নির্বাচিত পোস্ট | লগইন | রেজিস্ট্রেশন করুন | রিফ্রেস

আঁচলের ঘ্রাণে বিমোহিত হতে মনে প্রেম থাকা লাগে। চুলের গন্ধ নিতে দুহাত বাড়িয়ে দেয়া লাগে। হাহাকার থাকা লাগে। দুনিয়া ছারখার হওয়া লাগে। সবাই আত্মা স্পর্শ করতে পারে না।আমার সমস্ত হাহাকার ছারখারে তুমি মিশে আছো।

সানবীর খাঁন অরন্য রাইডার

এক জন নিভৃতচারী

সানবীর খাঁন অরন্য রাইডার › বিস্তারিত পোস্টঃ

বাঙ্গালী ও বেইমান তত্ত্ব

০৬ ই জুন, ২০১৬ ভোর ৬:৫৭

নবাব সিরাজউদ্দৌলাকে যখন গ্রেফ্তার করে টেনে হিচড়ে নিয়ে যাওয়া হয়, তখন অসংখ্য মানুষ হা করে নিরব দর্শকের মতো সেই দৃশ্য উপভোগ করেছিলো। শুধু তাই নয়, পিঠে ছুরিকাঘাত করার পূর্বে নবাবকে কাটাওয়ালা সিংহাসন ও ছেড়া জুতা দিয়ে যখন অপমান করা হচ্ছিলো, তখন শত শত মানুষ সেই কৌতুকে ব্যাপক বিনোদিত হয়েছিলো। মাস সাইকোলজিটা একটু খেয়াল করে দেখুন। এই জাতি দুইশো বছরের গোলামী সাদরে গ্রহণ করেছিলো ওভাবেই।
.
মজার তথ্য দেই। প্রায় ১০ হাজার অশ্বারোহী, ৩০ হাজার পদাতিক এবং অসংখ্য কামান-গোলাবারুদসহ বিশাল সুসজ্জিত সৈন্যবাহিনী নিয়েই পলাশীর ময়দানে এসেছিলেন নবাব সিরাজউদ্দৌলা। কিন্তু তার বিপরীতে রবার্ট ক্লাইভের সৈন্যসংখ্যা ছিলো মাত্র ৩ হাজার, যার মধ্যে ৯শ জনই ছিলো হাতে পায়ে ধরে নিয়ে আসা ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর শৌখিন অফিসিয়াল সদস্য যাদের অধিকাংশেরই তলোয়ার ধরার মতো সুপ্রশিক্ষণ ছিলো না, কোন দিন যুদ্ধ করেনি।
.
এতো কিছু জেনেও রবার্ট ক্লাইভ যুদ্ধে নেমেছিলো এবং জিতবে জেনেই নেমেছিলো। কারণ, রবার্ট ক্লাইভ খুব ভালো করেই জানতো, একটি হীনমন্য ব্যক্তিস্বার্থলোভী দ্বিধাগ্রস্ত জাতিকে পরাস্ত করতে খুব বেশি আয়োজনের প্রয়োজন নেই ; রক্ত-যুদ্ধ এইসব এদের জন্য মশা মারতে কামান দাগার মতো অবস্থা। যাদেরকে সামান্য দাবার চালেই মাত করে দেয়া যায়, তাদের জন্য হাজার হাজার সৈন্যের জীবনের ঝুকি তিনি কেনো নিবেন ? এছাড়াও, মীরজাফরকে যখন নবাবীর টোপ গেলানো হয়, রবার্ট ক্লাইভ তখনো জানতো যে, সিরাজকে পরাজিত করার পর এই বদমাশটিসহ বাকিগুলোর পাছায়ও লাথি দেয়া হবে এবং হয়েছেও তাই। মীরজাফরসহ, উমিচাঁদ, রায়বল্লভ, ঘষেটিবেগম সবগুলোরই করুণ মৃত্যু হয়েছিলো।
.
না ভাইলোগ, রবার্ট ক্লাইভ মীরজাফরের বেইমানীর উপর ভরসা করে যুদ্ধে আসেনি। সে যুদ্ধে এসেছিলো বাঙালীর মানসিকতা ও ভূত-ভবিষ্যতসহ বহুদূর পর্যন্ত নিখুঁতভাবে আন্দাজ করে। সে জানতো, মীরজাফরকে টোপ দিলে গিলবে এবং কাজ শেষ হলে লাথি দিবে। সে জানতো, যুদ্ধশেষে জনসম্মুখে নবাবের পাছায় লাথি দিলেও এই জাতি বিনোদনে দাত কেলাবে, অথবা হা করে সব চেয়ে চেয়ে দেখবে। বিনা দ্বিধায়ই সার্টিফিকেট দেয়া যায়, বাঙালী জাতির কদাকার মানসিকতা সবচেয়ে নিখুঁতভাবে মাপতে পারা ইতিহাসের প্রথম ব্যক্তিটির নাম রবার্ট ক্লাইভ ... !
.
এই স্ট্যাটাসটি প্রচন্ড ক্ষোভের, ক্রোধের ও অসহায় কান্নার। নিতান্ত অসহায় দেখছি প্রিয় মাতৃভূমিটি ধীরে ধীরে আরেকটি অন্ধকার সময়ের দিকে পা বাড়াচ্ছে। সেই আড়াইশো বছর আগের দৃশ্যপট যেনো ফিরে আসছে নতুন ভূমিকায়, নতুন কদর্য মহিমায়। আমার সান্তনা কিংবা উৎসাহের প্রয়োজন নেই। এই ক্ষোভ এই ঘৃণা কোন সান্তনা বা উৎসাহ-প্রণোদনায় উপশম হবার নয়।
.
অভিজিৎ রায়ের রক্তাক্ত শরীরটা প্রায় ১০ মিনিট রাস্তায় পরেছিলো। অথচ চারপাশে ভীড় করা অসংখ্য মানুষ ছিলো ; কেউ এগিয়ে আসেনি। ঐ প্রায় ১০টা মিনিট স্ত্রী বন্যা নিজেও ক্ষতবিক্ষত রক্তাক্ত শরীর নিয়ে অসহায় চিৎকার করে ছিলো, সামান্য একটু সাহায্যের আশায়। পুলিশও ছিলো ; শুধু দেখেছে, এগিয়ে আসেনি।
.
ঘটনার ঠিক পরের দিন। বইমেলা তার নিজ গতিতেই চলেছে। লেখক-পাঠকের সমাবেশ ছিলো ঠিক আগের মতোই। কারো ভ্রুক্ষেপ ছিলো না, যেনো গতরাতে কিছুই হয়নি ! বেশ কয়েকজন বইমেলা-লেখকের প্রোফাইল ঘেটে দেখলাম ঘটনার পরবর্তী কয়েকদিন। নাহ্ ! ঘটনার লেশমাত্রও নেই। আছে শুধু ছাগলের বাচ্চার মতো বছরে কয়েকটি করে বিয়ানো বইয়ের বিজ্ঞাপন ; সাথে খ্যাতিমান লেখক হওয়ার আগাম সুখে আহ্লাদিত ঝলমলে ভক্তকূলসহ অসংখ্য সেলফি। মনে আছে, হুমায়ুন আজাদকে যখন এই বইমেলার বাহিরেই কোপানো হয়েছিলো, তখন খ্যাতিমান লেখক হুমায়ুন আহমেদ এই ঘটনার প্রতিবাদ তো দূরের কথা, বরং উল্টো হুমায়ুন আজাদকেই ভর্ৎসনা করেছিলো ...
.
ভাইলোগ, আজকে যারা বাংলা গ্রাস করছে, তাদের যোগ্যতাও সেই রবার্ট ক্লাইভের মতোই। খুব নিখুতভাবে একটি দ্বিধাগ্রস্ত হীনমন্য ও ব্যক্তিস্বার্থলোভী জাতির মানসিকতা পাঠ করে ফেলেছে। এর চেয়ে বেশি কিছু তাদের প্রয়োজন নেই। তারা জানে, সাঈদীকে চাদে পাঠিয়েও হাজার হাজার মানুষকে ঘর থেকে বের করে আনা যায়। তারা জানে, যখন-তখন এদেরকে কুপিয়ে রেখে গেলেও কেউ কিছু বলবে না। তারা জানে, ধর্মান্ধতার ঘোল খাইয়ে শত অনাচার করলেও এরা ফ্যালফ্যাল করে চেয়ে দেখবে। তারা জানে, যারা প্রতিবাদ করবে এরা সংখ্যায় নিতান্তই নগণ্য এবং বেশি ক্যাচাল হলে কুপিয়ে ফেলে দেয়া যায় ...
.
এখন শুধু অন্ধকারের অপেক্ষায় ...
আর অপেক্ষা একটি ভোরের, যেদিন পশ্চাতে দোররার কষাঘাত খেয়ে এই জাতির হুশ ফিরবে, রুখে দাড়াবে। আর আজকে যেইসব বইমেলাভিত্তিক লেখকের দাত কেলিয়ে সেলফি দিয়ে বেড়াচ্ছে, তারা সাক্ষী থাকলো বঙ্গপতনের। এই দেশটি যখন ধীরে ধীরে অন্ধকারে গ্রাস হচ্ছে, তখন তারা তাদের কলমগুলোকে ব্যবহার করেছে সস্তা আকিবুকি আর সেলফি দিয়ে .. !

মন্তব্য ১০ টি রেটিং +১/-০

মন্তব্য (১০) মন্তব্য লিখুন

১| ০৬ ই জুন, ২০১৬ সকাল ৭:০৩

চাঁদগাজী বলেছেন:




নবাব সিরাজের ভাগ্যে যা ঘটেছে, রাজতন্ত্রে তাই ঘটার কথা; আপনি সোস্যাল সায়েন্স ও ইতিহাসের ছাত্র নন।

১৬ ই জুন, ২০১৬ রাত ১:১৩

সানবীর খাঁন অরন্য রাইডার বলেছেন: কিছু মানুষের বেইমানীকে আপনি ভাগ্য বলতে পারেন না

২| ০৬ ই জুন, ২০১৬ সকাল ৭:০৬

চাঁদগাজী বলেছেন:




আজকে দেশকে এখানে এনেছে বিএনপি কোয়ালিশন ও আওয়ামী লীগ; এর থেকে বের হতে হলে, নতুনভাবে রাজনীতি করতে হবে।

১৬ ই জুন, ২০১৬ রাত ১:১৪

সানবীর খাঁন অরন্য রাইডার বলেছেন: মিও আপনার সাথে একমত

৩| ০৬ ই জুন, ২০১৬ সকাল ১০:১৩

আহমেদ জী এস বলেছেন: সানবীর খাঁন অরন্য রাইডার ,




দোররার কষাঘাত খেয়েও এই জাতির হুশ ফিরবে না , রুখে দাড়াবেনা কেউ । কারন এই দ্বিধাগ্রস্ত হীনমন্য ও ব্যক্তিস্বার্থলোভী জাতির রক্তে রক্তে বোধহীনতার , অজ্ঞতার বীজ প্রতিদিনই নতুন নতুন চারাগাছের জন্ম দিচ্ছে ।

১৬ ই জুন, ২০১৬ রাত ১:১৫

সানবীর খাঁন অরন্য রাইডার বলেছেন: আসলেই কবে যে হুশ হবে এ জাতীর।জাতীর রক্তে মিশে আছে পরাধীনতার বোধ

৪| ০৬ ই জুন, ২০১৬ সন্ধ্যা ৬:৩০

বৈশাখের আমরণ নিদাঘ বলেছেন: আমি ভাবি, অল্পুয়সী সিরাজ না থেকে অভজ্ঞ কেউ থাকলে কি ভাগ্য অন্যরকম হতো? হতেও পারতো। সিরাজ বাচ্চা একটা ছেলেই ছিল বলা যাবে। ইংরেজরা তলোয়ার ধরতে পারতোনা এই কথাটা কতটূকু সত্যি জানি না। তারা সারা ভারত জুড়েই অল্প সেনার বাহিনী নিজেই অনেক যুদ্ধ জিতেছে। স্ট্রাটেজী তাদের উন্নত ছিলো। আর ডিভাইড এন্ড কঙ্কোয়্যার রুল এপ্লাই তাদের থেকে কেউ ভালো জানতো না। রাজা বাদশারা যতটা না জনগনের কথা ভাবতো, তারচেয়ে নিজেদের রাজবন্ধ নিয়ে ভাবতো। সাধারণ জনতার কাছে তখনো যদ্ধ মানে ছিলো রাজায় রাজায় যুদ্ধ, ক্ষমতার পালাবদল। এখন সময় তেমন নেই। তবে একতাবদ্ধ হওয়ার ব্যাপারটাও ৫২ আর ৭১ ছাড়া এই অঞ্চলে সেভাবে দেখা গেছে কই?

উপমহাদেশ, বিশেষ করে বাংলা একেবারেই মিশ্র জাতির অঞ্চল। অবিশ্বাস, অন্যকে টপকে দিয়ে টীকে থাকা, নানা ধর্মের মিশ্রনের কারণে দ্বেষ, এসব ছিল বেশি। বিভক্তিটাও তাই বেশি।

একসময় না একসময় পরিস্থিতি বা স্বয়াব আরও বদলাবে। নিজেদের এক হিসেবেই ভাবতে শিখবে নতুন প্রজন্ম। এতটা হতাশ হলে আলোর দেখা কখনোই মেলেনা।

শুভকামনা রইলো। :)

১৬ ই জুন, ২০১৬ রাত ১:২০

সানবীর খাঁন অরন্য রাইডার বলেছেন: টা অবশ্য ছিক যে সিরাজ নিতান্ত বাচ্চা ছিলেন,কিন্তু তিনি ছাড়া আর বিকল্পও ছিল না।তলোয়াড় ধরতে না পাড়াটা রুপক অর্থে বলা হয়েছে সংখ্যার অনুপাতে যুদ্ধের তুলনা করায়।এক কিন্তু ৯০ তেও সম্ভব হয়েছিল।তবে একতাবদ্ধ বলতে আমি সব দেশের শত্রু রাজাচর বাদ দিয়ে বুঝাতে চেয়েছি যা সম্ব হবে কিনা এটা নিয়ে দ্বিধায় আছি

৫| ০৬ ই জুন, ২০১৬ রাত ১০:৩০

কোলড বলেছেন: Well, Shiraz was an absolute king without any relation with mass people who had no stake in his victory and mass people were right about English rule which was way better than those neanderthal nawabi rule.

Mass people again didn't give a shit about Abhijit and Bonnya coz the former wrote some garbage and the latter was fugly. Mass people were and are always right.

১৬ ই জুন, ২০১৬ রাত ১:২৩

সানবীর খাঁন অরন্য রাইডার বলেছেন: সহমত হতে পারলাম না।নওয়াবি শাসন বিশেষ করে সিরাজের শসন অবশ্যই ইংরেজ থেকে ভা ছিল।জনগন সব সময় হুজুগে চলেছে এখনও তাই আমার তো মনে হয় আফিম ছাড়াই মাতলামো করছি আমরা

আপনার মন্তব্য লিখুনঃ

মন্তব্য করতে লগ ইন করুন

আলোচিত ব্লগ


full version

©somewhere in net ltd.