারত হোক আর যেই হোক তার ছায়ায় আমার দেশটা ঢেকে যাক সেটা অবশ্যই আমি চাইবনা। আমাদের সংস্কৃতি, ভাষা, মূল্যবোধে সর্বপোরি পরিচয়ে যেন অন্যদের প্রভাব না পরে সেই দায়িত্ব তো আমাদেরই!
এই বাক্যটা ক্লাসিক ছিল। জীবনের এই অভিজ্ঞতা শুধু আপনার একার নয়।
হুমম হয়ত। তবে এই অভিজ্ঞতা কারো কারো জীবনে একটু বেশি গভীর ভাবেই ধরা দেয়! অনেকের রিলেট করার মতো কিছু লিখতে পেরে আনন্দিত।
পাঠ ও সুন্দর ডিটেইলড মন্তব্যে কৃতজ্ঞতা জানবেন।
শুভকামনা শুভসাহেব!
২২| ০৯ ই জুন, ২০১৭ রাত ১০:৫৩
শুভ_ঢাকা বলেছেন: আমাদের সংস্কৃতি, ভাষা, মূল্যবোধে সর্বপোরি পরিচয়ে যেন অন্যদের প্রভাব না পরে সেই দায়িত্ব তো আমাদেরই!
হা হা হা। চামে! পুরানো প্রশ্নের প্রতি উওর যথাস্থানে না দিয়ে, অন্য প্রশ্নের মধ্যে ইঙ্গিতে উওর দিতে চান। ইহা গ্রহিত হইবে না। পাঠক এত বুদ্ধু না।
১০ ই জুন, ২০১৭ ভোর ৪:৫৭
সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: আপনার মন্তব্যের মানে সত্যিই বুঝলাম না শুভসাহেব। অন্য প্রশ্ন, ইঙ্গিত! আমি একদমই ধরতে পারছি না আপনার রসিকতাটা! আপনি যা মন্তব্য করেছিলেন আমি শুধু সেটিরই জবাব দিয়েছি। অন্যকিছু মাথায় ছিলনা!
শুভকামনা!
২৩| ০৯ ই জুন, ২০১৭ রাত ১১:২৪
মনিরা সুলতানা বলেছেন: অনেকদিন পর পড়লাম আপুর অভিজ্ঞতা !!
লেখায় ভালোলাগা ++++
১০ ই জুন, ২০১৭ ভোর ৫:১৯
সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: মনিরা আপু! ভালো আছেন আশা করি।
অনেকদিন পরে পেয়ে আনন্দিত!
পাঠ, মন্তব্য ও প্লাসে কৃতজ্ঞতা জানবেন।
সকল শুভকামনা রইল।
২৪| ০৯ ই জুন, ২০১৭ রাত ১১:৪৩
ওয়াসিক ইফাজ বলেছেন: আমার একটা সমস্যার কথা বলি,আমার গায়ের রং সাদা মানে বিদেশিদের জাত বলতে পারেন ☺। এই স্কিন কালারের জন্য আমার বাংলাদেশে চলাফেরা করতে কষ্ট মানে মানিয়ে নিতে একটু সমস্যা হয় আর কি
১০ ই জুন, ২০১৭ ভোর ৫:২০
সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: গায়ের রং এ আর কি আসে যায়? মনের রং বাংলাদেশের রং এ রঙ্গিন হলেই একটুও সমস্যা হবেনা!
শুভেচ্ছা রইল।
১০ ই জুন, ২০১৭ ভোর ৫:২১
সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: আপনার এই কমেন্টটি ভুলে দুবার এসে গিয়েছিল। আমি একটি মুছে দিয়েছি।
ভালো থাকুন।
২৫| ১০ ই জুন, ২০১৭ সকাল ৯:৪৪
ওয়াসিক ইফাজ বলেছেন: ভেবেছিলাম বিদেশে স্টুডেন্ট ভিসায় এসে পরব,পরাশোনা শেষ করে পিআর নিব কিন্তু এমন দেশ কোন পাচ্ছি না যেই দেশে জব করে সব কিছু নিজে ম্যানেজ করতে পারব । বুঝতেই পারছেন মধ্যবিত্ত ফ্যামিলি
১০ ই জুন, ২০১৭ রাত ৮:৫৪
সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: হুমমম, বুঝতে পারছি। আমার অনেক ফ্রেন্ডই স্টুডেন্ট ভিসায় এসে পরে পারমানেন্টলি থাকার জন্যে এপ্লাই করে। আপনি কোন দেশে স্কলারশিপের জন্যে এপ্লাই করতে পারেন। যদি সেটা পেয়ে যান এবং টিউশন ফি টা জুটে যায় তবে জীবন অনেক ইজি হয়ে যাবে। থাকা খাওয়ার খরচ তো জব করেই সামলাতে পারবেন। আর বিদেশে ক্যারিয়ার গড়তে চাইলে স্টুডেন্ট থাকতেই যাওয়া ভালো। ব্যাচেলরস বা মাস্টার্স এদেশে করলে জব পাওয়া সুবিধা হয়। ওরা বিদেশী ডিগ্রীর দাম অতোটা দেয়না। ওদের দেশের লেখাপড়া, ওদের দেশের ওয়ার্ক এক্সপেরিয়েন্সকে বেশি মূল্য দেয়। এজন্যে ইয়াং বয়সে এদেশে আসলে সহজে শাইন করা যায়।
তবে বিদেশে যাবার প্রসেসে বেশ ভালোই টাকা খরচ হয়। সেই টাকা সংগ্রহ করতে গিয়ে আর্থিকভাবে কোন রিস্ক নেওয়া উচিৎ নয়। যা নেই তা পেতে গিয়ে যা আছে তা হারানোও বুদ্ধিমানের কাজ নয়!
অনেক বকবক করে ফেললাম।
যাই হোক, মন্তব্যে আপনাকে ধন্যবাদ।
শুভকামনা অনেক!
২৬| ১০ ই জুন, ২০১৭ সকাল ১০:১৮
নাঈম জাহাঙ্গীর নয়ন বলেছেন: মোবাইল সমস্যা থাকায় সেদিন পড়তে পারিনি আপু। আজ পড়ে ভালো লাগা রইল এই পর্বেও।
শুভকামনা আপনার জন্য।
১০ ই জুন, ২০১৭ রাত ৮:৫৬
সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: নয়নসাহেব! ভালো আছেন আশা করি।
ওহ আচ্ছা আচ্ছা। সুযোগ করে পড়ে কৃতজ্ঞ করেছেন।
ভালোলাগায় আনন্দিত!
আপনি এবং আপনার পরিবারের সবার জন্যে শুভকামনা রইল। সবাই সুস্থ্য ও সুখী থাকুন।
২৭| ১০ ই জুন, ২০১৭ সকাল ১০:৫১
বিপ্লব06 বলেছেন: নতুন সিরিজ শুরুর জন্য অভিনন্দন!!!
বরাবরের মতই অসাধারণ!
ভাষার সমস্যাটা নতুন সবার জন্যই মেজর একটা সমস্যা। ইট টেইক্স সাম টাইম!
পৃথিবীর এই অংশটা মনে হয় একটু বেশিই সুন্দর। আসলেই অনেকটা ছবির মত।
পথচারী পারাপারের ওই লম্বা পোলের সুইচটা আসলে ফেইক। কাজ করে না। সুইচটা চাপলে পথচারী মনে মনে নতুন করে ওয়েটিং টাইম কাউন্ট করা শুরু করে। সেইম গোউস ফর এলিভেটরের "ক্লোজ ডোর" বাটন।
গুড লাক উইথ ইঞ্জিনিয়ারিং!!!
ভাল থাকবেন!!!
১০ ই জুন, ২০১৭ রাত ৯:০৬
সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: ধন্যবাদ।
হুম ঠিক। তবে আমি ইয়াং বয়সে গিয়েছিলাম বলে ইংরেজীটা দ্রুতই ধরতে পেরেছিলাম।
নাহ নাহ, কানাডার টা রিয়েল। আমেরিকার টা ফেইক। হাহা। আসলে আমি এটা আগেও একবার শুনেছিলাম যে পথচারী ক্রসিং সিগন্যালস এর কার্যকারীতা নেই। তবে সবাই এতো রিলিজিয়াসলি ফলো করে যে বিশ্বাস হয়না। এটা না টিপে কাউকে রাস্তা পার হতে সাধারণত দেখিই না! এটাই নিয়ম!
থ্যান্কস! গুড লাক উইথ হোয়াটএভার ইউ আর ডুয়িং ইন লাইফ!
হুমম, থাকব! আপনিও ভালো থাকুন!
২৮| ১০ ই জুন, ২০১৭ বিকাল ৩:১৮
হাসান মাহবুব বলেছেন: আমাদের দেশেও যদি এমন নানা দেশের, নানা রকম মানুষ থাকতো, ঘরে বসেই পৃথিবী দেখতে পারতাম!
১০ ই জুন, ২০১৭ রাত ৯:০৮
সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: হাহা ঠিক বলেছেন হাসান ভাই। ওখানে এত দেশের মানুষ দেখে চক্কর লেগে যেত! দেশটি কি ভীষন রঙ্গিন পৃথিবীর সব দেশের রং এ! আসলেই পুরো এক পৃথিবী!
পাঠ ও মন্তব্যে ধন্যবাদ।
শুভকামনা!
২৯| ১০ ই জুন, ২০১৭ সন্ধ্যা ৭:৪৮
মোঃ জাহিদুল ইসলাম (জিহাদ) বলেছেন: দেশটাকে দেখতে ইচ্ছে করছে। সময় পেলে ছবির ব্লগ দিবেন আপু।আর আপনি কি দিয়ে লিখেন?
++
১০ ই জুন, ২০১৭ রাত ৯:১১
সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: আমি বাইরে বেড়াতে গেলে ছবি তুলিনা রে তেমন। কেন যেন ইচ্ছে করেনা। তো ছবি ব্লগ হয়ত দেওয়া হবেনা। তবে লেখার বর্ণনায় কিছুটা কল্পনা করে নিতে পারবেন আশা করি।
আমি ফোনেটিক কিবোর্ডে লিখি!
পাঠ ও মন্তব্যে ধন্যবাদ।
ভালো থাকুন।
৩০| ১১ ই জুন, ২০১৭ বিকাল ৪:৫৩
মোঃ জাহিদুল ইসলাম (জিহাদ) বলেছেন: জ্বী আচ্ছা ।আপনাকেও ধন্যবাদ
১১ ই জুন, ২০১৭ বিকাল ৫:০০
সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: পুনরায় আগমনে কৃতজ্ঞতা।
ওয়েলকাম!
৩১| ১১ ই জুন, ২০১৭ সন্ধ্যা ৬:০৯
শাহরিয়ার কবীর বলেছেন: আমার যা বলার ছিল উপরের সবাই বলে গেছে ,এখন আর কি মন্তব্য করি !!
একটা লাইক দিয়ে গেলাম ।
আর আপনি কেমন আছেন ?
১৪ ই জুন, ২০১৭ রাত ৮:১১
সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: পাঠ, মন্তব্য, লাইকে অশেষ কৃতজ্ঞতা।
ভালোই।
শুভেচ্ছা।
৩২| ১৫ ই জুন, ২০১৭ সকাল ১১:১৩
সারাফাত রাজ বলেছেন: আপু, মুগ্ধ হয়ে পড়েছিলাম। মন্তব্য করতে দেরী হলো।
আপু কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। কারণটা নিশ্চয় আপনি বুঝতে পেরেছেন।
১৬ ই জুন, ২০১৭ রাত ৩:০২
সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: হাহা, একদম। কেন বুঝতে পারব না? আপনি লাস্ট পর্বে বলার কারণেই তো স্টাডি ট্যুর নিয়ে লিখলাম। লেখার পরে আপনার ব্লগে জানাতেও গিয়েছিলাম। যার কথায় লিখলাম, তার মতামত তো জানতে ইচ্ছে করবেই। কিন্তু গিয়ে দেখলাম আপনার জ্বর! ভাবলাম ছেলেটার জ্বর সারুক, তারপরে নিজের গরজে এসে পড়ে যাবে। হাহাহা। নাহ, সিরিয়াসলি তখন আপনার জ্বর সেরে যাক শুধু সে কথাই ভাবছিলাম। অন্যকিছু বলতে ইচ্ছে করছিল না।
যাক পড়ে মুগ্ধতা জানিয়ে কৃতজ্ঞ করেছেন।
আপনার দূর্বলতা কেটে যাবে। আসল ঝামেলা জ্বর তো কেটে গিয়েছে। এতদিন জ্বরে ভুগে যে দূর্বলতার সৃষ্টি হয়েছে তাও অচিরেই চলে যাবে। ব্যাস রেস্ট নিন।
আমার সকল শুভকামনা রইল!
©somewhere in net ltd.
১| ০৮ ই জুন, ২০১৭ রাত ৯:৩২
ধ্রুবক আলো বলেছেন: কানাডায় MBA করার জন্য কি করতে হবে, এবং খরচ কেমন পরবে তা যদি জানতেন খুব উপকার হত।