নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস |
সৃজনশীল লেখালেখি, গবেষণা ও সম্পাদনা
বিকেল থেকে রাত হয়ে যেতো, বাবা বাড়ি ফিরতেন। আমাদের জন্য বাবা ছাড়া আর কিছু নিয়ে আসতেন না। আমি বড়দের মতো পথ থেকে সরে বাবার পিছনে তাকাতাম। মা ভাবতেন আমি পথকে পাশ ছেড়ে দিয়েছি। আমি পুকুরপাড়ের গাব গাছের মতো করে মায়ের মুখের দিকে তাকিয়ে থাকতাম। আর আমার ছোট ভাইয়েরা পেপে পেপে বলে দৌড়ে যেতো বৃদ্ধ দাদীর কোলে।
দাদী তখন উড়ে যাওয়া আয়ুর দিকে মুখ বাঁকা করে বলতেন—‘বয় দাদু। কী আর করবি! সান্ত্বনার মোয়া নিয়ে হগল জেবন তো শাদা কাপড় পেনলাম। শাদার লগে কেমন যেন একটা খাতিল অইয়া গ্যাছে। এহন আর পুঁডি মাছ ভাল্লাগে না। বাইন মাছ দেখবি আর খাবি কৈ মাছ। দেহোনায় ক্যামন কইর্যা কেলা গাছের নাহে বাদুর ঝুইল্লা থাহে। তোর বাপ মিষ্টি আনতে যাইয়া তোর দাদার এলেম ভুইল্লা গ্যাছে। তুইও একদিন ভুইল্লা যাবি—তোর বাপ চুলার কান্দায় ফিড়িতে বইয়্যা নোনতা আল্লাদ চাবাইতো।’
আমি নিমপাতার মতোন দাদীর কাছে বসে থাকতাম। বলতাম—‘দাদী জীবনে পানের মতো কাউকে ভালোবেসেছেন?’ দাদীর চোখটা তখন অন্যরকম হয়ে যেতো। সেখানে আমি কতোক্ষণ দাদার ছবি—কতোক্ষণ বাবার ছবি দেখতাম।
সেই শৈশবেই আমি বুঝে নিয়ে ছিলাম, বাবারা বয়সের সাথে সাথে মানুষ থেকে ক্রমেই বাবা হয়ে যায়। বয়স বাড়ার সাথে সাথে আবার মানুষ হওয়ার চেষ্টা করে। না ফেরার বাদ্যে—আস্তে করে খোলা উঠোনের মতো মোনাজাত হয়ে যায়।
আমিও যেদিন বাবা হবো। তখন বাবার শরীর থেকে বাবাকে ধার নিবো। বাকীতে কিনে নিবো তার শরীরে শুয়ে থাকা পালোয়ানের সাহস। আর সেলফি থেকে আলাদা করে বাবার বাবাকে ডাকনাম ধরে ডাকবো।
২৪ অক্টোবর ২০১৬ খ্রি., ধানমন্ডি, ঢাকা।
#সানাউল্লাহ_সাগরের_কবিতা
#মঙ্গা_ও_নিউটনের_হারানো_আপেল_পাণ্ডুলিপি_থেকে
২| ২১ শে জুন, ২০২১ রাত ১:৫৬
নূর মোহাম্মদ নূরু বলেছেন:
বৃদ্ধাশ্রমে নয় বাবারা থাকুক
পরিবারের মধ্যমণি হয়ে
©somewhere in net ltd.
১| ২০ শে জুন, ২০২১ বিকাল ৫:২৬
ঢুকিচেপা বলেছেন: ভালো লাগলো। অন্যরকম ভাবনা।