নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

কি বলা যায়! কিছু কথায় নিজেকে ব্যক্ত করা সম্ভব না আমার পক্ষে। তাই একটা সিরিজে কিছু কিছু করে সবই বলছি।

সামু পাগলা০০৭

আমি অতিআবেগী, আগে ব্যাপারটা লুকানোর চেষ্টা করতাম। এখন আর করিনা।

সামু পাগলা০০৭ › বিস্তারিত পোস্টঃ

তুষার দেশে এক বাংলাদেশী কিশোরীর দিনরাত্রি - পর্ব (১২) - কানাডিয়ান গুন্ডার কবলে......(পূর্বের কুইজ সলভড)

০১ লা আগস্ট, ২০১৮ রাত ৮:৫৪

পূর্বের সারসংক্ষেপ: মা নিয়মিত ক্লাস করার সিদ্ধান্ত নেয়। প্রতিদিন বাবা ও মা ক্লাসে যায় এবং সারাদিন বাড়িতে একা আমি বোরড হই। এজন্যে মনে মনে ভাবতে লাগলাম এমন কোন প্ল্যান যা আমার একঘেয়েমিকে কাটিয়ে দেবে।

পূর্বের পর্বগুলোর লিংক:
তুষার দেশে এক বাংলাদেশী কিশোরীর দিনরাত্রি - পর্ব (১) - প্রথমবার প্রবাসে প্রবেশের অনুভূতি!
তুষার দেশে এক বাংলাদেশী কিশোরীর দিনরাত্রি - পর্ব (২) - জীবনের গল্প শুরু হলো এইতো!
তুষার দেশে এক বাংলাদেশী কিশোরীর দিনরাত্রি - পর্ব (৩) - সুখে থাকতে কিলায় ভূতে! (কুইজ বিজেতা ঘোষিত)!
তুষার দেশে এক বাংলাদেশী কিশোরীর দিনরাত্রি - পর্ব (৪) - বাংলাদেশ ভার্সেস কানাডার দোকানপাট, এবং বেচাকেনার কালচার! (কুইজ সলভড)!
তুষার দেশে এক বাংলাদেশী কিশোরীর দিনরাত্রি - পর্ব (৫) - কেমন ছিল কানাডিয়ান স্কুলে ভর্তি হবার প্রস্তুতি পর্ব?!
তুষার দেশে এক বাংলাদেশী কিশোরীর দিনরাত্রি - পর্ব (৬) - কানাডিয়ান স্কুলে ভর্তির ইন্টারভিউ অভিজ্ঞতা!
তুষার দেশে এক বাংলাদেশী কিশোরীর দিনরাত্রি - পর্ব (৭) - কানাডার স্কুল ভ্রমণ এবং দেশীয় মফস্বলের স্কুলের টুকরো স্মৃতি!
তুষার দেশে এক বাংলাদেশী কিশোরীর দিনরাত্রি - পর্ব (৮) - কানাডার প্রথম খারাপ অভিজ্ঞতা!
তুষার দেশে এক বাংলাদেশী কিশোরীর দিনরাত্রি - পর্ব (৯) - আবারো দুটিতে একসাথে, প্রেমের পথে... :`> (কুইজ সলভড)
তুষার দেশে এক বাংলাদেশী কিশোরীর দিনরাত্রি - পর্ব (১০) - লাভ বার্ডসের প্রথম কানাডিয়ান ক্লাসের অভিজ্ঞতা....
তুষার দেশে এক বাংলাদেশী কিশোরীর দিনরাত্রি - পর্ব (১১) - মায়ের বিদেশী ক্লাসমেট্স, কালচার শক এবং বাবার জেলাসি!
পূর্বের সিরিজের লিংক: কানাডার স্কুলে একদিন এবং কানাডার স্কুলে একেকটি দিন

-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------

সেদিন রাতে শুয়ে শুয়ে ভাবলাম কালকের দিনটিও আজকেরই রিপিটেশন হবে! সারাদিন ঘরের মধ্যে পায়চারি, আর গান শোনা! এভাবে ভালো লাগে? ইশ! যদি এক্সাইটিং কিছু করা যেত! ভাবতে ভাবতে বিদ্যুৎ এর ঝলকের মতো মাথায় একটা মারাত্মক দুষ্টু আইডিয়া খেলে গেল! বেশ রিস্কি, কিন্তু একঘেয়েমি কাটানোর জন্যে মরিয়া আমি যেকোন কিছুই করতে পারি! উত্তেজিত মনে ছক কাটতে শুরু করে দিলাম।
দুষ্টুমির কথা ভাবতে ভাবতেই রাত পার হয়ে গেল। খুব ভোরে চোখ খুলে গেল সেদিন। উঠেই চুপিচুপি বাবা মায়ের ঘরের ক্লসেটের দিকে আড়চোখে তাকালাম। মাকে দেখে মনে হচ্ছে ঘুম প্রায় ভেঙ্গে গেছে, একটু পরেই উঠবে। আমি হাতমুখ ধুয়ে নিজের ঘরে এসে বসলাম।

একটা চাপা উত্তেজনা কাজ করছিল ভেতরে ভেতরে। মা বাবা প্রতিদিনের মতো বেরিয়ে গেলো। আমি বেশ কয়েক ঘন্টা অপেক্ষা করলাম কেননা মা বাবা কিছু ভুলে গেলে এর মধ্যে ফিরে আসতে পারে। মুভি নাটকে সবসময় দেখেছি, ছোটরা কোন গোলমাল করতে গেলেই বড়রা কিছু না কিছু ভুলে বাড়িতে চলে আসে!

আমি বাইরে পরার একটা সালোয়ার কামিজ পরে বেরিয়ে পড়লাম। হাতঘড়ি নিতে ভুললাম না। সবচেয়ে জরুরি মায়ের ঘর থেকে চাবিটা নিয়ে নিলাম। এখানে বাড়ির প্রতি সদস্যদের চাবি থাকে। ডোরবেল সাধারণত থাকে না, যে যার চাবি ব্যবহার করে ঢুকে পড়ে। আমি চাবিটা নিয়ে কয়েকবার দরজা খোলা বন্ধ করা প্র্যাকটিস করে নিলাম। মনের মধ্যে সবচেয়ে বড় ভয় এটাই যে বাড়িতে ফিরে দরজা খুলতে পারবনা!

এপার্টমেন্টের সিড়ি দিয়ে ভয়ে ভয়ে নামতে লাগলাম। প্রতিটি কদম উত্তেজনা বাড়িয়ে দিচ্ছে। শুধু ভাবছি এই মুহূর্তে যদি বাবা মা এসে পড়ে তাহলে কি জবাব দেব? এসব ভাবতে ভাবতে মেইন গেট খুলে রাস্তায় এসে দাড়ালাম। বাইরে গিয়ে দেখি ভীষন রোদ পড়েছে। দেশের মতোই মনে হচ্ছে। চোখে না দেখলে কেউ বিশ্বাস করবে না কানাডা যা সবার কাছে তুষারদেশ হিসেবে পরিচিত সেখানে এমন গরম পড়তে পারে! প্রচুর টুরিস্ট কানাডায় গরমকালে এসে রীতিমত অবাক হয়ে যান।

আমি বাড়ির সামনের কিছু পথ পেরিয়ে মেইন রাস্তার ফুটপাতে এলাম। ফুটপাত দিয়ে ভয়ে ভয়ে হাঁটছি। ফুটপাতের একপাশে ছোটখাট একটা বাগানমতো। ছোট ছোট আকৃতির প্রচুর ফুল ফুটে আছে। হলুদ, বেগুণী, লাল! আমি হাত বুলিয়ে দিলাম ফুলগুলোতে। মনে একটু সাহস পেলাম। সামনে হাঁটতে হাঁটতে ফুটপাতটা শেষ হয়ে একটা রাস্তা শুরু হলো। সেই রাস্তা দিয়ে গাড়ি আসা যাওয়া করছে। আমি কিভাবে পার হব বুঝতে পারলাম না। বাবা বলেছিল এদেশে রাস্তায় অনেক নিয়ম কানুন, আমাদের দেশের মতো না। কোন নিয়ম ভাঙ্গলেই জেল, জরিমানা হয়! এজন্যেই তো এদেশে রাস্তাঘাট এত শান্ত, শৃংখল!

আমি দাড়িয়ে আছি কনফিউজড হয়ে, দেখি কি সামনের গাড়ির ড্রাইভার আমার দিকে মুচকি হেসে পেরিয়ে যেতে বলছে হাতের ইশারায়! আমি বেশ অবাক হলাম! জলদি পায়ে সামনের ফুটপাতটায় চলে গেলাম। আমি অনেকদিন ভাবতাম যে হয়ত আমার কনফিউজড চেহারা দেখে উনি সাহায্য করেছেন অথবা বিদেশীদের জন্যে ওনারা এই বিনয়টা দেখান। পরে জেনেছিলাম না, এটাই ওদের নিয়ম। গাড়িঘোড়া, যানবাহনের দায়িত্ব পথচারীকে বেশি গুরুত্ব দেওয়া! গাড়ি থামিয়ে পথচারীকে যেতে দেওয়া!

এভাবে আশেপাশে চোখ বোলাতে বোলাতে যাচ্ছি। এখানকার রাস্তা দেখলে সবসময় মনে হয় দেশে খেলা ভিডিও গেমসগুলোর রাস্তা! ওমনি ছবির মতো মসৃণ রাস্তা, নানা রং এর মানুষ, বিদেশী মডেল বিশিষ্ট বিলবোর্ড! আমার শুধু মনে হয় যে হয়ত খেলতে খেলতে ভেতরে ঢুকে গিয়েছি, এক ক্লিকে আবারো দেশে ফিরতে পারব! এই অসম্ভব ভাবনাটা এক মিনিটের জন্যে হলেও কি ভীষন আনন্দ যে দিয়ে যায়!

রাস্তার একপাশ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছি, কোন দিক পরিবর্তন করছিনা। দিক পরিবর্তন করলেই রাস্তা ভোলার সম্ভাবনা থাকবে। আর এই বিদেশ বিভুঁইয়ে আমি কাউকে কিছু বোঝাতেও পারবনা। কিছু পথ যেতেই অনুভব করলাম হাঁটতে আর ভালো লাগছে না গরমে। সূর্য মামার সাথে আমার কোনদিনই জমেনা। সূর্য মাথার ওপরে পড়লেই কেমন যেন অসুস্থ বোধ করতে শুরু করি। আর আশেপাশে প্রচুর গাড়ি ঘোড়া। স্বস্তি পাচ্ছি না। আসলে এমন গরমে, ব্যস্ত রাস্তায় ঘুরে মজা লাগেনা।
আমি বাড়িতে ফিরে গিয়ে পানি খেলাম। বেশ এক্সাইটেড বোধ করছি। গরমটা না থাকলে আরো ঘোরা যেত। বাবা মার কোর্স শেষ হয়ে গেলে এমন সুযোগ তো আর ফিরে পাব না! কিন্তু সকাল দুপুর তো এমনই রোদ থাকে! কি করা যায়! কি করা যায়! ভাবতে ভাবতে রিস্কের পরিমাণ আরো বাড়িয়ে দিলাম! ভাবলাম পড়ন্ত দুপুরে বের হবো। বারান্দায় দাড়িয়ে বুঝেছি কি সুন্দর, মিষ্টি একটা বাতাস বয়ে যায় সূর্য ডোবার সেই সময়ে। সেই বাতাসটা পরিপূর্ণভাবে গায়ে মাখার ইচ্ছে চেপে ধরল! বাবা মা আসতে আসতে বিকেলও পার হয়ে যায়। আমি জলদি করে যাব আর জলদি করে চলে আসব। একবার বাইরে পা রেখেই ভয়ভীতি অনেকটাই কাটিয়ে ফেলেছি।

বিকেলে বের হলাম। একই ভাবে হাঁটছি। আসাটা বিফলে যায়নি। রাস্তার ধারের ফুলগুলো কি সুন্দর উড়ছে! সেই বাগানটির আশেপাশে কয়েকটি ইরিগেশন স্প্রিংকলার সেট করা। ছোট একটা জিনিস, মাটির সাথে লাগানো, সেটি অটোমেটিক ঘুরে ঘুরে পানি ছিটিয়ে যাচ্ছে ফুল গাছগুলোকে! আমার দিকে ঘুরে আসতে আমি বেশ ভালোভাবেই ভিজে গেলাম!

ওড়না দিয়ে মুখ হাত মুছতে মুছতে সামনে এগিয়ে যেতে লাগলাম। পথে একটু দূর যেতেই এক হোয়াইট মহিলা তার হাসব্যান্ডকে দেখিয়ে বলল, "সো প্রিটি!" আমি নিজের মনে হেঁটে যাচ্ছি, বুঝিনি যে আমাকেই বলছে, আমাকে দাড় করিয়ে বলল, "ইওর আউটফিট ইজ সো প্রিটি! আই লাভ ইওর লং হেয়ার, সো বিউটিফুল!"

আমি হেসে ধন্যবাদ দিয়ে দিলাম। সালোয়ার কামিজকে সারাজীবন একটা সাধারণ পোশাক হিসেবেই জেনে এসেছি। কানাডায় এসে যেখানেই যাই, সবাই এমন ভাব করে এর চেয়ে সুন্দর পোশাক আর নেই! প্রথম প্রথম একটু অবাক হলেও এখন সয়ে গেছে। প্রথম প্রথম ভাবতাম এটা ওদের বিনয়। এমনিই বলে, কিন্তু পরে বুঝেছি। পশ্চিমারা সেভাবে রঙ্গিন পোশাক পরেনা, তাই আমাদের রং বেরং এর সালোয়ার কামিজ, শাড়ি দেখলে আসলেই এদের মুগ্ধতার সীমা থাকেনা। তবে হ্যাঁ অন্যের সংস্কৃতিকে প্রশংসা করতে বড়মন লাগেই!

উনি আমার চুলের প্রশংসা করে চুল নিয়ে কি যেন একটা প্রশ্ন করলেন। কমন কথার বাইরে পড়ে যাওয়ায় সেটা আমি ধরতে পারলাম না। ব্যাস বেকুবের মতো হাসি দিলাম। উনি আবারো চুলের দিকে হাত ইশারা করে বোঝানোর চেষ্টা করলেন, কিন্তু আমি ধরতে পারলাম না। উনি বুঝে গেলেন যে আমার ইংলিশে সমস্যা, আর কথা না বাড়িয়ে হেসে নাইস টু মিট ইউ বলে চলে গেলেন। ওনার হাসব্যান্ড বাই টেক কেয়ার বলল যাবার সময়ে। আমি আর হাসতে পারলাম না। কেমন যেন মন খারাপ লাগতে লাগল। কি ভাবছেন উনি আমাকে! এমন কেন হয়! কেন এরা আমাদের মতো করে বাংলা বলে না? কারো কথা বুঝতে না পারলে খুব অসহায় আর বুদ্ধিহীন মনে হয় নিজেকে। আমি সেদিন আর হাঁটলামই না। ফিরে গেলাম বাড়ির দিকে। অন্যমনস্ক থাকায়, আরেকদফা ভিজে গেলাম বাগানের পানিতে! মেজাজ যা গরম হলো! মনে হলো উঠিয়ে রাখি যন্ত্রণা স্বরূপ যন্ত্রগুলোকে!

বাড়ি এসে জামা কাপড় জলদি পাল্টে নিলাম। আমি ফেরার বেশ অনেকক্ষন পরেই মা বাবা ফিরল। অন্যদিন তারা আসা মাত্র আমি গল্প শুনতে বসে যাই। ক্লাসে কি কি হলো, বাবা মার খুনসুটি এসব খুবই মজার লাগে। কিন্তু সেদিন চোর চোর অনুভব হচ্ছে। মা আমার চেহারার দিকে তাকালেই বুঝে যাবে কিছু একটা করেছি! এজন্যে বেশি কথা না বলে নিজের ঘরে জলদিই ফিরে গেলাম। সে সময়টাতে বাব মা এত ক্লান্ত থাকে যে সেভাবে আমার এ পরিবর্তনটা খেয়াল করল না।

পরের দিন দুপুরের দিকে আবারো মনে হলো বেরিয়ে পড়ি না! আরেকটু সামনে যাই না! আরো সামনের রাস্তায় কি আছে সেটা দেখার ইচ্ছে হচ্ছিল খুব! যেমন ভিডিও গেমসের নেক্সট স্টেইজে যাবার উত্তেজনা থাকে!

আবারো বাড়ির বাইরে পা রাখলাম। আজও দেখি পানি দেওয়া হচ্ছে! মানে প্রতিদিন এসময়ে মেশিনগুলো স্টার্ট হয়ে যায়। বেশ গা বাঁচিয়ে হাঁটার চেষ্টা করলাম। কয়েকটা স্প্রিংকলার থেকে বেঁচে গেলাম, কিন্তু একটা একটু ভিজিয়ে দিল। সে যাই হোক, আমি হাঁটতে লাগলাম। হাঁটতে হাঁটতে বেশ দূরে চলে এলাম। একটা জায়গায় এসে মনে হলো এটা অন্য পাড়া এবং আমাদের পাড়ার চেয়ে আরেকটু বড়লোক পাড়া। কেমন যেন একটা ঝা তকতকে ব্যাপার আছে প্রতিটি বাড়িতে। সব বাড়ির সামনে বেশ ভালো জায়গা এবং ফুল দিয়ে সুন্দর মতো বাগান করা। আর বারান্দাও আছে সব বাড়িতে। বারান্দাগুলো এত সুন্দর ভাবে সাজানো! টেবিল চেয়ার, ঝুলিয়ে রাখা টবগাছ, নানা রং এর ফুল পেঁচিয়ে রেখেছে দেওয়াল! বিশাল আকৃতির সব ডেকোরেশন পিস চোখে পড়ল! একটা বারান্দায় দেখলাম গোল্ডেন এবং ব্রাউনিশ কালারের সুন্দর একটা বিরাট সিংহ সাজিয়ে রাখা! ডোরগুলোও খুব সুন্দর করে ডেকোরেট করা। কারুকার্যপূর্ণ ডিজাইনে ওয়েলকাম লেখা অথবা কৃত্রিম ফুল দিয়ে সাজানো। আমি সবকিছু খুব খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে দেখছিলাম। যেন বাড়ি ফেরার পথে মনে করতে পারি যে পথে এসব পড়েছিল। হারিয়ে যাব না তাহলে।

বাড়ি, রাস্তাঘাট কিছুই নয়, আসল সৌন্দর্য তো প্রকৃতি মায়ের কোলে! পাহাড় আর আকাশ পুরো শহরটিকেই মুড়ে রেখেছে। যেদিকেই তাকাই মনে হয় ঐতো! খুব কাছেই তো পাহাড়টি হাতছানি দিয়ে ডাকছে! পাহাড় পর্যন্ত যাওয়া এবং পাহাড়ের মাথায় উঠে আকাশকে ছুঁয়ে দেওয়া খুব কঠিন কিছু না! যতই সামনের দিকে হাঁটতে থাকি পাহাড় যেন আরেকটু দূরে সরে যায়! আবার ভীষন কাছেই থাকে! এ দূরত্বটা কমেও না, বাড়েও না! কেমন যেন দৃষ্টির বিভ্রম!

হাঁটতে হাঁটতে ঘড়ির দিকে নজর পরল। নাহ, এবারে বাড়ি ফেরা উচিৎ। বাবা মা এসে না যায় আবার!
যাবার সময় একটু রোদ থাকলেও আসার সময়ে আরো শীতল মিষ্টি একটা বাতাস বয়ে যায় চারিদিকে। আর পাহাড়ি রাস্তায় সামনের দিকে যেতে নি:শ্বাস একটু আটকে আসে, আবার ফেরার পথে মনে হয় ঢালুময় রাস্তা যেন নিজেই আমাকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে!

আমি অসাধারণ এক সময় কাটিয়ে সেদিন বাড়ি ফিরলাম। মনে হলো এবার থেকে প্রতিদিন যেতেই হবে বাইরে। এমন সুন্দর প্রকৃতি থেকে দূরে থাকা যায়না! আমাকে পাহাড়ের সিড়ি বেয়ে উঠে আকাশকে ছুঁতেই হবে একদিন!

এভাবে কয়েক দিনেই সেই এরিয়াটি আমার ভীষন আপন হয়ে গেল। এখন আর দুরুদুরু বুকে বের হইনা। কেমন যেন বিশ্বাস জন্মে গেছে ধরা পড়ব না। আর এখানকার মানুষ এত ভালো, কি সুন্দর করে হাসে! কোন বিপদও হবার নয়।
জীবনে যখনই ভাববেন বিপদ হবেনা, বাংলা সিনেমার মতো হ্যাপি এন্ডিং হয়ে গিয়েছে, তখনই বিপদ এসে জানিয়ে যাবে জীবনের গল্পে হ্যাপি এন্ড বলতে কিছু নেই! নি:শ্বাস চলবে যতদিন, কোন না কোন ঝুট ঝামেলা থাকবে ততদিন।

আমি প্রতিদিনই হাঁটার দূরত্ব বাড়িয়ে দিচ্ছি। আর এখন শুধু সোজা না হেঁটে ডান বাঁক নেওয়া শুরু করলাম। যখনই কোন বাঁক পড়বে ডানে যাব এটা ভেবে নিয়েছি। এই ছক কষে হাঁটতে হাঁটতে আশেপাশের রেস্টুর‌েন্ট, ছোটখাট শপ আবিষ্কার করলাম। আবিষ্কারের খেলায় কি যে আনন্দ! উফফ! কাউকে কোন ভাষায় তা বোঝানো যায় না। এমনকি একদিন আমার স্কুলের সামনেও চলে গিয়েছি হাঁটতে হাঁটতে। আমার স্কুল বাড়ির কাছে হাঁটার দূরত্বেই ছিল। খুবই মজা পেয়েছি সেদিন। ভাবলাম স্কুল যখন শুরু হবে একা একাই আসতে যেতে পারব! কিন্তু মা কি আসতে দেবে?

আরেক পড়ন্ত দুপুরে হাঁটতে বেড়িয়ে গেলাম। হাঁটার সময়ে যথারীতি খুব ভালোভাবে একেকটি জিনিস মনোযোগ দিয়ে দেখছিলাম। কার কোন বারান্দায় কোন ডেকোরেশন পিস, কার দরজায় কেমন ধরণের ওয়েলকাম বোর্ড লাগানো, কোথায় কোন শপ, কোন জায়গা থেকে আমার স্কুলের পতাকা দেখা যাচ্ছে সবকিছু খেয়াল করতে করতে হাঁটতে লাগলাম। আজকে বামে বাঁক নিলাম নতুন কিছু আবিষ্কারের আশায়। একটা গ্যারেজের সামনে এসে দাড়ালাম। গ্যারেজটি দু তালা বিশিষ্ট, এক কোণের ছোটখাট সিড়ি দিয়ে নিচে বেসমেন্ট নেমে যায়, অন্ধকারমতো, সেখানে কি আছে কে জানে! ওপরের তালায় বেশ কয়েকটি গাড়ি পার্কড দেখলাম।

আমি গ্যারেজকে পাশ কাটিয়ে আরো সামনে যেতে লাগব, তখন বেসমেন্ট থেকে এক লোক বেরিয়ে এলো। চেহারা আমাদের দেশের পাহাড়িদের মতো; শ্যামলাটে, চ্যাপ্টা চোখ, নাক। চুল, দাড়িগুলো বেশ লম্বা। নোংরা একটা কোট পড়ে আছে। দেখে মনে হলো গোসল নামক জিনিসটির সাথে কোনকালেই তার পরিচয় ছিলনা। আমি তার বেশভূষা দেখে অস্বস্তি বোধ করতে লাগলাম। চলে আসতে লাগব উনি টলতে টলতে আমার দিকে আসলেন এবং শান্ত, স্বাভাবিক গলায় বললেন, "ইউ হ্যাভ চেইন!?"

ওনার হাঁটার ধরণটা মুভিতে দেখা মাতাল ভিলেনের মতো! ভীষন ভয় পেয়ে গেলাম। আমি উত্তর না দিয়ে ইগনোর করে চলে আসতে লাগলাম, উনি আমার পিছু পিছু এসে আবারো একই কথা বলছেন আমাকে। আমি ইংলিশ যেটুকু জানি সেটুকুও ভয়ে ভুলে গেলাম। শুধু নিজের গলার দিকে ইশারা করে দেখালাম আমার কাছে চেইন, গয়না কিছুই নেই! উনি তারপরেও আমাকে আটকে হাত নাড়িয়ে কিসব যেন বলে যাচ্ছেন বিড়বিড় করে। এমনিতেই ইংলিশ বুঝিনা তার ওপরে জড়িয়ে যাওয়া কথাগুলো আরোই বুঝতে পারছিনা। এই লোক তো পথও ছাড়ে না। একনাগাড়ে বলেই যাচ্ছে কিসব যেন! অন্য দুনিয়া থেকে আসা কোন এক ভয় আমাকে ফ্রিজ করে দিল। গলা শুকিয়ে গেল! কি করব এখন?

-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------

এ পর্ব আসতে দেরী হবার কারণ আমি অসুস্থ ছিলাম। এখনো পুরোপুরি ভালো নেই, তবুও একঘেয়েমি কাটাতে এবং সিকনেসের ভাবনাকে একপাশে সরাতে লিখে ফেললাম এ পর্বটা! কিছু নিয়ে ব্যস্ত থেকে মনকে অন্যদিকে ডাইভার্ট করার চেষ্টা আরকি। আসলে যা লিখতে চেয়েছিলাম নানা ভূমিকায় তাই লেখা হলোনা। খেয়াল করে দেখলাম পর্বটি বেশ বড় হয়ে গিয়েছে অলরেডি! পরের পর্বে গুন্ডা কাহিনী শেষ করব!

পূর্বের পর্বের কুইজ:
কেউ কুইজের উত্তর দিয়ে ফেলতে পারলে আমি ভীষনই খুশি হই। বেশ অনেকদিন পরে কুইজের সঠিক উত্তর দিয়ে আমাকে খুশি করেছেন ব্লগার চঞ্চল হরিণী! তিনি বলেছিলেন, "আমার মনে হচ্ছে কোন কিছু রান্না করার অথবা একাই বাসার সামনে থেকে একটু ঘুরে আসার দুষ্ট বুদ্ধি মাথায় চেপেছিল।"
মজার ব্যপার হচ্ছে দেশেও বাড়িতে একা থাকলে আমার প্রায়ই মনে হতো যে কিছু রান্না করি। কিন্তু আমি একদমই বুঝে উঠতে পারতাম না যে কিভাবে কি রাঁধা যায়? চুলায় সবজি কেটে নাহয় দিয়ে দিলাম, কিন্তু তারপরে কি করব? হাহা। আর যদি এক্সপেরিমেন্ট করতে গিয়ে খাবার নষ্ট হয় (হবেই হবে), ডাস্টবিনে ফেলতে হয়, তখন মায়ের চোখে পড়ে যাবে। হাত পুড়িয়ে বা কেটে ফেললেও মায়ের চোখে পড়ে যাবে। আর মা কেন জানি বাইরে যাবার আগে আমাকে বলে যেত, চুলায় হাত দিয়ো না! হয়ত মায়ের মন টের পেত একা বাড়িতে রান্না নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট করতে মন চাইতে পারে। মা না করার পরেও ধরা পড়লে নির্ঘাত মারা পড়তাম। সেই ভয়ে কখনো ওমুখো হইনি। :)
সামনে থেকে একটু ঘুরে আসা পারফেক্ট আনসার। অভিনন্দন জানাই বুদ্ধিমতী হরিণী আপুকে!

পাঠকের জন্যে কুইজ: আপনাদের কি মনে হয়? সেই লোক আমার কাছে বারবার চেইন চাচ্ছিল কেন?

এর উত্তর কমেন্টে নয়, পরের পর্বে আসবে! কেউ জয়ী হলে তখনি ঘোষণা হবে।

মন্তব্য ২৮ টি রেটিং +৮/-০

মন্তব্য (২৮) মন্তব্য লিখুন

১| ০১ লা আগস্ট, ২০১৮ রাত ৯:২৪

ইব্‌রাহীম আই কে বলেছেন: যদিও আপনার এই সিরিজের আগের কোন লেখা পড়া হয়নি তথাপি এই লেখাটা পড়ে ভালই লেগেছে। বাসায় বসে না থেকে বাহিরের দুনিয়াকে একটু দেখে আসাটা সাথে রোমাঞ্চকর কিছু অভিজ্ঞতা অর্জন, মন্দ না।

০১ লা আগস্ট, ২০১৮ রাত ১০:০৩

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: বাহ! সিরিজের নতুন পাঠক পেলাম জেনে খুবই আনন্দিত লাগছে। আশা করছি সামনেও পাশে থাকবেন।
ভালো লাগায় অনুপ্রাণিত হলাম।

পাঠ ও সুন্দর মন্তব্যে ধন্যবাদ।
ভালো থাকুন।

২| ০১ লা আগস্ট, ২০১৮ রাত ৯:৪৪

টাকাওয়ালা বলেছেন: সারা দিন শেষে মনটাকে রিলাক্স করতে ব্লগে ঢুকলাম। উপর দিকেই দেখি এই সিরিজটা, আগেও পড়েছি- পরিচিত- ইন্টারেস্টিং। আবারও পেয়ে গেলা শুরু করলাম (pacman)

কিন্তু শেষে এসে ভাল একটা ধরা খেলাম এই কুইজ দেখে ...... মাথা আবার জ্যাম :-(
ভুলে গেসিলাম এখানের কুইজের কথা

০১ লা আগস্ট, ২০১৮ রাত ১০:১৫

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: হাহা! গেলা শুরু করলেন! হাসতে হাসতে শেষ! আশা করি পোস্টটি আপনাকে কিছুটা রিল্যাক্স করতে পেরেছে।

এত জ্যাম লাগার কিছু নেই। এই পর্বেই হয়ত কেউ জবাব দিয়ে দেবে। নাহলে আমি জবাব দিয়ে দেব। না পারলে তাই সমস্যা নেই।

পাঠ ও মজার মন্তব্যে ধন্যবাদ।
শুভকামনা!

৩| ০১ লা আগস্ট, ২০১৮ রাত ৯:৫১

বিদ্রোহী ভৃগু বলেছেন: টানটান উত্তেজনায় রেখে দিলে সখি!
পরের পর্বের আগ পর্যণ্ত টেনশনটা রয়েই যাবে :)
হা হা হা

সিরিজে ধীরে ধীরে দারুন টার্নিং আসছে। উত্তেজনা, রোমাঞ্চ, ভয়!!
দারুন মানে দারুন।

কিপিটাপ ;)

শুভেচ্ছা শুভকামনা
অন্তবিহীন মনোকামনা :)

০১ লা আগস্ট, ২০১৮ রাত ১০:৩০

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: হেই সখা!

উত্তেজনায় রাখার ইচ্ছে ছিলনা। লিখতে লিখতে দেখি অনেক লম্বা হয়ে যাচ্ছে, পরের অনেক কথা আছে এ বিষয়ে, সেসব লিখতে গেলে আরেক পর্বই লিখতে হয়। তাই সমাপ্তি টানলাম।

নিজের প্রশংসা শুনলে কে না খুশি হয়? আমিও হই! হাহা! ধন্যবাদ সখা ধন্যবাদ!

আপনাকেও সকল শুভকামনা জানাই!

৪| ০১ লা আগস্ট, ২০১৮ রাত ১০:৪৭

অচেনা হৃদি বলেছেন: হুম, এজন্যেই গত দেড় সপ্তাহ ব্লগে আসেননি! আপনি অসুস্থ শুনে খারাপ লাগলো আপু। খবরে দেখলাম কানাডাতে খুব গরম পড়ছে, আপনি কি এই ওয়েদারের কারণে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন?

গত পর্বের কুইজে আমি চরমভাবে ভুল উত্তর দিয়েছি। আর এবারের কুইজের উত্তর তো মোটেই অনুমান করতে পারছি না। এই কুইজের ব্যপারে গেস করতে হলে আমাকে কানাডা গিয়ে কোন এক চায়নাম্যানকে দেখতে হবে। তারপর ধারণা খুললেও খুলতে পারে! ;)

এপর্বে মজা কম পেলাম আপু, মজা পাওয়ার জায়গাতে গিয়ে টু বি কন্টিনিউ নোটিশ ঝুলিয়ে দিলেন! :(

কি আর করা, পরের পর্বের অপেক্ষায় রইলাম। তার আগে অবশ্যই একদম সুস্থ হয়ে যান এই প্রার্থনা করছি। :)

০১ লা আগস্ট, ২০১৮ রাত ১১:০২

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: হৃদি আপু!

প্রথমেই ধন্যবাদ ভীষনই আন্তরিক মন্তব্যে।

সেই কুইজটি না পারলেও, আমি অবাক হয়ে দেখলাম আমার অসুস্থতার কারণ আপনি একদম ঠিক ধরেছেন। আমি আসলেই গরমে সিক হয়েছি!

দেড় সপ্তাহ! নিজে ওভাবে হিসেব করিনি। হিসেবটা জানানোর জন্যে থ্যাংকস। হুমম সিরিজ লিখলে বেশি বেশি আসার তাগিদ থাকে। কিন্তু নানা সমস্যায় কখনোই রেগুলার হতে পারিনা। সহব্লগারেরা ইরেগুলার আমাকেও যেভাবে আপন করে নেয় তার জন্যে আমার মুগ্ধতা, কৃতজ্ঞতার শেষ নেই।

হাহা! আসলেই, কিছু কিছু কুইজের উত্তর বিদেশে গেলে বা বিদেশ ভ্রমণের বই পড়া মানুষেরাই শুধু দিতে পারে। সমস্যা নেই, চেষ্টা করেছেন তাতেই আমি খুশি। পরের পর্বে উত্তর জেনে যাবেন।

আমি কিন্তু লিখতে গিয়ে খুব মজা পেয়েছি, কেননা সেটা আমার জীবনের খুব মজার সময় ছিল। ঝুলাতেই হলো রে নোটিশ, আরো অনেককিছু লেখার আছে এটা নিয়ে। এ পর্বে শেষ হতো না। পরের পর্বে আশা করি সব জট খুলবে!

থ্যাংকস এ লট আমার জন্যে প্রার্থনা করার জন্যে।

আপু খুব যত্ন নিয়ে পোস্ট পড়েন। এতে অনেক উৎসাহিত হই।
সকল শুভকামনা!

৫| ০১ লা আগস্ট, ২০১৮ রাত ১১:৩৬

পদাতিক চৌধুরি বলেছেন: আপু,

পড়লাম । বেশ ভালো লাগলো। আসলে তুষার দেশে যে আপনি কলম্বাস হয়ে নিত্যনতুন রাস্তা, সহ বিভিন্ন জিনিস আবিষ্কারে মগ্ন তখন তো এজকু দস্যুদলের উপদ্রোব হবে। কালো কুতকুতে লোকটা আপনার কাছে সেই উদ্দেশ্য চেইন চাইছে বলে আমার মনে হয়। যদিও ঝড়ের অন্তরীপ উউত্তমাশা হবে বলে বিশ্বাস করি। যে কারনে আগামী পর্ব আরও ইন্টরেস্টিং হবে আশা করি।

শুভকামনা রইল।

০২ রা আগস্ট, ২০১৮ ভোর ৪:৫২

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: প্রথমেই পাঠ, মন্তব্য এবং ভালো লাগায় আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাই।

কুইজে অংশ নেবার জন্যে আন্তরিক ধন্যবাদ। সময় আসলে জেনে যাবেন এর উত্তর, তখন নিজের সাথে মিলিয়ে নিয়েন।

পরের পর্বে পাশে পাব আশা করি।
আপনজনদের নিয়ে সুখে শান্তিতে থাকুন।

৬| ০২ রা আগস্ট, ২০১৮ সকাল ১১:০৭

রাজীব নুর বলেছেন: মনে মনে আপনার পোষ্টের অপেক্ষায় ছিলাম।
সুন্দর লিখেছেন।
অনেক শুভ কামনা।

০২ রা আগস্ট, ২০১৮ রাত ১০:০২

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: মনে মনে আপনার পোষ্টের অপেক্ষায় ছিলাম।
অনেক বেশি উৎসাহিত হলাম আপনার এ কথায়। থ্যাংকস এ লট!

আপনার এবং আপনার আপনজনদের জন্যেও অনেক শুভকামনা রইল!

৭| ০২ রা আগস্ট, ২০১৮ সকাল ১১:১৭

মোস্তফা সোহেল বলেছেন: বরাবরের মতই ভাল লিখেছেন।
বিদেশে পথচারীদের বেশী গুরুত্ব দেওয়া হয়।আর আমাদের দেশে পথচারীদের পশু-পাখিও মনে করা হয়না।
সাম্প্রতিক অনেক ঘটনাই তো দেখলেন।
পাহাড় আমার সবচেয়ে বেশি ভাল লাগে।খুব ছোটবেলায় বান্দারবনের পাহাড় দেখেই হয়তো পাহাড়ের প্রেমে পড়ে গিয়েছিলাম।চারপাশে পাহাড় ঘেরা স্থানে ছোট বেলায় বেশ কিছু দিন ছিলাম।
তারপর বড় হয়ে পাহাড় দেখলাম সিলেটে।মেঘালয় রাজ্যটা কেন যে আমাদের দেশে হলনা সেটা নিয়ে খুবই আফসোস হয়।
সিলেটে আমি যেখানে ছিলাম সেই বাড়ি থেকে দুমিনিট হেটে গেলেই ভারতের মেয়ালয় রাজ্যর পাহাড় গুলো দেখা যেত।আমি মুগ্ধ হয়ে মেঘ পাহাড়ের অপরুপ সৌন্দর্য দেখতাম।একবার আমি পাহাড় গুলোকে কাছে ভেবে হাটতে শুরু করলাম।ভাবলাম কাছ থেকেই একটু দেখে আসি পাহাড় গুলো।
আধা ঘন্টা ধরে হাটার পরও মনে হল পাহাড় গুলো একই দূরুত্বে আছে।আমি যত হাটি পাহাড়ও তত দূরে সরে যায়।
ভাল থাকুন।

০২ রা আগস্ট, ২০১৮ রাত ১০:১০

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: অনেক ধন্যবাদ। উৎসাহিত হলাম।

হ্যাঁরে, খুবই বেদনাদায়ক। মানুষের জীবন যে আল্লাহর কত বড় দান! একবার গেল, সবশেষ হয়ে গেল! সেটা জেনেও কিভাবে একটা মানুষ অন্য মানুষের জীবনের ব্যাপারে অসতর্ক হতে পারে? এরা অমানুষ বলেই পারে।

আধা ঘন্টা ধরে হাটার পরও মনে হল পাহাড় গুলো একই দূরুত্বে আছে।আমি যত হাটি পাহাড়ও তত দূরে সরে যায়।
এক্স্যাক্টলি এটাই এটাই! আমিও লেখায় একই অভিজ্ঞতার বর্ণনা করার চেষ্টা করেছি। স্বর্গের মতো না?

অভিজ্ঞতা মেশানো ভীষন সুন্দর মন্তব্যে কৃতজ্ঞতা।
অনেক ভালো থাকুন।

৮| ০২ রা আগস্ট, ২০১৮ সকাল ১১:৪৬

আবুহেনা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেছেন: ওই লোকটা গুন্ডা ছিল? কী সর্বনাশ! মনে হয় মদ খেয়ে মাতাল হয়েও ছিল, তাই না? এই জন্যেই তো দেশে থাকতে তোমাকে পই পই করে বারন করেছিলাম একা একা বাইরে না যেতে। তা' তোমরা এ যুগের ছেলে মেয়েরা আমার কথা শুনলে তো!

মেয়েদের মার্শাল আর্ট বা কুং ফু শেখার জন্য কত বক্তৃতা দিয়েছি। কিন্তু সব বক্তৃতা মাঠে মারা গেছে। কোন মেয়ে আমার বক্তৃতা শোনেনি। এখন দেখো বুড়ো মানুষের কথা বাসি হলে ফলে কী না! নয়নতারা আর একটু বড় হলে ওকে মার্শাল আর্ট শেখাবো। গীতা ফোগাটের মত রেসলিংটাও শিখিয়ে দেব।
তারপর কী হলো তাড়াতাড়ি বল।

ধন্যবাদ সামু পাগলা০০৭।

০২ রা আগস্ট, ২০১৮ রাত ১০:২২

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: হেনাভাই! পোস্টে পেয়ে বরাবরের মতোই খুশি হলাম।

সেটাই হেনাভাই, কথা না শুনে ভুল করেছিলাম। বিপদে পড়েছিলাম। পাগলী মানুষ তো, কখন কি করি ঠিক থাকেনা! :)

আপনি এত বেশি সুদর্শন যে আপনি কথা বললে মেয়েরা কিছু শোনেনা, শুধু হা করে তাকিয়ে থাকে! আপনারই দোষ, সেসব মেয়েদের আর কি দোষ ভাই? ;)

হুমম, মন্দ হবেনা। মার্শাল আর্ট, রেসলিং শিখে আমাদের তানিশা দেশ দুনিয়ায় নাম করবে!

জ্বি ভাই সময় হলেই বলব সামনের ঘটনা।

আপনাকেও ধন্যবাদ ভীষন মজার একটি মন্তব্যে।
শুভেচ্ছা।

৯| ০২ রা আগস্ট, ২০১৮ সন্ধ্যা ৬:৫৫

গরল বলেছেন: মনে হয় প্যান্টের হুক বা বাটন ছিড়ে গেছে, চেইন দিয়ে বাধবে :P

০২ রা আগস্ট, ২০১৮ রাত ১০:৪১

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: হাহা হোহো! হোয়াট এন আন্সার! হাসতে হাসতে শেষ!

মজার মন্তব্যে ধন্যবাদ।

এই সিরিজে আপনাকে বেশ নিয়মিতই পাশে পেয়েছি এবং উৎসাহিত হয়েছি। সেজন্যে কৃতজ্ঞতা।
ভীষন ভালো থাকুন।

১০| ০২ রা আগস্ট, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:১৬

সুহাস শিমন বলেছেন: এই লোক আপনার কাছে change মানে খুচরা টাকা চায়, আপনি ভেবেছেন চেইন, ঠিক বলেছি না?

০২ রা আগস্ট, ২০১৮ রাত ১০:৪৩

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: ঠিক বলেছেন কিনা তা জানতে একটু অপেক্ষা করতে হবে। পরের পোস্টে জেনে যাবেন। অনেক ধন্যবাদ কুইজের উত্তর ভাবার চেষ্টা করায়।

শুভকামনা সকল!

১১| ০৩ রা আগস্ট, ২০১৮ সন্ধ্যা ৭:২১

কি করি আজ ভেবে না পাই বলেছেন: যা-ই কবো,যাবে খেপে
দেবে ঝাড়ি ঝামটা;
দিলোনা দিলোনা মোরে
আনা ছিটে দামটা। |-)

করে যাও মনখুশি
ছাড়ছিনে কিছুতে;
খাবোই খাবো ......
লেগে রবো পিছুতে। :-B

১৩ ই আগস্ট, ২০১৮ সকাল ৯:০৩

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: কে কাকে দেয়না দাম
তা তো জানে জনতা আম
জিজ্ঞেস করলাম অসুখ বিসুখের ব্যাপারে
জবাব দিল না একেবারে!

আরেহ! যদি ব্লগে তা না করা যায় শেয়ার
জানিয়ে দিলেই হতো, নাহ! করল ইগনোর!
আমি কি আর করতাম জোর?
অতোটা অবুঝ, ইনম্যাচিউর?

ডট গুলো করি আমি পূরণ?
এমন ফাজিল বন্ধুকে করে আমন্ত্রণ
খাওয়াই আমি বকা, মার - হবেন জখম
বুঝলেন, মশাই? এই মেয়ের মাথা গরম! :D

১২| ০৫ ই আগস্ট, ২০১৮ সকাল ১১:৫০

নিওফাইট নিটোল বলেছেন: অনেকদিন না দেখতে পেয়ে ভেবেছিলাম- ব্যস, এইবারের মতো নাটকের সিজন শেষ, পরের সিজন আসতে আরও বছরখানেক :D .........আপনার অসুস্থতার খবর শুনে কিছুটা খুশিও হলাম তাই আরকি!!.......অসুস্থতা? ও কিছু না! সারা বছর সুস্থ থাকলে দিন তিনেক জ্বর মেনে নেয়াই যায় কী বলেন! সুস্থ থাকতে থাকতে আবার না একঘেয়েমি চলে আসে!! :P

আমি বাড়ির সামনের কিছু পথ পেরিয়ে মেইন রাস্তার ফুটপাতে এলাম
এই তরুণ বয়সে অকালে বুড়িয়ে যাবার আগে যখন কিশোর ছিলাম তখন এরকম অ্যাডভেঞ্চারাস জার্নি আমিও করে বেড়াতাম.......তবে এখন যেখানে থাকি সেখানে এসে উপলব্ধি করলাম 'মনের বয়সের ভারে' সেই দুর্দান্ত ইচ্ছাটা নাই হয়ে গেছে- ইচ্ছাটা মরেনি, ব্যস পূরণের মাধ্যম বদলের ইচ্ছা হয়েছে- কিন্তু সেটাও আর শেষমেষ পারিনি!.......আমার ছোটভাই আবার এই রোমাঞ্চটা পুরোপুরি উপভোগ করেছে নতুন এই জায়গায় আসার পরপরই! আপনার বর্ণনা পড়ে সেই ছোটবেলার উত্তেজনা-শিহরণগুলো মনে পড়ে গেল........ঠিক যেমন করে ভাবতাম, যেমন করে সব ঘটত- সবটাই আপনার সাথে মিলে গেল :)

কুইজ নিয়ে আর মাথা ঘামাচ্ছি না.......এমনিতেই যা ঘাম ঝরাই তা বৃথা-ই যায়.......চায়নাম্যানের চেইনস্টোরি পরেই শুনব না হয় :D

পোষ্টে শুভেচ্ছা- শ্রাবণমাসে মেঘলা দিনে মৃদুমন্দ বাতাসের ;)

১৩ ই আগস্ট, ২০১৮ সকাল ৯:১৫

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: হেই মাস্টারসাহেব!

আপনার অসুস্থতার খবর শুনে কিছুটা খুশিও হলাম তাই আরকি!!
হাহা! এই কথাও এত সুইট আর আন্তরিক হতে পারে! উৎসাহিত হলাম।

হুমম, তবে বেশি খুশি হবার কিছু নেই। নাটকের সিজন আসলেই শেষের দিকে। আর কয়েকটি পর্বই লিখব মনে হয়। অনেককিছু লেখার ছিল, কিন্তু সময় হবেনা এই ছুটির মধ্যে! তবে হ্যাঁ ফিরব অবশ্যই কোন একদিন!

আমি এখন অসুস্থ থাকতে থাকতে বোরড হয়ে গেছি রে।

অকালে না আপনি কালেই বুড়িয়েছেন! হাহা। আপনি প্রবাসজীবন নিয়ে পড়তে ভালোবাসার কারণে এই সিরিজটি পড়েন। তবে মাঝেমাঝে আরেকটি কারণও মনে হয়। রিলেট করতে পারা! মিল খুঁজে পাওয়া! আমার অনেক অভিজ্ঞতার সাথেই আপনার অভিজ্ঞতা মিলে যায়! কি অদ্ভুত! দু ধরণের পরিবেশে মানুষ হওয়া দুটো মানুষের মিল! সে যাই হোক, সবসময় মন্তব্যে নিজের অসাধারণ অভিজ্ঞতাগুলো শেয়ার করার জন্যে থ্যাংকস। এধরণের মন্তব্য পোস্টের মান বাড়িয়ে দেয়।

ধন্যবাদ সুন্দর মন্তব্য এবং শুভেচ্ছায়।

ধরুন কোনদিন ভীষন গরমে আপনার নি:শ্বাস আটকে আসছে। ঘেমে নেয়ে একাকার। রাস্তায় প্রচুর ভীর। আপনার সাথে থাকা পানির বোতল থেকে পানি খেলেন, কিন্তু বেশি খেতে পারলেন না। কেননা সেটাও ফুটছে যেন! তেমন অস্বস্তিকর মুহূর্তে আকাশে রোদ শুষে নেওয়া মেঘ এলো, আর আপনার সমস্ত ক্লান্তি মিষ্টি, ঠান্ডা বাতাসে উধাও হয়ে গেল! সেই মায়াবী মেঘের শুভেচ্ছা! :)

১৩| ০৭ ই আগস্ট, ২০১৮ রাত ১২:১১

সম্রাট ইজ বেস্ট বলেছেন: আপনার কী অবস্থা? সুস্থ হয়েছেন? গ্যাপ দেখে তো মনে হচ্ছে অসুস্থতা পুরোপুরি কাটেনি? আশা করি খুব তাড়াতাড়ি সুস্থ ঙয়ে উঠবেন!

এ পর্বে শুধু আপনার বেড়ানোর বর্ণনা পড়ে একটু যেন পানসে লাগল। তবে লাস্টে একটু রোমাঞ্চের গন্ধ পেলাম মনে হল। সামনের পর্বে দেখি কী হয়? আর কুইজ সলভ করার ব্যাপারে আমার কোনদিনই মাথা খোলে না, তাই সযত্নে এড়িয়ে যাওয়ার পথই সবসময় খুঁজি। আজও পাশ কাটিয়ে গেলাম। অলস যে।

১৩ ই আগস্ট, ২০১৮ সকাল ৯:২১

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: হেই মিস্টার বোকা!

না হই নি! একদিন একটু ভালো লাগে তো আরেকদিন খারাপ! যাই হোক দোয়ার জন্যে ধন্যবাদ।

আসলে এ পর্বেও রোমাঞ্চ ছিল। অজানা দেশে কাউকে না জানিয়ে ঘোরার সময়ে আমি অনেক রোমাঞ্চ অনুভব করেছিলাম। তবে হয়ত ঠিকভাবে সেটা ফুটিয়ে তুলতে পারিনি লেখায়!

যাই হোক, সামনের পর্বে এসে গেছে, দেখে নিন সামনে কি হয়েছিল! :)

অসুবিধা নেই, কুইজের উত্তর পরের পর্বে দেওয়া হয়েছে।

মিস্টার বোকা ভীষন ভালো থাকুক!

১৪| ১১ ই আগস্ট, ২০১৮ রাত ১০:৪০

কাওসার চৌধুরী বলেছেন:



ব্যস্ততা কী বেড়ে গেছে?

১৩ ই আগস্ট, ২০১৮ সকাল ৯:৩১

সামু পাগলা০০৭ বলেছেন: হেই!

নারে, শরীর টা ভালো না। আমাকে অসুখে একবার ধরলে সহজে যেতে চায় না।

খবর নিতে আসার আন্তরিকতায় মুগ্ধ হলাম। সামু ব্লগের এক অসাধারণ সদস্য আপনি। ব্লগকে মাতিয়ে রাখেন। আপনার লেখাগুলো পড়া হয়ে ওঠেনা, কেননা সেসব দামী লেখা পড়ার জন্যে বেশ গুছিয়ে বসতে হয়। সেটা কোন কারণে পারছিনা। যাই হোক, আপনাকে অভিনন্দন ও শ্রদ্ধা জানাই।

ভীষন ভালো থাকুন।

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.